Tuesday, 20 March 2018

কল্পতরু আমার প্রাণের ঠাকুর

কল্পতরু  আমার প্রাণের ঠাকুর

শ্যামল  সোম

ডুব ডুব রূপ সাগরে আমার মন
তলা তল পাতাল খুঁজলে পবি
পাবি রে প্রেম রত্ন ধন।
ওরে খোঁজ খোঁজ খোঁজ
খুঁজলে পাবি হৃদি মাঝে বৃন্দাবন
দীপ দীপ দীপ জ্ঞানের  বাতি
জবাবে হৃদে অনুক্ষণ।

জীবনের যাত্রা পথে যিনি যুগ যুগান্তর ধরে বাউল প্রেমিকের বেশে এসে আজীবন  কল্পতরু বৃক্ষের
মতন যে  স্মরণাগত, শুদ্ধা ভক্তি, সম্পূর্ণ ভাবে আত্মনিবেদন করে যে যা চেয়েছেন কৃপা করেছেন তিনি।
শিশু গদাই মধ্যে ইষ্ট  দর্শন লাভ হওয়ার পরে সেই  কামার পুকুরে বয়স্ক চিনু শাঁখারী উঁই ঢিপির উপরে বসিয়ে
নিজের হাতে গাঁথা  ফুলের মালা গদাই গলায় পরিয়ে ফুল বেলপাতা দিয়ে পুজো করে ছিলেন।
ধাত্রী মাতা ধনি কামারিনী উপনয়নের সময় তাঁর হাত হতে প্রথম ভিক্ষা নিয়ে ধাত্রী  মায়ের মনোবাঞ্ছা
পূর্ণ করেন।
পরবর্তী  কালে কালে বহু বছর ধরে বহু লোককে কৃপা করেছিলেন।
স্বামী জী লিখছেন আমার প্রভুর MY  Master  তাঁর আধ্যাত্মিক খুবই  উচ্চ  মার্গে অধিষ্ঠিত, যে তিনি
কৃপা করে A  Glance  একবার যদি ঐশ্বরিক দৃষ্টিতে তাকাতেন তৎক্ষণাৎ সেই ব্যক্তির চৈতন্য লাভ হতো।
মদ্যপ  অভিনেতা কালি প্রাসাদ  স্ত্রী শ্রী রামকৃষ্ণ কৃপায় বিশ্ব  জননী শ্রী শ্রী সারদা মাতা ঠাকুরানী ঠাকুরের
পুজো ফুল বেলপাতা অর্পণ  করেন কালি প্রসাদ এর স্ত্রী হাতে, তিনি চৈতন্য  লাভ করেন।
ঠাকুরের ভৈরব,  মদ্যপ নাট্য জ্যোতিষ্ক  গিরিশ ঘোষ ঠাকুরের কৃপায় পরম ভক্ত  হয়ে চৈতন্য লাভ করেন।
বহু শতশত মানুষের কৃপা লাভের অমৃত কথা এই সল্প  পরিসরে সম্ভব নয়।
সুদূর সিন্ধু  প্রভু দয়াল মিশ্র সিন্ধু  প্রদেশের দুইটি ইংরাজী  সংবাদ পত্র পত্রিকার সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন, কাব্য সেন পিতা সমগ্র  পরিবার কৃপা পেয়েছিলেন।
কৃপা পেয়ে ধন্য ধন্য তাঁর সন্তান  তুল্য নিকটস্থ  পারর্ষদ পারিষদ  তাঁর কৃপায় মহান আত্মা আজ পুজিত হচ্ছেন
বিভিন্ন  আশ্রমে মঠে মন্দিরে। তিনি ছিলেন ভগবানের বাবা, এই বাবার কৃপা পেয়ে  পুজিত হচ্ছেন পরম ভক্ত 
দুর্গা চরণ নাগ মহাশয় নারায়ণগঞ্জ কাছেই  বাংলাদেশে।
নব গোপাল,  অঘোর মনি, নটিবিনোদিনী গোপালের মা, রাণী রাসমণি, মথুর মোহন, বিজয় কৃষ্ণ  গোস্বামী ডাঃ সরকার
কে নয়?

বাংলাদেশের  অশ্বিনী দত্ত নেতৃত্ব স্থানীয়,  উত্তর ভারতের বিশিষ্ট পন্ডিত  গৌর শাস্ত্রী
ঠাকুর প্রশ্ন  করেন, " আচ্ছা গৌর, বৈষ্ণব চরণ যে একে, ( নিজেকে দেখিয়ে)  অবতার বলে ?"

গৌর- শুনে চুপ করেই  ভাবছেন - - ঠাকুর শিশুর মতন তাকিয়েই আছেন
গৌর শাস্ত্রী  রেগে বলেন  " ভুল বলেছেন "
ঠাকুর ভয় ভয় ইতস্তত বোধ করছেন।
গৌর--"  ও ছোট করে বলেছেন ?
ঠাকুর- -" কি বলছো গো গৌর শাস্ত্রী ?
গৌর-- আমি জন সমক্ষে  প্রমাণ করার দায়িত্ব  নিজে নিতে পারি। আপনি হচ্ছেন যাঁহার  অংশ থেকে অবতারের
            আবির্ভাব হয়েছিল যুগ যুগ ধরে, আপনি অবতার দের অধিষ্ঠিত পরম ব্রহ্ম স্বরূপ।
ঠাকুর- - বাহবা তুমি তো ছাড়িয়ে গেলে গো, আমি তো বাপু কিছু বুঝি না। গান" আনন্দময়ী হয়ে আমায়
নিরানন্দ  করো না।"

শ্রী রামকৃষ্ণ SWAMIJI  WRITES,  HE IS LOVE , LOVE PERSONIFIED,
ভালোবাসার জমাট মূর্তি মুরতি মুরারি মোহন, পরম ব্রহ্ম, জন্ম লগ্নে কল্পতরু  হবে কৃপা করলেন
পরম ভক্ত  শ্রী ক্ষুদিরাম কে সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, আনন্দ দান করতেন দিব্য জ্যোতি স্বরুপ দেবশিশু
দর্শনে বঞ্চিত  করতেন গাঁয়ের লোক  বিশেষত নারীদের নারী মাত্রই তাঁর কাছে জননী, বলরাম আবার কন্যাকে
নিজে পুজো করেছিলেন, স্ত্রী সারদাদেবী  ফলাহারিনী কালি রুপে  পুজো করেন।
শৈশবে শিবরাত্রির  রাতে যাত্রা পালায় অভিনয়ে শিবের অনু ধ্যানী আত্মস্থ  হবে স্বয়ং  শিব রুপে দর্শন দিয়ে
কৃপা, কৃপা করেছিলেন সুদূর ঐ গান্ধার দেশের প্রভু দিল মিশ্র  খৃষ্টান  ভেতরে ত্যাগের  প্রতীক গৈরিক বসন।

কৃপাসিন্ধু  দীনবন্ধু আজও  প্রতিদিনই সন্ধ্যা আরতি কালিন সময় সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনের বা শ্রমণে
অপার্থিব  ঐশ্বরিক  এক সিন্ধু লহরী  আনন্দে  লোকের মন ভাসিয়ে দেন।

উনিশো ছিয়াশি সালে পয়লা জানুয়ারী বিশেষ  দিনে তাঁর প্রতিশ্রুত প্রেমের বার্তা হাটে হাড়ি  ভেঙে জানিয়েদিলেন
তিনি পরম ব্রক্ষ্ম তিনি সত্য পরশ পাথর স্পর্শে ভক্তদের কৃপা করছিলেন তাঁদের  মনে আনন্দে
ঐশ্বরিক চৈতন্য ক্ষণিকের জন্য  হলেও প্রথমেই  লাভ করলেন ঐ কাশীপুরের উদ্যান বাটিতে দো দোতলার ঘরে 
সুপ্রসন্ন মন উদ্বেলিত  হলেন হরিশ চন্দ  মুস্তাফি চরণ স্পর্শে  মুহুর্তেই চৈতন্য  আনন্দে  চিৎকার - " ওরে এ আনন্দ
আমার ধরে না........! হারায় চন্দ্র  দাশ  অক্ষয়  সেন যিনি কৃপা পেয়ে অসাধারণ  একটি গ্রন্থ  রচনা করেন
" শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পুঁথি  এ আশ্চর্য  গ্রন্থ প্রকাশিত  হওয়ার পরে স্বামিজী  সুদূর  আমেরিকা থেকে উচছসিত  প্রশংসা
করেছিলেন।
স্বামীজি চেয়েছিলেন নির্বিকল্প  সমাধি -শ্রী রামকৃষ্ণ  বলেছিলেন - তুই বট বৃক্ষ  তোর আশ্রয়ে বহু মানুষ উপকৃত হবে।
পৃথিবীর  বিভিন্ন দেশে ব্রাজিল  থেকে শুরু করে নানা দেশের মানুষ কল্পতরু রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম  সেন্টারে বেদান্ত
সোসাইটিতে কৃপা লাভের করে ধন্য হচ্ছেন ।
সেদিনই ছিল পয়লা জানুয়ারী  1886 সাল ছুটির দিন বহু গৃহস্থ  ভক্তদের  সমাবেশ, ঠাকুরের  অসুস্থ জন্য
শোকার্ত  দর্শন  লাভের বঞ্চিত হচ্ছেন, আজ এসেছেন প্রভুর দর্শনে।
অন্তর্যামী রামকৃষ্ণ  বুজতে পেরে রামলাল ও লাটু মহারাজকে বললেন," আজ শরীরটা বেশ ভাল লাগছে চল
নিচে ঐ বাগানে পুকুর পারে গাছের তলায় ওরা সব এসেছে ( ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ণ  করতে ) দর্শন  দিতে আসছেন
সবুজ বনেত দেওয়া টুপি, কোট, চাদর দিয়ে ছড়ি হাতে, পুরুষোত্তম  পরম জ্যোতি স্বরুপ শ্রী  শ্রী রামকৃষ্ণ
হাস্য মুখে দিব্য কান্তি  স্বয়ং  ব্রক্ষ্ম  তাঁর আধ্যাত্মিক রুপ দর্শনেই সমবেত কন্ঠে  ধ্বনিত  হলো " জয় জয় শ্রী রামকৃষ্ণ "
আকাশ বাতাসে প্রতিধ্বনি  আজও  যেন কানে বাজে আনন্দে সরোতে ভেসে যাই।
সবাই  ব্যস্ত  হয়ে চরণ স্পর্শ মুহুর্তেই চৈতন্য লাভের অপার আনন্দ  আনন্দ ই পরম ব্রক্ষ্ম!
নবগোপাল ঘোষকে বললেন " একটু আমার নাম করো তা হলেই হবে -- আজ দক্ষিণ কলকাতার মহা নির্বাণ মঠ
সাক্ষ্য দেয় ।
উপেন  নামে দু’জন কে কৃপা করলেন। বসুমতী প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার  উপেনবাবু অর্থ  প্রাচুর্য সেদিন কল্পতরু
রামকৃষ্ণ কাছ থেকেই  প্রাপ্তি  এই ঐতিহাসিক দিনে এক আশ্চর্য সুখ শান্তি ঐশ্বরিক  আনন্দ  প্রাপ্ত হবে চিৎকার কেউ কাঁদছেন কেউ হাসছেন শিশুর ধেই ধেই করে নাচছেন।
রাম দত্ত চিৎকার  করে ডাকছেন --" ওরে তোরা কে কোথায় আছিস  আয় আয় আমাদের ঠাকুর আজ কল্পতরু
হয়েছেন।
তিনি রান্না ঘরের পাচক সেবকদের হাত ধরে ঠাকুরের  চরণে ফেললেন -- দক্ষিণেশ্বরের মেথর রসিক বৃনতে দাসী
যাঁর চৈতন্য  লাভ হয়েছিল যিনি বলতে পেরেছিলেন শ্রীম মাস্টার মশাইকে --" ধর্ম শাস্ত্র  সব ওঁনার মুখে মুখে "
কথামৃত পড়া প্রথমেই আমি চমকে উঠলাম কৈশোরে এ কি করে সম্ভব- - প্রথম  দর্শনে  সুখ দেব দেখছেন
যিনি পরীক্ষিত রাজাকে শোনাচ্ছেন যেন শ্রী চৈতন্য দেব ঐশ্বরিক প্রসঙ্গ  করছেন।
" হাঁ  গো গিরিশ তুমিই যে (এই প্রথম  আমি বলেন আজ, বিশ্ব জননী কেও বলেছিলেন ঠাকুরের নিজের ছবি
দেখিয়ে  এই ছবি একদিন ঘরে ঘরে পুজিত হবে এ কৃপা আমরা পেয়েছি আশীর্বাদ করেছেন চলেছেন---!)
আমার  সম্পর্কে এত বলে বেড়াও তা তুমি বাপু কি দেখলে এই আমার মধ্যে ?
প্রশ্ন শুনে খ্যাতনামা  অভিনেতা গিরিশ চন্দ বিহ্বল হঠাৎই চরণ স্পর্শ হু হু করে শিশুর মতন কাঁদতে কাঁদতে
বললেন, " হে প্রভু আমার  কি সাধ্য যিনি পরম ব্রক্ষ্ম যাঁর কথা মহর্ষি  বাল্মীকি বা স্বয়ং ব্যাসদেব লিখেও
- আমি সামান্য  নাট্যকার কি বলতে পারি চরণে লুটিয়ে পড়লেন সবাই বাকরুদ্ধ !
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের বাহ্যজ্ঞান শূণ্য  হয়ে  বলরাম বসুর বাড়িতে দর্শন দিয়েছিলেন অতীতে -!
আজ ও শ্রী  শ্রী রামকৃষ্ণদেবের সমাধিস্থ হইলেন- - সমবেত ভক্তদের  আলোকিত বলায়ে জ্যোতিষ্ক স্বরূপ
তাঁকে দর্শন করে আনন্দিত।
কিছুক্ষণ পরেই  আত্মস্থ  হয়ে  বললেন- - " শাশ্বত সত্য স্রষ্টার বাণী "
" আশীর্বাদ করি তোমাদের চৈতন্য  হউক "

Monday, 19 March 2018

শঙ্খ চিলের পারাপার

শ্যামল সোমের
সৃজনে

শঙ্খচিলের পারাপার

পরিচয় লিপি সাথে আবহ সঙ্গীত সুর
বাজে এবং সাথে ধারাভাষ্য চলবে।

ধন ধান্য এ পুস্পে ভরা
আমাদেরই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে দেশ এক
সকল দেশের সেরা
ও যে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে যে
স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে
পাবে নাকো তুমি
আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি।
পরিচয়  লিপি  সাথে সাথে--

ধারাভাষ্য --

হাঁ, ইনি হচ্ছেন, শিবনাথ ভট্টাচার্য, গ্রামের  খুবই  জনপ্রিয় ভালো মানুষ
পুত্র হারা, কন্যার অপহরণ, ধর্ষিতা  নাতনীর  শোকে দুঃখে হৃদয়ের মর্ম  ব্যথায় মুজড়ে ওঠে মাঝে।
পুত্র সন্তান সোমনাথ ভট্টাচার্য এর  নিহত  লাশের  সামনে  শোক স্তব্ধ পাষাণ মূর্তি নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে  রয়েছেন,  হ্যারিকেন কাচে পোকা গুলো ঘোরা ফেরা করছে।

1946 দাঙ্গায় ধর্মের ধ্বজাধারী মুষ্টিমেয় শক্তিশালী চতুর মানুষের কারসাজিতে সাধারণত ধর্ম ভীরু অর্ধ শিক্ষিত দরিদ্র মানুষ ভাষা  ঐ বাংলা ভাষা  হলেও মুসলমান সমাজ উপেক্ষিত হওয়ার জন্য  এবং  কংগ্রেস  সাইমন কমিশনের সদস্যদের সুপারিশ --  হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি  বজায় রাখতে  বিভিন্ন প্রান্তে রাজ্য-- রাজ্যগুলির বিভিন্ন  ভাগে বিভক্ত করার সুপারিশ  কংগ্রেস  প্রত্যাখান করে, শুরু হল  আমাদের সংগ্রাম  চলছে  Direct Action মুসলিম লীগ ডাক দেয়  সেই ভয়ংকর  দিন ইতিহাসের কৃষ্ণ  অধ্যায়। নিশ্চয়ই  সৌভ্রাতৃত্ব সৌজন্য বোধ ছিল তা নইলে কেন আজও  ইতিহাস গ্রন্থের পাতায়  লেখা আছে ভাতৃঘাতি দাঙ্গা।
কারন বর্তমানে  বা আজ থেকে  সত্তরবছর  পূর্ব  বা একশো বছর আগে এই বাঙালী জাতি  ঐ জাত পাতে  শূদ্র  নমশূদ্র  ও  ছোটজাত  বলে অসহ্য যন্ত্রণা প্রচন্ড মানসিক  অত্যাচার --ঘৃণা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য  অমানবিক ব্যাবহার অতীতের কলংময় ঘটনা বহুল
অত্যাচার, দাসত্ব যৌন নির্যাতনের  শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়  তৎকালীন  বাদশা নবাব আমলেও বহাল তবিয়াতে ছিলো, বিশৃঙ্খলা, পারস্পরিক সহানুভূতি নেই প্রেম
নেই গৌর কিশোর  ঘোষের হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে  প্রেম নেই উপন্যাসে বহু যুগ
লিখে রেখে গেছেন।
হচ্ছি  অতীতে  ও

প্রচলিত
যন্ত্রনায়  অবস্থা

নেতা মোহাম্মদ জিন্নাহর দ্বি-জাতিতত্বের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তান
মুক্তাগাছা গ্রামের ব্রাহ্মণ  কয়েক জন হিন্দু  অবস্থাপন্ন  পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয়  পুজো পাঠ, বিবাহ ও যজমানের কৃপায় ও গাঁয়ের পাঠশালায় পড়িয়ে

ক্ষণ

ব্রাক্ষমণ

জ্বলছে  আগুনের শিখাশিখায় দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন পুড়ছে ঘর বাড়ি, পুড়িয়ে দিচ্ছে আগুনে ধানের গোলা -- গোয়াল ঘর, রসুই ঘর, গাছে গাছে  আগুন ভেঙে পড়ছে আগুনে পোড়া ডাল ঘরের চাল -- গরুরা দড়ির  বাঁধন ছিঁড়ে  পালাতে চাইছে।
একদল দুষ্কৃতী লুঠপাট চালিয়ে যাচ্ছে, দাঙ্গায় দাঙ্গা কারী  মশাল হাতে  অতর্কিতে
ঝাঁপিয়ে পড়ে খুন করছে পরস্পরকে দুই সম্প্রদায় মানুষ চোখের বদলে চোখ চাই।
দখল চাই, ধর্ষিতা কিশোরীর দেহ পড়ে রয়েছে ভাঙা ঘরের উঠানে।রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ  শুধুই  মুখ গুলো পালটে যাচ্ছে।
বৃদ্ধ ঘরের খুঁটি ধরে কাঁদছে অঝরে আকুল হয়ে পোড়া ঘর দোর বিধস্ত  অবস্থায় -- গান ভেসে আসছে -

" - কাঁদালে তুমি মোরে আঘাতে আঘাতে বারে বারে
অনলে পুড়েছে ঘর, পুড়েছ বাহিরে  অন্তরে অন্তরে।
জননীর যাতনায় হাহাকার শুনি সে আর্তনাদ
কেমনে সে ব্যথা বেদনা  সহিবো বলো হে নাথ।
এ জন্মভূমি ছেড়ে দেশান্তরে মন যেতে  নাহি চায়
মানুষের ভয়ে মানুষের পলায়ন না কী চির বিদায়।
কেমনে পশিবো শিকড় ছেঁড়ার যাতনা এত বেদনা
আকুল নয়নে কেঁদে ওঠে প্রাণ, প্রভু সহে না সহে না।
গোধূলি গগনে মেঘ আকাশে আকাশে গিয়েছে ছেয়ে
শেষ বিদায়ের লগ্নে কেমনে বাইবো এ মোর ভাঙা খেয়া।

শীলা আজও তোমার প্রত্যাশায় প্রতীক্ষায় আছি

শীলা আজও  প্রত্যাশায়  আছি

বাঁশিওয়ালা শ্যামল  সোম

বহু বছর হয়ে গেল পার
ওপারে ধানমন্ডিতে তুমি,
এপারে কোলকাতায় প্রাণের
শহরে City Of Joy উৎসবের
শহরের পশ্চিমে ডায়মন্ড পার্ক
একাকী বাস, বহুজনের মাঝেও
বড় একাকীত্ব  বোধ হয়, শিথিল
শরীর, মন বসে না কোন কাজে ?
কেন অপার  বিষাদে বিষন্নতার
ছোঁয়ায় মেঘলা আকাশে দিকে
চেয়ে  ভাবি মেঘ হয়ে  উড়ে যাই।
তোমার  কাছে, পরক্ষণেই মনে
পড়ে যায় তুমি  অন্যের সংসারে
সুগৃহীনী সহধর্মিণী, আচ্ছা  শীলা
তোমার সব কিছুই দখল নিয়েছেন
তোমার  স্বামী, মন, আত্মা, হৃদয়,
কি ভাবে  আমার কাছে গচ্ছিত রেখে
আবার আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে
মন, হৃদয়, আত্মা দিলে কি ভাবে?
এ তো শরীর নয়, বসন নয়, চুম্বন নয় ?
মন মননের ঘাত প্রতিঘাতে রক্তাক্ত
হৃদয়ে নিয়ত রক্ত ক্ষরণ, তবু বলবো
নারীর তোমার সে সময়ে প্রেম সে
মূহুর্তে শ্যামলকে ভালোবেসে
জড়িয়ে ধরে বলে ছিলে, " শীলা
কি বলেছিলে, মনে আছি ? ইচ্ছে করে
ভুলে গেছ, স্মৃতি বড় বেদনার, কে আর
হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে?
জানো শীলা আজও  প্রত্যাশায় আছি
যদি কোন কোন মূহুর্তে তোমাকে দেখি
তোমার  ও দু চোখের ভাষায় পড়ে নেবো
" যদি প্রেম দিলে না প্রাণে কেন ভোরের
আকাশ ভরে দিলে এমন গানে গানে ! "

ভালো মানুষের খোঁজে বাংলাদেশে

ভালো মানুষের
খোঁজে বাংলাদেশে

শ্যামল  সোম

আমি মুগ্ধ হয়ে যাই 
এই ব্যক্তির সৌজন্য 
বোধ, অমলিন বিশাল
হৃদয়ের প্রাণের মানুষ,
ওনার সাথে কথাবার্তায়, 
জ্ঞনের পরিচয়, চিহ্ন
চিন্তনের আলোড়ন 
তোলেন আমার মগজে।
ভালো মানুষের সংখ্যা
অনেক কম আসছে।
ব্যথিত হৃদয়ে ক্ষতে রক্ত 
ক্ষরণে  প্রলেপ দেন
অকৃত্রিম ভালবাসা ভালো
মানুষের ভালোবাসা।
প্রিয় বন্ধু ব্যবহারের পরিচয় 
পাওয়া গেল, ভীষণ
ভীষণ প্রেমের উষ্ণতায় ভরে
গেল আমার হৃদয়
এখনও  এ  পৃথিবীতে  ভালো 
মানুষ আছেন।
আমার এই বন্ধু  মুজিবুল 
হক সাহেব বাড়ি বসে,
নানা প্রকার, সাহিত্য,  দর্শন, 
ধর্ম চর্চা নানা প্রসঙ্গ
আলোচনায় ভীষণ 
আনন্দ পেলাম।
আজ এই চট্টগ্রাম  এক
ভালো মানুষের সাথে সাক্ষাৎ
করে জানলাম,  ভালো
মানুষের প্রত্যাশায় ভালো
মানুষের খোঁজে এ বাংলাদেশে 
আসা বিভিন্ন প্রান্তে
জেলায় জেলায় পরিশ্রম করে
পায়ে হেঁটে  খুঁজে  ফেরা
বহু ভালো মানুষে সংস্পর্শে
এসে ধন্য হলো আমার মন
গত একমাস ধরে  ভালো মানুষের 
খোঁজা আমার  সার্থক হলো।

ফিরে গেছে প্রেম

ফিরে গেছে প্রেম

শ্যামল  সোম

একা সম্পূর্ণ একাকী
এ নির্জনে সৈকতের
বালুকা বেলায়--
বহু দূর হতে বেদনায় নীল হয়ে, 
ধূসর স্মৃতি নিয়ে ছুটে আসে ঢেউয়ের
ডাকে সাড়া দিয়ে ভেসে চলি
সাগরের নোনা জলে,
নয়নের জলে ভেসে যাই 
ঢেউ তালে তালে।
শুনি তোমারি গান,
" কেন চোখের জলে ভিজিয়ে দিলেম না,
পথের ধুলো যত কে জানিত আসবে তুমি
গো অনাহূত মতো।"
মণিমালা, রাজকন্যা রূপকথার
মেঘের দেশ থেকে পরী হয়ে
ডানা মেলে উড়ে এসে বসে কাছে,
দু হাত বাড়িয়ে
কেন সেদিন জড়িয়ে ধরে ছিলে বুকে ?
প্রেম এসেছিলো নীরবে,
ঘন বর্ষণে হৃদি নন্দনে
বৃষ্টির জলে ভিজে নেয়ে
সেই মেয়ে, চেয়ে হেসেছিল
বিমুগ্ধ নয়নে,
অপার বিস্ময়ে
তাকিয়ে দেখি একি
মনি আর মুক্ত কি ভাবে
ঝরে চোখের পাতা হতে
সিক্ত শরীরের মায়াবী ছন্দে,
স্নিগ্ধ চোখের তারায়।
সাগরের অতল জলের
আহ্বানে দূরে বহু দূরে অনন্ত গভীরে
মৃত্যুর শীতল স্পর্শের
অনুভবে ভেসে যাই
নিয়ে তোমারি স্মৃতি
ফিরে যাওয়া প্রেম, 
বিদায় ! 
হে প্রেম বিদায়!

একটি চুম্বনে র জন্য

একটি চুম্বনের জন্য

বাঁশিওয়ালা

ভালোবেসে, ভালোবেসেছি তোমাকে
কাছে আসতে হয়েছে  দেরী, পথে পথে
চিনে আসতে গোলক ধাঁধায় ঘুরেছি কত।
অবশেষে পথে ঐ নদীর  নিশানা দেখে মনে
হলো ঐ তো সেই মন্দাকিনী নদী, ঐ স্রোতে
দুজনে এক সাথে সানন্দ, দিয়েছিলাম ডুব।
একা আমি ভেসে গেছি আকুল  দোরিয়ায়
কুল এসে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ি ঘাসের পরে।
হঠাৎ মনে পড়ে গেল  তোমার  কথা মহুয়া
তোমার  খোঁজে বের হয়ে নানা জায়গায়
ঘুরে  এহেন  এই ছোট্ট  ফুলপুর গাঁয়ের এক
বাগানে ঘেরা বাড়ির আঙিনায় তোমাকে
ফুলের গাছে গাছে জলের ঝাড়ি দিয়ে জল
দিতে দেখে, বিষ্ময়ে একদৃষ্টে  তাকিয়ে আছি,
মহুয়া তুমি  আমাকে  দেখে ছুটে এসে দুহাতে
জড়িয়ে ধরে বললে, " বাঁশিওয়ালা কোথায় তুমি
হারিয়ে গেছিলে ? আমাকে একা ফেলে," মহুয়া
তোমার অশ্রুধারায় ভিজে যায় আমার হৃদয়
না ! আমার হলুদ পাঞ্জাবী, তোমার অপলক চোখ
দিকে তাকিয়েই, দেখি তির তির করে  কাঁপছে ঠোঁট
অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় একটি চুম্বনের জন্যে -- !
সান্নিধ্যে দিয়েছিলেম তোমাকে -- ! সাথে--
তোমার  গাছের, অনাহ্রাতা একটি রক্ত  গোলাপ।

শৈশবের স্মৃতি আমার বালি

শৈশবের স্মৃতি  আমার বালি

বাঁশিওয়ালা  শ্যামল সোম

চোখের বালি, আমার বালি
শৈশবের খেলার সাথি,
দুধ সাদা শুভ্র  ফ্রকে, সাদা রঙের
গোল টুপি এক মাথা রেশমী চুলে
বকুল ফুলের গন্ধ, আলতা রাঙানো
ছোট্ট ছোট্ট  পায়ে রুপোর নুপুরের ছন্দ
যখন আমাকে দেখে দৌড়ে ছুটে আসে।
আমার  শিশু চোখে সবপনের পরী নামে
দূরে ঐ নীলিমায় নীল আকাশে ভেসে ভেসে
বালি, নাম বলাকা পরী ডানা মেলে উড়ে আসে।
বালি  এসে ডাকে মৃদু স্বরে কানের কাছে মুখ এনে
" সোম  এই সোম  চোখ মেলে  চেয়ে দেখ, দেখ আমি
এসে গেছি, ওঠ,  উঠে পর, ঘরের বাইরে  আয়," হাত আলতো
করে ধরে, বলাকা, আমার  বালি নিশি রাতে, জ্যোৎস্নায়  আলোয়
আলোকিত রাতের নকশী কাঁথার মাঠের সোনালী ফসলের পঠ ভূমিকায়
অবতীর্ণ হয়েছে যেন বেহেশত ভূস্বর্গ হতে এক  অফূষ্পিঠত  শ্বেত পদ্ম ফুল
ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে পূর্ণ  রূপে, বহু দূর হতে ভেসে  অপূর্ব সুন্দর  এক মনমাতানো
সুরের মূর্ছনায় আকাশে বাতাসে সঙ্গীতের তালে তালে, নৃত্যের ছন্দে  আনন্দে মেতে
উঠছে আমার  বালি, " নৃত্যের  মুদ্রায় দু হাত তুলে, " কোথাও  আমার  হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে!"
এত বয়সে বেলা  শেষে শৈশবের স্মৃতি হাতড়ে হাতড়ে বেড়াই,
ঐ মৃত্যুর  অপেক্ষায় আছি।

এই মেয়ে তোর নিজের বাড়ি কৈ


এই মেয়ে তোর নিজের বাড়ি কৈ?

শ্যাম ল সোম

ছোট মেয়ে বেলায় বপের বাড়ি, সায়না হলে শ্বশুর বাড়ি,
ছোট বেলায় মা মরলে মামার বাড়ি, বর
গেলে ছেলের বাড়ি,
স্বামীর সাজানো ফ্ল্যাটে, তোর পছন্দের
বাহারী দেওয়াল ঘড়ি,
রাত বাড়ছে রাত বাড়ছে, বরের অপেক্ষায়
কাটছে নির্জন নিশীত
রাত, রাত রাড়লেই
ভয়ে ভয়ে গুটি গুটি পায়ে সোহাগী! স্বামীর
খোঁজে, তুই এলি ব ড় রাস্তায়। সেই সোয়ামী তালাক
দিলে, মেরে
তাড়িয়ে দিলে -কিংবা কেরসিন ঢেলে পুড়িয়ে দিলে, আধ পোড়া
শরীর নিয়ে ফিরবি কোথায় ?
আবার সেই বাপের
বাড়ি, দাদার বাড়ি,
দাদার বউর মুখ ঝাম টা আঁকা বেঁকা কথা; কেবল
কথারফুল ঝুড়ি,
ফের করেছিস বরের সাথে আড়ি, তোকে বলিহারী !
এই যে এখন
ঝোঁকে মাথায় ছাড়া ছাড়ি, যাবি কোথায় সেই
সে প্রেমিকের বাড়ি,
হায়রে পোড়া কপালী, এই তো মেয়ে মানুষের জীবন,
যার হাত ধরে
ঘর ছাড়লি -বাড়ি ছেড়ে পালালি, ভালো দাঁও
পেয়ে সে-ই তোকে বেঁচে, দিলো।
এখন গতর ভাঙ্গিয়ে বহাল তবিয়াতেই আছিস
হাড়কাটা গলির
বাড়িওয়ালীর মাসীর বাড়ি।
এই অনেক বছরই তো হলো এই পরের বাড়ি পড়ে থাকা,
হাতে পায়ে ধরে,
শরীরের ধকল সহে; ওমা এভাবে আর কত দিন থাকবি?
এই মেয়ে তুই পড়,
ভালো করে পড়, পরে চাকরী করবি,
গাড়ি কিনবি এবার ওমা
তুই একটা,
নিজের বাড়ি গড় ;
বাড়ি সাথে লাগোয়া বাগানে ঐদেখ
কেমন ফুল ফুটছে তোর বাগানে।

Thursday, 8 March 2018

চল পাগলি পালাই

চল পাগলী পালাই   

শ্যামল  সোম বাঁশিওয়ালা

হেমন্তে গহীন অরণ্যে
পিঁউ কাঁহা পাখি ডাকে
সুন্দরবনে চলরে পাগলী
আজ শীতার্ত রাতেই
আজ রাতেই চল পাগলী পালাই
আর কত কাল এ নিঃসঙ্গ কাটাই।
জাত বয়স ধর্ম বিস্ফারিত স্বদেশ
পরবাসে দুজনে দুজনার  প্রবাসে
পরস্পরের  থেকে বিছিন্ন প্রয়াসে।
সামাজিক কঠোর শাস্তির খড়্গ এ
সালিশী সভায় কোন বক্তব্য না শুনেই
গণ প্রহার গাছে বেঁধে প্রেমিকের ক্রোধ
প্রেমিকাকে গণধর্ষণ, কিসের প্রতিশোধ
প্রতিদিনই প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত গ্লানিময়
মানবিকতার বিরুদ্ধেই অমানুষদের নিত্য   
প্রতিরোধ  অহংকারের হুংকার  আস্ফালন
আধুনিক এই শহরের যান্ত্রিক যাপিত জীবন।
প্রতিবেশীর নিঃসহায় নিপীড়িত নিঃসঙ্গ
স্পৃহা হীন উদাসীন স্বার্থপর  আত্মীয় স্বজন
 এ তো জীবনের প্রহসন, মুক্তির আস্বাদন
নিজস্ব  আমাদের পরমাণু শক্তির কোপনলে
 ধ্বংসের  আগেই চলরে পাগলী সেই গহিন অরণ্যে
 হিমালয়ের গুহায় প্রস্তর যুগে ফিরে
আরণ্যক জীবন যাপন করতেই
চলরে এবার পাগলী পালাই,
এতো আমাদের স্বাধিকার লড়াই।
চল যাই সকল মানুষের মিছিলের পাশে
শান্তির অগ্রদূত বাংলা কবিতা আশ্বাসে।
বাংলা কবিতা আমাদের সঠিক পথের
দিশারী, নিশ্ছিদ্র সতর্কতা সৈনিক কবিতা
সৌহার্দ সম্প্রীতি মানবতার প্রতীক স্বরূপ
আমাদের বাংলাভাষী গর্বের বাংলা কবিতা
হোক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ দেশান্তরের  এই
বাংলা কবিতার  আজ জয় জয় ও জয়কার । 

সাঞ্জনা তুমি ফিরে গেছো

 সাঞ্জনা  তুমি ফিরে গেছো

কবি- শ্যামল সোম 

ঘনবর্ষায় অঝরে ঝরছে বৃষ্টি,
ঝিলের পাড়ে গাছের তলায়
তোমার চোখে চোখ রাখতেই
দেখে  ছিলাম আমার স র্বনাশ;
বাদলা হাওয়ায় থরথরিয়ে
কাঁপছিল তোমার সোনার বরণ শরীর,
সারা মুখে লাজে রাঙা-আলোর হাসি,
অপরূপ রুপের এই মাধূরী
আকাশে ঝলসে উঠছে বিদ্যূৎ  
শিখা আলোয় আলোময় চারিদিক।
বাজ প্ড়ার আওয়াজ শুনে ভয়ে
তুমি কান চেপেছো, দুহাত বা ড়িয়ে
 দিলাম তোমার দিকে, ছুটে এসে
বুকে জোরে জ ড়িয়ে ধরলে আমায়।
শ্রাবণের ধারার মতো অবিরাম ঝরছিলো জল, 
এত দিনের সব অভিমান অনুযোগ,
অপরাধ-যাতনা অশ্রু আর বৃষ্টিতে ধূয়ে যায়, 
গভীর চুম্বনে--তোমার এতদিনের সব
দুঃখ,কষ্ট, ক্লেশ, তপ্ত মাটির সব শুষে নিলাম।
নির্জন অলকানম্দা নদীর ধারে,
বরফ ঘেরা ঐ নীলক্ন্ঠ পাহাড়ের নীচে
পাইন বনে সবুজ বুগিয়াল এরই মাঝে
লতায় পাতায় দুজনে ঘর বেঁধেছি।
দোরে দোরে -ফেরী করে ফিরতাম
বনের ফুল ফল আর পিঠ বোঝাই কাঠ,
রঙ বেরঙের বাহারী ঘাগরা,
আসমানি রঙের কাঁচুলি,
রঙিন ফিতেয় বিনুনী
সুরমায় চোখ আঁকা কপালে সোনালী টিপ !
তুমি দুয়ার ধরে আছো দাঁড়িয়ে-
দূর থেকে তোমায় দেখে পিঠের
বোঝা ছুড়ে ফেলে;
আমি এক দৌড়ে এসে
শক্ত হাতে জ ড়িয়ে ধরে
তোমায় আমি শূণ্যে নিয়ে
বন বন করে ঘুরিয়ে দিয়ে
নরম ঘাসে দুজনে আছাড়ে
পরে সে এক আশ্চয সুখের পরশে হারিয়ে গেলাম।
কাটল দিন বছর গেল; পাগল
করার শীতের মাঝে আগুন জেলেও হয়না গরম!
শীতল দিনে শিথিল হলো প্রেম,
হায়! ভালোবাসা এ যাতনায় চির তরে হারিয়ে গেল।