পরকীয়ায় ভাঙা সংসার
শ্যামল সোম
আমেরিকা নিউজার্সসি বিখ্যাত কোম্পানির কর্মরত মায়ের অসুখে খবর আটত্রিশ বছরে
বলিষ্ঠ স্বাস্থ্য অধিকারী দীর্ঘকায় সুরঞ্জন ঘোষাল মায়ের বিছানার পাশে পা টিপে সেবারতা তন্বী
তরুণী লাবণ্যময়ী সুন্দরী সুচিত্রা ভট্টাচার্যকে লাজুক চোখ, চেয়ে দেখা শান্তশিষ্ট স্বভাব নম্রতা লজ্জ
সারল্য সুরঞ্জনকে মুগ্ধ করে, সুচিত্রা ডাক নাম নূপুর গায়ে ওড়না ভালোভাবে জড়িয়ে
বলে, " দাদি আমি এখন যাই জামাকাপড় কাছতে হবে "
দাদি সুরঞ্জনের মা বলেন," নূফুর বিকেলে আসিস এই সুরঞ্জন আমার ছেলের চা তৈরী করতে হবে !"
ঘাড় নেড়ে ধীরে ধীরে উঠে মাথা হেঁট করে বহিরে চলে যায়।
মেয়ৈএটি কে মা ?
" তোর ভিক্ষা মা ঐ যে মণি পিসিমার দেয়োরের মেয়ে নূপুর ভালো সুচিত্রা ভট্টাচার্য ঐ যে যিনি আমাদের
পুজো অর্চনা করতেন, ওকে ছোট দেখেছিলি লক্ষী পুজোর ছোট্ট লাল শাড়ি আসতো দশ বার বছরের
ছয় বছর পরে এলি এত বছর পর তোর টাকা আসছে খুলনার এই বাসা মেরামত হলো। "
মা মামণি ওদেশে লম্বা ছুটি চাকরি থাকবে না মা তাই চাকরি ছেড়ে এই বাংলাদেশে
ট্রভেল এজেন্সি খুলবো।
বাবা মা হারা মামার বাড়িতে আশ্রিতা খুলানায় গ্রামের স্কুলে
বার ক্লাস পাশ করে অর্থ অভাবে কলেজে যেতে পড়তে না তাঁর সখের নাচ স্কুল ছেড়ে খুব
কষ্ট মধ্যে আছে, মায়ের বসে সব শুনলো সুরঞ্জন ঘোষাল, বলে, " মা এমন অবস্থায় রয়েছে হাজার মেয়ের
জীবন একই অমর্যাদায় পরের আশ্রয়ে খোঁজে এক ছিলতে নিজস্ব আকাশ কিন্তু পায় কতজন
অসহায় অবস্থায় পড়ে কত ফুল কুঁড়ি হয়েই ঝরে যায় মা !"
খোকন তুই ওকে বাঁচা বাবা
ঠিক মাসে যা লাগে দেবো ওকে পড়াশোনা করতে বলো ছাত্রীবাসে কলেজে পড়বে ।
শুরু হলো সুচিত্রার জীবনে নূতন আলোর পথে যাত্রা, মনদিয়ে কঠোর পরিশ্রম নিয়মে শৃঙ্খল
মেনে চলে বছর বছর ভালো রেজাল্ট করে সবাইকে চমকে দিয়েছে।
মাঝে মধ্যে সুরঞ্জন কোলকাতা থেকে মায়ের সাথে দেখা আসে, নূপুরের জন্য দামী পোষাক
পারফিউম লেদার ব্যাগ পেয়ে নুপুর বলে, " আপনি এত দামি উপহার আনবেন না আমি ভীষন
দরিদ্র পরিবারের দারিদ্র্য অভাবে মানুষ আমার লোভ বেড়ে যাবে "
সুচিতরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়ে এই শৈশব থেকেই কঠিন সংগ্রাম
মধ্যেও, হঠাৎ মনের অজান্তে প্রেম নিরবে আসে।
দুজনে পাশাপাশি হেঁটে যেতে যেতে নদীর পাড়ে গিয়ে বসে সুরঞ্জন শোনে একটি খুব সাধারন মেয়ের
অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হয়ে আকাশ ছোওয়ার বাসনা পূর্ণ করতে সুরঞ্জনের প্রতি ভালোলাগা থেকে
ভালোবাসা জোরে বলে, " আমি তোমাকে বিবাহ করে কোলকাতায় গিয়ে হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট পড়বো।"
"সে ব্যবস্থা হয়ে যাবে কিন্তু আমাকে বিবাহ করতে চাও কেন কৃতজ্ঞতা এ ভাবে না জানিয়ে
হাসপাতালে কাজে যোগ দিয়ে মাসে এই আরথিক ঋণ শোধ করে দিও,"
সুচিত্রা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে তার দু চোখে জল টলটল করছে-- শানত গলায় বলে , রঞ্জন আমি
তোমাকে ভালোবাসি বলেই সব সময় চাই তোমার ছত্র ছায়ায় আজীবন থাকবো।
কোলকাতায় হোটেল ব্যবসা শুরু তিন বছরে বিশাল ধনী হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যায় ভালোবাসা সহমর্মিতা সহানুভূতি নেই পারস্পরিক সম্পর্কের আজ সুচিত্রার
অবহেলা ইদানিং এড়িয়ে যাওয়া পরপুরুষে আসক্তি পরকীয়া দেহজ প্রেমের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই
যেমন আসে ভাঙ্গন আজ তিরিশ বছরের বয়সে ব্যবধানে বিবাহের দাম্পত্য জীবন বিবাহের পর ধীরে ধীরে কোলকাতায় থেকে সুচিত্রার পাখনা মেলে উড়ে বেড়াতে চায় মুক্ত বিহঙ্গ সোনালি ডানার চিল বাইস বছরের বিবাহিত দাম্পত্য ঐ বিপন্নতায় বিষন্নতায় ছায়ায় গ্রাস করে সংসারের সকল দ্বন্দ্ব বিরোধ মাঝে দায়
দায়িত্ব পালন করেছেন অশেষ চেষ্টা করে সুরঞ্জন ভাঙাচোরা সংসার জোড়া দিতে পারলো না একুশ বছরের
মেয়েকে সাথে নিয়ে পালালো কোথায় কে জানে
মন প্রাণ জখম হোঁচোট থায় অসম্ভব ভেঙে পড়েছে সুরঞ্জন তাঁদের বাইস বছরের সংসার তাসের ঘরের মতো
ভেসে পড়লো হুড়মুড়িয়ে ঢুকে বেন জল এখন সুরঞ্জন বেদনা আত্মগ্লানি অপমান সহ্য একমাত্র পুত্র সন্তানে
দেবাশিষের মুখ চেয়ে সুরঞ্জন ছেলেকে দার্জিলিংয়ে কনভেন্ট স্কুল হোস্টেল রেখে পড়াচ্ছেন।
মাঝে মধ্যে সুরঞ্জন কোলকাতায় পুলিশের লালবাজারের সদর দফতরে হাজিরা দেন এ ভাবেই
চলছে জীবন যাপন সুখী হতে চাওয়া সবার ভাগযে জোটে না।
No comments:
Post a Comment