আমি এক হিমাচলের কন্যা
শ্যামল সোম
কেমন দেখছেন আমাকে দেখে জিব দিয়ে লাল গড়াচ্ছে
আমার এই তীক্ষ্ম উদ্যত স্তন, নিটোল আমাদের বাগানের
বড় সাইজের আপেল হাত ছূঁয়ে দেখুন দেখুন কি টাইট তাই না?
আমি এই পাহাড়ি কুল জেলার মোতি গাঁয়ের মোড়লের নাতনি
আচছা বলুন তো আমি সুন্দরী নই ? আমার চিকন কোমর ভারি
নিতম্ব ভরাট জঙ্খা নায়ির নিচে লালরঙের ঘাগড়া, নীল রঙের
কাঁচুলি গলায় ওড়ানার ফাঁস, সাত রকমের রূপো গয়না কান
ঝুমকো পায়ে ঘুঘুর ঝমঝম আওয়াজ হচ্ছে শুনতে পারছেন ?
স্কুলে গেলে মাসটাররা তাড়িয়ে দেকতো, ছেলে ছোকরা হামলে
পড়তো,দশ ক্লাসে ষোর বছরে হয়েই স্কুল থেকে সখীদের সঙ্গে
সাইকেল চালিয়ে ফিরছি, দুটো বাইক মানালি থেকে ছোকরা
ধনী বাপের লাডলা বেটা দুই ভাই আমাকে দেখেই আশিকী
দু ভাইই ফিদা টেনে হিঁচড়ে আমাকে মটোর বাইকে তুলতে গিয়ে
আমার চিৎকার ও বানধবীদের হাঁক ডাকে সাড়া দিয়ে লোকজন
ছুটে আসে সে যাত্রায় বেঁচে গেলাম।
দশেরা উৎসবে আগেই বিশাল লাল রঙের ইনাভা গাড়ি গাঁয়ের
আমাদের বিশাল বাড়ির সামনে এসে থামলো, ড্রাইভার দরজা
খুলে দিতে বিশাল লম্বা চওড়া বৃদ্ধ সিল্ক কাপড় পাঞ্জাবি ধুতি
মাথায় রেশমের টুপি পড়ে ধীরে সুস্থে নামলেন দোতলা কাটের
বাড়ির জানালার পর্দা সড়িয়ে লুকিয়ে দেখছি পেছনে দুটি লোক
আপেলের ঝুড়ি, মিটাই বাহারি পোষাক হাতে চলেছে বৃদ্ধের পেছনে,
গাঁয়ের লোক ভীড় করে জড় হচ্ছে, দাদাজীর নাম মোহম সিং ডাকছেন।
দাদাজী ছুটে গিয়ে হাত ধরে হেঁটে সাথে করে নিয়ে এসে বসার ঘরে সোফায়
বসালেন, হঠাৎ আকস্মিক এই ঘটনায় বাড়িতে হুলুস তুলুস পড়ে গেল।
কুশল বিনিময় পরে জানাগেল উনি বিরাট বস্ত্র ব্যবসায়ী তিন তিনটে দোকান
মানালির বিখ্যাত স্নামধন্য ধনী ব্যক্তি পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি।
দিলীপ সিং ঐ সেদিন মটোর বাইক আরোহী ওনার নাতি তাঁর সাথে বিবাহ
হয়ে গেলো, না না, একবারের জন্য আমাকে জিজ্ঞেস করা হলো না মেয়েছেলে
তার আবার মতামত কি থাকবে ? হিমাচল প্রদেশে নারীর সংখ্যা কম তাই মোটা
টাকা পন পেলেন দাদাজী বাপ কাকা চুপ, মা আমার মায়ের খুব আমি পড়াশোনায়
এত ভালো প্রতি বছর ফাস্ট হয়ে থাকি পড়াশোনা করে ডাকতার হবো গাঁয়ে ডাক্তার
খুব কম, মায়ের ও আমার স্বপ্ন অদূরা থেকে গেলো।
হাঁ, আমার নাম পাঞ্চালি, একজনের সাথেই বাসর ধীরে ধীরে একে একে পঞ্চ পতির
স্ত্রী সুখ ঐশ্বর্য দামি মণিমুক্তো হিরের অলংকার রঙ বেরঙের পোষাক কাশ্মীর পরমোদ ভ্রমণ,
দিল্লির কুধতব মিনার মসৃণ জঙ ধরে নি এ যেন আমার লোভনীয় শরীরে কত ভাঁজ দিন দিন
ননি মাখন আপেল আঙুর, আখরোট, ইরেনের খেজুর কিসমিস বাদামের সরবত দুধ আমি
তিন তিনবার পোয়াতি হলাম সে সব, সন্তান তো দু তিন মাস পরে মারা গেলো।
কে কবে রাতের অন্ধকারে ধুর্ত নেকড়ের মতন আমার শয্যায়
নগ্ন করে আমার উলংঙ্গ শরীরটা চুম্বনে দংশনে লেহনে বিভৎস ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি প্রথম প্রথম
প্রতিবাদ প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রচন্ড জোরে মারধোর শুরু করে দেয় ব্যথা বেদনা রক্তাক্ত
অবস্থায় অশ্বারোহী ভাসুর দুঘণ্টা সোয়ার করে মলম লাগিয়ে দেন বড় জা হট ব্যাগে গরম
জল দিয়ে সেঁক দেন, সবাই সেবা শ্রুশষা পরম যত্ন করে চামচে খাইয়ে দেন ভাগনে গাড়ি
চালাতে শেখাতো আদরে আদরে গলে গলে পড়ছে সুখ না বিষ প্রয়োগ করে বিষিয়ে দিল মন,
ওকে বলে ছিলাম নন্দ লাল চল পালাই।
নন্দ বললে, ছিঃছিঃ এমন কথ বলো না।
দিলীপ সিংকে বললাম
সে বললো গৃহ শান্তি ব্যবসা বানিজ্য বাজার দখল রখতে সবকিছু মেনে নাও।
আপোস করতে শেখো মেয়েদের বিয়ের পর এ একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায়
ঝড় আসছে ঝড় আসছে শুনতে পারছেন না প্রলয় নামছে হুড়মুড়িয়ে ,ভেঙে পড়েছে
ঘর বাড়ি প্রসাদ দেখুন হিমলয় পিতা আমাদের একমাত্র ত্রাতা কি বার্তা বয়ে আনছেন
নারী ধরিত্রী যাজ্ঞিসেনী দ্রোহী আজ দ্রৌপতী কৃষ্ণ সহায় আড়ম্বরহীন অলঙ্কারে নেই
প্রয়োজন আছে বর্শা তরোয়াল বন্দুক একদিকে হিমালয় থেকে ধ্বসে পড়ছে পাহাড়
প্রবল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত বন্যা দুরন্ত গতিতে এগিয়ে আসছে গ্রাস করবে একবিংশতি
শতাব্দীর সভ্যতা চন্দ্রযান অভিযান এ দেশে হা হা হা হা হা যে দেশে প্রতি নিয়ত ঘন্টায়
কটা শিশু কিশোরী সতীচছেদ করে গণধর্ষণ এর নাম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থা
ধিক্কার জানাই এ ধিক্কারের জবাব দেবার কেউ নেই যুধিষ্ঠিরের পাশা বাজি রেখেছেন
আমাকে কোন অধিকারে পুরুষ তান্ত্রিক সমাজে প্রচলিত প্রথা ভেঙ্গে প্রকাশ্যে মুখ খুলেতে
যাওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত আমি ফাঁসি হবে পুড়িয়ে মারবে, কোটি কোটি নারী এগিয়ে আসছে
মুক্তি গান শুনতে পারছেন না বধির কালা অন্ধ বোবা জড় পদার্থ আপনরা আপনাদের সরবনাশ হোক ।
No comments:
Post a Comment