Sunday, 27 May 2018

লতায় পাতায় চারুলতা

লতায়  পাতায় চারুলতা

শ্যামল সোম

তুমিই আমার গোপন প্রেম
তোমাকে  ভালোবাসিলেম
এ প্রেমে মমনে গাঁথা হলেম।
তোমার চিন্তনে, প্রতিক্ষণ
প্রতীক্ষায় রইলাম কথাশিল্পী
না না নেই কোন প্রত্যাশা এ
পূরণ অভিলাষ, ভালোবাসা
একান্ত আত্মা আত্মীয় স্বজন।
সে তুমি তোমাকে শুধু দূর থেকে
মুগ্ধ বিস্ময়ে হয়ে তাকিয়ে দেখি
ছবি সে তুমি না কায়াহীন ছায়া?
না  কাছে যাওয়ার নেই সম্ভবনা
সত্যি সত্যি সত্যি না নেই  কখনই।
লেখায় প্রেমে পড়া ঝর্না তখনই
শব্দ পুষ্প চয়ন অদ্ভুত  বৃষ্টি ঝরা।
বিনিদ্র রাতে নীরবে নিভৃতে কাঁদে
প্রাণ ব্যথা বেদনা নৈরাশ্যের মাঝে
আনন্দে আপ্লুত  তোমাকে লেখা
পঠনে আলো জ্বলে  বিবর্ণ হৃদয়ে 
গোধূলি  আকাশে  কাব্যে  লীন,
কাব্যময়তা ছন্দময় প্রেম অমলিন
ভালোবাসায়  চিত্রকল্পে ভরিয়ে দেয় 
মগ্নতায় ভালোবাসার ছোঁয়ায় স্বপন।

কবি নও তুমি অবলা নারী

কবি নও তুমি অবলা নারী

শ্যামল সোম

তোমার কাব্যময়তায় মগ্ন
মন ছুঁয়ে যায় অনবদ্য
লিখনে কাব্যে শব্দের
অক্ষরে অক্ষরে জ্বালায়
সুপ্ত ভাবনাকে প্রকাশের
আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে
নির্মূল করো উদ্ধত পৌরুষ।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধ
গড়ে উঠুক কাব্য লিখনে।
পুরুষ তান্ত্রিক সমাজের
অবক্ষয়ের পথে ধাবিত,
আজ কলম হোক তোমার
হাতিয়ার  শব্দের অক্ষরে,
প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে
বিবর্তন একে রক্ষা করো।
বিদ্ধ করো অন্যায় সহিংসতা,
গর্জে উঠুক কাব্য তীক্ষ্ম বাণ।
হে কবি ও সাহিত্যের অঙ্গনে
কাণ্ডারী সাহিত্য জগতে প্রাণে
উজ্বল নক্ষত্র জ্বলবে মমনে,
পাঠকের হৃদয়ে ঋদ্ধ হওয়া
প্রতিটি কবিতায় মুগ্ধতায় মন,
নিরন্তর শুভ কামনা রইলো।

বেশি দূরে যেও নাকো তুমি

বেশি দূর যেও নাকো তুমি

শ্যামল সোম

সাম্রাজ্যবাদীদের শক্তি প্রদর্শন
দেশে দেশে উপনিবেশ স্থাপন
বিলুপ্ত সভ্যতা সংকটে ভুগছে
মানুষের বৃথা আস্ফালন গেছে,
মানবিকতা সমর শয্যায় নীরব।
কতদূর যেতে পারে সে মানুষ
আকাশে ভেসে যায় ঐ ফানুষ,
কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে পারো
পৃথিবীর বাহিরে ফিরে না এলে
মহাশূন্যে কখন হয় কি বিলীন
মলিন হয়ে মুখ নিয়ে ফেরে সে
পালিয়ে ছিল কান্ডজ্ঞান প্রেমে।
ভালোবাসার ধোঁকা শুঁয়োপোকা
কালো টেরেনটুলা মাকড়সা এ
কি অতৃপ্ত আত্মা ফিরছে ঘরে
সংসারে অভাব অনটনে পড়ে
ফাঁদে ফেলে মায়াজালে বিভোর
দূরে কোথাও হারিয়ে যাওয়া তোর
এই বাসনা পূরণ করতে বেশীদূর
আর যেও না, হয়তো ফিরতে হবে
মান সম্মান ইজ্জত সব হারিয়ে কবে
শুনেছে পুরুষের কে দিয়েছে দোষ
কখন প্রেয়াসী কি পেয়েছে প্রতীম
প্রেম খুঁজতে বেশিদূরে যেও না, সে
আপন অন্তরে অন্তরে হৃদয় জুড়ে

Sunday, 6 May 2018

প্রতিধ্বনিত আর্তনাদ শুনি

প্রতিধ্বনিত আর্তনাদ শুনি প্রতি রাতে

স্বপ্নে নয় প্রতি গভীর রাতে প্রতিধ্বনিত
আর্তনাদ শুনি প্রতি রাতে কৈশোর  উত্তীর্ণা
তন্বী তরুণী উজ্বল পূর্ণিমায় অর্ধ নগ্ন শরীরে
" বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও !"
চিৎকার করে আর্তনাদ করে সেই রাতে নীরবে
দেখেছি দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে অসহায়
এ ভয়ার্ত বৃদ্ধের হৃদয় থরথর করে কাঁপছে ভয়ে,
বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
প্রাণ  না নারীর  আত্মসম্মান বাঁচাতে ছুটছে নারী
পেছনে ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ক্ষমতাসম্পন্ন ধর্ষক
বিকৃত মনস্ক অমানুষেরেরা গণধর্ষনে লালসার
নারী শিকার উৎসব শহরে এই খোলা রাজপথে,
নিয়ন্ত্রণ বাতির উজ্বল আলোয় আলোয় ফুটপাতে
আলোকিত শান বাঁধানো চাতালে ধরে ফেলে টেনে
আনে, শহরের নির্মীয়মান বিশাল আকাশ চুম্বি ফ্লাটে।
এ কিশোরী যুবতী নির্যাতন ধর্ষণ প্রাক্কালে আর্তনাদ
শোনা যায়, " বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও বাঁচাও "
কখন গ্রামে নদীর পারে বাঁশ বাগানে ভগ্ন মন্দিরে
ধান খেতে কালভার্টে, অফিসে স্কুলে কলেজে
দেশে দেশে নানা কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘরে ঘরে
বার বার শুনি ধর্ষিতা আর্তনাদ হাহাকার স্পষ্টই
প্রতীয়মান  প্রতি রাতে চলছে যেন উৎসব গণধর্ষণ।
গণধর্ষণে ধর্ষিতা  আর্তনাদ সাথে বাদ্য যন্ত্র হারমনি,
এ নব্য সঙগীতে তালে তালে দুলে দুলে প্রকাশ্যে এই
যুগলে আলিঙ্গনে আদরে আদরে প্রেমের চুম্বন চুম্বনে
দুইদৃশ্যে অভিনয়  নয় সত্য ঘটনা ঘটেছে প্রতিনিয়ত।
নীরবে ব্যথা বেদনা নৈরাশ্য বিষাদমাখা হতাশায় ডুবে
নিমজ্জিত হয়ে আছি মাত্র জননী মৃত্যুর অপেক্ষায়।

Saturday, 5 May 2018

ভ্রষ্টা মেয়ের নষ্ট জীবন

ভ্রষ্টা মেয়ের নষ্ট জীবন

শ্যামল সোম

শৈশবে বাপ মায়ের আদরের সে আমি
গ্রামের বাড়ির বাগানে প্রজাপতি উড়ে,
আমিও ফুল পাড়তে গিয়ে দেখি জুড়ে
আছে গাছে মৌচাক, মৌমাছির দংশনে
জ্বলে ছিল হাত, পরম মমতায়  জননী
মলম লাগিয়ে দেয়, বাপ এসে আদরে
আদরে জুড়িয়ে যায় প্রাণ আনন্দে ভরে
যায় আমার শৈশবে আহ্লাদে বৃষ্টি ঝরে
একা একা ভিজেছি গাছের ছায়ায়।
হায়, বিধাতা ছিনিয়ে নেয় বাপ মাকে
সে এক দুর্ঘটনায় নিহত হয়, কান্না থামে
মামা মামার সংসারে এসে, লেখাপড়ায়।
সাথে মনের মাধুরী মিশিয়ে কৈশোরে
আসে স্বপ্নেের রাজপুত্র হিরো সে প্রেমিক
আদরে সোহাগে সুতীব্র ভালোবাসায় সিক্ত
আমি ধরে হাত তার ভেসে যাই ভালবাসায়।
স্বপ্নিল কাব্যময়তায়, প্রতিক্ষণ  স্বপ্নে বিভোর,
একদিন সকালে  আঁচড়ানো ক্ষতবিক্ষত দেহ
ঠাঁই পায় নিষিদ্ধ পল্লী বেশ্যালয়ে রাজপুত্র সে
মোটা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে চলে গেছে আমায়।
স্বপ্নিল কাব্যময় নয় কঠিন বাস্তব মুখোমুখি
এ পঙ্কিল সংকট কঠিন বাস্তব জীবনে নিত্য
নূতন খদ্দের আসে মুখে রঙ মেঘে ঢং ঢং করে
হেসেহেসে বাসর শয্যা বিশিষ্ট ব্যক্তির মনোরঞ্জন
আত্মার আর্তনাদ শুনি ভ্রষ্টা নষ্ট আমার হৃদয়ে,
আজ ও মাঝেমধ্যে ভুলে যায় কাজে উদাসী মন
ফিরে যেতে চায়  এ শহর ছেড়ে  গ্রামে শান্ত গাছ
গাছালি নিবিড় ঐ নদী পাড়ের ঘণ ছায়াবীথিকায়।

আমার বড়ই নগণ্য জীবন

আমার বড়ই নগণ্য জীবন

শ্যামল সোম

এ জীবন এতই নিষ্ঠুর যন্ত্রনাময়
শৈশবেই মাতৃভূমি থেকে পরায়ণ,
দেশভাগে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয়,
দারিদ্র অভাবে ক্ষুধার্ত শৈশবে মনে
মাঝে মধ্যে ফেলে আসা সেই গ্রামের
কীতৃন খোলা নদী পারে চলে যাওয়া।
সবুজের সমাহারে  ফসলের চাষাবাদ,
খোলা মাঠে ঝড়ে বৃষ্টিতে ভেজা শৈশব
স্বপ্নে ছেঁড়া কাঁথা জড়িয়ে শীতের রাত।
কৈশোর থেকেই লেখালেখি বৃথা প্রয়াস
কবি হওয়ার ব্যর্থ বাসনা শিশু শ্রমিক
হয়ে পরিবারের সারে বস্তিতে বসবাস।
সামান্য কিছু পড়াশোনা,নিয়ত মন্তাজ
নষ্ট স্বপ্ন দারিদ্র খাদ্যাভাব নিগ্রহ শ্রমে
মূল্যে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকা নিত্য
দারিদ্র সঙ্গী, সহবত কোন তন্বী তরুণী
যুবতীকে দূর থেকে দেখে শতসহস্র কাব্য
অসমাপ্ত প্রেমে কবিতা হয়ে যায় হৃদয়ে
যুবতীকে আলিঙ্গনে চুম্বনে আস্বাদন এ
শুধুই দীর্ঘশ্বাস আকাশকুসুম কল্পনায়,
অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখা আর হলো না।

সে আমার গোপন আরাধ্য প্রেম

সে আমার গোপন আরাধ্য প্রেম

শ্যামল  সোম

কীর্তনখোলা নদীর বহমান স্রোতে পড়ে, সূর্যোদ্বয়ের ভোরে হীমেল হাওয়ায়।
কুয়াশার আড়ালে, ঐ গাছের তলায়  তোমাকেই দেখেছিলাম,
তুমি মুখ ফিরয়ে বহমান নদীর ধারে দাঁড়িয়েছিলে,ভাবে
আত্মমগ্ন, ম্লান দৃষ্টি নিয়ে বেদানার্ত সজল চোখেো খে দেখেছিলামে আমার
ছলাৎ ছলাৎ বহমান দেহে বহমান রক্তের শিরায় শিরায়
আমার হৃদয়ের গোপন প্রেমের উন্মীলিত স্বপ্নচারিনীকে ঊষসী আমার প্রথম প্রেম।
এ জীবনের চলার পথের  শেষে অনেক দেরীতে শেষ লগ্নে কেন
এলে তুমি হে প্রেম ?
এসে আমাকে হে নারী ভালোবেসে অনাদায়ে ফেলেছিলে  আপন
মহিমায় মহিমান্বিতা।
আমার হৃদয়ের স্পন্দন তুমি, এ প্রেম রেখে গেলাম।
কীর্তনখোলা  নদীর স্রোতে ভেসে যাচ্ছি।
ভালো থেকো তুমি, ভালো থেকো বাংলাদেশ
খুব ভাল  থেকো গো, আমার ময়মনসিংহ,
সোমেশ্বরী শীতলক্ষা, কর্ণফুলী নদী, সুন্দরবনের
প্রত্যন্ত  গহীন জঙ্গলে প্রাচীন গাছ গাছালি।
নিশ্চয়ই ফিরবো আগামী জন্মে তোমাকেই পাবো
নিশ্চিত জেনো আমাদের জন্মান্তরের প্রেম বৃথা
যাবে নাগো তুমি তো জানো কি  ভীষণ  প্রানীত প্রাণে
ভালোবাসি তোমাকে।

দূরভাষে ভালোবাসা অনুভবে কাছে আসা

দূরভাষে ভালোবাসা অনুভবে কাছে আসা

শ্যামল সোম

ভালোবাসার বন্ধনে জড়াল গো বন্ধু
মনের মানুষ তুমি আমার একান্ত প্রিয়
যদিও এখনও আমাদের নেই সাক্ষাৎ
পরিচয়, দেখা হওয়ার নেই সম্ভবনা।
শুধুমাত্র মনের ভাব বিনিময়ে বন্ধুত্ব
পারস্পরিক সহমর্মিতা সহানুভূতি
পরস্পরের মনের কথোপকথন বুকে
জমা ব্যথা বেদনানৈরাশ্য মুক্ত এক
স্বপ্নের স্বপ্নিল  ভালোবাসার ছোঁয়ায় হৃদয়ে
অনুরোরন ধ্বনিত গুঞ্জন শুনি কাব্যে শব্দে।
তুমি আমার হৃদয়ের ভোরের আকাশে
তুমি যে আমার শুকতারা প্রিয়া প্রজাপতির
মতো সুন্দর হোক গো তোমার জীবন ।
আজ সূর্যোদ্বোয়ের আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত
হয়ে উঠুক দূরভাষে ভালোবাসায় অনুভবে কাছাকাছি।
গভীর আলিঙ্গনে আদরে আদরে ভেসে যাই দুজনে।
মণি সত্যি গো দূর থেকে দূরন্ত গতিতে ছুটে যায় মন
নিরুত্তর ভালবাসায় ভরিয়ে দিলেম তোমার হৃদয়ে
বাতাসে দেহেরঘ্রাণ পাই অন্তরে অন্তরে বুকের গহীন
গভীরে সমুদ্রের ঢেউয়ে মতন দূরান্তে প্রেমের স্বপন।

এ কে আপনাদের অসহায় ধর্ষিতা কন্যা

এ কে আপনাদের অসহায় ধর্ষিতা কিশোরী কন্যা ?

শ্যামল সোম

উদাসিন এই সমাজে নেই কোন বয়ান
বারে বারে মোমবাতির মৌন মিছিল
ধিক্কার শ্লোগানে থামে না যৌন নিগ্রহ,
নারী হয়ে জন্ম গ্রহণ কি অপরাধ ঈশ্বর
নিরুত্তর, সভ্যতা এ ভয়ানক এক সংকট।
সম্প্রতি পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে সত্যি
সেই প্রাচীন  আদিম যুগের পুনরাবৃত্তি ,
তৎকালে নারীর প্রতি সহিংসতা ধর্ষণ,
যখন তখন টেনে নিয়ে যেত অরণ্যে।
এখন অভয় অরণ্যে ধর্ষকে অবসাদে
বিচরণ, প্রতিিক্ষণে আতঙ্কিত জীবন।
বিগত বছরের নেই কোন পরিসংখ্যান,
গোপনে শতসহস্র বার নেওয়া বয়ান,
লিপিবদ্ধ করতে  বিকৃত  প্রশ্ন বানে,
জর্জরিত এ কি  সাংঘাতিক নির্যাতন ।
জবান বন্দি, এ মুহূর্তে ঝড়ে বৃষ্টি রাতে
শয়তানের   নানা ফন্দি ফিকির করে
বিকৃতির প্রকৃতি জানোয়ারের চলেছে
মহানন্দে উল্লাসে প্রতি নিয়ত   গণধর্ষণ।
ধর্ষিতা কিশোরী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে
আছে আমার দিকে, দু নয়নে ঝরে জল
আজ কি আসেনি সময় মানুষের কিছু বল?