Sunday, 2 April 2017

আমি ভালোবেসে বাংলাদেশে

সুস্বাগতম সুপ্রভাতে এই গ্রুপের সদস্য সদস্যাদের জানাই অফুরন্ত উষ্ণ অভিনন্দন।

ভালোবেসে  বাংলাদেশে

শ্যামল সোম

জননী, বোন, ভাইদের বাংলাদেশের ভালো মানুষের সাথে
আমার বাংলাদেশে বারে বারে ফিরে ফিরে আসা শিকড়ের
সন্ধানে বাংলাদেশের ভালোবাসার মানুষের খোঁজে বিভিন্ন
জেলায় জেলায় কতশত নদীর বহমান অনুপ্রেরণার স্রোতে।

এ কথা বলা অশোভন,  অন্যায়, শাস্তি যোগ্য, কিন্তু মাটির মায়া
কীর্তনখোলা, সোমেশ্বরী, শীতলক্ষা, রূপশা, মেঘনা নদীতে স্নান
নদীর বুকে অবগাহনে, রাঙামাটি, কুয়াকাটা, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে
তোমাদের সাথে দল বেঁধে উনিশো বাহাত্তর সালে বনানীর সাথে
যাওয়া, না বিশ্বাস করেন মূহুর্ত জন্য মনে হয় নাই আমি বিদেশী।

আজকাল যখন যখন এপার ওপার বাংলার কবিদের ভাগ করে
দেন ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল  ঐ তেইশে ফেবরুয়ারী অনুষ্ঠানে, আমি
একটু দূরে একা বসলাম, কবিকে ভাগ করা যায় সীমান্তের শক্ত
কাঁটাতারের বেড়ার প্রাচীর তুলে ?
ভাষা,  বাংলা ভাষা সাংস্কৃতিক সঙ্গীত, জয়নাল আবেদিন, জীবনানন্দ দাশ
এপারের না ওপারের মধু পল্লী সবাই হেসে উঠলেন, মধুসূদন আমাদের।
বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে, প্রতিবাদ গর্জে বললেন, " কেন আপনি  বিদ্রোহী কবি
কাজী নজরুল ইসলামের  " কাণ্ডারী হুশিয়ার " কবিতা ভালো করে পড়েন নি?"
বোন যদি কিছু মনে না করো একটা কথা বলি দেশটি কিন্তু
ছিলো সে সময়, আজও  বাংলাদেশেকে
আমার সোনা দেশ বলে ভাবি
এ নিয়ে তর্ক বিতর্ক করবে অনেকেই।
ভালোবাসায় কারুর খবরদারি আমি বরদাস্ত করব না বোন।
ইদানিং চুপ করে থাকি যখন জিজ্ঞেস করেন কেউ জন্মভূমি ?
শরণার্থীর ক্ষোভ প্রকাশ পাবে বোন চাপা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ত্যাগে শব্দ তুমি
বা নাতনি শুনতে পাবে অনুভবে।

যুদ্ধ শেষে শোক

শ্যামল সোম

মুক্তি যুদ্ধের শেষে  আজ
সহযোদ্ধারা কেউ কেউ নিহত
মুক্তি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল 
কেউ কেউ ভয়ংকর  আহত,
বাঙালির এ মানবতাবাদী
ছাত্রদলের আন্দোলনে
উত্তাল দেশ থেকে দেশান্তরে,
চলে শহর থেকে বন্দরে,
জেলায় জেলায় গ্রামে গ্রামে
নদীর ঘাটে  নৌকা নিয়ে,
মুক্তির সেনাদল, কত শত
সহস্র  নারী লড়াইয়ে ময়দানে,
বাঙালির স্বপ্নে বাংলাদেশ
লড়াই করে ছিনিয়ে নিতে হবে।
" আমাদের সংগ্রাম চলছে, 
জনতার সংগ্রাম চলছে, কাব্যে
সমবের গানে, " আমার ভাইয়ের
রক্তে রাঙানো একুশে
ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি ?"
" আমার সোনার নোলক হারিয়ে শেষে
হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি
খুঁজি সারা বাংলাদেশে ----
মায়ের সোনার নোলক না নিয়ে
ঘরে ফিরবো না ! "
বহমান জনতার স্রোতে ভেসে
আসছে জন সমুদ্রে গর্জন,
জনতার সংগ্রাম চলছে,
প্রয়োজনে হলে  দেবো
এক নদী রক্ত " পৃথিবীর বিভিন্ন
যুদ্ধের ইতিহাসে বিরল
এ যুদ্ধে তিরিশ লক্ষ মানুষ নিহত,
তিন লক্ষ নারী কিশোরী যুবতী
বৃদ্ধা মুক বধির নির্যাতিতা।
কেউ কেউ আজও কত
স্মৃতি চিহ্ন রয়েছে
সে দিনের অগ্নি
কোনের  মানুষ জীবন 
জনতার  সেই মূহুর্তে সাক্ষী বেঁচে
কেউ কেউ, বাংলাদেশের
সীমান্তে এপারের শত দীর্ঘশ্বাসে
অনেকেই বলেছিলো
আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখার বিলাস।
মুক্তি যুদ্ধের যোদ্ধাদের অস্ত্র
রসদ বহে নিয়ে যাচ্ছে কিশোর
তরুণ, সেদিনে প্রজন্মের
জীবনের ঝুঁকি নিরাপত্তায় হীনতা
ঘরের শত্রুর বিশ্বাসঘাতকতা
বাহিরের সুশিক্ষিত সৈন্যবাহিনী
বিরুদ্ধে এস, এল, আর,
আধুনিক আগ্নেয় অস্ত্র সাথে দৈনন্দিন 
মোকাবিলা করতে সক্ষম
হয়েছে একমাত্র বাংলাদেশি প্রেম।
অসতর্কতার ঝাঁপিয়ে পড়তে
পারে ডাক্তারি ছাত্র সংগঠন গড়ে
মেডিকেল টিম নানা রকমের
সাহায্য করতে সুচিকিৎসা করতো।
দেশ,মাতৃ ভাষার সংগ্রাম শুরু হয়
উনিশশো বাহান্ন,থেকে চলতো,
উনিশশো একাত্তর সালে আঠারো
ডিসেম্বর বিজয় দিবস থেকে আজও ?

মুক্তি যুদ্ধের রক্তাক্ত ইতিহাস

শ্যামল সোম

জরাগ্রস্ত জরাজীর্ণ আজ  বৃদ্ধ আশি বছরের
জীবনের স্বাদ তিক্ত অভিজ্ঞতার মমনে, স্মৃতি- --
ভয়বহ সেই দিন গুলো ঐ জানালার ফাঁক
দিয়ে খরখুরি তুলে দেখছেন রাজাকারদের
ট্রাক  বোঝাই যাচ্ছিল কন্ঠে হুংকার শাসকের
দফতরের কর্তাদের একাংশের আদেশে সন্ত্রস্ত
করার জন্য তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জঘন্য
অপরাধের বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে।
রবীন্দ্রনাথের গান সাহিত্য নিষিদ্ধ, বিখ্যাত কবি
লিখেছিলেন, " এ দেশ আজ এতই অনুউর্বর
হে রবীন্দ্রনাথ আপনার সমগ্র রচনা বলি প্রথিত
করেও পানি ঢালা যায় একটি উদ্ভিদ জন্মাবে  না !"
বৃদ্ধ বৃক্ষের মতন ঋজু মানসিকতা মানুষ দুই পুত্র
সন্তান শিক্ষকতা, ডাক্তার হতে মুক্তি  বাহিনী তে
যোগদান করেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ বেতার
কেন্দ্রে শুনছেন ব্রজ কন্ঠের উদাত্ত  আহ্বান, কন্যার
ডাকে চমক  উঠলেন অজানা আশংকিত মনে দুঃস্বপ্ন।
আয়েশা আঠারো বছরের সুন্দর মুখের আব্বুজান
হঠাৎ উৎকণ্ঠিত মায়াচ্ছন্ন দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে দেখছেন
মেয়েকে, প্রফেসর মুজিবুল হক সাহেব তখন পঞ্চাশ
বছরের প্রৌঢ় সদ্য বিবাহিতা পুত্র বধু রায়েবা মাথায়
অবগুণ্ঠন  আহারের জন্য ডাকতে এসেছেন প্রফেসরের
খাওয়ার রুচি নাই বলেন পরে যাবেন, কন্যা অনুযোগ করে
দিন দিন তিনি খাওয়ার ব্যপারে অনীহা, ম্লান হেসে বললেন
" মা রে তুই তো বুঝিস  আজ সারা দেশের মানুষ তাদের
জীবন বিপর্যয়ের মৃত্যুর সম্মুখে রণাঙ্গনে গেরিলা যুদ্ধে
তারা সাহসিকতার স্বাধীন  বাংলাদেশ জন্য যুদ্ধ করছে
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সহায়তায় " কথা শেষ না হতেই দরজায়
প্রচন্ড জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছে চিৎকার করে গাল দিচ্ছে
আতংকিত চারজন কাজের লোক ফাতেমা কাঁপছে  ---
বেদানায় মুহ্যমান মায়াচ্ছন্ন দুচোখ আমার পথের আড়াল ।

No comments:

Post a Comment