সোহিনী আজও তোমার খোঁজেই
শ্যামল সোম
একা একাই হাঁটছি এখন
আকাশের সাথেই,
সোহিনী আমরা পরস্পরের
হাতে হাত ধরেই হাঁটছিলাম,
" হঠাৎই বললে, 'সোম আসছি' "
সেই যে গেলে আর ফিরলে না,
কেন এই পলায়ন ?
সোহিনী তোমার না বলে,
আচমকা চলে যাওয়ার পর থেকেই
বিষন্নতায় বিষাদে নিমজ্জিত আমি,
মরা নদের মত স্রোতহীন।
তুমিই আমার প্রথম ও শেষ প্রেম,
আশ্চর্য জলদ প্রাণীর মতন
জল ছেড়ে একাকিত্বের থাকা,
নির্বাসনের ফেরারী কয়েদীর
মতন এখন দেশে দেশে পথে পথেই,
খুঁজি তোমাকেই?
ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে কেন
হঠাৎই না বলে চলে গেলে ?
বলে গেলেই বা কি ফাল্গুনের
কৃষ্ণচূড়ার ডালে লালিমা কম হতো?
শ্রাবণের বৃষ্টি, বৈশাখে প্রানীত
প্রাণের অর্ঘ্য যূঁই, বেল কি ফুটতো না?
তোমাকে আমি তো ডাকি নাই,
আপন মনে নিজেই কাছে এসে
পূর্ণিমার চাঁদকে সাক্ষ্য রেখে
আত্মসমর্পণ ভালোবেসে ছিলে কেন,
আমাকে একেবারে নিঃস্ব
করে এ ভাবে চলে গেলে?
খুলে রেখেছি মনের জানালা
শ্যামল সোম
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেশে মানুষের
একাকীত্ব বিনিদ্র রাতে নীরবে ব্যথা
বেদনা নৈরাশ্য মুক্ত চিন্তা প্রকাশ পায়,
ফেসবুকে কখন ফুটপাতে পাতা বসে
চেয়ারে হেলান অপেক্ষা করছি যদি
পথ চলতে চলতে কেউ যদি বুঝতে
পারে আমার শুকনো অবসন্ন বিষাদ
আচ্ছন্ন ক্লান্ত শরীর এলিয়ে পড়ে মন
মানসিক অবসাদে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ।
প্রতীক্ষায় রয়েছে কেউ একাকীত্ব ক্ষণ
প্রতিক্ষণ সংগোপনে বিনিদ্র রাত জাগে,
তারাদের সাথে ঢুকে যেতে চায় মন এই
ক্ষণিকের মিলনে স্নেহ স্নিগ্ধ মমনে মন।
মরণ দ্বার হতে ফেরায় প্রেম
শ্যামল সোম
তোমার ভালোবাসায় প্লাবন
হৃদয় ব্যাকুল প্রাণের শ্রাবণ
আকুতি সহমর্মিতা সহ অনু
এ গল্প সহানুভূতি পাশে পেয়ে
অকৃত্রিম অফুরন্ত উষ্ণতায়
অকৃপন ভালবাসায় ভরিয়ে
দেয় এ বুড়ো ভগ্ন হৃদয় জুড়ে
রয়েছো তুমিই আমার প্রেমিকা
তোমার প্রেমে এ হতভাগ্যকে
মরণের দ্বার হতে ফিরে ফিরে
আসার পথে চলেছি তারাদের
সাথে অশরীরী তোমার আত্মা
আত্মীয় একান্ত স্বজন প্রিয়জন
প্রিয়া ভালোবেসে নূতন করে
বেঁচে আশায় আশায় তোমার
হাত ধরে মৃত্যু মুখ থেকে তুমি
ফেরাও ফেরাও আমাকে নিয়ে
সত্যি সত্যি সত্যি বলছি তোমাকে
আমার ভীষণ বাঁচবার সাধ হয়।
বৃদ্ধ বয়সে এসে কাছে নেই তুমি
কেউ নেই সবারই যে যার কাজে
আছে, আমার মতন হতভাগ্য বৃদ্ধ
অসহায় অবহেলায় পড়ে আছি।
হে প্রভু বিশ্ব স্রষ্টা সৃষ্টি এই ধরিত্রী
মঙলময় প্রভুর কৃপায় মৃত্যু হোক,
এই মোর শেষ প্রার্থনা করুনা করো,
দীনবন্ধু এই বৃদ্ধকে চরণে ঠাঁই দাত।
সংসারের পুতুল খেলায় হেরে গেলাম আমি
শ্যামল সোম
বিবাহিত জীবন সংগ্রামে বিপর্যস্ত হয়ে ও
হার মেনে নেওয়া স্বভাবে ছিলো না শত,
বাধা বিঘ্ন প্রয়োজনে দিন রাত পরিশ্রম
করে স্বামী স্ত্রী নিজেদের শরীর সখ সুখ
আহ্লাদ একটু বেশিই আদরে প্রশ্রয় দিচ্ছে,
দুটি পুত্র সন্তানের জন্ম যথা সর্বস্ব হারিয়ে
নিঃস্ব অসহায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছি।
বৃদ্ধা বৃদ্ধের মরণ কেন মরণ হয় না গো
যমের অরুচি মাঝেমধ্যে আত্মহনন কি ?
শেষ পর্যন্ত অসহায় আমাদের একমাত্র
পথ, অসুস্থ অবস্থায় বৃন্দা আশ্রমেও নেই,
ঠাঁই হে মহান স্রষ্টা প্রভু তব চরণে দাও ঠাঁই।
সত্যি সত্যি আমাদের বাঁচিবার সাধ নাই।
এই গানটি শুনে কাঁদছি জীবনের শেষে
কোথায় যেন একটা আঘাত করে গেল ।
ধ্বাক্কা দিয়ে গেল, আজ বার দিন আমরা
দুই বুড়ো বুড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আছি,
আপনারা প্রার্থনা দোয়া করবেন কৃপা করে
যত দ্রুত সম্ভব প্রভুর চরণে আশ্রয় ঠাঁই পাই।
" জেনে শুনে বিষ করেছি পান
প্রাণের আশা ছেড়ে সোঁপেছি প্রাণ! "
পত্র কাব্য
প্রেমিকা তুমি কবিতা
আজ এই জীবনের গোধূলি লগ্নে তন্বী
তরুণী চির যৌবনা আমার কৈশোরের
প্রেমিকা অপরূপা নারী তুমি যে কবিতা,
পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেওয়ার প্রক্কালে,
আজ অকপটে স্বীকার করি তুমি আমার
শেষ মূহুর্তে আজও পাশে রয়েছো কবিতা
হে নারী তুমি আমার প্রথম প্রেম কবিতা,
এখন আমার চোখে চোখ রেখে দেখো
এই বৃষ্টি ঝরা আসন্ন সন্ধ্যা বেলায় দেখ,
ভালোবাসা দীঘির মতন টলটল করেছে।
ঢল নেমেছে শিরা উপশিরায় প্রেমে পড়ে,
কবিতা কাব্যের শুভ্র পুষ্প আঙিনায় রঙে
রঙে রঙিন সামিয়ানা আকাশে তলে বাস।
সুবাস প্রেম প্রেমের কাব্যিক অপূর্ব বিন্যাস।
আমি মুগ্ধতার জানাবার ভাষাহীন, হতবাক,
হে কবিতা তোমার ভালোলাগায় প্রাচীন বৃক্ষ,
গুনমুগ্ধ বৃদ্ধ জরাগ্রস্ত জরাজীর্ণ ঋব্ধ বিমোহিত
স্নেহময়ী জননী অকৃপণ সুপ্ত মমতায় কবিতা
তোমতে আমি আপ্লুত মোহাচ্ছন্ন নিরন্তর প্রয়াসী।
কালের যাত্রা যাত্রী তুমি পথের সাথীদের প্রেঢ়না
তুমি একজন অনন্যা তুমিই তোমার কবিতা স্বপ্ন
কাব্য পরিচয়েই সনামধন্যা কবির শৈল্পিক শৈলী
নান্দনিক কাব্যিক অপূর্ব বিন্যাসে গুনমুগ্ধ হলাম।
কবিতা তোমার আজন্ম প্রেমিক শ্যামল সোম
বাঘিনী তোমার জন্য
শ্যামল সোম
আকাশ ভালবাসায় ভরিয়ে দেয়
নাভিমূলে বৃষ্টি অঝোরে ঝরছে
বৃষ্টিকে দুহাতে জড়িয়ে সজোরে
ঝাঁপটে নগ্ন বৃষ্টি ছোঁয়ায় হৃদয়ে
গহীন অরণ্যে ঝর্ণা বহে সে প্রেম
কাব্যে সুষুপ্তি পিপাসিত হিয়া সুখের
মোহনায় অনন্ত প্রেমে বহে যায় সে
খানে বাঘিনীর বাঘের প্রয়াসী মন ছুঁয়ে।
বাঘ বাঘিনী মহা মিলন নিষিদ্ধ ক্ষণ ক্ষণে
ক্ষণিকের মিলনের আনন্দ প্রলয় প্লাবন
তোমার জন্য হিংস্র জানোয়ারের মত
ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিঁড়ে খুলে ফেলি তোমাকে।
এ এক অবিস্মরণীয় অবিশ্বাস প্রেম
শ্যামল সোম
একেই বলে যদি মজে দুজনের প্রেমে মন
দেশের, বয়সের জাত পাতের মানে না শাসন।
সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে উড়ে উড়েছে
যার মন সীমান্ত ঝুঁকি নিয়ে নিরাপত্তার, নড়ছে
কাঁটাতার বেড়া,প্রাচীর ডিঙিয়ে বা আকাশ পথে,
প্রেম ভালোবাসার পদ্ম কাননে, কিন্তু পদস্খলনে,
ছলনায় ভুলে ভালোবেসে জীবনের গভীর খাদে।
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে প্রেমের বৃত্তে আবর্তে বিবর্তন
ঘূর্ণি ধুলোর সঙ্গে ওড়ে ধুলোবালি বিরূপ প্রভাব !
বিদ্রুপ তিরস্কার অত্যাচার লাঞ্ছনা প্রবঞ্চনা থেকে
প্রতারণা থামানো যাচ্ছে না পরিত্রাণ নেইকো চালে
নিগ্রহে সামাজিক প্রতিকূলতা অতিক্রম করে চলে।
পরিত্রাণ পেতে শেষ মূহুর্তে উন্মাদ পুরুষের পেট হতে
মনোরঞ্জন করতে দেহের একে একে পোষাক বিমোচন,
উলঙ্গ নগ্ন দেহ সমর্পণ করে ধেই ধেই মদ্যপান নাচন।
বিকৃত মনস্ক পুরুষের পছন্দ মত জীবন নিশীথ যাপন,
না কি নূতন প্রেমিকের হাত ধরে গভীর রাতে পলায়ণ ?
নাম তার মাধবী লতা
শ্যামল সোম
জনৈকা নারীর হৃদয়ের স্পন্দনে,
বেদনায় আকুলতা মাধবী লতা,
পরগাছার মত আব্বু আম্মু মৃতা
চাচার কাছে শৈশব কৈশোর নব
যৌবনে রোগা চেহারা মায়াবী মুখ,
উজ্বল চোখের দৃষ্টি আকর্ষণ করে,
আজ সে নারী বড়ই অবহেলিতা।
কৈশোরে প্রারম্ভ মাধ্বী লতার মত
জড়িয়ে ধরে বুকে রেখে মাথা কত
স্বপ্ন দেখে মনে মনে হয় তোমাকে,
নিয়ে সদ্য ফোঁটা জুঁইয়ের মতনই
তোমাকে ভালোবেসে আহ্লাদিত
প্রাণে আশা প্রেমের বন্যায় ভেসে
ছিলাম, পরস্পরেকে ভালোবেসে।
আকস্মিক সমাজের নিষেধাজ্ঞা,
অতর্কিতে বন্ধ হয়ে গেল হৃদয়ের
কপাট শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে প্রাণে
নতুন সূর্যোদ্বোয়ের ভোরে হঠাৎ
কালো মেঘের এল অশনি সংকেত,
যখন নূতন বাসা বাঁধার প্রত্যাশায়,
কামিনী ফুলের গন্ধ আকুল মাতাল
হয়ে নেশায় বুঁদ হয়ে আমোদে লাল
আহ্লাদে গদগদ যখন বাতিল করলে
ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সম্মুখীন হয়ে উভে
গেল আমাদের মিলনের আয়োজন।
আমার প্রথম প্রেম মাধবী লতাকে এ
সমাজের শাসনে রক্ত চক্ষু প্রাণ সংশয়।
হেন সর্বস্ব হারিয়ে হাহাকার আর্তনাদ
চাপা দীর্ঘনিঃশ্বাস হাহুহুতাশ শরনাথী--
তেড়ে আসছে একদল লোক রক্ষক
পালাচ্ছি আমি, নাই আমার কোথাও ঠাঁই ।
No comments:
Post a Comment