শ্যামল সোমের
সৃজনে
শঙ্খচিলের পারাপার
পরিচয় লিপি সাথে আবহ সঙ্গীত সুর
বাজে এবং সাথে ধারাভাষ্য চলবে।
ধন ধান্য এ পুস্পে ভরা
আমাদেরই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে দেশ এক
সকল দেশের সেরা
ও যে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে যে
স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে
পাবে নাকো তুমি
আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি।
পরিচয় লিপি সাথে সাথে--
ধারাভাষ্য --
হাঁ, ইনি হচ্ছেন, শিবনাথ ভট্টাচার্য, গ্রামের খুবই জনপ্রিয় ভালো মানুষ
পুত্র হারা, কন্যার অপহরণ, ধর্ষিতা নাতনীর শোকে দুঃখে হৃদয়ের মর্ম ব্যথায় মুজড়ে ওঠে মাঝে।
পুত্র সন্তান সোমনাথ ভট্টাচার্য এর নিহত লাশের সামনে শোক স্তব্ধ পাষাণ মূর্তি নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছেন, হ্যারিকেন কাচে পোকা গুলো ঘোরা ফেরা করছে।
1946 দাঙ্গায় ধর্মের ধ্বজাধারী মুষ্টিমেয় শক্তিশালী চতুর মানুষের কারসাজিতে সাধারণত ধর্ম ভীরু অর্ধ শিক্ষিত দরিদ্র মানুষ ভাষা ঐ বাংলা ভাষা হলেও মুসলমান সমাজ উপেক্ষিত হওয়ার জন্য এবং কংগ্রেস সাইমন কমিশনের সদস্যদের সুপারিশ -- হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিভিন্ন প্রান্তে রাজ্য-- রাজ্যগুলির বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করার সুপারিশ কংগ্রেস প্রত্যাখান করে, শুরু হল আমাদের সংগ্রাম চলছে Direct Action মুসলিম লীগ ডাক দেয় সেই ভয়ংকর দিন ইতিহাসের কৃষ্ণ অধ্যায়। নিশ্চয়ই সৌভ্রাতৃত্ব সৌজন্য বোধ ছিল তা নইলে কেন আজও ইতিহাস গ্রন্থের পাতায় লেখা আছে ভাতৃঘাতি দাঙ্গা।
কারন বর্তমানে বা আজ থেকে সত্তরবছর পূর্ব বা একশো বছর আগে এই বাঙালী জাতি ঐ জাত পাতে শূদ্র নমশূদ্র ও ছোটজাত বলে অসহ্য যন্ত্রণা প্রচন্ড মানসিক অত্যাচার --ঘৃণা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য অমানবিক ব্যাবহার অতীতের কলংময় ঘটনা বহুল
অত্যাচার, দাসত্ব যৌন নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তৎকালীন বাদশা নবাব আমলেও বহাল তবিয়াতে ছিলো, বিশৃঙ্খলা, পারস্পরিক সহানুভূতি নেই প্রেম
নেই গৌর কিশোর ঘোষের হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে প্রেম নেই উপন্যাসে বহু যুগ
লিখে রেখে গেছেন।
হচ্ছি অতীতে ও
প্রচলিত
যন্ত্রনায় অবস্থা
নেতা মোহাম্মদ জিন্নাহর দ্বি-জাতিতত্বের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তান
মুক্তাগাছা গ্রামের ব্রাহ্মণ কয়েক জন হিন্দু অবস্থাপন্ন পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় পুজো পাঠ, বিবাহ ও যজমানের কৃপায় ও গাঁয়ের পাঠশালায় পড়িয়ে
ক্ষণ
ব্রাক্ষমণ
জ্বলছে আগুনের শিখাশিখায় দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন পুড়ছে ঘর বাড়ি, পুড়িয়ে দিচ্ছে আগুনে ধানের গোলা -- গোয়াল ঘর, রসুই ঘর, গাছে গাছে আগুন ভেঙে পড়ছে আগুনে পোড়া ডাল ঘরের চাল -- গরুরা দড়ির বাঁধন ছিঁড়ে পালাতে চাইছে।
একদল দুষ্কৃতী লুঠপাট চালিয়ে যাচ্ছে, দাঙ্গায় দাঙ্গা কারী মশাল হাতে অতর্কিতে
ঝাঁপিয়ে পড়ে খুন করছে পরস্পরকে দুই সম্প্রদায় মানুষ চোখের বদলে চোখ চাই।
দখল চাই, ধর্ষিতা কিশোরীর দেহ পড়ে রয়েছে ভাঙা ঘরের উঠানে।রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ শুধুই মুখ গুলো পালটে যাচ্ছে।
বৃদ্ধ ঘরের খুঁটি ধরে কাঁদছে অঝরে আকুল হয়ে পোড়া ঘর দোর বিধস্ত অবস্থায় -- গান ভেসে আসছে -
" - কাঁদালে তুমি মোরে আঘাতে আঘাতে বারে বারে
অনলে পুড়েছে ঘর, পুড়েছ বাহিরে অন্তরে অন্তরে।
জননীর যাতনায় হাহাকার শুনি সে আর্তনাদ
কেমনে সে ব্যথা বেদনা সহিবো বলো হে নাথ।
এ জন্মভূমি ছেড়ে দেশান্তরে মন যেতে নাহি চায়
মানুষের ভয়ে মানুষের পলায়ন না কী চির বিদায়।
কেমনে পশিবো শিকড় ছেঁড়ার যাতনা এত বেদনা
আকুল নয়নে কেঁদে ওঠে প্রাণ, প্রভু সহে না সহে না।
গোধূলি গগনে মেঘ আকাশে আকাশে গিয়েছে ছেয়ে
শেষ বিদায়ের লগ্নে কেমনে বাইবো এ মোর ভাঙা খেয়া।
No comments:
Post a Comment