বুড়ি গঙ্গা নদীর বহমান স্রোতে ( হুমায়ুন আহমেদ এর আলোর পরশ মণি
চলচ্চিত্র দেখার পরে অনুপ্রাণিত হয়ে এই লেখা )
শ্যামল সোম
উনিশো আটষষ্টি সালে যমুনা আকতার আর রফিক
পাশাপাশি বাড়ীর থাকে ষোল বছরের কিশোরীর সাথে
রফিক আজাদ গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক যদিও তৎকালীন
লোকাচারে খুব সোচ্চার নয়, মাটির সাথে গাছের নিবিড়
দুজনের মর্ম স্পর্শে প্রেমের সম্পর্ক, যমুনা যেন মাটি ভীষণ
নরম কমল ফুলের মতন পবিত্র, শৈশব থেকেই আ
মুর্শেদ সাথে, ফরয এর নামায কায়েম করা ওর নিজস্ব ছোট্ট
নামায পাঠি যেটি ওর দাদু হজ যাত্রীদের সাথে ফেরার পথে
যমুনা এক মাত্র নাতনীর এনেছেন, হাজি আবদুল্লাহ আল মনসুর
ছি শুচি স্নিগ্ধ ও শুচিস্মিতা, সারা পাড়ার কখন তাকে বোরখা
আড়ালেই দেখেছেন, কখন ভোর বেলায় মন
যে নীচে
প্রথিত এই কৈশোরের প্রেম, যমুনার সলজ্জ চোখেচোখ
পড়তেই ভূমিকম্প স্পন্দনে আলোড়িত দুজনার উষ্ণ মন।
পুরোনো ধানমন্ডির লেকের ধারে পরস্পরের স্নিগ্ধ সন্ধ্যা
সান্নিধ্যে নির্জন পরিবেশে বাক্য হারা প্রেমে আত্মহারা।
হঠাৎই বৃষ্টির পানি ঝরতেই বৃষ্টিস্নাত পরস্পরের কাছাকাছি।
দেশের তখন বিদেশী শাসন শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
উর্দূ ভাষার জাতীয় ভাষার ব্যবহারে সুতীব্র ক্ষোভ প্রকাশ
অধুনা বাংলাদেশের বিভিন্ন নেতা নেত্রীর জন্য সংযোগের
উনিশ বাহান্ন সালের ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের
জমায়েত মিছিলে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন পদ যাত্রায়
পূর্ব পাকিস্তানে পুলিশের লাঠি চার্জ শেষে গুলি বর্ষণে
প্রাণ হারান তিন ভাষা আন্দোলনের শহীদ
বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা মাতৃ দুগ্ধ মত বাংলা ভাষা
অস্বীকৃতি দিকে দিকে বিভিন্ন জেলায় আপামর সব ধর্মের
মানুষ মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর শপথ গ্রহণের ইতিহাসে।
ভাষা সৈনিক মাতিন সাহেবের ও মৌলনা ভাসানী বহু ব্যক্তিত্ব
সেদিন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাশেই
ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের প্রধান নেতা
গণ ভোটে সাফল্যে গণ পরিষদে সংখ্যা গরিষ্ঠ হওয়া সত্বেও
শাসকদের চোখে দেশদ্রোহী ভোট বাতিল করে চললো ফের
ধর পাক, বঙ্গবন্ধুর ছয়দফা দাবীর বিরুদ্ধেই প্রতিরোধে গর্জে
উঠল বিদেশী শাসকের কামান একদিনে ভয় তাড়িত পশুর মত
টেনে হিঁচড়ে এনে গণ হত্যা করেছিল সৈনিক ও পুলিশের সন্দেহে
যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার এখানে সেখানে, বঙ্গবন্ধুর রেস কোর্স
ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষনে অনুপ্রাণিত বহু যুবকের সাথে রফিক
রফিক আজাদ আব্বু আম্মুর কাছ থেকে গোপনে পলায়নের
রাতে যমুনার কাছেই ধরা পড়েছিল সে, অনুনয় অনুরাগে তৃষ্ণার্ত
চোখে জল টল টল করে, দেশের জননী শৃঙ্খল মোচন এর দায়িত্ব
পালনের অঙ্গীকার যমুনা কে বোঝাতে, আমার মায়ের সোনার নোলক
না নিয়ে ঘরে ফিরবো না।
পথেই এবার নামো সাথী পথেই হবে পথ চেনা, যমুনার হাত ধরেই
বাংলা মায়ের ঢলঢল মুখে হাসি ফোটাতে, " জনতার সংগ্রাম চলছে
আমাদের সংগ্রাম চলছে - প্রয়োজন হলে দেবো এক নদী রক্ত ! "
তিরিশ লক্ষ মানুষের আত্মবলিদান আর এক লক্ষ জননীর ভগ্নী
কন্যার গণ ধর্ষনের শিকার সৈনিকদের ব্যারাকে অস্থায়ী ঝাউনিতে।
সেই গগন ভেদি আর্তনাদ জবাই করেছিল বিদেশী পশুরা পাশবিক
নির্যাতনে সহস্র নারীর অভিশাপে অভিশপ্ত আজ তাদের জীবন পশুর
মতন মৃত্যুর খবর পরবর্তী কালে পেয়েছিলাম।
কিছু রাষ্ট্র এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই
মুক্তি যোদ্ধা রফিক আজাদ ও নার্স যমুনার খোঁজে আজও প্রতীক্ষিত
আমার তোমার মনের অলিন্দে বৃষ্টি ঝরে অশ্রু বিসর্জন জানাই সালাম।
No comments:
Post a Comment