Tuesday, 24 October 2017

শূন্যে ঝুলছে নূপুর পড়া দুটি পা

শূন্যে ঝুলছে নূপুর পরা দুটি পা

শ্যামল সোম

সকাল থেকেই ভীড় জমে মানুষের ঐ আঠারো নম্বর পুরোনো বাড়ির সামনে
হরিপদ বন্ধ  একটি ঘরে খোলা জানালার সামনে হুমড়ি খেতে পড়ছে পুরুষ
প্রৌঢ় পিতৃ সম,  বৃদ্ধ দাদু বয়স্ক  দাদা কাকু ছোট ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল মিতার
সাথে মেয়েটি আঠারো বছরের হাসিখুশি, গান গাইতো পাড়ার জলসাতে,
পড়া শোনা বেশ ভালো কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী, ভলিবল খেলতে ভালো।
এহেন আলো করা রূপবতী গুণবতী এই বন্ধ দরজা ভেতরে শিলিং ফ্যানে
শক্ত দড়ির বাঁধনে নগ্ন দেহে শূন্যে ঝুলছে শুধু দুটি পারে রূপোর বাহারী নূপুর।

" এখন পুলিশ আসেনি দরজা ভাঙা হবে না না ঠিক হবে অমূল্য "

যদি বাঁচানো যেত?

লম্বা জিব দেখলে না?

না না এ দৃশ্য দেখা যায় না !

শত শত মানুষ ছুটে আসছে আশপাশের এলাকার!

এরা মানুষ ? জানোয়ার!

একটি উলঙ্গ  আঠারো বছরের কন্যা সম মেয়ে ! ছিঃ ছিঃ

সামাজিক অবক্ষয়ের নগ্ন চিত্রকল্প

মিতার বাপ হরিপদ  আর কি বলবে শোকাচ্ছন্ন মুহ্যমান স্থবির নির্বাক।

শোকার্ত মানুষের পাশে চা জল খাওয়াতে চেষ্টা করছেন দুচার জন,
হরিপদ এইমাত্র  এই আদরের কন্যার এই করুন পরিনতি তে স্তব্ধ
নির্বাক পাষাণ  মূর্তি ও দুচোখে মরুভূমির হাহাকার।

হঠাৎই সত্তর বছরের মিতার দাদাভাইয়ের চিৎকার করে হুংকার, লাঠি হাতে
জানলার কাছে ভিড় সরাতে তেড়ে যাওয়া -- দাঁত বের করে ফিচেল হাসি ছোকরা পলায়ন।

মিতার মা রমা গর্ভবতী জননী জ্ঞান এখন ফেরেনি মহিলারা ব্যস্ত ছিলেন এর মধ্যে জনৈকা,
" না না এভাবে ফেলে রাখা যায় না এমমবোলেনস গাড়ির ড্রাইভার কে ডাকো"
সেই মুহূর্তেই পুলিশের জীপ পেছনেই হররনhorn বাজাতে ছুটে আসছে।
লোক গুলো ইঁদুরের মতন পালাচ্ছে!
পুলিশের তৎপরতায় দরজা ভেঙে লাশ নামিয়ে বাপ হরিপদ মা রমা কে স্টেচার
মা মেয়ে বাপ মায়ের সাথে শেষ যাত্রা হাসপাতালের মর্গে!

তখন কানাকানি রসাল আলাপ ফিসফাস জ্ঞানের ফোওয়ারা কুৎসিত ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন

মিতার বান্ধবীদের ছলছল চোখে বিলাই জানিয়ে তারা মিয়ার দাদুভাই কাছে বসে দুধ খাওয়াতে !
পাগলে মতন দাদু বুক চাবড়ে কাঁদছেন, গলা ছেড়ে গহিছেন, " আহা এমন দিনকি হবে
তারা, যবে তারা তারা বলে নয়নে  ঝরবে ধারা !"

No comments:

Post a Comment