Thursday, 21 September 2017

নগ্ন জীবনের আত্মহনন

উনিশো পঞ্চাশ সালে  পূর্ব পাকিস্তান থেকে দলে দলে শরণার্থীদের আসলেই শুরু হয়েছিল
সেই ছেচল্লিশের ষোলই  আগস্ট DIRECT ACTION  দিন থেকেই কানু  এ সব শুনেছিলাম
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত গৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য মশাই কাছ থেকে কানুকে বিনিদ্র
পয়সাতে  পড়াতেন, তখন কানের বছর ছয়েক বয়স মাত্র, আশ্চর্য মানুষের জীবন দারিদ্র্যতা
আর এই মানিকতলা খালে পারে বিশাল বস্তির  নগ্ন সত্য  এই কঠিন  বাস্তবতা  পাঁচ বছরের
কানু বেশ চালাক চতুর ছিলো।
জন্ম থেকেই  দেখে আসছে  বাপ মদন দাসের চোলাই দেশী মদ খেয়ে এসে খিস্তি অশ্লীল
গালি গালাজ, মায়ের চুলের মুচি ধরে প্রচন্ড মারধর লাথি মারার ফলে একবার তার মা
পোয়াতী অবস্থায় রক্ত ধারায় কষ্ট পেতে ছটফট করছে, কানুন তখন পাঁচ বছরের দৌড়ে
মানিক তলার খাল পারে জঙ্গলে গাছে তাই বসে কাঁদে, সত্তর বছর আগের কোলকাতা
মানিক তলার খালের পারাপারের কাটের পোল  মেরামতের অভাবে দুলতো।
কিনতু একটা ব্যাপারে খটকা লাগতো, গভীর রাত্রে মাতাল বাপের সাথে মা সন্ধ্যা বেলাতে
মাতাল বরের হাতে প্রচন্ড মারধরের পরে কান্নাকাটি  শেষে বাপকে খেতে দিত, কানু অস্পষ্ট
স্বরে শুনতো গোঙানি, শীতকালে কাঁথার ভেতর কাঁপতো নানা রকম শব্দে  প্রায় প্রতিরাতে ।
বস্তির  একটা লম্বা  ঘরের সাত ভাই বোন বিধবা নানী দিদিমা অল্প  দূরে বাপ মায়ের বিছানা।
মাঝে মধ্যেই বোনেদের ডাকে ঘুম চোখে পাহারা দিতো কলঘরের টিনের দরজা বাহিরে।
কখন বিরাট বড় ধারি ইঁদুরের  উৎপাতে ভাই বোনের কুপোকাত ।
বেজী গুলো বর্ষার কালে সাপ ধরলে সোঁ সোঁ শব্দ হতো, ঝরের দাপটে ভাঙা কাঠের জানালা
টিনের চাল ফাঁক ফোকর থেকে সুদীর্ঘ বছর ধরেই রাত বিরাতে বালতি গামলা পাততে হতো।

No comments:

Post a Comment