Saturday, 29 July 2017

প্রলোভনে প্রলুব্ধ মন।

বাংলাদেশের খুলনার সুমনা বাউরি বাপ ঘরামি কাজ করে ঘর বাঁধার কাজ কিনতু নিজের ঘরেই বানভাসি প্রতি বছর এই একই বন্যার জন্য সংসারের হাল ধরে টানার দরকার রাত নেই তাই অভাব  অনটনের তীব্র কষাঘাত এ তিন মেয়ে মধ্যেই সুমনা বড় মেয়ে গ্রামের এক মাসীর কথায় চলেছে কাজে সন্ধানে মাস গেলে মোটা অঙ্কের অর্থ ভালো থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা  আছে। নদগ টাকা সুমনার মা মালতি আঁচলে বেঁধে রাখলো, মেয়েও মাসি কিনে দেওয়া লাল রঙের সালোয়ার কামিজ সবুজ ওড়না ঠোঁটে লাল রঙ ষোল বছরের সুমনা বেশ হাসিখুশি মেজাজে চলেছে কাজ করতে।

দালাল চক্রের সদস্যাদের এই মাসি কোলকাতার সীমান্তের কাঁটাতারের গলে রাতের অন্ধকারে জীবনের
নারী পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে  মুনসি গঞ্জ  রেড লাইট এলাকাতেই দেহ ব্যবসা সুমনা ঠাঁই হল প্রথম প্রথম খুব কষ্ট দায়ক যন্ত্রনা শরীরের বিভিন্ন  অংশ ক্ষত বিক্ষত আহত মানসিক চাপ প্রয়োগে বিধস্ত। আশ্চর্য সময়,
সময়ে একদিন সুমনা অভ্যস্ত সুনিপুণ ছলাকলা শিখে গেলাম। না টাকা আর বাড়িতে পাঠাতে পরলোকগমন না ঐ এককালীন যা মাসি সুমনের মাকে দিয়ে ছিলো।

হঠাৎই  একদিন রাতে পুলিশ রেড করলো অল্প  বয়সী সুমনার মতন আলো, গোপা, সুমনা পুলিশ ধরে নিয়ে গেল সব যোগসাজশ রয়েছে। কাউকেই গ্রেফতার করা গেল না পালিয়ে গেছে আগেই খবর পেয়েই।
আলিপুর আদালতে মযাজিসটরেট, Magistrate তিন নাবালিকাদের বারুইপুর এক সরকারের হোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সুমনার  সঙ্গে  ভুবনের সাথে আদালতের ভেতরে ও বাহিরে চোখে চোখে কথা হবে গেছে কি ভাবে সরকারের হোক থেকে আঁড়কাঁটি এর  সাহায্য  সরকারের কিশোরীর হোম থেকে পালানোর সুযোগ পেলেই।
সরকারের  এই হতাশাজনক পরিস্থিতির শিকার হয় এই কিশোরীরা।

Saturday, 15 July 2017

জীবনে সাতকাহণ

জীবনের সাতকাহণ

শ্যামল সোম

সময়ের সাথে সাথে, মাপা নদীর জল
শুধুই বহে যায় করে ছলছল, ছলাৎ
কখন কি হাতে হাতে ছোঁওয়া যায় বহে
সে নদীর মুহূর্তের  জল কলকল বহে যায়।
প্রবোধ প্রলুব্ধ করে ভাবি এইতো সেই জল,
না না সে জল বহে গেছে কালের স্রোতে।
সময়ের সাধন সময় গেলে আর হবে না
অবুঝের মতন, না বোঝার ভানে অবহেলায়
ফেলে আসা বেদানার্ত স্মৃতি আঘাতে আহত
তখন, সান্তনা ঈশ্বর বিনা কোথা হতে পাই?
নদীর মতন মনুষ্য জীবন তফাত এই নদী বহে
চলে প্লাবনে পলি বহে আনে, উর্বরা সে ক্ষেতে 
দোলে, চৈত্র পবনে, সে সোনার সোনালি ফসল।
নিকৃষ্ট প্রানী মানুষ প্রজাতির অধম সে নরাধম,
নরক বানিয়ে পরিবেশ এ দূষণ দায়িত্ব পালনে
অস্বীকার করে দানবের দৌরাত্ম্য  আস্ফালন।
একই  স্রষ্টার সৃষ্টি আমরা পরস্পরে নেই কোন
বিশ্বাস, সৌহার্দ সম্প্রীতি  বিদ্বেষের প্রতিফলন।
সহমরণ, হাহাকার ক্রন্দন নারী নির্যাতন, খন্ডিত
জননী অভিশাপে ধ্বংসের পূর্বে শাস্তি নিশ্চিত এ
প্রলয়, যুদ্ধ কি আসন্ন মানুষের প্রতি মানুষের ক্রোধ,
হিংসাত্মক আক্রমণ মানুষের বিরুদ্ধেই পরস্পরের
বিদ্বেষ ঘৃণ্য পরিবেশ, শান্তি প্রিয় শতসহস্র  নিরীহ
ভালো মানুষ সৎ  মানুষের আজ তাই দ্রুত পলায়ণ।

Friday, 14 July 2017

শ্রাবণী আমার বৃষ্টি

শ্রাবণী আমার বৃষ্টি

শ্যামল সোম

এই মেয়ে তুই বৃষ্টি হবি বৃষ্টির
শ্রাবণের ধারা হয়ে অঝরে
পড়বি ঝরে আমার বুকের পড়ে।
বৃষ্টি তোর ধারায় ভিজছি দেশের তুই
এখন; অঝরে শরীর বেয়ে কুল কুল
করে বহে যাচ্ছে সুখ, স্বাদ গলে গলে
পড়ছে আশ, বাসনা হৃদয়ের বাসনা।
গহীন গোপন যত জমানো অবিশ্রান্ত
বেদনা নীল পদ্ম ফুটছে ঐ দীঘি
জলে, বৃষ্টি তোকে জড়িয়ে দু হাতে
সজোরে জাপটে বুকে ভিজছি সর্বস্ব।
তোর অভিমান, অনুযোগ, অনুরাগ
তৃষ্ণার্ত তোর ঠোঁটে চুম্বনে, লেহন করছি
অশ্রু, আমার ঘন আলিঙ্গনে বৃষ্টি তোর
ফোঁটা ফোঁটা জলের স্পর্শে তারা ফুটছে
রাতে আকাশে, জ্যোৎস্না আলোয় উজ্জ্বল,
পরী, নৃত্যের তালে তালে বাঁশির সুরে ছন্দে
গুঞ্জনে, মম  চিত্ত নিতি নৃত্যে-  মুগ্ধ দেখছি।

সে দিন চৈত্র মাস

ছোটগল্প

সেদিন চৈত্র মাস,
তোমার চোখে দেখে ছিলাম আমার সর্বনাশ (কাল্পনিক গল্প)
শ্যামল সোম

চৈতী হাওয়ায় গাছের ঝরা শুকনো পাতা উড়ে যায়। শুকনো পাতার উপর মর মর শব্দে বনের নিস্তব্ধতা ব্যহত হয়। একটা কাঠবিড়ালী তর তর করে উঠে গেল পাতা বিহীন গাছ বেয়ে, গাছের কঠোর বাসায় ডিমের ওপর বসে মা পাখী তা দিচ্ছে। গিরগিটিটা সবুজ থেকে হলুদ রঙ ধরে ইতি উতি চাইছে।
গাছের আড়াল থেকে সূর্যাস্ত শেষ আলো এসে পড়েছে।

বসন্তের ছোঁয়ায় লালে লাল আগুন ফুটছে পলাশ গাছে, আর ঐ কৃষ্ণ চূড়া গাছে গাছে।

স্বপ্না আর রঞ্জনের মাথায় ওপর ঝরে পড়লো শুকনো পাতা। দুজনে এক সঙ্গে হেসে ওঠে। রঞ্জন পাতাটা নিয়ে স্বপ্নার সারা মুখে বোলাতে থাকে।

-আমার ভীষণ ভয় করে রঞ্জন ?
-খুব স্বাভাবিক, তুমি নন্দিনী আহমেদ, আমি রঞ্জন মুখার্জি, আমাদের ধর্ম আলাদা--
-কিন্তু আমাদের ভালোবাসা, পাঁচ বছরের প্রেম?
-হা হা হা - ওদের কাছে কানাকড়ি দাম নেই--নন্দিনী
-কিন্তু রঞ্জন, তোমাকে ছেড়ে আমি---কি -কি করে আমি? হায় আল্লা!
-এখনই চোখের জল ফেলে না , পরে অনেক কাঁদতে হবে--
-পরস্পরকে ভালোবেসে আমরা কোন অন্যায় করিনি
-কিন্তু আমাদের মধ্যে ভাষা ও সংস্কৃতির বিশাল ফারাক--
-কি সব পাগলের মতো বলছো তুমি ? আমরা দুজনে বাঙালি, বাংলাভাষী
-নন্দিনী! সত্য রে লহ সহজে ! আমাদের দুজনের - না আমাদের দুই সম্প্রদায় বড় প্রিয় কবি বলেছেন, সত্য কে --
-হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি ?
-প্রীতি, ভালোবাসা, অবশ্যই ধর্মের অনুশাসন মেনে -সামাজিক দায় স্বীকার করে--
-আমাদের মাতৃভাষা বাংলা!
-ভাষার মধ্যে ও অনেক অমিল, আমরা বলি জল, তোমরা বল পানি, অথচ সেই একই বস্তু আমাদের তৃষ্ণা মেটায়। একই ঈশ্বর, একই সৃষ্টি কর্তা। তবু একে অপরের ধর্মে প্রতি শ্রদ্ধা, বিশ্বাস নেই- প্রীতি নেই - এইটা বাস্তব- নন্দিনী! গৌর কিশোর ঘোষের "প্রেম নেই" উপন্যাস পড়ছো?
-না, না -প্লিজ রঞ্জন, চুপ কর --দোহাই চুপ কর--
-কাঁদলে তোমায় ভীষণ সুন্দর দেখায়, নন্দিনী !
-কাঁদাবে বলেই কী তুমি তাহলে এত বছর তুমি আমাকে--
-কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে -- এ গান তো তুমি আমায় বহুবার শুনিয়েছো--
-কেন! কেন! কেন ! রঞ্জন, কেন এত আমাকে ভালোবেসে ছিলে?
-আমার নলিনী! কখন কবে যে তোমাকে এত ভালোবেসে ফেললাম ! তা আমি-আ-আমি নিজেই জানতে পারি নি--
-আমি থানায় যাবো, কোর্টে হাজির হয়ে বলবো আমরা পরিনত বয়স্ক ! দেশে আইন আছে--
-আইন মোতাবেক ব্যবস্থা পুলিশ করবে। তারপর ওদের নির্যাতন অত্যাচার--আর আইন-- হে-হ-
-আইনত নিষিদ্ধ নয় আমাদের সম্পর্ক
-নন্দিনী, আইনের অনুমোদনের বহু যুগ আগে ধর্মীয় অনুশাসন, আচার অনুষ্ঠান প্রতিপালন হয়ে আসছে। স্বেচ্ছাচার বা ব্যভিচার, ধর্ম বিরুদ্ধাচারণ করে বাহবা হাততালি পাওয়া যায় কিন্তু বাস্তব জীবন ভীষণ কঠিন--
-রঞ্জন, আজ এত বছর পরে এখন এ সব --আমি কিছু বুঝতে পারছি না--
-এখন এই কথা বলছি, কারণ পরবর্তী সময়ে আমাদের বিবাহিত জীবনে সমস্যা আসবে-আসবে-আমাদের সন্তানেরা কোনদিনই ভালোভাবে ঈদ বা দুর্গা পূজা কোন আনন্দ ঠিক মতো উপভোগ করতে পারবে না। কাউকে হেসে বলতে পারবে না ঈদ মোবারক বা শুভ বিজায়ার শুভেচ্ছা।
-এ সব আমি কিছু ভাবতে রাজি নই। তুমি পাশে আছো আমি সব বাধা বিপত্তি লঙ্ঘন করে তোমার হাত ধরে যে কোন মুহূর্তে চলে যেতে পারি!
-মুসলিম মেয়ে কোন হিন্দু ধর্মের ছেলে কে ভালোবেসে বিবাহ করবে, সে আমার ধর্মের ও সমাজের আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী কেউই মেনে নেবে না। ঠিক সেই ভাবেই তোমার সমাজ ও ধর্মের কেউই আমাদের এই সম্পর্ক মেনে নেবে না। এই অধর্মীয়, অসামাজিক সম্পর্কের বিরুদ্ধে ওরা হয়ত-
-আজ আমি কোন বাধাই মানবো না। একটাই জীবন, এ জীবনের চলার পথে আমি তোমায় চিরকাল পাশে চাই, রঞ্জন।
-তুমি তোমার ধর্ম পরিবর্তন করে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে রাজি আছো।
-ধধধর্ম-- ধধর্ম, কিন্তু ধর্ম নিয়ে কোন আপত্তি কোন দিন-আমাদের মধ্যে-
-ভবিষ্যতে বিতর্ক হতে পারে ? আমি শুধু কতগুলো সমস্যা, আসন্ন যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে, তারই প্রস্তুতি-- এই স্বপ্না বহুদূর থেকে ভেসে আসা কোন শব্দ শুনতে পাচ্ছো?
-না, কিসের আওয়াজ?
-এই জঙ্গলের আশ্রয় থেকে এখনই বেড়িয়ে পড়তে হবে--
-কেন ?
-আমি ঠিক শুনতে পাচ্ছি--
-হাঁ, আমিও শুনতে পারছি, রঞ্জন, ও কিসের আওয়াজ?
-জীপ গাড়ি, অনেকগুলো গাড়ির দ্রুত গতিতে ছুটে আসার আওয়াজ, নন্দিনী,
আমাদের খুঁজে বের করতে--আমাদের আপনজন আত্মীয় স্বজনদের সাথে দুই ধর্মীয় সম্প্রদায় লোকজন লাঠি, বন্দুক ! ছুরি ! শানিত অস্ত্র নিয়ে ছুটে আসছে।
-কেন? কেন, রঞ্জন? আজ এই একবিংশ শতাব্দীতে এখনও মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, মানুষের ভয়ে মানুষ প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালাচ্ছে?
-নন্দিনী,  শিগ্‌গির আমার বাইকের পিছনে উঠে বসো--
-রঞ্জন, আমরা কোথায় চলছি--
-দূরে -বহু দূরে -কোথাও -কোনখানে--সূর্য এসে যেথায় মেশে রাতের পারাপারে- নূতন কোন ভোরের অপেক্ষায়--

আজ এই বর্ষার দিনে

ছোটগল্প

আজ এই বর্ষার দিনে
শ্যামল সোম

আজ সকাল থেকেই আকাশে মেঘ জমেছে, আধো অন্ধকার হয়ে গেল চারপাশ, মনামী পাঁচ তলার বারান্দা থেকে চেয়ে আছে দূরে আকাশ পানে, আকাশে ঘন আঁধারে ঢাকা মেঘের অন্তরালে তার হারিয়ে যায় মন।

সাতটি বছর আগের সেই স্মৃতি মনের মনি কোঠায় সযত্ন সাজানো রয়েছে। চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে।

অনিমেষ গত কাল তিন দিনের অফিস টুরে চলে গেছে, একলাই আছে এই বিশাল ফ্ল্যাটে, হাঁপিয়ে উঠছে নিঃসঙ্গতায়, দাদার বাড়ি গলফ গ্রীন গিয়ে ক'দিন থাকতে পারতো, কিন্তু বৌদি ঐ বাচ্চা না হওয়ায় এমন খোঁটা দিয়ে কথা বলে, মনামীর ভালো লাগে না।

কোন কাজ নেই, একই ঘর নানা ভাবে সাজায়, কেনা কাটা করে একা একা ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। চাপা স্বভাবের জন্য মিশতে পারে না। বিয়ের পর চাকরী দুম করে ছেড়ে দিয়ে খুব ভুল করেছে। তখন অনিমেষের প্রেমের জোয়ারে ভাসছে, হায় প্রেম! ক্ষণস্থায়ী, এখন আর কিছুই ভালো লাগে না। মানসিক অবসাদে ভুগছে, নিয়মিত ওষুধ খেয়ে যায়।

আকাশে মেঘ জমতেই, আজ গুন গুন করে গাইছে মন, " মেঘের পরে মেঘ জমেছে, আঁধার হয়ে আসে----"

হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ শুনে, মনামী ঘোর ভাঙে, একবার ভাবে এ অসময় আবার কে এলো, সোফা থেকে উঠে গিয়ে আই হোলে তাকিয়ে দেখে, সিকিউরিটি গার্ডের পাশে ও কে দাঁড়িয়ে? ভরা বুকের ওপর সমুদ্রের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে, দ্রুত শ্বাস পড়ছে, হুহু করে উঠছে মন, আশ্বিনের প্রবল ঝড়ে কোথায় যেন উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাকে, আজ এত বছর পর, জয়কে দেখে আবেগে থর থর করে কাঁপছে শরীর। আবার বেল বাজল, " টুঁন টাঁন টুঁন"

মনামী দরজা খুলে দেয়, জয় দিকে অপলক চোখে চেয়ে থাকে, এতদিনের জমে থাকা ব্যথা, যন্ত্রনা, অভিমানে চোখে জলে আপ্রাণ চেষ্টা করছে সংবরণ করার, জ্বালা করে দু -চোখ !

" তাহলে ঠিক আছে মেম সাহেব আমি যাই।" সিকিউরিটি গার্ডের ডাকে মনামী ফেরে আপন চেতনায়, সম্ভবত সে হারিয়ে গিয়েছিল দশ বছর আগে। মনামীর ঘাড় নেড়ে ইশারায় সিকিউরিটি গার্ড ফিরে যায়।

দরজা ধরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাবে কী এই দশ বছর পরেও ঠিক আগের মতো, যুবক জয়ের মুখে ফ্যাশনেবল দাড়ি, ফেড জিন্স পড়া, প্রিন্স অফ ক্যালকাটা, 1960 সালে, নর্থ কোলকাতার মিত্রদের বাড়ির কাপ্তেন ছেলে লাল রঙের ফোর্ড মটর গাড়ি নিয়ে প্রেসিডেনসি কলেজে আসতো। সেই 1960 তখন গাড়ি থাকা শ্লাঘনীয় ব্যাপার। ফ্লার্টিং করতে করতে কখন যে পরস্পর পরস্পরকে গভীর ভাবে ভালোবেসে ফেলেছিল জয়।

সেদিন মনামীর জন্ম দিন, একে বারে হাঁটু গেড়ে বসে মনামীকে  জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো জয়, উপহার স্বরূপ দামী হীরের আংটি নীল ভেলভেটের বাক্সেই তার হাতে ধরা রয়েছে। ভালোবাসার আবেগের স্রোতে ভেসে গিয়ে, মনামী তার নরম দুহাতে জয়ের ঐ ঝাঁকড়া চুল গুলো মুঠি করে ধরে, সুতীব্র ভালোলাগার কাতরতায় থর থর সারা শরীর, নির্জন ঘরে দুজনের হৃদয়ে ঢোল ধামা বাজছে নৃত্য ছন্দের তালে তালে, সুনীল সাগরের ঢেউয়ের সাথে শরীর ভাসিয়ে ভেসে ভেসে সাঁতরে যাচ্ছে দুজনে, এ যেন এক অন্তহীন যাত্রা, পৌঁছতে চায় সেই সে এক স্বপ্নের দেশে, চির বসন্ত, সমীরণে সুগন্ধ, পুষ্পবনে নানা রঙের পুষ্পে পুষ্পে ভরা, মৌমাছি, রঙিন ডানা মেলে প্রজাপতি উড়ে। গাছে গাছে পাতার আড়ালে ডাকে কোকিল, দোয়েল শীষ দিয়ে যায়।

হঠাৎ চমকে উঠে মনামী, শোনে, আশ্চর্য জলদ গম্ভীর স্বরে, " আজ এত বছর পরেও তুমি আমাকে দরজার বাইরেই রাখবে নমী ?"
এত ক্ষণ পরে খেয়াল হলো জয় বৃষ্টি জলে ভিজে এক্কেবারে--জয় যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, যেন ছোট নদী এঁকে বেঁকে বহে যাচ্ছে।
দরজা খুলে জয়ের হাত সযত্নে ধরে ড্রয়িং রুমে আনে মনামী---!
হাঁটু গেড়ে বসে জয়ের জুতো খুলে দেয়, বাথরুমে নিয়ে গিয়ে ধীরে ধীরে সার্ট খুলে দিয়ে তোয়ালে হাতে ভালো ভাবেই মাথার ভেজা চুল, ও সারা শরীর, মুছিয়ে দেয়, বেরিয়ে এসে এক জোড়া ধোয়া, সাদা পায়জামা ও পাঞ্জাবী, জয়ের হাতে তুলে দেয় মনামী।

কিচেনে এসে হিটারে কফির জল চাপিয়ে দেয়, একটা প্লেটে নানা রকমের বিস্কুট, চানাচুর সাজিয়ে দিতে দিতে ভাবে রাতে জয় জন্য কি রান্না করবে?

জয় লম্বা সোফায় মনামীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে, জয়ের চুলে মনামীর আঙ্গুল বিলি কাটছে।
জয় Keats এর Isabella কবিতা আবৃত্তি করছে, " Fair Isabel, poor simple Isabel! Lorenzo, a young Palmer in Love's eye! They could not in the self same mansion dwell- Without some stir of heart, some malady; They could not, sit at meals but feel how well It soothed each to be the other by; They could not, sure, beneath the same roof sleep- But to each other dream, and nightly weep.

জয় হাত বাড়িয়ে মনামীর গলাটা দু হাতে জড়িয়ে খুব কাছে টানে, উষ্ণ আগ্রাসী চুম্বনে মনামীর শরীরে চরম উত্তেজনা, আঁকড়ে ধরে জয়কে,
দুরন্ত আবেগে পরস্পরে হারিয়ে যায় এক গভীর থেকে আর গভীরতায়--!

আবার ডোর বেল বেজে ওঠে, টুং টাং টুং, ঘেমে নেয়ে গেছে মনামী, ঘোর ভেঙে সে চারপাশে কাউকে খুঁজে পায় না, একা ঘরে এতক্ষণ আপন মনে সে নিজেই এত সব ভাবছিলো আপন মনে, হঠাৎই ভাবে কেউ এলো এক অসময় ?

হাবুর বউ পিয়ালি পালিয়েছে

অনুগল্প

হাবুর বউ পিয়ালী পালিয়েছে
শ্যামল সোম

হাবুর খুবই মন খারাপ করে আকাশের দিকে চেয়ে আছে আজ তিন হয়ে গেল, খায় না, শোয় না, কাজে যায় নি বেশ অনেক দিন হয়ে গেল, ভালো হাতের কাজ জানে -ওস্তাদ কারিগর, কারিগর কারখানার মালিক হাবুর কাজের নিষ্ঠা দেখে মুগ্ধ রয়েছিল। বিশু বললে, তুই একটা গর্ধব, ভুল মেয়েকে ভালোবেসে ছিলি, আমরা সবাই কত করে বোঝাতাম, যে মেয়ে বিয়ের আগেই বলে দামী মোবাইল ফোন কিনে দাও, কোলকাতার মলে ঐ মেয়েকে নিয়ে গেলি কেনাকাটা করতে, তোকে হাবাগোবা পেয়ে, দুয়ে মুসে ছেড়েছে। শালা এর নাম প্রেম, ও সব প্রেম ভালোবাসায় অনেক হাঁপাতে হয় গুরু। ও সব ঝুট ঝামেলায় আমি নেই, আমার সোজা হিসাব, শালা ধর তক্তা মার পেরেক, পেরেক ঠুকে সরে পড়, তুই হাঁদারাম !

বসে বসে ভাবেছে হাবু এই বছর দুয়েক বহু হাবুডুবু খেয়ে, বহুত টাকা গচ্চা দিয়ে, এখন এই নির্জনে বন বাদারে, কখন শ্মশানে, ভূতের খাল পারে, একা একা ঘোরে, লুকিয়ে চোখের জল মুছে ফেলে, পাছে কেউ যদি দেখে।

পিয়ালীকে, বড় ভালোবেসে ফেলেছিল, উজ্জল শ্যাম বর্ণা, সরু কোমর, উন্নত স্তন, শরীরের সুবাদে হাবু মোহগ্রস্ত বদ্ধ উন্মাদের মত, পিয়ালীর- রূপ সাগরে ডুব দিতে গিয়ে নুনের পুতুল গেল গলে।

বিয়ের রাতে গা ভরা গয়না, আসমানী রঙের বেনারসী, নিজে পছন্দ করে কিনে ছিল, বিউটি পার্লারের, মেয়েটা আলাদা বেশী টাকা নিয়ে কী অপূর্ব সাজিয়ে ছিল।

আহাহা, হাবু শুভ দৃষ্টির সময় উন্মাদের মত ফ্যাল ফ্যাল তাকিয়ে আছে! হাসির রোল উঠলো, নাপিত রসের ছড়া কাটছে, কি হল ? মালা বদল করবে কে? ও পাড়ার সে? অনেকেই পিয়ালীর এই ছিনালিকে রথতলা নন্দের সঙ্গে এখানে সেখানে বাইকে চোড়ে, হাওয়া হয়ে যেত।

হাবু, দু একবার সাঁই করে বেড়িয়ে যেতে দেখেছিল, আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করতে গলা জড়িয়ে বুকে মাথা রেখে সে কী কান্না, মা মরা মেয়ে বাপ আবার বিয়ে করেছে, সৎমায়ের অভাবের সংসার, দুবেলা পেরে খেতে পায় না, দাদার মত নন্দদা শুনে ভালো হোটেলে খাওয়াল আবার এই দেখো ননী থেকে কী সুন্দর গয়নার সেট কিনে দিয়েছে ।

হাবু কোন সাধ অপূর্ণ রাখবে না বলে নিজের কেনা জমি বেচে, কারখানা বড়বাবু কে হাতে পায়ে ধরে নিজস্ব জমা মোটা টাকা খরচ করে বিয়ে করে তারপর কনে বউ সেজে এসে- হাবুর মা বৌদি, বোনকে জড়িয়ে ধরে কত আদিখ্যেত !

বিশুকে আড়ালে বলতে শুনলো " শালি ছেনাল মাগো! "
ফুল সজ্জা ভর দুপুরে একা মায়ের ঘরে ঘুমিয়ে স্বপন দেখছে দীঘায় পিয়ালীর সঙ্গে একসাথে স্নান করছে ! হঠাৎ হৈ চৈ চিৎকার, মায়ের আর্তনাদ, বৌদি বুকফাটা কান্না, ধুর চরে উঠে শুনে হতভম্ব, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শুধু দু-বাড়ির গয়না, নূতন শাড়ীগুলো, বেনারসী নয়, বৌদির ও অন্তঃপুরের অনেকের গয়না, নিয়ে - " হাবুর বউ পিয়ালী পাইলেছে! "

রাতে পুলিশ এলো, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, পয়েজন স্প্রে করে ছিল সারা ঘরে ঘরে। একেই সবাই ক্লান্ত হয়ে শুয়ে আছে, ঐ সুযোগে পগার পার, আবার হাবুর ভালোবাসার সংযোগে এ বাড়িতে অনেক বারই আসার জন্য সব নখ দর্পণ, নন্দ দার দাদাগিরি, থানা পুলিশের এ সব আর ভালো লাগে না।

তারপর একদিন খবর এলো বাড়ি থেকে গ্রামের থেকে - মায়ের কাছ হতে, সংসারে ছেড়ে, সমস্ত বন্ধন মুক্ত হয়ে, সংসারের মায়া কাটিয়ে, হারিয়ে যাওয়া হাবু কাশীর কেদার ঘাটে গেরুয়া ধারী সন্ন্যাসী স্বামী হিরণ্ময়ানন্দ হয়ে গাইছেন ,
--- " মন লাগে মেরে ইয়ার, ফকিরী মে,
জো সুখ পায়ও, রাম ভজন মে " !

নূতন এক অমূল্য জীবন এলো, অরূপ রতন পেলো হাবুল চন্দ্র ঘোষ।

Thursday, 6 July 2017

চলরে পাগলী পালাই

চল পাগলী পালাই
কবিঃ        শ্যামল  সোম বাঁশিওয়ালা

হেমন্তে গহীন অরণ্যে শুনি
পিঁউ কাঁহা পাখি ডাকে।
সুন্দরবনে চলরে পাগলী
বনে সে লতা ছাউনি বাসায়
আজ শীতার্ত রাতেই চাই
নিবিড় ভাবে উষ্ণ স্পর্শে
শিহরণ শারিরীক আলিঙ্গনে
খুঁজে ফেরা প্রেমের আয়োজন।
আজ রাতেই চল পাগলী পালাই
আর কত কাল এ নিঃসঙ্গ কাটাই?
জাত বয়স ধর্ম বিস্ফোরিত স্বদেশ
পরবাসে দুজনে দুজনার  প্রবাসে
পরস্পরের  থেকে বিছিন্ন এ প্রয়াস।
সামাজিক কঠোর শাস্তির খড়্গ এ
সালিশী সভায় কোন বক্তব্য না শুনেই
গণ প্রহার গাছে বেঁধে, প্রেমিকের ও
চোখে ক্রোধের বিচ্ছুরণ, প্রকাশ্যে
প্রেমিকাকে গণধর্ষণ,
এ কিসের প্রতিশোধ?
প্রতিদিনই প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত গ্লানিময়
মানবিকতার বিরুদ্ধেই অমানুষদের নিত্য  
প্রতিরোধ  অহংকারের
হুংকার  আস্ফালন
আধুনিক এই শহরের
যান্ত্রিক যাপিত জীবন।
প্রতিবেশীর নিঃসহায় নিপীড়িত নিঃসঙ্গ
স্পৃহা হীন উদাসীন স্বার্থপর  আত্মীয় স্বজন
এ তো জীবনের প্রহসন,
মুক্তির আস্বাদন।
নিজস্ব  আমাদের পরমাণু শক্তির কোপনলে
ধ্বংসের  আগেই চলরে পাগলী সেই গহিন অরণ্যে
হিমালয়ের গুহায় প্রস্তর যুগে ফিরে
আরণ্যক জীবন যাপন করতেই
চলরে এবার পাগলী পালাই।
পালিয়ে কোথায় যাই?
ফিরতে হয় আবার ফিরতে হবেই
এতো আমাদের স্বাধিকার লড়াই।
চল যাই সকল মানুষের মিছিলের পাশে
শান্তির অগ্রদূত বাংলা কবিতা আশ্বাসে।
বাংলা কবিতা আমাদের সঠিক পথের
দিশারী, নিশ্ছিদ্র সতর্কতা সৈনিক কবিতা
সৌহার্দ সম্প্রীতি মানবতার প্রতীক স্বরূপ
আমাদের বাংলাভাষী গর্বের বাংলা কবিতা
হোক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ দেশান্তরের  এই
বাংলা কবিতার  আজ জয় জয় ও জয়কার ।

কবিতা ককটেল

গুচ্ছ কবিতা - শ্যামল সোম
1)
কখন আসবে তুমি? রয়েছি অনন্ত প্রতীক্ষায়
শীত শেষে এই বসন্তে গাছে গাছে পাতা ফুলে
ভরা, নেই পাশে তুমি, যায় ফাগুন রাত বিনিদ্রায়।
2)
কে প্রথম ভালোবেসে ছিলো, তুমি না আমি?
সে গোধূলি লগ্নে রাঙা আলোয় কাছে এসেছি
দু চোখ দু চোখের দিকে তাকিয়ে, ভালোবেসেছি।
3)
ভালোবাসায় সুখের যাতনা সহে সখী ভালবেসেছি
আমার মুগ্ধ দৃষ্টিতে তুমি বোঝ না? কতটা গভীর এ
ভালোবাসা? একবার বল, " আমিও তোমাকে ভালবাসি সোম।"
4)
তোমাকে এত বেশী ভালোবেসি, একান্তে পেতে চাই।
ছুটে যাই, দু হাতে জড়িয়ে, তোমার বুকে কান পেতে শুনি
ঐ ভালোবাসার নদী দু কুল ভাসিয়ে দুর্দান্ত বেগে বহে যায়।
5)
তুমি তো এত নিঠুর ছিলে না, তবে কেন এলে না কাছে
পাছে কে কি বলে? লোকের বলা মুখ কখন বন্ধ করা যায় না?
কিসের বাধা? সব কিছু ছুড়ে ফেলে তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যাবো।

কবির ফেসবুক - https://www.facebook.com/somshyamal?fref=nf
আরও পড়তে - www.kobitacocktail.wordpress.com

এসো পাপের অতলে আনন্দে মাতি

- এসো  পাপের অতলে আনন্দে মাতি

শ্যামল সোম

আজ বর্ষ শেষে এই পানশালায়
তোমরা যুগলে এসো আজ রাতে,
বাহিরে ঝরে যাক অবিরত তুষার পাত,
আর অবিরাম বৃষ্টির সাথে সাথে
নৃত্যরতা যুবতীর ঘাড়ে ঘনিয়ে আসে
তপ্ত ঘন শ্বাস, সারা শরীরে আনাচে-,
ছড়ায় উষ্ণ সুখের পরশ,
রঙ্গিন মায়াময় আলোয় এই সুভাষিত এ
পানশালায় স্বপ্ন এ ভেসে যাওয়ার ছলে,
ছন্দায়িত শরীরের তালে, তালে,
চ্ন্দ্রা লোকে  মন কাড়া জ্যোৎস্নায় এসো -
নাচো -ঘন আলিঙ্গণে পরীদের সাথে-
তাদের দীঘল চোখের মদীর আহ্ববানে,
শিহরিত শরীর আহা কি নিটোল গড়্ন্।
শ্বেতক পোতের ন্যায় দুটি উন্মুখ স্তন,
আকন্ঠ  চুন্বন -সম্ভোগের তীব্র লিপ্সায়--
মন মোহিনীর আন্দলিত জঙ্ঘা,
কাঁপে নাভিমূল,
সাড়া রাত আনন্দে সুধাপান,
এখন -ভুত-ভবিষ্যৎ-অতীত বিলীন,
এই মুহূর্ত গুলো স্বাধীন, কি সুতীব্র  দহন।
লেহন করছে  লোলুভ দৃস্টি, রক্তের
শিরায় শিরায় খেলা করে অমোঘ টান,
উদ্দাম নৃত্যে-আনন্দের স্রোতে-ঊল্লাসে
ভেসে যায় নগ্ন যৌবন, কল্পনায় শিহরণ ;
অনাহ্রাতা কুমারীর সাথে নিষিদ্ধ সাহসী
সহবাস, চেয়ে দেখ খুলে গেছে উন্মুখ
বাজার-কাগজের পাতায় পাতায় রঙিন
বিজ্ঞপন যৌন লিপ্সায়,
বিবাহের ছলে, বলে কৌশলে,
সহবাসের কবলে শহর ও গ্রামে দিন প্রতি দিন ধর্ষণ,
বাজারে বাজারে নানা প্রলোভনের
আয়োজ্ন- সাজের নানা উপকরন,
মলে ম্যালে  উচু মানের বাহারি পোষাক
রঙ্গীন স্বল্প পোষাকে এসো না, 
এই পান শালায়  এবছরের শেষ রাতে,
দামাল সময়ের-
হাতছানি-- এসো, চলে এসো এই -  
পানশালায়, আনন্দে মাতি,
পাপে পূর্ন হোক, এই রাত।

পাগলী, যদি এই ছিল তোর মনে

- পাগলী ,যদি এই ছিল তোর মনে

শ্যামল সোম

পাগলী ,যদি এই ছিল তোর মনে চোখে
ভাষায় পাগলী হাতছানি দিয়ে ডেকে
ইশারায় আমায় আনলি কেন?
এই ভর উষ্ণ দুপুরে নির্জনে-
নিরালায় আম বাগানে বনে?
প্রেমের মন ক্ষণে ক্ষণে উন্মুক্ত
ভোরে ঘুম ঘুম চোখে চোখ পড়তেই
ভূমিকম্প স্পন্দনে উষ্ণ আলিঙ্গনে
আমাদের আলোড়িত দুজনার মন।
সেদিন সেই শরতে শিউলীফুল
ঝরার দিনে সাঁজ-সকালে-।
ঘন বরষায়, বাহিরে অঝরে
ঝরে যায়-তুই শরীরের বাঁধনে
এত জোরে বাঁধলি, বাহু বন্ধনে
এখন মরণ দোলায় দুলছে জীবন--।
সাগরের জলে, প্রাপ্ত ঝিনুক শঙ্খ
ভেজা-ঐ ঊঁকি দিচ্ছে তোর পেলব শরীর।
ঐ শরীরের পরম পরশের আশে,
এই গভীর-গহীণ খাদানে সুড়ঙ্গে
আধো-আধাঁরে, ঘ্রাণ শরীরের সর্পিল
এই পথে-তুই হাত ধরে জড়িয়ে কোমর
আমায় তুই কোথায় আনলি?
এখানে কেউ কোথাও নেই- একা
আমায় ফেলে, তুই কোথায় হারিয়ে গেলি?
পাগলী, এই পাগলী আপ্রাণ ডাকছি তোকে?
চেয়ে দেখ এখন শব হয়ে শুয়ে আছি-
অসীম হীমেল হাওয়ায়-- চোরাবালির স্রোতে
অনু আমার আদরের পাগলী দোহাই তোর,
মধুমিতা তুই মাপ করে দে, এই শেষ বেলায়
কবিতা তুই বিশ্বাস কর, কখনো আর খেলব না,
তোদের সঙ্গে এই ভালোবাসার পাশা খেলা।
ফিরিয়ে দে  আমায় আজ হারানো হৃদয় ত্রাণ
তোদের  কাছে-সেই ফেলে আসা আমার জীবন।