ইজ্জত ( এইটি অনুপ্রাণিত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লেখা প্রয়াস )
শ্যামল সোম
কপোতক্ষা নদী বহে যাচ্ছে রূপসা গ্রাম পাশ দিয়েবহে যাচ্ছে।
রশন আলি এই গাঁয়ের মাতব্বর পঞ্চাশ বিঘে ফসলের জমি
চারটে পুরুরে মাছ চাষ সত্তর বছর বয়স সৌখিন সুখী মানুষ।
বড় মানুষ, সচ্ছল সংসার বিশাল সংসার তিন বিবির বারটি
সন্তান জন্ম দিয়েছে, চারজন কাজে বুয়া রয়েছে বিবিরা
সেজে গুজে সন্ধ্যা বেলায় খোশ গল্প করছে বারান্দায় বসে।
হঠাৎ বাহিরে হৈচৈ হট্টগোল রশন আলি স্লিকের পাঞ্জাবি পরে
সাথে অষ্টাদশী রুমিকে নিকা করে ফিরলেন, হন্তদন্ত হয়ে ছুটে
গেলেন বিবিরা কনে দেখে তাজ্জব এত সুন্দরী বেহেশেতের হুরি।
রশন আলি প্রাণে আহ্লাদে গদগদ হয়ে ও মনের ভাব চেপে রেখে,
গম্ভীর গলায় আদেশ করলেন নূতন বিবিকে বরণ করে ঘরে তোল।
রাশভারি বদ রাগি বদমেজাজি রেগে গেলে লাথি মেরে জানে মেরে
দেন, মনটা ভীষণ চরম গরীবের ঘড়ামি বদরুল এর মেয়ে রুমির
টাকা অভাবে বিয়ে হচ্ছে না কি করেন পঞ্চাশ হাজার টাকা বদরুলের
হাতে দিয়ে মৌলবী ডেকে নিজেই বিয়ে করে বাড়িতে এলেন।
পরদিন গাঁয়ের সবাই আত্মীয় স্বজন ভর পেট খানাপিনা করলেন।
বাসর রাতেই রোশন আলি বুজলেন এ বয়সে হাকিমের ঔষুধ কাজ
হলো না। ঠিক করলেন সদরে শহরে নিজে ভালো ডাক্তার দেখাবেন।
বিবিরা শলা পরামর্শ ষড়যন্ত্র করে ছোট বিবি রুমিকে ভরপেট খেতে দিত না।
প্রথম প্রথম লাজুক মেয়ে কিছু বলত না অভুক্ত থাকতে না পেরে প্রতিবাদে
লাঞ্ছনা নির্যাতন সহ্য করতে হতো, রশন আলি নিজের অক্ষমতা ঢাকতে রেগে
রুমির উপরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ অত্যাচার মারধর করতো।
বাপের গিয়ে রফিকের কাছে সব বলাতে ভরা পেট খাওয়া লোভে শরীরের
টানে রফিকে সাথে পালালো সে রাতেই।
রশন আলি বংশের ইজ্জত বজায় রাখতে ভাড়া করা গুন্ডা খুনি বিশ হাজার টাকার
বিনিময়ে রুমিকে খুন করে ঐ কপোতক্ষা নদীর পাড়ে গাছের ডালে ঝুলিয়ে দেওয়া হলো।
দুচারদিন কানাকানি কানাঘুশো গালগল্প লোকে বলাবলি করলো, সব থেমে গেল টাকায়
কি না হয় পুলিশ এলো লাশ নিয়ে চলে গেলো লাশকাটা ঘরের বাহিরে রোদে বৃষ্টিতে
রুমির লাশ পড়ে আছে অনাদরে কী হবে কে জানে কতশত মেয়ে মানুষের লাশ পচে
বেঁচে থেকেও জীবন্ত লাশ নারীদের মর্মস্পর্শী হৃদয়ের ব্যথা বেদনা স্তব্ধতায় রয়েছে।
ইজ্জত বজায় রাখতে ইনসান ইনসাফ পাবে না কি কখন?
No comments:
Post a Comment