গদ্য কবিতা
তারিখ---: 8--- 4--- 17
বৃক্ষ তুমিই আমার জননী
শ্যামল সোম
বহু বছরের তোমার মাতৃ স্নেহ
মুগ্ধ আমি, শ্বাস প্রশ্বাস সচল
তোমার ডালের পাতার ছায়ায়
মায়ায় স্নিগ্ধ শীতল হয় শরীর।
ক্লান্ত পথিকের ক্ষণিক বিশ্রাম
হে বৃক্ষ তোমার ডালে আশ্রয়
পায় কত কত পাখি, বাঁধে বাসা
পাড়ে ডিম পাখির ছানার আশা।
আকাশে ডানা মেলে উড়ে যাবে
একদিন, আমার তোমার স্বপ্ন
শেরশাহ আদেশে তৈরী ঐ পথ
বাংলাদেশের যশোরের দিকে
চলে যাওয়া দু পাশে শত বর্ষের
প্রাচীন বৃক্ষ রাস্তার দুপাশে ছায়া
ঘেরা পথে পথে আসা যাওয়ার
সময়ে বিমুগ্ধ বিমোহিত তৃষ্ণার্ত
অপলক চোখ চেয়ে থাকতো।
হঠাৎই সত্তর বছরের ঠনক নড়ল
কাটতে হবে গাছ নগরোন্নয়ন চাই
পঁচাত্তর বছর আগে কেন বপন
হলো না গাছের চারা এ গাছ কি
চার হাজার গাছ হত্যা করার পর
কি ভাবে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ হবে?
সারি সারি পড়ে আছে গাছেদের লাশ
গাছ তুমিই তো নারী নির্যাতন শিকার
রক্তাক্ত দেহ ধর্ষিতা গন ধর্ষনে স্বীকার
কেউ কেউ এই কাঁদে নীরবে নিভৃতে
আপন মনে পাখ পিয়ালির মন বিষন্ন
এখন কেঁদে কেঁদে জড়িয়ে আছে গাছ।
গদ্য কবিতা
তারিখ- --: 8---4--- 17
হে আমার বাংলা ভাষা
শ্যামল সোম
একই ভাষায় কথা
মনের যত ব্যথা
সেথা কে দিলো খিল
কিসের এএত অমিল ?
কত শত আসর বসে
নক্ষত্রের সমাবেশে।
ডাক এলেও যাবো
বললেই যাওয়া যায়?
ভিসার জন্য রাগ জেগে
লাইন, শতশত মানুষ ভীড়।
পঞ্চাশে শরণার্থীর মতন
উনিশো পঞ্চাশ সালেও
সরকারী ডোল চাল ডাল
খাদ্য আর শিয়ালদাহ
স্টেশনের আস্তাকুড়ে
ছেঁড়া কাঁথায় শীতার্ত রাতে
কুকড়ে গুটিসুটি শুয়ে
সত্তর বছর আগে সে
স্বপ্ন দেখেছিলাম ফের
গোয়ালানন্দ স্টেশনে কু কু
কু ঝিক ঝিক রেলগাড়ি
দেয় পাড়ি, ধোঁয়ার কুহেলী
আকাশ পথে হাতছানি ডাকে,
ফিরে আয় কীর্তন খোলা নদী
কাছে গ্রামের মাটির দোচালা
বাড়ি, অশথ গাছ ডাকে, ফিরবো?
না না না আর ফেরা হয় নাই।
বহু নিমন্ত্রণ আমন্ত্রণ শেকড়ের
টানে গেছি, ফিরেছি বারবারে
এই পারাপারে ক্লান্ত আমি আজ।
বন্ধু কন্যা জননীদের কতকত
অনুষ্ঠানে মন যেতে চাইলেও
মা মাগো হায় কাঁটাতারের বেড়া
জননী, এ যে বন্ধুত্বের উপরেও খাঁড়া?
গদ্য কবিতা
তারিখ--: 7--4--17
ভালোবাসা মুখে ছাই
শ্যামল সোম
আকাশকুসুম স্বপ্নে বিভোর মোহাচ্ছন্ন
বিমোহিত মন সে তোর প্রথম প্রেম মগ্ন
মন সদ্য যৌবনে উচ্ছল জ্বল জ্বল চোখ
চোখে চোখ পড়তেই হৃদয়ে ভূমিকম্প হল।
সেই বুঝি ছিল গভীর প্রেম না ভালোলাগা
ভালোবাসার জন্য মন প্রাণ উৎফুল্ল জাগা
রাত দুরাভাষে প্রেমের গান কত সংলাপের
আকাঙ্ক্ষিত কল্পনার হলো শেষে অবসান
কাছে পাওয়ার আনন্দে, সে স্পর্শে শিহরণ।
তোর কালো এক ঢাল চুলে হাত উন্মূখ হাত
সরীসৃপের মতন শরীরের কাছে আসে শরীর।
এই বুঝি সেই আকাশ ছোঁওয়া বাসনা কামনা
সুখ বৃষ্টি অঝরে ঝরছে কাব্যের উদ্যানে নানা
রঙে ফুটছে গোলাপ জমছে আলাপ প্রতিশ্রুতি
রতিকান্ত অশান্ত দূর্দান্ত দুর্বার ঝর্না জলপ্রপাত।
হঠাৎই একদিন সে ফিরলো না আর, শোকাচ্ছন্ন
মুহ্যমান শোকার্ত ভয়ার্ত সন্ত্রস্ত উদ্বিগ্ন অশ্রুপাত,
গতি কি, সামাজিক লজ্জা, অবৈধ আত্মবিলাপ।
পরিণতি দড়ি হাতে, জঠরে ভ্রূণ তোর ভালোবাসা
আর্তনাদ হাহাকার ক্রন্দন শুনেও শোনে না আশা,
শতসহস্র নারীর আত্মহনন, কেউ বাঁধে লাল বাসা।
প্রতীক্ষিত মন
শ্যামল সোম
নন্দিনী তুমি আসবে খুলে রেখেছিলাম খিল, কপাট ছিলো হাট করে খোলা।
অপেক্ষার প্রহরে কখন যেন আমার চোখে, নেমেছিল তন্দ্রা, প্রেমের পদধ্বনি
শুনে ছুটে গিয়ে বাড়িয়ে দিয়েছি দু হাত, উন্মূখ মন, এখনও অভিমান কেন দ্বিধা?
পেছনে ফেলে এসেছি অতীত, তোমাকে কাছে পেতেই একা একাকীত্বমাঝেই রয়েছি।
আশ্চর্য ডাকো নি কেন, খোলাই তো ছিলো দরজা, চৌকাটেই সারারাত দাঁড়িয়েছিলে ?
রঞ্জনা তুমিও তো পেছনে ফেলে সংসার, এতটা পথ পেরিয়ে এলে।
মনের টানা পড়েন, দগ্ধ মনেও দ্বন্দ্ব, ওকি ফিরেই যাচ্ছো কেন ?
না না তোমাকে ফিরতে দেবো না, হাঁ ভালোবাসার জোরে ধরে রাখবো।
কথা ছিলো একসাথে দুজনে দুজনার হাত ধরে দেখবো, এসো ধরো হাত।
নন্দিনী ঐ তাকিয়ে দেখ সূর্য উঠছে।
No comments:
Post a Comment