Monday, 21 August 2017

কবিতার সাথে সহবাস

শ্যামল সোমের

কবিতার
            সাথে
                    সহবাস

1)
শ্মশানে রয়েছি জলন্ত চিতায়
ওঠার অপেক্ষা এখন কবিতা
গলা জড়িয়ে আমার কাঁদছে।
নূতন গ্রন্থ  প্রকাশের শুভ ক্ষণে
আমি নেই তবুও  কবিতার প্রেমে
কাব্যের ড্রোনের বিস্ফোরণে
প্রচন্ড আলোড়ণে চূর্ণ বিচূর্ণ
নব্য সভ্যতার ভয়াবহ ইতিকথা
তিরস্কার, ধিক্কার প্রাণনাশের
আশঙ্কিত মনে স্ফূর্তি আনতে
গাহিছেন,  " আমি সকল নিয়ে বসে
সর্বনাশের  আশা,
আমি তার পথ চেয়ে আছি
যে জন আমায় ভাসায় !
নারী কবিতা নদী ফুল
এরই নাম  ব্যাকুলত জীবন
দুকুল ভাসিয়ে হে নারী তুমিই
আমার কীর্তন খোলা নদী
তোমার অপরূপ সৌন্দর্যে
মুগ্ধ হয়ে অপলক দৃষ্টি মেলে
অনন্তকাল চেয়ে থাকা সত্ত্বেও
কেন এই জরাজীর্ণ দেহে জল
স্পর্শে শিহরণ বহমান তোমার 
উজান স্রোতে অবগাহনে উষ্ণ
মিলনের কাব্যের নির্যাস শুভ্র
গোলাপের গন্ধে, দেহের ঘ্রাণে
কবিতা তোমার  সাথেই সহবাসে
একাকীত্ব মাঝেই বিনিদ্র নির্জন
তারা ভরা রাতে আজও প্রতীক্ষিত
প্রেমিক তোমার বাঁশিওয়ালার সুর
ভেসে আসে ভালোবাসায় স্নাত হই।

2) তুমি জীবন্ত কবিতা

( স্বপ্না-তোমার জন্যই আমার এ  লেখা।

তোমার একান্ত প্রিয় ) - শ্যামল  সোম

আমি অপেক্ষায় থাকি
আমার  মনের যত জমা
কথা হৃদয়ের গোপন ব্যথা
কাকে বলি ?
কে শোনে?
আপন সুখ দুখের সাথে
মিলে মিশে আপনাতে
আনমনে আপনি আছি।
তবু মাঝে মাঝে কেন
মনে হয় এক জন
অনন্ত বন্ধু মনের মতো
পাশে থাকলে বেশ হতো
মনের কথা মনে কোনে
না রেখে সে বন্ধুকে
খুলে বলা যেতো
মনের চাপ কমতো ।
বলবার জন্যে হন্যে
তন্ন তন্ন করে খুঁজে
ফিরি শেষে কাউকে
না পেয়ে একা তন্দ্রাহারা।
তন্ময় হয়ে নিজের লেখা
নিজেই পড়ি, শব্দ
গুলো উলটে পালটে
মনের ইচ্ছে সাজাই।
আমার কবিতা!
তুমি মাঝ মাঝে রাতে
চুপিচুপি এসে, দাঁড়াও
আমার শিয়রে অভিসারে।
যূঁই ফুলের মালা জড়িয়ে
খোঁপায়, পায়ে জলনূপুরের
সুর তুলে, তোমার ঐ সুর্মা
আঁকা চোখ ছল ছল দৃষ্টিতে,
তাকিয়ে থাকা এইটুকুই প্রেম
একাকীত্ব যাতনা প্রশমিত
স্বপ্না তুই কবিতা পাশে ঘনিষ্ঠ
বন্ধু মতো এসে বসা
কবিতা নরম হাতের ছোঁয়া
কবিতা তোমার কাঁধে রেখে
মাথা কাঁদা, কখন তোমার 
হেসে ওঠায় আমার মুখে হাসি
কবিতা তুমি তো জানো
কতটা তোমাকে ভালোবাসি
শব্দের  অলংকরণে
চিত্রকল্পে  ছন্দে ছন্দে 
স্বপ্না  তোর  আনন্দে ভাসি।

3)নির্জনে  আমরা  দুজনে  
                                           শ্যামল সোম 

ঝম ঝমিয়ে পড়ছে বৃষ্ঠি
ঘনিয়ে এলো ঘন আঁধার আধ
অন্ধকারে  কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে
একা আমি, স্মৃতির
অতলে সন্তরণে আছি, 
যন্ত্রযানের  অপেক্ষায় আছি।
বহে যায় সময়--দমকা হাওয়ায়
দোদুল্যমান ডাল,
ভাবনায়পাতা ঝরে পড়ছে,
কড়-কড়িয়ে ডাকল মেঘ,
আকাশে বিদ্যুত উঠল  জ্বলে, 
এই সায়েন্নে  অপরূপা
এক আলোকপর্ণা-ভেসে
আসে অভিসারে,
জ্বলে তার চোখ, তীক্ষ্ণ দৃষ্টির তার।
সিক্তা শরীর বেয়ে ঝরে বৃষ্টি,
স্মীত হেসে চির
পরিচিতা প্রিয়াআমার 
সুদর্শণা হেসে হেসে
কাছে আসে কাঁধে রাখে
পেলব হাত,
জড়িয়ে নেয় বুকে,  কানের কাছে আনে 
মুখ বলে মৃদু স্বরে,
" সোম-এই  দুর্যোগের রাতে,
ভাগ্যের  উচ্ছাসে
ঘণবরিষণে দেখা হল,
আবার  তোমার  সাথে।
"আমার  ছায়া কাঁপে  তার চোখের তারায়,
" তুমি ভালো নেই সোম?-
কেন তোমার ভালো থাকার সব
উপকরণ ভরা আছে
তোমার সংসারের আয়োজনে ?""

বিষন্ন  মন  তবু  ফেরে  শীতল  অবসাদে,
" পর্ণা আমি   ভালো  নেই  ! "
"" সোম ! দুঃখ তোমার বিলাস
বিলাপ তোমার সংগীত !
এই মুহূর্তটাই  চির  সত্য !
আর  কাছে  এসো সোম !
আমার খুব কাছে,  কাঁধে রাখ হাত,
চুম্বনে মিটাও পিপাসিত ওষ্ঠ
- ঠোঁট আমার!"
" বহে যায় নদী  যৌবনের  ঝরের মাতন, 
তপ্ত ঘন শিহরণ, অনন্ত আগ্রাসী চুম্বন 
শরীরের সমুদ্রের ঢেউয়ের  আলোড়ন, 
জলে হারায় পথের নিশানা -নির্জন  দ্বীপে 
এখন নির্জনে  আমরা  দুজন।

4) এপারে  ওপারে  শুধুই দীর্ঘশ্বাস

বাঁশিওয়ালা

এ পারে যে বাংলাদেশে
ও পারে সে বাংলা
মাঝখানে  নাক উচিয়ে
পাহারা দেয় কাঁটাতারের বেড়া।
বেড়ার ওপারে তুমি কাঁদলে
আমার পায় কান্না বিশ্বাস করো,
এতটুক মিথ্যা বলছি না, বুকে হাত
দিয়ে দেখো থড় পড় করছে বুক।
ভালোবাসার  এত যে কষ্ট কে
আগে জানতো ?
অবশ্য তোকে মৌ ভালো না বেসে
আমি কিভাবে বুঝতাম এ অপার
আনন্দ, মৌ তোকে ভালোবেসে
আমি ধন্য, নাই তোকে  পেলাম
কাছে, এ প্রেম তো শাশ্বত সুন্দর।
পাগলী তুই মন  চুরি করে ঢাকায়
বসে আমায় এত ভালোবাসিস
সে ভালোবাসার ঋণে ঋণী আমি।
এত পারে কোলকাতায় তোরই
আসার অপেক্ষায় আছি, তুই যখন
ও পার থেকে ঘুরে বেড়াবো জন্য
আমার  কাছে দুদিনের জন্য  আসবি
আমি কোলকাতার শহরে বিখ্যাত
দোকানে গিয়ে কিনে তোর পছন্দের
মনের মতো  সাজ সাজিয়ে তোকে
দেখবো, গঙ্গায় নৌকো করে বেড়াবো।
শান্তি নিকেতনে গিয়ে  দেখবি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঢালি সাজিয়ে
তোর জন্য অপেক্ষায়!
দার্জিলিঙে টাইগার হিল থেকে 
কাঞ্চনজঙ্গা পর্বতের সূর্যোদ্বয়ের রাঙা 
আলোয় তোকে আমার জীবন্তকে
দু চোখ ভরে  তাকিয়ে  দেখবো।
অবশেষে বিদায়  মূহুর্তে তুই যখন
সব নিয়ে নিজেকে কাঁদিয়ে মৌ তুই
ফিরে যাবি ওপারে বাংলাদেশে
আমি সজল নয়নে
তোর ওপারের ফিরে যাওয়ার
দিকে তাকিয়ে  থাকতে থাকতে দুচোখ
আমার ঝাপসা আসছে।

5) সূর্যোদ্বয়ের ভোরে
কবিতার সাথে সঙ্গম

অলকানন্দা মন্দাকিনীর
সঙ্গম স্থলে কর্ণপ্রয়াগে
প্রাতে তোমাকে মানস নেত্রে
স্বপ্নে স্বর্ণ স্তনে শব্দের
চুম্বনে চুম্বনে রক্তাক্ত ঠোঁট,
রক্ত ঝরছে কাব্য পাঠে
শিশির ভেজা উষ্ণ শয্যায়।
কবিতার সাথে আশৈশব প্রেম,
" জল পড়ে, পাতা নড়ে " !
ছন্দে অছন্দের বাহুল্য হীন
আমি বেকুবের মতন কবিতা
তোমাকে গভীর আলিঙ্গনে
জড়িয়ে ধরে আদরে
আদরে, কাব্যিক এ মন
তোলে তুফান কবিতার
উত্তপ্ত দেহে করে লেহণ।
পৌরুষ  উড্ডীন অহংকারে
প্রোথিত বৃক্ষের চারা শুকায়।
অতৃপ্ত কবিতার চাপা কান্না
প্রতিধ্বনি শুনি নপুংসক হৃদয়ে।
শব্দের লহরী স্রোতে বহমান
যৌনবতীদের আমন্ত্রণে বিনম্র
প্রত্যাখান এ ক্রুদ্ধ নারীদের
উন্মুক্ত বসনে নগ্ন যৌন
আক্রমনে সমবেত প্রয়োগে
কবিতার ধর্ষনে বিহ্বল 
নিষ্ফল লিখন প্রয়াস।
অরণ্যে  পদ্ম যোনিতে
বিশৃঙ্খল বাক্যের
বিন্যাসে অক্ষরের বীর্য
পাতে অলকানন্দা স্রোতে  
ভাসে স্ফূর্তির অস্ফুট কাব্যের ভ্রূণ।

6)  বিরুদ্ধাচরণে মৃত্যু দন্ডিত

এখন আমরা পরস্পরের
খুবই কাছাকাছি আছি,হেতু
পরস্পরকে ভালোবেসেছি।
আমি হিন্দুদের সনাতন ধর্মে
তুমি মরিয়ম চৌধুরীর বিধর্মী।
সমাজ জাত ধর্মের দেশের সীমান্ত
পেরিয়ে সব গন্ডি ছাড়িয়ে প্রান্তিক
বিবাহিত জীবন যাপন শারীরিক
সম্পর্ক নাই বা হলো তখন, শয্যায়
সরীসৃপ মত ধাবমান সর্পিল উষ্ণ
আলিঙ্গন পরস্পরের তৃষ্ণার্ত সে
নিবারণ,দীর্ঘ স্থায়ী অন্তহীন চুম্বন।
এত মতানৈক্য মতান্তর মতভেদ
প্রতিবাদ প্রতিরোধ  অগ্রাহ্য করে
আজ এত বছর পরে সুইডেনে
পরস্পরের পরিপূরক পরিপূর্ণ
স্বাধীন দেশের নাগরিক অধিকারে
পরস্পর পরস্পরকে ভালোবেসে
শেষে একত্র বসবাস, বিবাহের নেই
বন্ধন, বিখ্যাত দার্শনিক রাসেল সাহেব
এমন খ্যাতিমান পৃথিবীতে কম আছেন,
সে লেখক লিখেছিলেন, "বিবাহ আইনত
বেশ্যা বৃত্তি", এ সত্য, সাংঘাতিক কষ্টের
অভিজ্ঞতা,প্রেম হীন শারিরীক এ অশ্রুপাত
একই শয্যায় হৃদয়ের রক্তপাত, রক্ত  ক্ষরণ নয়? 

7)  আমার কীর্তন খোলা নদী

শ্যামল  সোম  বাঁশিওয়ালা

আজও জরাগ্রস্ত দেহে,
জরাজীর্ণ মনে জাগে সাধ 
আর একবারও ফেরা যায়
ঐ নদীর কীর্তন খোলায়,
আশা তোমাকে ভালোবেসেই
চলে যাওয়ার আগে একবার
এই শেষবারের মতন ফেরাও।
নারী তুমি আমার নদী অবগাহনে
নদী তুমি আশা ফেরাও মোরে
কীর্তন খোলা নদীর ভোরের,
আকাশে ভেসে মেঘ হয়ে ফিরিবার 
আকাঙ্খা ঐ আকাশে নিমন্ত্রণ।
মগ্ন মন তোমাকেই পাশে নিয়ে
কীর্তন খোলা নদীর বহমান উজান
স্রোতে ও আকাশে রামধনু মাঝে
আমার ফেলে আসা প্রেমের সাঁঝে
আশা আর একবার ফেরাও হে
কাব্যের  দেবী আশা ঐ জমিনে দিও
আমার হৃদয়ের প্রেমের  সমাধি।

8) শেষ লগ্নে

শ্যামল সোম  বাঁশিওয়ালা

আজ জরাজীর্ণ আমি
সৌভাগ্যবান প্রাচীন বৃক্ষ।
এক জরাগ্রস্ত বৃদ্ধের
জীবনের এই শেষ লগ্নে
পৌঁছে মৃত্যুর পদধ্বনি,
শোনার মাঝে শুনি নূপুরের
ছন্দ ছন্দে তালে পা ফেলে
স্বপ্নে তোমার আবির্ভাব।
কবি আশালতা তোমার ধন্য
কাব্য চর্চার সমার্থক  প্রয়াস,
নান্দনিক কাব্যিক পূর্ণতা মায়া
আচ্ছন্ন মায়াবী চোখের কাব্য।
মনময় রূপ লাবণ্যময়ী আশা
নামে এক অনন্যা কবির সাথে
আলাপনে ও তাঁর লিখনে ফেরে
মন, শব্দের ঘ্রাণে বকুলফুলের
গন্ধে ভরে গেল মন সম্ভ্রান্ত কবি।
পরিবারের সন্মানিত সনামধন্যা
কবি এতটুকুন অহংকার নেই
মহান প্রভুর চরণে সমর্পিত প্রাণ
মননে তার পরিচয়, ছন্দের বিমূর্ত
বাক্যের বিন্যাস যেন পদ্মপাতায়
শিশির হীরক মাল্য দোলে প্রাতে।
হে স্বপ্নের কবি তোমার কাব্য পাঠের
সুতীব্র শিহরণ বহমান তোমার কাব্য
স্রোতে গবগাহনে আনন্দে ভাসে মন।

9) কল্লোলিনী  কোলকাতা প্রেমে

বৃদ্ধ প্রেমিক শ্যামল  সোম।

তুমি মেঘ বালিকা কখন মন চাইলেই
চলে এসো খুব কাছাকাছি,  আসতে
চোখে- রেখে চোখ অপলক দৃষ্টি।
সুর্মা চোখে আলোয় ভালো যদি লাগে,
কল্লোলিনী লাগা থেকে শরীরে তোমার
ভালোবেসে রক্তে  শিহরণ যদি জাগে।
হৃদয়ের গহীন অরণ্যের বিথী কাননে
বহমান নদীর ধারে কখন দেখা হলে
তুমি  তিলোত্তমা বাড়িতে দিও স্নিগ্ধ হাত
সে তোমার সুগন্ধ হাতে থাকে যেন স্পর্শে 
সুপ্রসন্ন ভালোবেসে তুমি সপ্রতিভ এসে।
সুপ্ত গভীর সে প্রেমের কোলকাতা ভালো
বাসার খোঁজে ঘুরেছি শ্যামবাজার থেকে
হালতু হেঁটে হেঁটে ছিঁড়ে গেল চটি, হতাশা।
বাসার অভাবে পথের ভিখারী ব্যর্থ প্রেমিক
আমার প্রিয়া আদরের তুমি কোলকাতা।
চির স্মরণীয় লায়লা মজনুর অমর প্রেম
না না রোমিও জুলিয়েট বা শেষের কবিতার
লাবণ্য কিংবা   বনলতা সেন, সুচিত্রা সেন মত
আমার হৃদয়ে আকাশে চাঁদের ছবি হয়ে ঝুলছো।
ওগো আমি যে তোমার সেই চিরসাথী, জানি
কল্লোলিনী  কোলকাতা তিলোত্তমা  একদিন হবে।
কোলকাতা স্নিগ্ধ ভালোবাসা বাঙাল কাঙাল আমি।
ভালোবাসার জন্য হাজার বছর ধরে হাঁটছি হাঁটছি
তিলোত্তমা কোলকাতা " বাড়িতে দাও তোমার হাত "
হৃদয়ে এ হাত ছুঁয়ে থাক রবীন্দ্র সদনের রেলিং
ভিক্টোরিয়া  মাঠে সবুজ ঘাসে পাশাপাশি বসিবার বহু দিনের সাধ।

10) শুধুই তোমার জন্যে--

শ্যামল সোম

পাগলী একবার তুই
বল," সোম ভালোবাসি
তোমাকে "
দু হাত বাড়িয়ে বল আমাকে।
আমিও ভালোবাসি
পাগলী তোকে
পৃথিবীর দেশ
দেশান্তরে থেকেই তুই
আমার কাছে এসে 
জাত ধর্ম,ভুলে
আয়রে পরস্পরকে
খুব ভালোবাসি। 
বিশাল বয়সের
ব্যবধান পাহাড়ের
প্রাচীর দুই হাতে
পাহাড় ঠেলে সড়িয়ে
বঙ্গপোসাগরে নীল 
সমুদ্রে ঢেউয়ে ভাসি,
হিমালয়ে পাহাড় পর্বত,
ডিঙিয়ে পার হয়ে
যাই শেকড়ের সন্ধানে
গঙ্গা পদ্মা সাঁতরে
আমার জন্মভূমি
ময়মনসিংহকে প্রণাম
জানাই আমার
আন্তরিক অভিনন্দন প্রেম।
পাগলী স্বপ্নের
রাজকন্যা তোর প্রেমে ব্যর্থ
হওয়ার পর ও শতসহস্র
অত্যাচার সহ্য করে
আবার স্বপ্নে  আমি 
সাত সাতটি মহা সমুদ্র,
আর তেরোটি  মহানদী
এক দমে পেরিয়ে
ফিরে আসি এক ডালি
নানা ফুলের স্তবক
হাতে নিয়ে কাছে এসে
পাগলী তোকে বুকে
জড়িয়ে নিয়ে ভেসে যাবো
একেবারে গুপ্ত গুহায়
গহীন অরণ্যে হিমালয়ে।

11) আমার আদরের কলি

( সদ্য  প্রেমে পড়লাম আজ নিশি ভোরে,
তাকেই উৎসর্গিত করবীর ফুলের কলি
যে জন আজ রয়েছে এই বৃদ্ধের হৃদয়ে জুড়ে )

পুরুষের কামনা শ্মশানে চিতায় উঠে
আগুনে পুড়লেও যায় না, কিম্ভূত ভুত
হয়ে তাই তোকে ধরতে ফিরি অতৃপ্ত
বাসনায় এ ভুতের বিদেহী মন, তপ্ত
দেহের দহণে আলিঙ্গনে অশরীরী
এই দেহ তোকে দুহাতে জড়িয়ে শক্ত
ধরে যেই চুম্বনে ঠোঁট এগিয়ে যেতেই
বায়ুবিয় আশরীরের নাগালে বাহিরে
ময়না  পাখির দোল খেয়ে পালালি।
আমার আদরের পাগলি তোর জন্যই
( মাফ করবেন) মরার পর ও আমার
একটুও সুখ নেই বিমূর্ত মনে, তোকে
আমি সত্যিই ভালোবাসি,লোকের কাঁধে
চোড়ে শ্মশাণ যাত্রার সময় বারবার
পিছু ফিরে তাকিয়েই ছিলাম তোকে
শেষ বারের মত দেখার আশায়, মুহূর্ত
জন্য পাগলি তোর চাঁপা ফুলের মত মুখ।
মৃত্যুর ওপার থেকে এ ভুত প্রেমিকের 
তোর সাজানো সংসার আগমনে অনিষ্ট
করবো না রে পাগলি মরার পর ভালোবাসি।

12) অশ্লীলতা দায়ে 

শ্যামল সোম

মধ্য তারা তাঁরা  দিচ্ছে  পাহারা
শীতার্ত রাতে এই কম্বলে সাহারা
মরুভূমির শয্যায় অতৃপ্ত সহবাসে
তৃষ্ণার্ত চাকত মন কেন খোঁজে
ভালোবাসার মানুষের ঐ স্পর্শে
শিহরণ বহমান উজান নদীর স্রোতে?
প্রেম হীন দেহের আকাশে জ্যোৎস্নায়
চিক চিক করে নদী আলোকিত রাতে।
ঘুম নেই আমার  তোমার শয়নে শুয়ে
শুধুই যে যার স্বপ্নের মায়াবী জাল বোনা।
কেন খুঁজে ফেরে মন সে এক মনের
কাছাকাছি আসার মনের মানুষের খোঁজে?
সহবাস শোকাচ্ছন্ন দেহে কি তৃপ্তি পাই
সম্ভোগে এত জঞ্জাল সাফাই অভিযান নয়
ভালোবেসে দাম্পত্য জীবনে সাজানো
সংসারে পরস্পরের প্রতি অনুরাগের
পরস্পরের হৃদয়ের স্পন্দনে আলোড়িত
মন উষ্ণ প্রেমের স্পর্শে কত আয়োজন
নিষ্ফল প্রয়াসে কেন ব্যর্থ হলো রঞ্জন?"
" নন্দিনী আমার আদরের নীলাঞ্জনা
বিভোর তোমার প্রেমের ব্যর্থতার শেষে
যখন পাগলের মত ভালোবেসেই কাছে
যেতে চাই, রক্তিম সূর্যোদ্বয়ের ভোরে
তখন দেখি আমারই কোন ভুলে তুমি
ফিরে যাচ্ছো তোমার ভালোবাসার
ঐ যুবকের ঐ প্রখ্যাত কোন কবির সাথে
ঘণ কুয়াশায় আলো আঁধারাচ্ছন্ন একাকীত্ব
মাঝেই আমি এক দূর নক্ষত্র, দেখি তোমাদের।

13)  নন্দিনী তোমার কাছেই আছি

শ্যামল সোম

বহে গেছে সময়
তবু আজও মনে হয়
তুমি আমার হৃদয় জুড়ে আছো।
ঝরে ভেঙে ঘর,
রাতে পাশে শুয়ে আছে
সে তোমার বর,
পরের ঘরের ঘরনী তুমি।
কখন কি মেঘলা দুপুরে
অনন্ত অবসরে একা
নির্জন বারান্দায় দাঁড়িয়ে,
বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে
দেয় তোমার শরীর,
বৃষ্টির স্পর্শে জাগে মনে--
স্মৃতির শিহরণ ?
জানি নন্দিনী এ গহন
হৃদয়ের ব্যথা একান্ত আপন, 
মুক্ত ঝরে ঝরে পড়ে নয়নে নয়নে।
আজও বাজে প্রাণে,
তোমার মায়াবী কন্ঠে
" কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে! "
চোখের আলোকে গাঢ়
অন্ধকারে পাশে আছো
তুমি, ভালোবেসে
সেদিনের মতো আছি খুবই
পরস্পরের  কাছাকাছি।
প্রেম অবিনশ্বর, চিরদিন
রয়ে যায় ভালোবাসা,
ভালোবাসায় বেঁচে আছি।

14) কষ্ট মনের ব্যর্থ কথা    ( যৌথ লিখন )

তোমাদের বাঁশিওয়ালা শ্যামল সোম

এ বাঁশি আজ আর মনে বাজে না সুমধুর
আমি চলে যাই এই পৃথিবী ছেড়ে বহুদূর।
নিঃসঙ্গি নদী বহমান স্রোতে মনের কোনে
জমা  ব্যথা অনুভবে কষ্টে মৃত্যুর প্রতীক্ষায়।
আজ আমার শেষ প্রণতী গ্রহণ করো পৃথিবী
বিদায়ের আসন্ন মূহুর্তে, হিংসাত্মক, কতিপয়
লোকেরা উন্মত্ত, নিষ্ঠুর উন্মূখ ধর্ষণে উদ্যম
উৎশৃঙখল অমানবিক আচরণে উন্মাদ।
আমার নিরবে অশ্রুপাত, তোমাদের জন্য
কাঁদছে মন এত ভালোবাসা সহানুভূতি, কৃপা
জনক, জননী তোমাদের কাছে ফিরবো  এ
আমার নিশ্চিত  অঙ্গীকার, ভালো থেকো সবাই।

জনৈকা আমার পরম প্রিয় কবির শৈল্পিক এ পাথেয়
হবে আমার  পারাপারে পরম প্রাপ্তি তাঁর কল্যাণ হোক।

আপনি নিজেকে ৭৪ বছরের বৃদ্ধ মনে করবেন না প্লিজ।
যৌবন লুকিয়ে থাকে বয়সে নয়,....
প্রকৃত যৌবন, প্রকৃত তারুণ্য থাকে মনে।
আপনি বয়সে প্রবীণ হলেও....
মন আপনার চীর তারুণ্য ভরা..
এক উড়ন্ত বলাকার পাখা মেলে দেয়া
কোন এক দূর তেপান্তর পারি দেবার মতো মনোবল রয়েছে আপনার।

----------------------------------------------------------------------------------------------------
তুমি হে দেবী
পদ্মা পারের কন্যা দিলেম শাপলা ফুল,
ভেঙে মোর গানের তরী ভাসিয়ে নিন জলে
( মন্তব্যে )   বাঁশিওয়ালার প্রাণ জানাগানীয়া সুর
সুরে সুরে সুর মেলাতে আমার বেলা যে যায়।
মনের বলতে য় বাদে, সখী মরি-যে-- লাজে
তব নুপুর ধ্বনি হৃদয়ের গহীন অরণ্যে সাঁঝে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------
পদ্মাবতী----

ও গো বাঁশি ওয়ালা,
বাজাও তোমার বাঁশি.....
শুনি আমার নতুন নাম......!!!!
সত্যিই আমি ধন্য,আমি ধন্য....
যদিও আমি অতি সামান্য,অতি নগন্য.......!!!

------------------------------------------------------------------------------------

15) কবির প্রেমের কাব্যিক ভাবে

তোমার চুম্বনে
অনল আগুনে
পোড়ে মন,
প্রতীক্ষিত
এ প্রেমিকের
হৃদয়ের গোপন
প্রেমের চুম্বনে
জন্য  কত যুগ
যুগান্তর ধরে
প্রেমিকের তরে
প্রেমিকা কেন
কাঁদে সারাক্ষণ?শ্যামল  সোমের

কবিতার সাথে সহবাস

16)কবিতা আমার  আদরের  পাগলী

বাঁশিওয়ালা

তুই বিশ্বাস কর 
পাগলী
তোর পেতে
কস্কবাজারে  সমুদ্র সৈকতে
পেতেছি শয্যা
শয়নে সবপনে
জ্যোৎস্নায় আলোকিত
ঢেউয়ে ভেসে যেতে
আঁকড়ে ধরতে 
চাইছি আমার পুরোনো
প্রেমিকা কবিতাকে,
কাব্যের  আঙিনায়
রঙিন সামিয়ানার নীচে ,
কবিতা নূতন কনে
সেজে কনকচাঁপায় সজ্জিত
সোনালী রঙের 
বেনারসী শাড়ির
আঁচলে  জামদানী
কারুকার্য, গাঢ় লালে
লাল কাঁচুলি, মেঘের বরণ 
ওড়নার  আড়ালে
একজোড়া মীনাক্ষী পলক
কাঁপে তির তির করে,
কাঁপছে শরীর, কাঁপিয়ে
আমার হৃদয়ের গহ্বরে
বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি  পড়ে
কবিতা তুই যখন পরদা
আড়ালের কাজীর
জিগায়, " কবিতা বিবি 
ওমর ফারুক কে সয়বামী
রূপে তুমি কি কবুল করো ?
হঠাৎই  আমার  দিকে
তাকিয়ে আছিস---"
তারপর বহু জল বহে
গেছে পদ্মা ও মেঘনা দিয়ে।
জানিস পাগলী চেষ্টা করছি 
অনেক চেষ্টা  শুদ্ধ 
কাব্য লেখার
কিন্তু  ছন্দ পতন ঘটছে,
শব্দ চয়নে ভুল হচ্ছে, 
বাক্যের বিন্যাসে যুক্তি
খুঁজতে গিয়ে কাব্যের
নিষ্ফল চেষ্টা করে যাচ্ছি,
একটি বিশুদ্ধ কবিতা
লিখতে না পারার
ব্যর্থতা কি ভয়ংকর ভাবে
সারা রাত বিনিদ্র রাখে,
বুকের ভেতরে সমুদ্রের
ঢেউ  প্রচন্ড  আঘাতে
আঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাই।
আক্ষেপ রহে গেল বোন,
সত্যিই  একটি কবিতা
যা এই বিষন্ন সন্ধ্যায়
বাসায় ফিরে
দেখি কেউই নেই,
হাহাকার বাতাসে
ভেসে বেড়ায়
হারোন প্রেম কবিতা
তন্ময় হয়ে পড়ি আমার
পরিচিত এক
বোনের সুখে বাসর
আশচর্য  অসাধারণ
লেখা ভাবের
প্রকাশ অনবদ্য সৃষ্টি
কাব্যিক এক নদী
কুল কুল করে
বহে যাচ্ছে হৃদয় জুড়ে।
আমার মনের গোপন কথা,?

17)
হারিয়ে যাওয়া  ডাক

শ্যামল  সোম 

আজ জরাজীর্ণ এক জরাগ্রস্ত বৃদ্ধ
অতর্কিতে হ্যাকারদের ভয়ে ভয়ে
ব্লক হওয়ার ভয়ে সন্ত্রস্থ ফোঁসফোঁস
বিষধর সাপ আশপাশে, লক লক
জিব এক ছেবলের স্পর্শে নীলক্ন্ঠ।
বহু প্রিয়জন হারিয়ে গেছে কুয়াশায়
পরিবেশ দূষণের গাঢ় বিষাক্ত বাতাসে।
মুহ্যমান শোকাচ্ছন্ন শিশুদের লাশ পোঁতা
রয়েছে এই ধরিত্রী বুকে,শূণ্য জননীর বুক।
আজ এ পৃথিবীর গভীরতর বিষম  অসুখ
একা একাই গ্রামের বাড়িতে গাছেদের
সাথে নিরালা পুকুর পারে ডাহুক পাখির
ডাকে কাছে সুখ দুখের কথোপকথন।
স্মৃতি তাড়িত  বিষন্ন মন  উচাটন  আজ
মনে পড়ে যায় এক অসহায়ার অসহায়ত্ব 
শঙ্কিত, সংকুচিত এক নারীর ডাকে শুনি
" ভাইজান" শব্দের তরঙ্গে ট্রেনের জানলা
ফিরিয়ে চোখেচোখ পড়তেই ভূমিকম্প
স্পন্দন আলোড়িত দুজনার মন, সম্ভ্রান্ত
পরিবারের সন্মানিতা আমার প্রিয় কবি।
পরিচিত কবির কাব্য চর্চা কবির সতন্ত্র
লিখন শৈলীর উপরে আমার পরিবেদন
লেখা  জনযুদ্ধ কাগজে প্রশংসিত লেখার
জন্যই চিনতে পেরেই ঐ ডাক " ভাইজান"।
বহু বছর পর দেখা সুখ দুখের আলাপনে,
বোরখার আড়ালে ভেসে আসে অতীতের
গর্ভ থেকে গভীর দীর্ঘশ্বাস চোখ ভরা জলে
বোরখা বা ঘোমটা মুসলিম বা হিন্দু খৃস্টান
পৃথিবীর  ধরিত্রী মাতা যাঁরা জননীদের কেন
মাঝ পথে ভেঙে সাজানো সংসার ছারখার
করে পলায়ণ নির্লজ্জের মতন গোপনে বিবাহ
পণের জন্য নিত্য নতুন  খুন না আত্মহনন?
কবি শোনান বহু যুগ আগে ট্রেনের কামরা
সদ্য বিবাহিতাকে (তাঁকে )একা ফেলে রেখে
নিঃশব্দে চলে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী ঘৃণ্য
অপরাধের শাস্তি হয় নাকো পুরুষ শাসিত  এ
সমাজে সেই প্রস্তরযুগের বর্বরচিত আবহমান
বহমান নদীর ভাঙনের শব্দে শুনি " ভাইজান আছেন ক্যামন?

18)

"সই  তুই  ঈশ্বরকে  ডাক

শ্যামল সোম

ফুলের বাসর
ছেড়ে কাল রাতে
তোর দোসর
গেছে চলে--
সই ভালোবাসার
যাতনা
একা সহিবি
কেমন করে ?
এখন সবাই হাতে
হাত মিলিয়ে
কেমন হাতে হাতে
দিচ্ছে তালি।
পোড়ারমুখী
প্রেমে পড়ে তুই
সৈয়দ বংশের
নাম ডোবালি ?
হতভাগী !
গোপনে ভালোবেসে
ডুবে ডুবে
এত গিললী পানি ?
ঐ দেখ, আড়ালে
একা ঘরে অন্ধকারে
তোর কাঁদেন বসে নানী-।
যাও !
এবার তুমি -
গলায় কলষ বেঁধে
ঐ কাজরী দিঘির
পাড়ে যাও।
এই দুপুরে গাছের
ডালে পাতার ফাঁকে
কে ডাকে ?
বউ কথা কও !
হারিয়ে গেলো তোর
সেই আপনজন,
তাকে হলো না
আর পাওয়া--!
নদীর পাড়ে গাছ
গাছালি, দোতলায়
এই গাঁয়ের ঘর
সন দিয়ে ছাওয়া।
এক পলকেই হবে ছাই !
রাতে ঐ কুপীর আগুনটা
একবার কাছে পাই।
এখনও তুই মনের
ভেতর খুঁজিস কাকে ?
নাই ! নাই !
কেও কোথাও নাই।
নয়ন মেলে দেখ,
কালো এক যমের মতো
ঝুলছে ঐ লম্বা
ঘরের কড়িকাঠ--
আঁধার রাতে
শেয়ালের ডাক শোনা যায়--
বাড়ে বুকের কাঁপন-
দুরে শ্মশাণ ঘাট।
পরনের রঙিন
শাড়ী হাতে নিয়ে,
আনমনে সই এখনও
তুই স্বপ্ন দেখিস বসে ?
সাজানো পালকির
সাথে তোর দোসর
আবার বুঝি
দাঁড়িয়েছে দুয়ারে এসে ?
রাত পোহালো
এলো দিনের আলো
এখন ফজরের
ঐ আযান ভেসে আসে।

19)
কবি নীরব কেন

শ্যামল  সোম  বাঁশিওয়ালা

হে ঊর্মিমালা হে আমার স্বপ্নের কবি
আজ নীরব কেন কবি, তুমিই শান্তি
দূত, আজ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে
প্রান্তরে হত্যার নির্যাতনের শিকার
মানবতার,সহিংস্র পশুরা অতর্কিতে
ঝাঁপিয়ে পড়ছে বোমারু বিমানে
সাঁড়াশি আক্রমণে বিপন্ন লিরিয়া
বহু  রণাঙ্গন বিস্ফোরণের মরিয়া
মানুষের মিছিল শরণার্থী শিবিরে
আশ্রয় ও খাদ্যের জন্য হাহাকারে।
একবিংশে শতাব্দীর এই কি শুরু
তৃতীয় বিশ্ব মহা যুদ্ধ কি সত্যই আসন্ন?
হে ঊষসী হে ঊর্মিমালা সশব্দে প্রচন্ড
ছুটে আসা বিপদজনক আগ্নেয় জ্বলন্ত
গোলা, লোহিত সাগরের ঢেউয়ের মতন
তোমার সুতীক্ষ্ণ শানিত অস্ত্র বল্লম কলমে
শব্দের অগ্নি বাণে তীব্র আঘাতে আঘাতে
চূর্ণ বিচূর্ণ করো বিপ্লবের কবি প্রত্যাঘাতে
প্রতিরোধ গড়ে তোল,ঐ প্রতিবাদে ক্রুদ্ধ
জনগণের মুখে হে কবি তোমারই শুদ্ধ
অমোক বাণী--
" আমাদের সহস্র বছরের সাম্যবাদের
মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ধর্ম স্বাধীন
মানুষের মানুষ, মানবিকতার সপক্ষে
এ যুদ্ধে সাহসিকতায় আমরাও সম্মুখে!"
হে কবি তোমারই  লেখে সে গান গাইছে
মানুষের মিছিল," আমাদেরই হবে জয়
হৃদয়ে রয়েছে দৃঢ় প্রত্যয়, মুক্ত হবে নিশ্চয়!
আমাদের সশস্ত্র সংগ্রাম চলছে, প্রয়োজনে
দেব এক নদী রক্ত, জনতা সংগ্রাম চলছে
শহীদের রক্তের স্মরণে এ হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ!"
হে আমার শ্রদ্ধেয়া কবি তুমি এখন নীরব কেন ?

20
পৃথিবীর স্মরণীয় মহা বিপ্লবী  ফিদেল কাস্ত সন্মান এ কবিতা

কবি নীরব কেন

শ্যামল  সোম  বাঁশিওয়ালা

হে ঊর্মিমালা হে আমার স্বপ্নের কবি
আজ নীরব কেন কবি, তুমিই শান্তি
দূত, আজ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে
প্রান্তরে হত্যার নির্যাতনের শিকার
মানবতার,সহিংস্র পশুরা অতর্কিতে
ঝাঁপিয়ে পড়ছে বোমারু বিমানে
সাঁড়াশি আক্রমণে বিপন্ন লিরিয়া
বহু  রণাঙ্গন বিস্ফোরণের মরিয়া
মানুষের মিছিল শরণার্থী শিবিরে
আশ্রয় ও খাদ্যের জন্য হাহাকারে।
একবিংশে শতাব্দীর এই কি শুরু
তৃতীয় বিশ্ব মহা যুদ্ধ কি সত্যই আসন্ন?
হে ঊষসী হে ঊর্মিমালা সশব্দে প্রচন্ড
ছুটে আসা বিপদজনক আগ্নেয় জ্বলন্ত
গোলা, লোহিত সাগরের ঢেউয়ের মতন
তোমার সুতীক্ষ্ণ শানিত অস্ত্র বল্লম কলমে
শব্দের অগ্নি বাণে তীব্র আঘাতে আঘাতে
চূর্ণ বিচূর্ণ করো বিপ্লবের কবি প্রত্যাঘাতে
প্রতিরোধ গড়ে তোল,ঐ প্রতিবাদে ক্রুদ্ধ
জনগণের মুখে হে কবি তোমারই শুদ্ধ
অমোক বাণী--
" আমাদের সহস্র বছরের সাম্যবাদের
মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ধর্ম স্বাধীন
মানুষের মানুষ, মানবিকতার সপক্ষে
এ যুদ্ধে সাহসিকতায় আমরাও সম্মুখে!"
হে কবি তোমারই  লেখে সে গান গাইছে
মানুষের মিছিল," আমাদেরই হবে জয়
হৃদয়ে রয়েছে দৃঢ় প্রত্যয়, মুক্ত হবে নিশ্চয়!
আমাদের সশস্ত্র সংগ্রাম চলছে, প্রয়োজনে
দেব এক নদী রক্ত, জনতা সংগ্রাম চলছে
শহীদের রক্তের স্মরণে এ হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ!"
হে আমার শ্রদ্ধেয়া কবি তুমি এখন নীরব কেন ?

21)
কাব্যের স্ফুলিঙ্গ তুমি

শ্যামল সোম  বাঁশিওয়ালা

আজ জরাজীর্ণ হৃদয়ে এক জরাগ্রস্ত
বৃদ্ধের জীবনের শেষ লগ্নে মন পৌঁছে
উচাটন, থেমে আসছে স্পন্দন,দীর্ঘশ্বাস
ফিরে চলে যাওয়ার আগে এ উদঘাটন
কল্পনার  আশ্রয় করে এ লেখা দোহাই
কেউ উজবুক মতন সত্য না খোঁজেন?
সে শ্রাবণের মেলায় সীতাকুণ্ড এ ভীড়ে
চট্টগ্রামে পথে আজও  খুঁজে ফিরি প্রাণের
রতন সে আমার আদরের ছোট বোন।
হঠাৎই পঞ্চাশ বছর পরে সেবার ঢাকায়
গ্রন্থ মেলায় একাডেমির প্রাঙ্গনে এই মুখ
খোলা চুলে স্বপ্নের মায়াচ্ছন্ন দুচোখ।
বোনকে ফিরে পেয়ে দেখে বিস্ময়ে সম্ভিত
আত্মবিস্মৃত হই, নির্লজ্জের মত তাকিয়ে।
বিমোহিত অচৈতন্য থেকে চৈতন্য ফিরি
স্বপ্নের জগত থেকে সম্বিত সম্মোহনে শুনি
ডাক, " দাদাভাই  আপনি কোলকাতার কবি?
ওর দিকে তাকিয়ে হাসির আড়ালে মৃদু হেসে
মাথা নেড়ে জানাই " না না না বোন না !"
নজরুল মঞ্চে আমার কাব্য গ্রন্থ, বন্ধুদের
প্ররোচনা ছাপা হয়েছে ঢাকায়, তার উন্মোচন।
ফিরে যাচ্ছি বন্ধুদের আমোদের আয়জনে,
দ্রুত  এগিয়ে এলেন স্বপ্নের বোন, তীব্র দহনে
বিব্রত তবু আপ্রাণ চেষ্টা করছি অশ্রু সম্বরণে
সহজ সরল স্বাভাবিক ভাবেই ধরে হাত উন্মূখ
চোখে তাকিয়ে বলে সে মেয়ে, " আমার কাব্য
গ্রন্থ, " 'নির্বাসিত আঁধারে' তোমাকে দিলাম! "
নির্বিকার চিত্ত, দ্বিধাহীন নয়নের লোনা জল
বন্যা গঙ্গা পদ্মা নদীর সেতুর বন্ধন সৃষ্টি হল,
বন্ধু রুদ্রের চোখে মুখে চাপা কৌতুক হাস্য,বলে
" কবিকে কোন সম্পর্কে সম্বন্ধণ করে উপহার?
সারল্য স্নিগ্ধ ভোরের রাঙা আলোয় উজ্জ্বল
হয়ে উঠলো তরুনী শ্রান্ত শ্রাবণের বৃষ্টির মতন
হাসি ঝরিয়ে  ঝর্না হো হো হেসে,"কেন লিখেছি
'প্রিয় দাদাভাইকে বোন।

22)
হে কবি  বাঁশিওয়ালার অর্ঘ্য

হে কাব্যের স্বপ্নের দেবী
বঞ্চিত করলে মোরে
কোন অপরাধে
বৃদ্ধ তোমার মত আশ্চর্য
লেখার নিপুণতা অর্জনে
আপারক,  বরিশালে ঐ
মাটিতে, কীর্তন খোলা
নদীর জলে বাতাসে
যৌবনের বহিঃপ্রকাশে
আমার অক্ষমতা স্বীকার্য
ব্যর্থ হয়েছি এই জীবনে।
তবু স্বাদ আহ্লাদ জাগে,
মনের বাগান - বাড়িতেই
কীর্তন খোলা নদীর ধারে,
আমার মনের মানুষের
বাস, ফুলে ফুলে ছাওয়া
সৌরভে ভেসে আসে
তোমার কাব্যের ঘ্রাণে
শ্বেত গোলাপ তুমিই
নয়নে নয়নে বিমোহিত মন   
প্রথম প্রেম সলজ্জ দৃষ্টি
অপলক আমার মুগ্ধ নয়ন।
----------------------------------------------------------------------
আমার দোয়েল পাখীর গান

যদি বলি....
ফুল কেন ফোটে????
তোমাকে সুবাস দেবে বলে।
যদি বলি...
পাখি কেন গায়????
তোমাকে ঘুম ভাঙাবে বলে।
যদি বলি.....
চাঁদ কেন উঠে????
তোমাকে আলোকিত করবে বলে।
যদি বলি...
রাত কেন আসে????
তোমাকে আদর করবে বলে।
যদি বলি...
মানুষ কেন ভালবাসে???
তখন উত্তর হবে,
তোমার দেয়া দুঃখ কে......
সাথী করবে বলে!!!!!!
--------------------------------------------------------------------------------
বৃক্ষের কথা

প্রাচীন বৃক্ষের ডালে
বহু দূর হতে উড়ে এলো
দোয়েল, হঠাৎই আগমনে
উদ্বেলিত আপ্লুত
বৃদ্ধ বৃক্ষের ডালে
নবিন সবুজ পাতা পাতায়
আবির্ভূত হলো আমার
হৃদয়ের কবি পঠে আঁকা
ছবি কাব্যর দেবী অহেতুকী
কৃপা প্রেম ভাবতে
ভয়ার্ত, নয়নে  নয়ন 
বৃক্ষের দেহে কম্পন, 
উঠল ঝড় এলো ডাল পালা,
বিপর্যস্ত বৃক্ষের বুকের
কোঠরে  দোয়েল  জড়ায়ে
আছে বাধা ছাড়ায়ে যেতে
চায় তবু কেন ছন্দে ছন্দে
দোলে দোয়েল গেয়ে গান।
ফুটে উঠল প্রেমের ফুল সে
সে করে কোন মারাত্মক ভুল?
বৃক্ষের হৃদয় কেন তোমার
আপন হাতের দোলায়
দোলাও দোলাও বৃক্ষের 
অশান্ত  শোকাচ্ছন্ন  মন?
যৌবনে কোন এক জ্যোৎস্না
রাতে দুলেছিনু বনে
এই কি সেই  বৃক্ষের ডালে,
বাজ পরা দগ্ধ এ বৃক্ষ।
জরাজীর্ণ বৃক্ষ  ডালপালা
মেলে জড়িয়ে ধরতে
চায় আকাশের চাঁদ, বদ্ধ
উন্মাদ উদ্যম হীন জরাগ্রস্ত
বৃদ্ধ বৃক্ষের ঝুরি  নেমে গেছে
মাটির গভীরে  কেন  যায়
আরো গভীরে যায়, মাটি
বুকের ভিতর বন্দি  যে জল
মাটি পায়না তারে,
বৃক্ষের প্রেমে পড়ার ব্যর্থ প্রয়াস।
পরিহাসে আজ হাস্যাস্পদ
সবাইর কাছে  বিষন্ন
বৃক্ষ শোনে  গান, নিমগ্ন
আত্মহনন পূর্ব মূহুর্তে,  শেষে
ছেড়ে দীর্ঘশ্বাস  অব্যক্ত উক্তি
" কল্যাণ হোক  দোয়েলের
পাখী মৃত্যুর পথে পথ যাত্রীকে 
শুনিয়েছিলে গান,"কৃতজ্ঞ।

23)

সূর্যোদ্বয়ের ভোরে
কবিতার সাথে সঙ্গম

শ্যামল সোম বাঁশিওয়ালা

অলকানন্দা মন্দাকিনীর
সঙ্গম স্থলে কর্ণপ্রয়াগে
প্রাতে তোমাকে মানস নেত্রে
স্বপ্নে স্বর্ণ স্তনে শব্দের
চুম্বনে চুম্বনে রক্তাক্ত ঠোঁট,
রক্ত ঝরছে কাব্য পাঠে
শিশির ভেজা উষ্ণ শয্যায়।
কবিতার সাথে আশৈশব প্রেম,
" জল পড়ে, পাতা নড়ে " !
ছন্দে অছন্দের বাহুল্য হীন
আমি বেকুবের মতন কবিতা
তোমাকে গভীর আলিঙ্গনে
জড়িয়ে ধরে আদরে
আদরে, কাব্যিক এ মন
তোলে তুফান কবিতার
উত্তপ্ত দেহে করে লেহণ।
পৌরুষ  উড্ডীন অহংকারে
প্রোথিত বৃক্ষের চারা শুকায়।
অতৃপ্ত কবিতার চাপা কান্না
প্রতিধ্বনি শুনি নপুংসক হৃদয়ে।
শব্দের লহরী স্রোতে বহমান
যৌনবতীদের আমন্ত্রণে বিনম্র
প্রত্যাখান এ ক্রুদ্ধ নারীদের
উন্মুক্ত বসনে নগ্ন যৌন
আক্রমনে সমবেত প্রয়োগে
কবিতার ধর্ষনে বিহ্বল 
নিষ্ফল লিখন প্রয়াস।
অরণ্যে  পদ্ম যোনিতে
বিশৃঙ্খল বাক্যের
বিন্যাসে অক্ষরের বীর্য
পাতে অলকানন্দা স্রোতে  
ভাসে স্ফূর্তির অস্ফুট কাব্যের ভ্রূণ।

24)
বিরুদ্ধাচরণে মৃত্যু দন্ডিত আমরা

বাঁশিওয়ালা

এখন আমরা পরস্পরের
খুবই কাছাকাছি আছি,হেতু
পরস্পরকে ভালোবেসেছি।
আমি হিন্দুদের সনাতন ধর্মে
তুমি মরিয়ম চৌধুরীর বিধর্মী।
সমাজ জাত ধর্মের দেশের সীমান্ত
পেরিয়ে সব গন্ডি ছাড়িয়ে প্রান্তিক
বিবাহিত জীবন যাপন শারীরিক
সম্পর্ক নাই বা হলো তখন, শয্যায়
সরীসৃপ মত ধাবমান সর্পিল উষ্ণ
আলিঙ্গন পরস্পরের তৃষ্ণার্ত সে
নিবারণ,দীর্ঘ স্থায়ী অন্তহীন চুম্বন।
এত মতানৈক্য মতান্তর মতভেদ
প্রতিবাদ প্রতিরোধ  অগ্রাহ্য করে
আজ এত বছর পরে সুইডেনে
পরস্পরের পরিপূরক পরিপূর্ণ
স্বাধীন দেশের নাগরিক অধিকারে
পরস্পর পরস্পরকে ভালোবেসে
শেষে একত্র বসবাস, বিবাহের নেই
বন্ধন, বিখ্যাত দার্শনিক রাসেল সাহেব
এমন খ্যাতিমান পৃথিবীতে কম আছেন,
সে লেখক লিখেছিলেন, "বিবাহ আইনত
বেশ্যা বৃত্তি", এ সত্য, সাংঘাতিক কষ্টের
অভিজ্ঞতা,প্রেম হীন শারিরীক এ অশ্রুপাত
একই শয্যায় হৃদয়ের রক্তপাত, রক্ত  ক্ষরণ নয়? 

25)

কবিতা আমার  আদরের  পাগলী

বাঁশিওয়ালা

তুই বিশ্বাস কর 
পাগলী
তোর পেতে
কস্কবাজারে  সমুদ্র সৈকতে
পেতেছি শয্যা
শয়নে সবপনে
জ্যোৎস্নায় আলোকিত
ঢেউয়ে ভেসে যেতে
আঁকড়ে ধরতে 
চাইছি আমার পুরোনো
প্রেমিকা কবিতাকে,
কাব্যের  আঙিনায়
রঙিন সামিয়ানার নীচে ,
কবিতা নূতন কনে
সেজে কনকচাঁপায় সজ্জিত
সোনালী রঙের 
বেনারসী শাড়ির
আঁচলে  জামদানী
কারুকার্য, গাঢ় লালে
লাল কাঁচুলি, মেঘের বরণ 
ওড়নার  আড়ালে
একজোড়া মীনাক্ষী পলক
কাঁপে তির তির করে,
কাঁপছে শরীর, কাঁপিয়ে
আমার হৃদয়ের গহ্বরে
বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি  পড়ে
কবিতা তুই যখন পরদা
আড়ালের কাজীর
জিগায়, " কবিতা বিবি 
ওমর ফারুক কে সয়বামী
রূপে তুমি কি কবুল করো ?
হঠাৎই  আমার  দিকে
তাকিয়ে আছিস---"
তারপর বহু জল বহে
গেছে পদ্মা ও মেঘনা দিয়ে।
জানিস পাগলী চেষ্টা করছি 
অনেক চেষ্টা  শুদ্ধ 
কাব্য লেখার
কিন্তু  ছন্দ পতন ঘটছে,
শব্দ চয়নে ভুল হচ্ছে, 
বাক্যের বিন্যাসে যুক্তি
খুঁজতে গিয়ে কাব্যের
নিষ্ফল চেষ্টা করে যাচ্ছি,
একটি বিশুদ্ধ কবিতা
লিখতে না পারার
ব্যর্থতা কি ভয়ংকর ভাবে
সারা রাত বিনিদ্র রাখে,
বুকের ভেতরে সমুদ্রের
ঢেউ  প্রচন্ড  আঘাতে
আঘাতে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাই।
আক্ষেপ রহে গেল বোন,
সত্যিই  একটি কবিতা
যা এই বিষন্ন সন্ধ্যায়
বাসায় ফিরে
দেখি কেউই নেই,
হাহাকার বাতাসে
ভেসে বেড়ায়
হারোন প্রেম কবিতা
তন্ময় হয়ে পড়ি আমার
পরিচিত এক
বোনের সুখে বাসর
আশচর্য  অসাধারণ
লেখা ভাবের
প্রকাশ অনবদ্য সৃষ্টি
কাব্যিক এক নদী
কুল কুল করে
বহে যাচ্ছে হৃদয় জুড়ে।
আমার মনের গোপন কথা,?

26)

বাহাত্তরে বেড়িয়ে পড়লাম,প্রেমে

শ্যামল সোম

অকপটে স্বীকার করতে
এতটুকু লজ্জিত
নই আমি বাহাত্তরের বুড়ো,
বৃদ্ধ,স্থবির, নটবর, তবু এই
সেদিন তোকে দেখে মুগ্ধ হয়ে
তোর দিকে অপলক চোখে
চেয়ে আছি, এই তো আমাদেরই,
চির  পরিচিত" নাটোরের
বনলতা সেন,
পাখীর নীচের মতো চোখ তুলে
বলে "এতদিন কোথায় ছিলেন?"
"মৃদু হেসে, হাতে, রক্ত গোলাপের
গুচ্ছ  তোর হাতে তুলে দিলাম।

পেরিয়ে এসেছি শীতার্ত রাত,
ঝরা বরফ, পাতাবিহীন গাছ,
নিঃসঙ্গ ভয়াবহ
নির্জনতা, অবসাদ।
ফাল্গুন ঋতু আবার ফিরে এলো,
ফিরে এসেছে বসন্ত, কৃষ্ণচূড়ার
ডাল লালে লাল, বাতাসে ভাসে
সেই ভালোবাসার ঘ্রাণ।
বাহাত্তরে পৌঁছে আশ্চর্য !
আবার নতুন করে তোর
প্রেমে পড়ে, ভালোবাসার
আনন্দ স্রোতে ভাসছি আমি।
অনেকে গাল দিচ্ছে,
আঘাত করছে,
ভয় দেখাচ্ছে কেউ
কেউআমি নির্বিকার,
জানি যদি এ ভালোবাসার
অপরাধে মৃত্যু দন্ড হয়,
সেই দিন  মাথা পেতে দেবো
বিনা বাধায় অনায়াসে।

যদি কোন দিন সেই মেয়ে
এসে বলে আমার শীর্ণ হাতধরে
-না করে ভালোবাসার ছল,
এত বছরের সাজানো সংসার,
লোক নিন্দা, সমাজের
ভ্ররুকুটি এ তুচ্ছ হল-
-ঝড় উঠল, পাগলী তুই যখন
এসে ডাকলি, আমি বয়স,বর্ণ,
জাত, ধর্ম, শাস্তি ভুলে, এই
অসময়ে তোর হাত
ধরে বৃষ্টির মধ্যেই চলেছি,
অনন্তযাত্রায়, --
বল -এ কি ভালোবাসা নয় ?
তুই বল?
বিশ্বাস করো,
আমার ভালোবাসায়
নেই কোন প্রত্যাশা,
আমি শুধুই  ভালোবেসে
তোর ভালোবাসার সাগরে
সদা আনন্দ এ ভাসছি আমি।

27)
তোমার পাহাড় ( হতে চাই  )

বাঁশিওয়ালা শ্যামল  সোম

বেশী কিছু নেই ...
বৈশালী যা তোমাকে ছূঁয়ে,
আমার  এই পাহাড়ের
ফোয়ারার ঝর্ণা কন্যা
সন্তান জন্ম  হয়ে আজন্ম 
অপমানে অভিমানে
আত্মহননে জন্য পাহাড়ের
চিঁড়ে ঝাপিয়ে, হৃদয়ের
আমার স্পন্দন স্তব্ধ নিঃসঙ্গী।
প্রাতে শুনি আহীর
ভৈরবী রাগে আমার 
বড় আদরের কন্যা
ঝর্ণা বর্ষণে সুরের তরঙ্গে,
হিমালয়ের প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যে বিমোহিত পরিব্রাজক 
পর্বত আরোহী, যাত্রী
থমকে দাঁড়ায় ঝর্ণার রূপ
লাবণ্যে বিমুগ্ধ চোখে।
মা ঝর্ণা তোর এই অজানা
অচেনা কারো বুকে
অতর্কিতে  ঝাঁপিয়ে পড়ায়
আশঙ্কিত মন বেদনায়
সুপ্রাচীন এ বৃদ্ধ পিতা
পাহাড় আমি, আমার কষ্টে
দুই চোখ বেয়ে জল পড়ে।

**** *

28)

শঙ্খচূড় ও শঙ্খিনী সাথে সহবাস

বাঁশিওয়ালা শ্যামল সোম

সাপের মৈথুন যাঁরা দেখেনি পাবেন না।
এ আমার  একান্ত আপন জন তোমার
প্রেমে কতটা মগ্ন হয়ে আছি বহিঃপ্রকাশ।
সেই মানবীয় কবিতার সাথে নিভৃতে অঙ্গে
অঙ্গে কে বাজায়, বাজায় ( মোহন) বাঁশি।
কবিতার কাননে বৃষ্টি ভেজা গোধূলি লগ্নে
রাঙাঠোঁটে সুদীর্ঘ  আগ্রাসী চুম্বনের সুতৃপ্তি
তুমুল সহবাসে প্রসবিত  কবিতা ও গদ্য
সংমিশ্রণে নাম এর কোপ্তা  খেতে জাত
ধার্জ ভারতীয় রূপি? এক হাজার নূতন।
এ বিকলাঙ্গ সন্তান ডাস্টবিনে বা নদীতে
ভাসিয়ে দিয়ে ধুয়ে ফেলি নি হাত, কবিতার
জন্য  যদিও কবিতা আমার  আদরের পদ্য।
শক্তি চ্যাটার্জি  কবিতাকে পদ্য ডাকতেন।
কবিতাকে রাতে আদর করার ঐ যখন
লিখতে বসে বিনিদ্র নির্জন একাকি প্রেম
নিমগ্ন সহবাস এই শর্তানুযায়ী একনিষ্ঠতা
ঠিক লেখায় ধীর সরীসৃপ মত শব্দ চয়নে
পরকীয়া প্রেমে ওকে চুমু খেতে খেতে
পদ্য বলে ডাকি, শরীর পুষ্পিত হয়ে ফোটে
গোলাপ এক জীবন্ত  আলোকিত গোলাপ
আমার নগ্ন কবিতা শব্দ দেহের ঘ্রাণে পদ্য।

29)

নারীর প্রেম  ও মরণ

বাঁশিওয়ালা শ্যামল  সোম

আমার সুদীর্ঘ জীবনে
বহু নারীর বন্ধুত্বের সংস্পর্শে
এসে তাঁদের শরীর হীন
ভালোবেসে প্রকৃত অর্থে  বন্ধু
মতো গভীর ভাবে মিশে তাঁরা
যখন মনে করেন এই
বন্ধুত্বের মধ্যে কোন ছলনা বা
পাশবিক,  যৌনতা নেই
তখন সেই নারী খোঁজে
পিতার মতো বৃক্ষের মতো জনকে,
সেই বৃদ্ধ  বৃক্ষের ছায়ায়
খোঁজে নিশ্চিন্ত নিরাপদ আশ্রয়।
মানুষ যাকে  নারী  তাঁর
দুঃখ শোকে যন্ত্রনা কষ্ট বেদনা
তাঁর প্রেমিকের কথা তাঁর
নিজের  অনুভূতি  অভিজ্ঞতা,
তাঁর মনের গোপন কথা যা
নিজের  স্বামী  প্রেমিক বা
ঘনিষ্ঠ  বান্ধবীদের কখন বলে না,
কিন্তু  জননী ভগ্নী
আমার আদরের নাতনীরা
উজার করে বলে হালকা
হয়ে হাঁফ ছেড়ে  আশ্বাস পায়,
আমার কাঁধে মাথা রেখে
কাঁদে, আশ্রয় পেয়ে আঁকড়ে
জড়িয়ে ধরে আমাকে
বাপ বেটি মতো হু হু করে 
কাঁদি কাঁদতে ভালোবাসি।
অভিজ্ঞতা থেকে বলছি
কোন নারী যখন ভালোবাসে
তখন সে তাঁর দেহ মন,
প্রাণ  স্বীয় সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে
এক আত্মা হয়ে বিলীন হয়ে
যায় তাঁর প্রেমিকের সাথে
প্রেমে  অন্ধ হয়ে যাবে কখন
পুরুষের ছলনা কামনা করছি
এমন কি শারীরিক মিলনে বা
জোর পূর্বক ধর্ষণে শেষে
আনন্দে মেতে ওঠে,
এমন দেখা গেছে
অন্তর্গত দেহে ভ্রুণ
জন্ম  নেয়, এদিকে তখন
ঐ বিপদের সম্মুখীন যখন নারী
পুরুষ  লম্পট  প্রেমিক  দায়িত্ব 
এড়াতে উধাও  হয়ে যায়।
থানার পুলিশ করলে অস্বিকার
করে নয়তো ভিডিওটা
ইন্টারনেট  এ সেই যৌন সম্পর্ক
প্রচার করতে  উদ্ধত হবো।
এই ভাবেই চলে যৌন শোষণ,
তবু নারী উন্মুক্ত করে দেয়
হৃদয়ে সকল কপাঠ  উন্মুখ হয়ে
এক বিন্দু  শিশির কনা
ঝরে পড়ুক বৃষ্টি শব্দে দেহে
সুখের শিহরণ
না মরণ?
মেঘ কন্যা তুমি 
আকাশের বুকে ভেসে
আমার কাছে এসো,
মেঘমালা কে সঙ্গে
নিয়ে  মেঘে কোলে
ভেসে পৌঁছে  যাবো
সে এক স্বপন পুরের দেশে।
তুমি আছো তোমার স্বাধিকারে
তোমার চোখেই
আনন্দ বৃষ্টি হয়ে ঝরুক।

30)

নিহত আমার গোলাপ

শ্যামল সোম  বাঁশিওয়ালা

আমি হারিয়ে
ফেলেছি তোমায়
আমার মনের
নীল কষ্ট মনেই
রেখেছি জমা।
তবু স্মৃতি আমাকে 
ফেরায় আজও
ওগো প্রিয়তমা কবি,
পঞ্চাশ বছর আগে
গোলাপ রানীর প্রেমে
উত্তাল ঢেউ  আছড়ে
গোলাপ কমল বুকে
সে আঘাতে কষ্ট পেয়ে
ছিলে, সে মাসুল গুনছি
আজও ও পারো ক্ষমা
করো, গোলাপ রানী
কোলে তুলে ব্যাকুল 
চুম্বনে চুম্বনে রক্তাক্ত
ঠোঁটের দংশনে ফুল
আহত অভিমানে
ফিরে গেছে আপন
কাননে, কাঁকনে
নূপুরের ধ্বনিতে
ফেরে আমার দগ্ধ মন
ফুলের রানী রাঙা
গোলাপ তোমাকেই
খুঁজি সারাক্ষণ এ
ভাবেই যায় বেলা।

পূনশচঃ --- স্বাগতম সুপ্রভাতে আমার হৃদয়ের আকাশে
কবিতার শঙ্খচিল সীমান্তের পাহারাদার নজর
এড়িয়ে মেঘের খেয়ায় অফুরন্ত ভালোবাসা নিও।

31)

সূর্যোদ্বয়ের ভোরে
কবিতার সাথে সঙ্গম

শ্যামল সোম বাঁশিওয়ালা

অলকানন্দা মন্দাকিনীর
সঙ্গম স্থলে কর্ণপ্রয়াগে
প্রাতে তোমাকে মানস নেত্রে
স্বপ্নে স্বর্ণ স্তনে শব্দের
চুম্বনে চুম্বনে রক্তাক্ত ঠোঁট,
রক্ত ঝরছে কাব্য পাঠে
শিশির ভেজা উষ্ণ শয্যায়।
কবিতার সাথে আশৈশব প্রেম,
" জল পড়ে, পাতা নড়ে " !
ছন্দে অছন্দের বাহুল্য হীন
আমি বেকুবের মতন কবিতা
তোমাকে গভীর আলিঙ্গনে
জড়িয়ে ধরে আদরে
আদরে, কাব্যিক এ মন
তোলে তুফান কবিতার
উত্তপ্ত দেহে করে লেহণ।
পৌরুষ  উড্ডীন অহংকারে
প্রোথিত বৃক্ষের চারা শুকায়।
অতৃপ্ত কবিতার চাপা কান্না
প্রতিধ্বনি শুনি নপুংসক হৃদয়ে।
শব্দের লহরী স্রোতে বহমান
যৌনবতীদের আমন্ত্রণে বিনম্র
প্রত্যাখান এ ক্রুদ্ধ নারীদের
উন্মুক্ত বসনে নগ্ন যৌন
আক্রমনে সমবেত প্রয়োগে
কবিতার ধর্ষনে বিহ্বল 
নিষ্ফল লিখন প্রয়াস।
অরণ্যে  পদ্ম যোনিতে
বিশৃঙ্খল বাক্যের
বিন্যাসে অক্ষরের বীর্য
পাতে অলকানন্দা স্রোতে  
ভাসে স্ফূর্তির অস্ফুট কাব্যের ভ্রূণ।

32)

মেয়ে  তুই  বৃষ্টিস্নাত

এই মেয়ে তুই বৃষ্টি হবি
শ্রাবণের ধারা হয়ে অঝরে
পড়বি ঝরে বুকের পড়ে।
বৃষ্টি তোর ধারায় ভিজছি
এখন; শরীর বেয়ে কুল কুল
করে বহে যাচ্ছে সুখ, গলে গলে
পড়ছে আশ, বাসনা হৃদয়ের
গহীন গোপন যত জমানো
বেদনা নীল পদ্ম ফুটছে ঐ দীঘি
জলে, বৃষ্টি তোকে জড়িয়ে দু হাতে
সজোরে জাপটে বুকে ভিজছি সব
তোর অভিমান, অনুযোগ, অনুরাগ
তৃষ্ণার্ত তোর ঠোঁটে চুম্বনে, লেহন করছি
জল, আমার ঘন আলিঙ্গনে বৃষ্টি তোর
ফোঁটা ফোঁটা জলের স্পর্শে তারা ফুটছে
রাতে আকাশে,  জ্যোৎস্না আলোয়
আমি ফিরে পাচ্ছি বেঁচে থাকার আনন্দ।

33)

আবহাওয়া বৃত্তান্ত

শ্যামল  সোম

নীল আকাশের শরীর ভালো নেই বৈশাখের চড়াই রোদে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ঝড় এই অপেক্ষায় ছিলো, দৈত্যের ঝড় ঝাঁপিয়ে পড়ছে। ঝড়ের তান্ডবে লন্ড
ভন্ড করে আকাশকে নাস্তা নাবুদ করছে। বজ্র কোথা দ্রুত বেগে ছুটে এসে, মেঘেদের সাথে লড়াই করতে শুরু  করলো মেঘেরা আকাশের বন্ধু,  তারা ভয়ংকর ভাবে উল্লাসে হারে রে রে রে করে তেড়ে এলো, মেঘেদের ঘর্ষণে প্রচন্ড শব্দে হুংকার ধ্বনি চারি দিকে প্রতি ধ্বনি কেঁপে কেঁপে উঠছে চারিদিক। বজ্র ক্রোধে উন্মাদনায় তার শেষ অস্তিত্ব বজায় রাখতে ক্ষেপণ
অস্ত্র নিক্ষেপ করলো কড় কড় ভয়াবহ আওয়াজে ঝলসে উঠলো বিদ্যুত আকাশের গায়ে আকাশ ব্যথায় চিৎকার করে উঠলো। কদাকার অসুরের মতো ঝড় কাল বৈশাখী হানা দিয়ে সব কিছু উড়িয়ে নিয়ে চলে গেল।
ক্লান্ত মেঘেরা রণক্ষেত্র অবসন্ন ক্ষত বিক্ষত আহত সৈন্যদের হৃদয়ে পুঞ্জীভূত আক্রোশে কালো কালো মেঘেরা সদল বলে আকাশের বুকে জমছে, আকাশ কালো মেঘেদের স্পর্শে আঁধারে ঢেঢেকে গেল।
রূপবতী মধ্য যৌবনা  ঈষৎ মেদ মধুর হস্তিনী বর্ষা হেলতে দুলতে আকাশের পূর্ব প্রেমিকা তার ভারি গতর নেড়ে আকাশকে সজোরে জাপটে ধরে গভীর আলিঙ্গনে ঘন ঘন চুম্বনে আদরে অস্থির করে তুললো আবার নতুন করে আকাশের সাথে বর্ষার বছরের ঐ কমাস বাসর সাজিয়ে সোহাগে বর্ষা সোহাগী আশ যেন আর মিলছে না।
বর্ষা আকাশের প্রেমে সোহাগে, আদুরে আদরে তন্বী মিষ্টি কিশোরী নব যৌবনা, ঢল ঢল যুবতী সদ্য পুষ্পফুটিত যুঁই ফুলের কুঁড়ি বৃষ্টি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়ে অঝরে আকাশের বুকে আকুল ভাবে পূর্ণ যৌবনা বৃষ্টি আকাশ ভালোবেসে বৃষ্টি তার শরীর দিয়ে আকাশকে ঢেকে
বৃষ্টি পাগলী যৌবনের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে আকাশ বৃষ্টির চুম্বন, সুতীব্র স্পর্শে কামনায় সম্ভোগে মেতে উঠলো। স্বাভাবিক ভাবেই মাটি উর্বরা হলো, ফসলের ফসলের ভরে গেলো ক্ষেত খামার।
" এসেছে  শরৎ হিমের পরত, লেগেছে হাওয়া গায়ে " আকাশ বৃষ্টির প্রেমে মশগুল হয়ে ছিলো।শিউলি ফুল মতো মাঝে মাঝে এক পশলা বৃষ্টি এসে চুমু খেয়ে যাচ্ছে।
মাঠে মাঠে সোনার  পাক ফসলের ধানের শীষ রোদে ঝলমল করছে। ঘরে ঘরে নবান্ন,  পুলি
পিঠে, খেজুরি পায়েস এর গন্ধ ম ম  করছে।
হেমন্তের সুনীল  আকাশের গায়ে আদুরে সাদা শিশু মেঘ বালিকা মেঘ একে একে নেচে নেচে ভাসে আকাশে আকাশে।

34)

ভালোবেসে বাংলাদেশে এসে

শ্যামল  সোম

হে মহান ঈশ্বর আজ বড় ভারাকান্ত, ব্যথিত
হৃদয়ে প্রার্থনা করি
আমার প্রিয় জন্মভূমি ফেলে আসা ফুলপুর,
সোনালী আলোয়
জয় বাংলার বাংলাদেশে,
এই কি সেই 1971 সালের বাংলাদেশ?
হায়!  আজ  কোন অনুযোগ, অভিযোগ নেই,
নেই কোন বিদ্বেষ, শেষ
হয়ে গেলো কি স্বপ্নের দেশ, গড়ে তোলার কাজ।
সেই পদ্মা বিশাল সুনীল আকাশে এসে মেশে।
অবরুদ্ধ হয়ে,  থম থম পরিবেশে, আতংক,
শঙ্কা, চোখে মুখে হতাশা,
সন্ত্রাসীর অতর্কিতে পশ্চাত হতে
আকস্মিক আক্রমনে, পেট্রল বোমা,
অগ্নি সংযোগ, মানুষ পোড়ার দুর্গন্ধে,
বিস্ফোরণের, লেলিহানে কালো
ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে সূর্যোদয়ে।
সূর্যোদয় পূর্ব শীল আকাশ,
পুত্র পুত্রী হারা
জননীর বিলাপে, হাহাকারে,
হৃদয় বিদারক কান্না,
হে ঈশ্বর তুমি কি স্থবির
বধীর হয়ে গেলে?
ক্রোধে বজ্র কঠিন, স্তব্ধ; নিঃশব্দে
নিস্পৃহ নিশ্চুপ তুমি?
সে কি এই তোমারই সৃষ্টি,
আজ পরস্পরের প্রতি সহিংস্র,
সহিষ্ণুতার অভাবে
তোমার সন্তান ঐ দেখো কি প্রচন্ড
জিঘাংসায়
উন্মত্ত, হত্যালীলায়, বোধহয়
ক্রীড়ানকের অঙ্গুলী হেলনে,
অশুভ সংকেত, মুহূর্তে
ঝাপিয়ে পড়ছে অন্যের
দেহে, অবাধে চলছে, হত্যা, 
হত্যা  চারিদিকে হত্যা,
আত্মঘাতী ভাতৃ হত্যা।
সন্ত্রাসের ভয়ে সন্ত্রস্ত
সারা এশিয়া মহাদেশ, 
কার পানে এই অভিশপ্ত
জীবন, এ পাপ আমার তোমার তাঁর,
প্রার্থনায় মোনাজাতে
গুনা কবুল করো তুমি,
করি আমি, নিশ্চিত বিশ্বাস
এ আমার হে ঈশ্বর তোমার অপার করুনায়,
কৃপায়, আবার ফিরে আসবে, টিনের ছাওয়া,
মায়া ঘেরা ঘরে
আনন্দে শিশু হাসবে, ফোটে উঠবে হাসি,
ফল ফুলে ভরা গাছে গাছে ডাকবে, দোয়েল,
শান্তির দূত কপোত, কপোতী,
দেশে দেশে এ সুখে বার্তা
পৌঁছে দিতে আকাশে আকাশে
উড়ে যাবে এক ঝাঁক শঙ্খচিল।

35)

বাহাত্তরে বেড়িয়ে পড়লাম,
প্রেমে

শ্যামল সোম

অকপটে স্বীকার করতে এতটুকু লজ্জিত
নই আমি
বাহাত্তরের বুড়ো, বৃদ্ধ,স্থবির, নটবর, তবু
সেদিন
তোকে দেখে মুগ্ধ হয়ে তোর
দিকে অপলক চোখে
চেয়ে আছি, এই তো সেই,
চিরপরিচিত" নাটোরের
বনলতা সেন, পাখীর নীচের
মতো চোখ তুলে বলে
এতদিন কোথায় ছিলেন? "
মৃদু হেসে, হাতে, রক্ত গোলাপের গুচ্ছ
তুলে দিলাম।
পেরিয়ে এসেছি শীতার্ত রাত,
ঝরা বরফ, পাতা
বিহীন গাছ, নিঃসঙ্গ ভয়াবহ
নির্জনতা, অবসাদ।
আবার এলো, ফিরে এসেছে বসন্ত, কৃষ্ণ
চূড়ার ডাল
লালে লাল, বাতাসে ভাসে সেই
ভালোবাসার ঘ্রাণ।
বাহাত্তরে পৌঁছে আশ্চর্য ! আবার
নতুন করে তোর
প্রেমে পড়ে, ভালোবাসার আনন্দ
স্রোতে ভাসছি আমি।
অনেকে গাল দিচ্ছে, আঘাত করছে,
ভয় দেখাচ্ছে কেউ কেউ
আমি নির্বিকার, জানি যদি এ
ভালোবাসার অপরাধে
মৃত্যু দন্ড হয়, সেই দিন
মাথা পেতে দেবো অনায়াসে।
যদি কোন দিন সেই
মেয়ে এসে বলে আমার শীর্ণ হাত
ধরে -না করে ভালোবাসার ছল, এত
বছরের সাজানো
সংসার, লোক নিন্দা, সমাজের
ভ্ররুকুটি এ তুচ্ছ হল--
ঝরের উঠল, পাগলী তুই যখন
এসে ডাকলি, আমি বয়স,
বর্ণ, জাত, ধর্ম, শাস্তি ভুলে, এই
অসময়ে তোর হাত
ধরে বৃষ্টির মধ্যেই চলেছি, অনন্ত
যাত্রায়, ---
এ কি ভালোবাসা নয় ? তুই বল?
বিশ্বাস করো, আমার ভালোবাসায়
নেই কোন প্রত্যাশা,
আমি ভালোবেসে ভালোবাসার
আনন্দে সদা ভাসছি আমি।

36)

আমাদের সাত সতিনের  ঘর

শ্যামল  সোম

সাত সতিনের ঘর
কে পায় কবে বরের আদর
সতিনে সতিনে চুলোচুলি
মুখে মধুর বুলি, কেউ হাত
ভাঙালো, মাথা ফাটলো,
সোয়ামী এসে খুব পিঠলো।
এখন একে অন্যের গলা ধরে
বুকে জড়িয়ে নিয়ে সবাই এক
সাথে কাঁদছে, একে একে অপরের
চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে আবার
হেঁসেল  ঢুকে আগুনের চুলায় উপর
হাড়ি চাপালো, এক এক জন কেউ
বাটনা বাটছে, তরকারি কাটছে, কেউ
বাসন মাজছে, জল ভরতে গেলো,
আদরের ছোট গিন্নি পান খেয়ে ঠোঁট
লাল করে, নুপুর পায়ে রুনু ঝুনু তালে
হেলে দুলে স্বামীর গোসা ভাঙাতে
হেসে এসে খুব কাছে গিয়ে মুখে খাইয়ে
দিলো পান। গতর নিয়ে পাশে গেলো।
বড় বললে,  " কি বলবো বোন যত দিন
এ শরীরে যৌবনের ফুল ফুটে ছিলো কত
আদর কত সোহাগ এই তো মেয়ে -
মেয়েছেলে জীবন, কবে আসবে মরণ?"

37)

শেষের সে বাণী

শ্যামল  সোম

আমাকে ব্যথিত করে, হৃদয়ের গহ্বরে
প্রতিনিয়ত এ রক্তক্ষরণ,কন্ঠ আমার
রুদ্ধ আজিকে বাঁশি সংগীত হারা।
হৃদয়ের হাহাকার, বাতাসের শব্দে
ঝরা পাতার মর্মর ধ্বনি স্বরে নৈঃশব্দে
গুমড়ে মরে কান্না কে শোনে,দুঃসহ এই
নির্মম নিষ্ঠুর অত্যাচার, হুংকার এ কার?
প্রাচ্যের দক্ষিণ এশিয়ায় সূর্য কি অস্তমিত?
শাসনের শোষনে নারীর কন্ঠ এ তিন দেশে
কেন রুদ্ধ ?আজিকে, বাক স্বাধীনতা খর্ব ?
হে পুরুষ এখনও এ আস্ফালন, এখন দৈনের
অহংকার তোমাদের শাসন যখন চূর্ণ বিচূর্ণ,
ছিন্ন ও বিচ্ছিন্ন ঝলসে যাওয়া শিশুর শব,
মৃতদেহের লাশের এত বীভৎস ভয়াবহ
হাজার বছরের অতীত কলংক গোলাপের যুদ্ধ, 
তীব্র মতান্তর দখল নেওয়ার প্রতিদিন হিংস্র
আক্রমন প্রতিদিন প্রতিদন্দিতাপরআনবিক
অস্ত্রে সুসজ্জিত ঐ ওরা ক্রোধে, পরস্পরের দিকে
ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাতে আঘাতেশিশুদের বিদ্যালয়ে,
মন্দির উপাসনালয়ে প্রার্থনায় রত ভক্তের শরীর
বারুদের আগুনে পুড়ে ছারখার, মাতৃহারা শিশুর
করুন কান্না হে প্রভু তুমি কি শোননা? ওরা অর্থনৈতিক
বাজার, এরা বোধহীন, বধির তাড়িত, অন্ধ,  উন্মাদ
শোকে আসন্ন এ কি তৃতীয় মহাযুদ্ধের প্রস্তুতি,
এশিয়ার দুটি দেশ নারীর সন্মান,ফিরিয়ে দিয়ে আজ শ্রেষ্ট।
হে প্রভু ত্রাণকর্তা রূপে আর এক  আবির্ভূত হও,
এ গ্লানি, কলঙ্ক মোছন করে আগামী প্রজন্মের
জন্য এক শান্তি, সুস্থ, সুন্দর পৃথিবী গড়।

38)

বৃদ্ধ পিতার  বিলাপ

শ্যামল  সোম

হায়, হায় একদিন টা দেখবো বলেবলেই কি ঈশ্বর তুমি বাঁচিয়ে রাখতে ?
হে ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা নিয়মিত সময়ে করে গেছি দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর।
কোনদিন কিছু চাই চাই নাই। হে মহান ঈশ্বর আজ শোকাহত,
অপমানিত এক বৃদ্ধ পিতা মৃত্যু প্রার্থনা করছে।
           
এই লোকজনের বিদ্রুপ, ব্যাঙ্গ, কটাক্ষ,  পাড়া পড়শী, 
আত্মীয় স্বজনের তীব্র সমালোচনায় কান পাতা দায়।
কোর্টে মামলা চলাকালীন পিতা জবানবন্দি----
আপনারা বলুন ধর্ম অবতার,  মহামান্য বিচারক গণ,
হুজুর আপনি বলুন আজ এই দীর্ঘ দু বছর পরে  ঐ
হতভাগিনী মেয়েকে কি ভাবে আমাদের সংসারের ফিরিয়ে নিতে পারি ?

যে স্বীকার করেছে যে এক স্বপ্নের রাজকুমার বাদশা
গভীর ভাবে ভালোবেসে ছিলো, দীর্ঘ দুবছর বিভিন্ন
হোটেলে সহবাস করেছে, বাদশার বিবাহের প্রতিশ্রুতি,
শপথ,  অঙ্গীকার মেয়েদের নিশ্চিত বিশ্বাস করে দীর্ঘ দিন
সহবাসে  স্বর্গীয় আনন্দের স্রোতে ভেসে গিয়েছিল।

মেয়ে কবুল করছে, সে বাদশার প্রেম,  তাঁর অপূর্ব কাব্যিক
নান্দনিক প্রেমের উদাসে, সহমর্মিতা, বলিষ্ঠ, সাবলীল,
শক্তিশালী ঐ  দেহের  যৌন আকর্ষণে, কামনায়, মায়াবী
চোখের দৃষ্টি মেয়েকে মুগ্ধ করেছিল।

বাদশার শারিরীক  সৌন্দর্য্য ও পুরুষোচিত উদ্দাম প্রেমে মেয়ে
আমার এত বছরের বাবা, মা, ভাই, বোনের ভালোবাসা,  স্নেহ, 
মমতা, লোক নিন্দা, চক্ষু লজ্জা সমস্ত কিছু  বিসর্জন দিয়ে বাদশার
উপহার দেওয়া গহনা, দামী দামী পোষাক, স্মার্ট সেল ফোন,
গুছিয়ে নিয়ে এক রাতে বাড়ি ছেড়ে বাদশার সাথে পালিয়ে যায়।

মেয়েদের জানতো বাদশার মতো মাস্তান দাগী আসামী,
কুখ্যাত ঐ বাদশা তার পরিবার মেনে নেবে না।

বাদশা মেয়েকে নিয়ে কানপুরে নিয়ে গিয়ে বাসা ভাড়া করে
সাজানো সুখে সংসার পেতে নিয়মিত রাতের পর রাত----!
অবশেষে বেশ্যালয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়।
মেয়েকে সেখানে রাত পরী হয়ে প্রতি রাতে কাস্টমার সার্ভিস
করে শারীরিক মিলন বেশ্যা--যৌনকর্মী রূপে ভয়ে,
নিরুপায়ে বেশ্যা হয়ে কাজ করে গেছে।
যদি এই মহান দেশ, সতী সাবিত্রী,  পূণ্য দেশে বেশ্যাদের 
যৌনকর্মীদের পেশাদারী আইনী স্বীকৃতি নেই, বেশ্যা বৃত্তি
আইনত নিষিদ্ধ দণ্ডনীয় অপরাধ---আশ্চর্য পাড়ার পাড়ার ঘরে
ঘরে খবরের কাগজের পাতায় পাতায় রঙিন বিজ্ঞপন।

" অফুরন্ত আনন্দ , প্রতি জেলায় জেলায়  নিজ নিজ এলাকায়, 
যে কোন যৌন আবেদনকারী নী কিশোরী, সুন্দরী যুবতী সাথে
বোল্ড রিলেশন, গড়ে অর্থের বিনিময়ে ভালোবাসা প্রেমের স্রোতে ভেসে যান।"

আর যাদের অর্থের সামর্থ নেই তারা ভাদ্র মাসের যৌন কাতর
কুকুরের মতো ঘরে, সংসারের,  পাড়ায়,  উদ্যানে, 
খোলা রাজ পথে ( যুবক যুবতীর চুম্বনে প্রতিবাদের ভাষা
আজ) কিন্তু এরা অশিক্ষিত,  কুখ্যাত মস্তান, যৌনতার
দাদা কাকা মামা বাবারা বা যাচ্ছেন না, মেয়েছেলে সে পাঁচ
থেকে পঁচাত্তর বছরের শিশু কিশোরী যুবতী, বউ, কাকিমা, 
দিদি, বোন, ছাত্রী,  মনে ধরেই ছলে বলে কৌশলে, ধর্ষণ ধর্ষণ
ধর্ষণ আজ চারিদিকে চ্যানেলে চ্যানেলে খবরের কাগজে পাতায়
পাতায় হাজার হাজার ধর্ষণ,  এই দেশে প্রতি এক ঘন্টায় দশটি ধর্ষণ -
বিশটি যৌন নির্যাতন, নিগ্রহ, অশালীন আচরণ ঘটে চলছে ধর্ষণ--
এখন বিশাল প্রতিযোগ্যতা চলছে ধর্ষণে কে কে শতক পূর্ণ করতে পারে।
এ তো গেলো দেশের উন্নতি,  বিশ্বে  শীর্ষ স্থানে অবস্থান।

আমি  ছাপোষা  প্রাইমারী স্কুলে সামান্য শিক্ষক,
ঘরে আরো একটা কিশোরী মেয়ে, ছোট ছেলে, পুণ্যবতী স্ত্রী রয়েছেন হুজুর।

এখন ঐ ধর্ষিতা,  বেশ্যা পতিতা মেয়েকে কি ভাবে ফিরিয়ে নিতে পারি?

কে জানে যৌন ব্যাধি ঐ এডস এর শিকার হয়ে কিনা?
বিবাহ কিন্তু কি ভাবে দেব, পুনবাসন কিন্তু হবে?

ঘরে একজন ( বেশ্যা) রাখলে ( মাগো ক্ষমা করো)
মাগীর  দালাল, খদ্দের দিনে রাতে বিব্রত ব্যতি ব্যস্ত করবে,
আমাদের মারধর করে দলবল এনে তোলে নিয়ে যাবে সবাই
এখন ধর্ষকদের সমর্থক,  ওদের জন্য সবাই সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।

ছোট মেয়েটাকে ধর্ষণ করবে বলে সবাই ঘুর ঘুর ঘুর করছে।
আমিও এ অসহায় অবস্থায় কি করি আপনি-আপনা আপনি বলুন।
আমার মেয়ের ছবি দিলাম কেউ যদি--বিবাহের প্রতিশ্রুতি নয়।
আইনতঃ বিবাহ করতে চান।

39)

নারীর স্বধীনস্থ স্বাধীনতায়।

নারীর মুক্তি আসে স্বউপার্জনে, কারণ  প্রথমেই
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ভীষণ প্রয়োজন,  স্বনির্ভরতা,
আত্মত্যাগ,  সংসারের ঝামেলা, সন্তান প্রতি পালন,
এর মধ্যে স্বামীর অধীনস্থ হয়ে নারীবাদী সৌখিন 
লেখক হওয়া যায়, কিন্তু স্মরণীয়া বরণীয়া বিশ্ব
বিখ্যাত নারী বাদী আন্দোলনে জীবনের অনেক
ঝুঁকি নিতে, মৃত্যুকে ছায়ার মতো সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হয়।

স্বামীর অধীনস্থ হয়ে  বাড়ীর টাকায় তাঁর বাড়িতে থেকে 
নারীর নিজস্ব  অধিকার, নির্যাতিতার  জন্য একটা সীমার
মধ্যে থেকে  মাত্র আন্দোলন করা যায়।
নিজের ক্ষুধার অন্ন নিজেকে জোগাড় করতে হয়, 
নিজস্ব বাড়ি,  চাকরী প্রথমে।

হায় সম্প্রীতি,  সৌহার্দ,  সৌভ্রাতৃত্ব সৌজন্য বোধ
সব সব সবাইর সর্ব হিংস্রতা, নগ্নতা, বর্বরতা সর্বস্ব
দিনের আলোয় দেখে আমিও শিউরে উঠলাম, এই এরা
দশ পুরুষ পূর্বে কি ছিলো জন্ম পরিচয়,  এতই পরিবর্তন?

এত পারস্পরিক বিদ্বেষ, আক্রোশ, শানিত হাতিয়ার নিয়ে
প্রাচীন রোমান ঐ Gladiator মতো ঐ ওরা শুধু অপেক্ষায়
আছে, সতর্কে,  তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, চোখে মনি ঘুরছে এদিক ওদিক।

মানুষ তুমি কি এতই অকৃতজ্ঞ, ভুলে যখন অসহায় বিধস্ত
পাশে এসে ধরে ছিলাম হাত, রণজিৎ ক্লান্ত হয়ে গভীর আলিঙ্গনে
সেদিন দুজনে আনন্দে উল্লাসে পরস্পরের গলা জড়িয়ে গেয়ে
ছিলাম," পুরানো সেই দিনের কথা বলবি কিরে হায় "
মনের সেতারের তার  গেছে ছিঁড়ে,  সুর আর নাই আসে বিষাক্ত
বিষাদে।
একা একা নির্জন এই দীঘির পারে হিজল গাছের ছায়ায়
বসে ভাবি,  কে জানে আমার ভালোবাসায় হয়তো ছিল কোন খাদ ?

39)

আজও আমার হৃদয় প্রেমের  অপেক্ষায়

শ্যামল  সোম

লাবণ্য  তোমার প্রেমের গান শুনে
প্রেমে পড়েছিলাম পঞ্চাশ বছর আগে,
আজন্ম প্রেমিক আমি, আমার আগ্রাসী
প্রেমে সমূলে নির্মূল করতে চেয়েছিলাম
সামাজিক বন্ধন ছিন্ন করে পালাতে চাইলে,
তুমি কান্নায়  ভেঙে জড়িয়ে ধরেছিলে- -,
মাফ চাইলে সামাজিক পারিবারিক
সমস্যার সমাধানের চলে গেলে চিরতরে।
চুয়াত্তর বছরেও তোমাদের প্রেমের অপেক্ষায়।
নয়নে নয়নে আপন মনে যে চোখের  ভাষায়
প্রেমের বহিঃপ্রকাশ হবে, সে মেঘবালিকার
প্রতীক্ষায় রইলাম মৃত্যুর পরশের পূর্ব পর্যন্ত।
পেমের পূণবাসন পূর্বাভাস নাই বা হলো একত্র
বসবাস, নয়নে নয়নে প্রেমের স্পর্শে শিহরণ
জাগে তোমার কাব্যিক শব্দের তীক্ষ্ণ বাক্য বাণে।

40)

নিঃসঙ্গ  একাকিত্বে আছি

শ্যামল সোম

আমার পাশে আজ আর কেউ নেই
আমি হেমন্তের ঘ্রাণে  শুয়ে আছি ঘাসে,
অসহ্য অভিমানে বিষন্ন মনে চরম ত্রাসে।
নির্জন নিরালায় এই হলুদ সবুজ অরণ্যে
কর্ণফুলী নদীর ধাবমান সে উত্তাল স্রোতে
ভেসে গেছে ফাল্গুনের ফেরারী মন হতাশায়।
হে  আমার প্রেমের কবি প্রেমের আকাঙ্খায়
উঠে এসো যদি থাকে প্রাণ কল্যাণের আশে
তাই লহ সাথে এসো আমার মানুষের পাশে।
নূপুরের সুরে পা ফেলে ফেলে এলো কাছে
ভালোবেসে পরম মমতায় মায়াবী চন্দ্রানী
চোখের তাকিয়ে মৃদু হেসে কাঁধে রেখে হাত
সে হাতের স্পর্শে আজ সুপ্রসন্ন হয়েছে মন।
কৃতজ্ঞতা নয় সই প্রেমের স্বপ্নীল প্রেম বন্ধনে,
এ বৃদ্ধের ভগ্ন মনে স্বপ্ন বীজ বপন করলে
তুমি সযত্নে নূপুরের ছন্দে  ছন্দের আওয়াজে
শেষ ভালোবাসার হাওয়ায় এবার শ্বাস নেওয়া
যায়, জীবনের শেষ গোধূলির লগ্নে ক্ষণিকে,
হে কর্ণফুলী সাঁতার কাটি ঐ সে জল বক্ষে
তোমার প্রেমে ভাসে যাই, ভালোবাসার নদী
তুফান দুই কূল ভাসে দুর্বার দুরন্ত দূর্দান্ত প্রেমে
পড়েছিলাম সদ্য মুক্ত সে এক স্বপ্নের বাংলাদেশে।
উনিশো বাহাত্তর সে স্মৃতি বহমান কর্ণফুলী স্রোতে।

No comments:

Post a Comment