Sunday, 30 April 2017

কবিতা গুলি

পাগলি কবিতা

শ্যামল সোম

কবিতা ওদেরকে
কোথ  হতে জোটালি?
ভ্রমরের মতন গুঞ্জন
নয়নে নয়ন বিগলিত
মন প্রাণ দেহ সমর্পণ।
সুখ  গলেগলে ঝরছে
কবিতা তোর শব্দ পড়ছে,
শ্রাবণের বৃষ্টি তুই কবিতা।
উৎফুল্ল উচ্ছল জ্বল জ্বল
বাহাত্তর সালের কবিতা
তোর সাথেই বৃষ্টিস্নাত তুই
গঙ্গার ঘাটে কাব্যময় সই।
জরাগ্রস্ত বৃদ্ধ আজ তাই
ফুরিয়ে গলে প্রেম পিরীতি
ধূসর আকাশে বিলীন ফ্যাকাশে।
প্রেমিকদের ভীড়ে আড়ালে
নির্জনে একা আমি দাঁড়িয়ে।
তুই ফিরেও তাকালি না
আজ এতই অচেনা।
কবিতা যৌবনে ছলনা,
গদগদ কন্ঠে, দুহাতে  জড়িয়ে,
" শ্যাম তোমাকে ভালোবাসি
ভীষণ ভালবাসি গো, তুমিই
আমার  আকাশ নীলাকাশ
তিন সত্যি ঠিক দেখো আজীবন
এই কবিতাই থাকবে সঙ্গে গো।
আজ আর প্রেম নেই তাই না?
বাতিল, আমি কি এতই নিষ্প্রাণ।

বিভাগ- -: গদ্য  কবিতা
তারিখ ---: 30 -- 4-- 17

★সই  তুই  ঈশ্বরকে  ডাক ★ পঞ্চাশ বছর আগের লেখা এখনও ভীষণ ভাল লাগে, ভুলতে পারিনি তাঁকে।

ফুলের বাসর ছেড়ে কাল রাতে
তোর দোসর গেছে চলে--
সই ভালোবাসার যাতনা
একা সহিবি কেমন করে ?
এখন সবাই হাতে হাত মিলিয়ে
কেমন হাতে হাতে দিচ্ছে তালি।
পোড়ারমুখী প্রেমে পড়ে তুই
সৈয়দ বংশের নাম ডোবালি ?
হতভাগী ! গোপনে ভালোবেসে
ডুবে ডুবে এত গিললী পানি ?
ঐ দেখ, আড়ালে
একা ঘরে অন্ধকারে
তোর কাঁদেন বসে নানী-।
যাও ! এবার তুমি -
গলায় কলষ বেঁধে
ঐ কাজরী দিঘির পাড়ে যাও।
এই দুপুরে গাছের ডালে
পাতার ফাঁকে
কে ডাকে ? বউ কথা কও !
হারিয়ে গেলো
তোর সেই আপনজন,
তাকে হলো আর পাওয়া--!
নদীর পাড়ে গাছ গাছালি,
দোতলায় নানার বাড়ির
এই গাঁয়ের সব ঘর সন দিয়ে ছাওয়া।
এক পলকেই হবে ছাই !
রাতে ঐ কুপীর আগুনটা
একবার যদি কাছে পাই।
এখনও তুই মনের ভেতর
খুঁজিস কাকে ?
নাই ! নাই ! কেও কোথাও নাই।
নয়ন মেলে দেখ,
কালো এক যমের মতো
ঝুলছে ঐ লম্বা ঘরের কড়িকাঠ-- !
আঁধার রাতে
শেয়ালের ডাক শোনা যায়--
বাড়ে বুকের কাঁপন- দুরে শ্মশাণ ঘাট।
পরনের রঙিন শাড়ী হাতে নিয়ে,
আনমনে সই এখনও
তুই স্বপ্ন দেখিস বসে ?
সাজানো পালকির সাথে
তোর দোসর
আবার বুঝি দাঁড়িয়েছে দুয়ারে এসে ?
রাত পোহালো এলো দিনের আলো-
এখন ফজরের ঐ আযান ভেসে আসে।

আমার ঝুমুর

শ্যামল সোম

নারীর  আছে ষষ্ঠ  ইন্দ্রিয়
বোধ হতে ঠিক টের পায়
নারীর আপন সে মহিমায়
গোপনে কে ভালোবাসায়
সিক্ত মন পুলকে আপ্লুত
বর্ষায় বৃষ্টির ধারায় হারায়।
ঝুমুর তোমার পায়ে নূপুরের
ধ্বনি শ্যামে অপেক্ষায় আছে।
ভালোবেসে ভরিয়ে দিতে অসময়ে
তোমার প্রতিভা সম্পন্ন বিশাল হৃদয়।
উচ্চ কন্ঠে বলতে দ্বিধা নেই তোমাকে
ভালোবাসি গুনমুগ্ধ বিমোহিত বিমুগ্ধ।

শ্যামল সোম

বিভাগ -: পদ্য
তারিখ-: 18-4-17

মেঘ বালিকা বৃষ্টি হবি

শ্যামল  সোম

এই পাগলী  মেয়ে
তুই বৃষ্টি হবি?
বৃষ্টির শ্রাবণের
ধারা হয়ে অঝরে
পড়বি ঝরে আমার 
বুকের পড়ে।
বৃষ্টি তোর ধারায়
ভিজছি দে নগ্ন শরীর 
দে তোর দেহের
পরস্পরের
উত্তপ্ত চুম্বন;
অঝরে শরীর বেয়ে
কুল কুল করে বহে
যাচ্ছে সুখ, স্বাদ গলে
গলে  পড়ছে আশ,
বন্য  হৃদয়ের বাসনা।
গহীন গোপন যত
জমানো অবিশ্রান্ত
বেদনা নীল পদ্ম
ফুটছে ঐ দীঘিজলে।
বৃষ্টি তোকে জড়িয়ে
দু হাতে শক্ত ধরে
জোরে জাপটে বুকে
ভিজছি দুজনে
সর্বাঙ্গে আলোড়ণ।
তোর অভিমান,
অনুযোগ, অনুরাগ
তৃষ্ণার্ত তোর ঠোঁটে চুম্বনে,
লেহন করছি অশ্রু।
আমার ঘন আলিঙ্গনে
বৃষ্টি তোর ফোঁটা ফোঁটা
জলের স্পর্শে তারা ফুটছে
রাতে আকাশে।
জ্যোৎস্না আলোয়
আমি ফিরে পাচ্ছি
বেঁচে থাকার আনন্দ।

বিভাগ  গদ্য  কবিতা
তারিখ- -:  29 --- 4  -  17

প্রেম আরক্তিম রক্ত করবী

শ্যামল  সোম

উদ্ভাসনে  উদীপ্ত আমার উত্তপ্ত  যৌবনে
গ্রামে গ্রামে শহরে কোলকাতার  একাত্তরে
অশান্ত  উত্তাল ঢেউ ঢেউ পড়ছে  আছড়ে।
বোমা বিস্ফোরণ হত গুলিবিদ্ধ শত যৌবন
বারুদের গন্ধ বাতাসে বাতাসে শ্বাস প্রশ্বাস
সচল রাখা দায়, এ দায় কার, ঐ যে নির্জন
বনে খালে গঙ্গায় ভাসে শতসহস্র গোলাপ।
তখন আমি সন্ত্রস্ত উদ্বিগ্ন নিশ্চুপ বিপন্ন বিষন্ন
জীবনে, হে প্রেম নীলাঞ্জনা তোমার আবির্ভাব
ক্লান্ত প্রাণ প্রশমিত, সঙ্গীত শ্রমণে, প্রেম সংলাপ
ওগো নেপথ্যচারিনী  দংশনে তুমি ঈশ্বরী না পরী
অপরূপা তুমি এই ডালে ডালে রঞ্জিত রক্তকরবী।
সানাইয়ে সুর জ্যোৎস্নায় অরণ্যে ও রোদন ধ্বনি
কেন,ভরা এ বসন্তে ফাগুন হাওয়ায় ক্রন্দন শুনি।
রয়েছো আমার শরীরে আজও ঐ আপন মায়ায়
হঠাৎই একগুচ্ছ রক্তকরবী ফুল ঝরে ভালোবাসায়।
নীলাঞ্জনা, রক্ত করবীর স্পর্শে শিহরণ বহমান নদী
বহে যায় দেহের শিরায়  উপশিরায় প্রেমের গুঞ্জনি।

ফাতোয়া হয়ে গেছে জারি

শ্যামল সোম

ভালোবাসা প্রেম স্নেহ মমতা
ভয়ঙ্কর সামাজিক অমার্জনীয় 
অপরাধে শাস্তি এখন মৃত্যুদন্ড 
সুনিশ্চিত করতে ফতোয়া হয়েছে 
কাল রাতে জারি, শুনি নি তোমরা?
খুন জখম শিশু পাচার, নারীদের
নির্যাতন অত্যাচার অসহ্য হিংস্রতা
ধর্ষন, গণ ধর্ষন রাজি না হলেই
মুখে ছুড়ে মারো এসিড  বোতল।
যার যখন বাসনা হবে প্রাণ চাইবে
খোলা রাজপথ থেকেই চ্যানদোলা
শিশুকন্যা কিশোরী যুবতী, রূপবতী
ষাট বছরের বৃদ্ধা, রেহাই নেই, নেই।
শাস্তি নেই, সাতখুন মাফ,থাকে যদি
টাকাকড়ি, ফেল করি মাখো তেল
জামিন, কোর্ট  আদালত মামলা
দায়ের করার করে বিশ বছর চলার
অহেতু সময় নষ্ট  আপোষ করে চলো।
এসব ফান মজা শুধুই মজা খোল্লা
খুললাম প্রেম  একেবারে সিনেমা মত
আসিকি জীবন বৃষ্টির প্রেম ঝরছে
মজা,মজা লুঠে নে রে বাজারে লুট নে।
তবে হাঁ  ঐ ভালোবাসা প্রেম করলেই
হাড়ি কাটে, গিলোটিনে এক কোপেই
ঘচাং,  প্রানে ভয় থাকলে মানবিকতা
ভুলে সবাই পৈশাচিক আনন্দ সানাও।

কেমন লেখাটি হচ্ছে  সুপ্রভাত বন্ধু আমার?গদ্য  কবিতা

তারিখ- -: 28 -- 4 -- 17

ভালোবাসার মানুষকেই খুঁজি

শ্যামল সোম

মনের মানুষ মনেই আছে সে
শ্রাবণ মাসের মেলায়  আসে।
কীর্তনখোলার নদীর পারে ধারে
গেয়ে গান নেচে নেচে ঘুরে ফিরে।
দোতারাতে সে বেঁধেছে যে সু - রে
সে সুরে সুরে মন যে আমার বহুদূরে
ঢাকাতে তোমার প্রেমে হারিয়ে গেছি।

তুমি জীবন্ত কবিতা -তোমার জন্যই আমার এ  লেখা।

প্রিয় কবিতা জন্য প্রতিক্ষা

শ্যামল  সোম

আমি অপেক্ষায় থাকি
আমার  মনের যত জমা কথা
হৃদয়ের গোপন ব্যথা
কাকে বলি ?
কে শোনে?
আপন সুখ দুখের সাথে
মিলে মিশে আপনি আছি।
তবু মাঝে মাঝে মনে হয়
এক জন অনন্ত বন্ধু
মনের মতো
পাশে থাকলে বেশ হতো
মনের কথা মনে
চেপে না রেখে
বন্ধুকে খুলে বললে
মনের ওপর চাপ কমে যেত।
বলবার জন্যে তন্ন তন্ন করে
খুঁজে ফিরি শেষে কাউকে না
পেয়ে একা একা তন্দ্রাহারা।
তন্ময় হয়ে নিজের লেখা
নিজেই পড়ি,
শব্দগুলো উলটে পালটে
মনের ইচ্ছে সাজাই।
আমার কবিতা তুমি মাঝ রাতে
চুপিচুপি এসে, আমার শিয়রে
অভিসারে সেজে খোপায়
যূঁই ফুলের মালা জড়িয়ে
পায়ে নূপুরের সুর তুলে,
তোমার  ঐ সুর্মা আঁকা চোখ
ছল ছল দৃষ্টিতে, তাকিয়ে থাকা
একাকীত্ব দূর করতে
পাশে ঘনিষ্ঠ বন্ধু মতো
পাশে এসে বসা
নরম হাতের ছোঁয়া
কবিতা তোমার কাঁদে কাঁদা
কখন তোমার  হেসে ওঠায়
আমার মুখে হাসি
কবিতা তুমি তো জানো
কতটা তোমাকে ভালোবাসি
শব্দের  অলংকরণ চিত্রকল্প 
ছন্দে ছন্দে  আনন্দে ভাসি।

একাত্তরের ঘাতক  ইতিহাস
সবই যেন  এ আজ পরিহাস,
কেউ কি  বোজে যাতনার হাহুতাশ
সত্তর সালের, জ্বলছে দুই বাংলা।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে
বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের রক্তাক্ত
ইতিহাস ওদেশ মুক্তি যুদ্ধের রক্তাক্ত ইতিহাস
পশ্চিম বাংলার মাটিতে ঝরছে রক্ত
নকশাল বাড়ির আন্দোলন।
বুজবেন ইতিহাসের  পূনাবৃত্তি ঘটবে যখন
জ্বলবে আগুন নেভানোর নেই কেউ তখন।

ফিরে দেখা ইতিহাস

শ্যামল সোম

একাত্তরের বিশ্বাসঘাতকের ইতিহাস
হাস্য মুখে সবইর এ বিদ্রুপি পরিহাস,
কেউ কি  বোজে যাতনার হাহুতাশ;
রঙিন পেয়ালায় চুমুক শুধুই উল্লাস।
ওৎকালিন বিপন্ন সময়ের আমি সাক্ষী
উনিশো সত্তর সালের, জ্বলছে দুই বাংলা।
তখন পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা গণআন্দোলন
আপন বাঙালির সাংস্কৃতিক সভ্যতা নন্দন
নান্দনিক বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের রক্তাক্ত
ইতিহাস, শত্রুর আঘাতে লক্ষাধিক শহীদের
মৃত্যু বরণ রাঙা  হল বুড়ি গঙ্গা নদীর পানি
না জল নিষ্ফল প্রয়াস লক্ষাধিক নারীর গ্লানি 
আত্মহনন ব্যর্থ হল কি মহামানব মানবীর ধ্বনি।

পশ্চিমবঙ্গ ও এদেশ বিপ্লবের ডাক স্বপ্নে জনযুদ্ধ
মুক্তি সংগ্রামের রক্তাক্ত ইতিহাস ও বিপ্লবীর সংখ্যা
নগন্য, পথ ছিল ভুল কি বেঠিক মূল্যায়ন হবে কালে।
পশ্চিম বাংলার মাটিতে ঝরছে রক্ত, লাশ খানে ওখানে
লাশ, গণ  কবর, চিতা জ্বলছে আগুন মধুমাসে ফাল্গুনে
সাফল্যে লাভ ক্ষতি ইতিহাসে নকশাল বাড়ির আন্দোলন।
কে আর মনে রাখে বুজবে  কি? 
ইতিহাসের  পূনাবৃত্তি ঘটবে যখন
জ্বলবে আগুন নেভানোর,
দেখা যাবে নেই কেউ তখন।

No comments:

Post a Comment