Tuesday, 4 April 2017

তুমি অগনি কন্যা, জননীর জন্মদিন, অস্বাভাবিক ক্ষোভ, মনের কথা

গদ্য  কবিতা
তারিখ--: 4---4--17

তুমিই  কি অগ্নি কন্যা

শ্যামল   সোম

অগ্নিকন্যা  তোমার চোখ চোখ জ্বলছে আগুন
চৈত্রের শেষ ফাগুনে পুড়ছে বহু প্রতীক্ষিত মন।
তোমার শরীরে যেই রেখেছি হাত রক্তে শিহরণ
ইচ্ছে করেই  মেলে দিলে দেহ, খুলে ফেললে বসন
নগ্ন স্তনে ছূঁইছি আঙুল, টুক করে ঘষে পড়লো
আঙুল, ঝলসে উঠল হাত, দাউ দাউ করে জ্বলছে
দেহজ প্রাণে জলজ উদ্ভিদ, শরীরের কাছ সরীসৃপ।
এগিয়ে যাচ্ছে শরীর, ঝাউতলা কুয়োতলা আহ্লাদে
টলমল পায়ে নূপুরের ছন্দ ছন্দে কানে কানে গুঞ্জন
ভীমরুল মৌমাছি মধুপান পরে গরলে গোঁ গোঁ গর্জন
চুম্বনের আশায় যেই তুলেছি তামাটে ঠোঁট, ঝরঝরিয়ে
ঝরে পড়ছে তোমার তীক্ষ্ণ দংশনে, ক্ষত বিক্ষত ঠোঁট
পৌরুষ উড্ডীন মানদন্ড, অগ্নি কন্যা এ তোমার জলন্ত
রূপের ফাঁদ, দাউ দাউ লেলিহান শিখা LADY OF FIRE.
জবাই করা পশুর  নিজেরই  আর্তনাদ শুনে সন্ত্রস্ত উদ্বিগ্ন
নিশ্চুপ, দহনে জলনে পুড়ছি আমি, পুড়ছে দেশ দেশান্তর
অগ্নিকন্যা হেলেন  নিরোর মতন অট্টহাস্য পোড়াচ্ছে শব।

আজ  আমার ছোট মায়ের রেশম লস্কর মহাশয়ার জন্মদিনে উপহার স্বরূপ।

গদ্য  কবিতা
তারিখ--: 4--3--17

জননী জন্মদিনে

শ্যামল সোম

বহে আনে তোমার জন্মদিনে মমনে
আত্মস্থ- আত্মমগ্ন হও জননী গোপনে।
লও মাগো দৃঢ় সংকল্প, নিতান্ত সামান্য
হলেও অন্যায় বিরুদ্ধেই করো প্রতিবাদ
উদীপ্ত হও, হৃদয়ে সাহস সঞ্চারিত হোক।
তোমার, তোমাদের  হাতেই তো রয়েছে
কলম তীক্ষ্ণ বল্লম সমূলে বিঁধিয়ে দাও  
ঐ নাশের বুকে শয়তানের শরীর এফোঁড়
ওফোঁড় করো, ফেরাও ফেরাও পলায়িতা
নির্যাতিতা নারীদের মনে আত্মবিশ্বাস প্রত্যয়।
আত্মনির্ভরতা, জননী গৌরবান্বিতা তুমিই
গর্ভে দশমাস করেছো ধারণ, পালন করেছো
স্তনদানে লালন করেছো যারে, সে- ই  উদ্যত
আততায়ী মত গুপ্ত হত্যা করে আপন জননীরে।
বহুযুগ বঞ্চনায় আত্মবিস্মৃত আজই প্রথম
আলোয় আলোকিত হয়ে উঠুক মা নারীর
অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগান্তরের ক্রীতদাসী যৌনদাসীর
শৃঙ্খল উন্মোচন করে,  শব্দের  স্ফুলিঙ্গ জ্বালো।
জ্বালাও জ্বালাও ভয়ঙ্কর দাবানলে ধ্বংস হোক
এই ছুটা আজাদি, নহী চলেগা, সভ্যতার শেষ বাণী।

পুনশ্চ--: বীরাঙ্গনা রানী লক্ষ্মী বাঈ  ঐতিহাসিক চরিত্র
যিনি হাতে খোলা তলোয়ার ঘোড়া পিঠে
সোওয়ার হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, যোদ্ধা হতে হবে।

গদ্য  কবিতা

তারিখ- -: 3--4--17

অস্বাভাবিক ক্ষোভ ?

শ্যামল সোম

দেশটা তো আমার ছিলো
শেকড়ের টান মাটি সোঁদা
গন্ধ, সুর্মা, রূপশা নদীর বুকে
ঢলছে সূর্য, আকাশে গোধূলি
রঙেরঙে রঙিন কীর্তনখোলা
নদীরজল, মেঘনা পদ্মা সঙ্গম।
এপ্রজন্ম ছিন্নভিন্ন মূলহীন ভিক্ষা
চেয়েফেরে পরবাসে আত্মগ্লানি
কি ঢেকে রাখা যায় আমোদে
আহ্লাদে, বৈভবে, মগজে নেই
মমন চিন্তন, শুধু অর্থ উপার্জন।
শরণার্থীর ব্যথা অনুভবে নেই?
আছে বাজার বেসাতি দখল
দারি, পণ্য অশ্রাব্য কাব্য, বাইট
বাজার খাবে, প্লাস্টিক ডিম,
চাল, খালে ভ্রূণ ভাসে, অদ্ভুত
আঁধার ঢেকেছে দেশভাগে
থেকে যে যার গোছাতে ব্যস্ত।
আমাকে আমার মত, বলে
তারস্বরে সব গাহিছে  বাচ্চা,
উসাসিন নির্লিপ্ত মোক্ষ ধর্ষনে।
বিজ্ঞাপনের যুগ কামার্ত নারী,
শিল্প, কলা,ছিনেমা ফৌজদারি।
এভাবেই মনহীন ক্রেতার যুগিয়ে
মন,ফুল স্যানি স্যাটিসফাইড।
কবি শিল্পী নাকি তারা আত্মা
খননে লাল এলাকার জীবন
যাপন, আত্মহনন কি মহাপাপ
পরকীয়া প্রেমেই অর্থ  লাভ।
আমার প্রচন্ডক্ষোভ বেজন্মা
বলেই গাল দি নিজেকে স্বপ্ন
নিহত করেছি গণ ধর্ষনে মন
বিপন্ন বিষন্ন  অবসন্ন ক্লান্ত।
সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া
বাংলাভাষায় কাব্য সব ছেঁড়া
সৈনিক বন্দুক উঁচিয়ে পাহারা
দিচ্ছেন অতন্দ্র প্রহরী নাকাড়া
বাজিয়ে অস্তাচলে গেলে যারা
শ্বাপদ সরীসৃপ বেড়ার ফাঁক ঐ
পেলেই পলায়নের ধ্বংসের পথে,
শান্তি বিঘ্নিত, নেই সাংস্কৃতিক পত্র
পত্রিকা, গ্রন্থ, ঐ অবাধে পারাপার
করে খাদ্য ও নানা সরবরাহ, সার
বাঙালি ভাগ হয়ে গেছে বহুকাল
এ বছরেও বৃদ্ধের কিছু ছিল বলা
চেপে দিলো মুখ, চোখ ছিল বাঁধা।
শ্বাসরোধ হয়ে কাব্যে ক্ষোভ প্রকাশ
অস্বাভাবিক?

মনের কথা

শ্যামল  সোম

কাল রাতে চুরি হয়ে গেছে মন
জ্যোৎস্না  এসে ছিল জানালার
ফাঁকে, ফাঁকি দিয়ে গেছো তুমি।
আসছি বলে চন্দ্রানী চোখের
আলোয় চোখে চোখ মেলে
ইশারায় না বলা কত কথা বলে,
বৃদ্ধ বৃক্ষের ডালে দুলে  দুলে হেলে
দুলে আমার দোয়েল পাখি কত
গান শুনিয়ে ছিলে, "(ওগো) আমার
পরাণ যাহা চায় তুমি তাই গো,"
আমার  হৃয়ার  মাঝে লুকিয়ে ছিলে,"
তোমার মায়াবী চোখে চোখ মেলে
নিঃসংকোচে কৌতুকবহ দুষ্টু  হাসি,
অথচ আশ্চর্য সারল্য স্নিগ্ধ মাধুর্যে
তোমার অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ  হয়ে
চেয়ে আছি, অপার বিস্ময়ে বিস্মৃত।
স্রষ্টার  এ এক  অসাধারণ  অপূর্ব  এই
আমার ভাঙা ঘরে চাঁদের নুর জ্যোৎস্না
তুমি কি নুরজাহান না মেহরুনেসা  তুমি
কে গো, তুমি মায়াবিনী মনে হয় কতদিন
কত শত জন্মের তুমি জীবন্ত প্রণয়িনী
হৃদয়িনী আমার আদরের তুমি পারু।
চাঁদনী আমার সর্বনাশের  সর্বনাশী তুই
তোর জন্য  পাগলি শুধুই তোর জন্যই
ফাল্গুনের কৃষ্ণচূড়ার গাছে  গাছে লালে
লাল হয়ে আছে, পারু  দেবদাসের মত
আমার কোন পার্বতী নেই যে আমাকে
সেবা শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তুলবেন।
তবু আমার কীর্তন খোলা নদীর কাছে
একটি ঘর, নদী পারাপারের ছিলেম
মাঝি, আপন হাতে রেঁধে দুবেলা দুমুঠো
মহেরবানের কৃপায় জুটে যেত, ভাটিয়ালি
সুরে উদাত্ত কন্ঠে, " আমায় ভাসাইলি রে
ডোবাইলি রে, অকুল দোরিয়ায় আমি-- !"
নাওয় ভাসাইয়া ভেসে চলেছি  না তোর
ফিরে আসার বা তোকে খুঁজতে নয় রে,
আমি বহমান নদীর স্রোতে ভাসি ঈশ্বরের সন্ধানে।

No comments:

Post a Comment