ঈদের দিনে
শ্যামল সোম
জল জল গরিব কৃষক ভোরের আলোয় আলোয়
চারিদিকে জলের উপরে আলোকপাতে প্রতিফলন,
ঝিরি ঝিরি পড়ছে বৃষ্টি ভেজা হিমেল বাতাস বইছে
হু হু করে বুকের ভেতর সব হারানোর জ্বালা বেশি
দাঁতে দাঁত চেপে মাথায় ছাতা ধরে সজল চোখে ঐ
ভেসে যাওয়া তাঁর কঠোর পরিশ্রম ঋণ করে বীজ
ও সার কিনে অনেক আশা নিয়ে নিজে করেন চাষ।
সেই ফজর আলি ক্ষেত মেঘনার বন্যার জলের ঢুকে
তার পাঁচ বিঘা জমিতে রোপণ করা চারা সব নষ্ট হল।
সংসারে পরিবারের পাঁচটি মুখে দুবেলা খাবার যোগান
দিতে গিন্নি আমিনা বিবি উদায় অস্ত ধনি পরিবারের বুয়া
শাক সবজি ক্ষেত থেকে জোগাড় করে কন্যা আয়েষা আট
ক্লাস উঠে অভাবে পড়াশোনা শেষ করে গড়ে তুলতে চেয়েছিল
প্রাথমিক স্কুলের দিদিমণি হবে, দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে ভাতের হাঁড়ি
কাঠের চুলা থেকে নামিয়ে ফ্যান গেলে এক পাশে সড়িয়ে রাখে।
ছোট ভাইটি রফিক ভোর রাত থেকে ঘর ছেড়ে দূরে বিলে নেমে
ছোট্ট জালের টুকরো দিয়ে কিছু পুটি কাজরী ছোট মাছ তুলে নিয়ে
ঘরে ফিরে দিদি আয়েষার কাছে ভাত চায়, হাত পা ধুয়ে পরিষ্কার
হয়ে দাওয়ায় মাছ ভাজা দিয়ে ভাত খেতে থাকে, হাঁরে দিদিভাই
এবার ঈদের নূতন জামা পাওয়া আশা নাই, খুশি ঈদে কি পাই ?
ভাইয়া জানিস তো আববু ফসলের ক্ষেতে বন্যার পানিতে তলিয়ে
গেছে ফসলের চাষাবাদ আববু কপালে করাঘাত ভেঙ্গে পড়েছেরে।
মানে কিছুই পাবো না ফুঁসে ওঠে বার বছরের রফিক আজাদ।
আয়েষা জানায়, ভাইয়া তোর জন্য পোষাক তৈরী করেছিরে, আর শোন
এই শায়া ব্লাউজের বান্ডিল গুলো রেল লাইনের ওপারে দোকানে দিয়ে আয়,
মজুরি দেবে ঐ টাকায় সেয়োই ঐ জিনিস গুলো কিনে আনবি কাল ঈলের চাঁদ উঠবে।
দিদিভাই জানিস আমাদের মতন গরিব ঘরে জন্ম অপরাধ, গরিবের ঈদের খুশি নাই।
না ভাইয়া আববু জমি বেঁচে দিয়ে মুদিখানার দোকান দেবেন, এই আমার সেলাই মেশিনের ছুঁচের
কাজ করে ভাইয়া তোকে সাইকেল কিনে দেবো।
ভোর রাতেই স্বামী ফরজ আলিকে ঈদগাহ ঈদগড় মাঠে নামায আদায় করতে চলে গেলেন ছেলে রফিককে সাথে নিয়ে।
নামায পাটি বিছিয়ে মা আমিনা বিবি মাথা ঢেকে মেয়ে আয়ষা ওড়নায় মাথা ঢেকে পাশাপাশিই
বসে নামায করতে থাকেন নূতন ভোরের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠছে জননী ও কন্যা মুখে কত আশা।
No comments:
Post a Comment