Saturday, 29 October 2016
পারাপার
Shots Division দৃশ্য বিভাজন
বাংলাদেশের ও পশ্চিমবঙ্গ সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে যাওয়া দৃশাবলি
সাথে Background এ গান বাজছে
Title card
শ্যামল সোমের
সৃজনে
শঙ্খচিলের পারাপার
পরিচয় লিপি সাথে আবহ সঙ্গীত সুর
বাজে এবং সাথে ধারাভাষ্য চলবে।
ধন ধান্য এ পুস্পে ভরা
আমাদেরই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে দেশ এক
সকল দেশের সেরা
ও যে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে যে
স্মৃতি দিয়ে ঘেরা।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে
পাবে নাকো তুমি
আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি।
পরিচয় লিপি সাথে সাথে--
ধারাভাষ্য --
হাঁ, ইনি হচ্ছেন, শিবনাথ ভট্টাচার্য, গ্রামের খুবই জনপ্রিয় ভালো মানুষ
পুত্র হারা, কন্যার অপহরণ, ধর্ষিতা নাতনীর শোকে দুঃখে হৃদয়ের মর্ম
ব্যথায় মুজড়ে ওঠে মাঝে।
পুত্র সন্তান সোমনাথ ভট্টাচার্য এর নিহত লাশের সামনে শোক স্তব্ধ পাষাণ মূর্তি নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছেন, হ্যারিকেন কাচে পোকা গুলো ঘোরা ফেরা করছে।
1946 দাঙ্গায় ধর্মের ধ্বজাধারী মুষ্টিমেয় শক্তিশালী চতুর মানুষের কারসাজিতে সাধারণত ধর্ম ভীরু অর্ধ শিক্ষিত দরিদ্র মানুষ ভাষা ঐ বাংলা ভাষা হলেও মুসলমান সমাজ উপেক্ষিত হওয়ার জন্য এবং কংগ্রেস সাইমন কমিশনের সদস্যদের সুপারিশ -- হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিভিন্ন প্রান্তে রাজ্য-- রাজ্যগুলির বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করার সুপারিশ কংগ্রেস প্রত্যাখান করে, শুরু হল আমাদের সংগ্রাম চলছে Direct Action মুসলিম লীগ ডাক দেয় সেই ভয়ংকর দিন ইতিহাসের কৃষ্ণ অধ্যায়। নিশ্চয়ই সৌভ্রাতৃত্ব সৌজন্য বোধ ছিল তা নইলে কেন আজও ইতিহাস গ্রন্থের পাতায় লেখা আছে ভাতৃঘাতি দাঙ্গা।
কারন বর্তমানে বা আজ থেকে সত্তরবছর পূর্ব বা একশো বছর আগে এই বাঙালী জাতি ঐ জাত পাতে শূদ্র নমশূদ্র ও ছোটজাত বলে অসহ্য যন্ত্রণা প্রচন্ড মানসিক অত্যাচার --ঘৃণা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য অমানবিক ব্যাবহার অতীতের কলংময় ঘটনা বহুল
অত্যাচার, দাসত্ব যৌন নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তৎকালীন বাদশা নবাব আমলেও বহাল তবিয়াতে ছিলো, বিশৃঙ্খলা, পারস্পরিক সহানুভূতি নেই প্রেম
নেই গৌর কিশোর ঘোষের হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে প্রেম নেই উপন্যাসে বহু যুগ
লিখে রেখে গেছেন।
প্রতি নিয়ত হিংস্রতার অসহায়ত্ব নির্যাতন মানসিক ধর্ষনের নারীর প্রতি সহিংসতা ধর্ষনের প্রবনতা বেড়ে যাচ্ছে, নিজদেশে নির্বাসনে শরনার্থী মতোন হয়ে আছি।
দল বেঁধে গ্রামের শহরের পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে শরনার্থীদের চলেছে মিছিল।
" - কাঁদালে তুমি মোরে আঘাতে আঘাতে বারে বারে
অনলে পুড়েছে ঘর, পুড়েছ বাহিরে অন্তরে অন্তরে।
জননীর যাতনায় হাহাকার শুনি সে আর্তনাদ
কেমনে সে ব্যথা বেদনা সহিবো বলো হে নাথ।
এ জন্মভূমি ছেড়ে দেশান্তরে মন যেতে নাহি চায়
মানুষের ভয়ে মানুষের পলায়ন না কী চির বিদায়।
কেমনে পশিবো শিকড় ছেঁড়ার যাতনা এত বেদনা
আকুল নয়নে কেঁদে ওঠে প্রাণ, প্রভু সহে না সহে না।
গোধূলি গগনে মেঘ আকাশে আকাশে গিয়েছে ছেয়ে
শেষ বিদায়ের লগ্নে কেমনে বাইবো এ মোর ভাঙা খেয়া।
আপনাদের উৎসাহে এই বাহাত্তর বছরের বৃদ্ধের চলচ্চিত্র সৃজনে আমি।
প্রাথমিক
নির্ধারিত নাম " শঙ্খচিলের পারাপার " স্মৃতি সতত সুখের নয়, ফেলে আসা অতীতের পাপ পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ উগড়ে দিয়েছিল ঘৃণা, হত্যার বদলে হত্যা, চোখে বদলে চোখ, তাই বৃদ্ধ শিবনাথ আজ শোকার্ত শোকগ্রস্ত পাষাণ মূর্তি নির্বাক সংলাপ হীন চলচ্চিত্র ধারাভাষ্য ও আবহ সঙ্গীত শোকগাথা শোকাতুর সুরের মূর্ছনায় ছূঁয়ে যায় দর্শকের যেন হৃদয়ে বজ্রপাত এর পর নয়নে নামে পানি, তখনই জানবো সার্থক আমার স্বপ্নের মেঘমালা সাথে শঙ্খচিল আজও পারাপার করে।
শেষ রাত্রি জযোৎসনায়
নদী ধরে long short
সিলিউট ফিগার দল বেঁধে গ্রামের
মুসলমান বাসিন্দারা মশাল হাতে
খোলা তলোয়ার সড়কি হাতে পাহারা
দিয়ে নিয়ে চলেছে দল বেঁধে
চলেছেন মানুষের আলো আঁধারে
মাথায় রেখে -- জিনিষ পত্র
হাতে হারিকেন বাক্স প্যাঁটরা মাটির কুজো, বদনা, ময়না পাখি সমেত খাঁচা ইত্যাদি বহন করে শিবনাথ শোকার্ত দেহের ভারসাম্য সঠিকভাবে
হাঁটতে পারছেন না বসীর মিঞার বাল্য বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে লাঠি হাতে হাঁটছেন।
দেশভাগের পরে শরনার্থীদের বহমান মিছিল নদীর ধার ধরে চলমান -- দেশে বিদেশে
শরনার্থীদের বিভিন্ন ধরনের দেশান্তরের মিছিল চলেছে বর্তমানে থেকে ভবিষ্যতে অজানার উদ্দেশ্যে ।
রাতে গাছের তলায়
শিবনাথ শোকার্ত
বিষন্ন বিষাদে চোখে
জল টল টল করছে
চোখের মণিতে শিখা
কাঁপছে হারিকেন আলো।
MONTAZ --- 1946 সেই সব সরল গ্রামের মানুষ চোখে মুখে আতংক।
রাতে বা দিনে Flash back
আগুনে পুড়ছে ঘর গোয়াল
গরুরা দড়ি ছিঁড়ে পালাতে চাইছে।
দিনের বেলা Flash back
গ্রামের বাড়িতে, ধানের গোলায়
জ্বলছে ক্ষেতে, মন্দির, আগুন দিল
দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাচ্ছে মুখে কাপড়ে
ঢাকা, দৌড়ে চলে গেলো।
Flash Back
দিনের বেলায় নদী ধারে মৃত গ্রাম্য বাসী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শিবনাথ শ্রাদ্ধের
কাজ করছেন। Back ground এ শ্রাদ্ধের মন্তর উচ্চারণ শুনা যাচ্ছে।উঠোন
এডিটিং এর সময় কাট কাট করে দৃশ্য মিশ্রণ।
Flash Back
নদীর ধারে বিকেল
বেলায়গোধূলি লগ্নে লক্ষী শিবনাথের বড় নাতনী ছোট নাতনী উমা ওদের প্রিয় বান্ধবীদের সাথে গল্প গুজব হাসি ঠাট্টা তামাশা করছে পরস্পরের চুল আঁচড়ে চুলের খোঁপা বেঁধে দিচ্ছে ।
Flash Back নদীর ধারে
নদী ধারে, গাছের তলায় মাটির উপর
লুটিয়ে পড়ে রয়েছে ধর্ষিতা উমা
মাঝে মাঝে খিঁচুনি, জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
বান্ধবীরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে, বদনা থেকে পানি দেয়।
5) Flash Back
দিনের বেলা উঠোন
শিবনাথের হাত বেঁধে খুটির সাথে
দিনের বেলা উঠোনে Flash Back
মুখে কাপড় গোঁজা, উঠোনে ধর্ষণ
চার জন হাত পা চেপে ধরে আছে
একটা পৈশাচিক উল্লসিত মুখের
আনাগোনা নানা নারীর উপরে
ধর্ষিতা মুখ পোষাক পালটে যাচ্ছে ।
দিনের বেলা উঠোনে Flash Back
নাতনীর নিথর দেহ, রক্তাক্ত ঠোঁট
গাছলা গড়াচ্ছে
দিনের বেলা উঠোন Flash Back
ধাড়ালো ছুরি
নিয়ে এগিয়ে আসছে মুখ ঢাকা
দুষ্কৃতীরা, হঠাৎই ঝাঁপিয়ে পড়ে
সোমনাথ সুন্দর বনের বাঘের মতো
বাবাকে বাঁচাতে, খুন হয়ে যায় পুত্র ।
দিনের বেলা নদীর ধারে Flash
চিতা দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুনের শিখা
লক লক করে উঠছে, নাতির অমলের কাঁধ ধরে
শিবনাথ শোকার্ত প্রদক্ষিণ করছেন, অমলের হাতে
আগুনে প্যাকাটি, চিতার আগুন ।
নদীর ধারে Flash back
ঘাট থেকে নেমে নদীর জলে নেমে এসেছে ,
যান ভাঁড়ে পুত্র সন্তান সোমনাথের অস্তি
নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়া পূর্বে, ঈশ্বরের
উদ্দেশ্যে মন্তর উচ্চারণ of voice।
শেষ রাত্রি জযোৎসনায়
নদী ধরে long short
সিলিউট ফিগার দল বেঁধে গ্রামের
মুসলমান বাসিন্দারা মশাল হাতে
খোলা তলোয়ার সড়কি হাতে পাহারা
দিয়ে নিয়ে চলেছে দল বেঁধে
চলেছেন মানুষের আলো আঁধারে
মাথায় রেখে -- জিনিষ পত্র
হাতে হারিকেন বাক্স প্যাঁটরা মাটির কুজো, বদনা, ময়না পাখি সমেত খাঁচা ইত্যাদি বহন করে শিবনাথ শোকার্ত দেহের ভারসাম্য সঠিকভাবে
হাঁটতে পারছেন না বসীর মিঞার বাল্য বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে লাঠি হাতে হাঁটছেন।
দিনের বেলায়
নৌকো ঘাটে কাছে আনছে আবদুল কাদের মাঝি হুঁকো টান মারছে
দিনের বেলায় নদীর ধারে
কেউ ভাত রান্না করে ফেন গালছে। গাছের ডালে চটের পর্দা ঠাঁঙগিয়ে দেয় কজন।
নদীর পাড়ে দিনের
নদীর পাড়ে বসে নাপিতের কাছে একমুখ
দাড়ি মুসলমানদের মতো কেটে দেয়
দিনের বেলায় নদীর ধারে
জয়া এক মুসলিম রমনী হাত থেকে ঘটি নিয়ে জল পান করছে।
দিনের বেলা নদীর ধারে Composite shorts mid short
উমাকে নিয়ে বান্ধবীরা গলা জড়িয়ে কাঁদছে।
উমার দেহ থেকে থেকে কাঁপছে, আতংকিত
ভয়ার্ত চোখ মুখ ধর্ষিতা অবসন্ন দেহ হঠাৎই
খিঁচুনি ওঠে বমি করে
জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বান্ধবীরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে
পানি চোখে মুখে ছিটিয়ে দেয়
তালপাতার পাখা দিয়ে বাতাস করে।
দিনের বেলা নদীর ধারে
শিবনাথ নদীর জলে স্নান করে এসে পৈতা খুলে গলায় ঝোলানো ঝোলাতে
শালগ্রাম শিলা সাথে রাখেন।
দিনের বেলা - নদীর পারে
বসীর মিঞার হাতে লুঙ্গি ফতুয়া ফেজ টুপি নিয়ে ,
শিবনাথ ভেজা ধুতি পরে বসীরের সামনে।
বসীর মিঞা বাল্য বন্ধু শিবনাথের দিকে মিনতি'- ভালোবাসা ভরা দৃষ্টি নিয়ে অপলক চোখে তাকিয়ে আছেন। পরস্পরের দিকে পরস্পরে, সজল চোখে
তাকিয়ে থাকে।
ধীরে ধীরে ভেজা ধুতি উপর দিয়ে লুঙ্গি
লুঙি গলিয়ে পরে নেন, বসীর মিঞার
চোখের ইশারায় গলার তুলসী মালা
ছিঁড়ে ফেলে, ঝুলিতে রেখে গলায় ঝুলিয়ে রাখে।
পরস্পরের কাছ থেকে আলিঙ্গন দু হাতে
গলা জড়িয়ে ধরে উমার বান্ধবীরা কাঁদছে।
খালেদ, বসীর মিঞা শিবনাথের দিকে তাকিয়ে আছে
গাছের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে কাঠবিড়ালী । গাছে পাখীর বাসা।
টাকার থলি হাতে অন্য একজন এসে আরো কিছু টাকা দেয়, বসীরকে,
রুপোর টাকা সব।
থলিতেটি বাড়িয়ে দেয় শিবনাথের হাতে, শিবনাথ শোকার্ত
দু চোখে জল
পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে গভীর আলিঙ্গনে।
অমল খাঁচা থেকে ময়না পাখিটি উড়িয়ে দেয়, উড়ে যাচ্ছে পাখি দূর আকাশে,
অম্লান হাসি হাসছে অমল ওর বন্ধুদের সাথে।
জয়াকে ঠিক মতো, মুসলমান রমনীর সাজে কাপড় পরিয়ে, বোরখা পরিয়ে
সাজিয়ে গুছিয়ে সাথে নিয়ে যায় রমনী গণ
নৌকোর কাছে ধীরে ধীরে, নৌকোতে উঠতে সাহায্য করে।
নদীর ওপারে সূর্যোদ্বয়ের নূতন সূর্য উঠছে। নৌকোতে সবাই
ঠাঁই নিয়েছে,
কেউ মোনা জাত করছে তসবির মালা জপ করে।
মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে প্রার্থনা করছে কেউ।
আবদুলকে সতর্ক করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন বসীর মিঞা।
একজন নৌকোর বাঁধার দড়ি খুলে দেয়।
আবদুল লগি ঠেলে যাত্রা শুরু করে।
ওপারে দাঁড়িয়ে আছে শিবনাথের প্রিয় প্রতিবেশী
তাঁর বাল্য বন্ধু বসীর মিঞার বহু ভালো মানুষ
একই গ্রামের বাসিন্দা চলে যাওয়া নৌকোর দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
পূর্ব আকাশে সূর্যোদ্বয়ের নূতন ভোরে
আজন্ম শিকড়ের টান ছিঁড়ে
হৃদয় উপড়ে ছিন্নমূল শরনার্থী বাঙালি চলে যাচ্ছে --
শিবনাথের দু চোখ জলে ভেসে যায়।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে শুয়ে কাঁদছে উমা
উমাকে জড়িয়ে জয়া পাষাণ মূর্তি নির্বাক
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
শিব নাথ নৌকো থেকে গলা থেকে ঝুলি খুলে এক মাথায় ঠেকিয়ে নদীর জলে ফেলে দেয়।
নাতী অমল চিৎকার করে ওঠে --: দাদু এ কি করলা ?
শিবনাথের দু চোখে জল -- করযোরে প্রণাম করছেন।
বিসতৃণ দু ধারে অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনে ভুপেন হাজারিকা গান ভেসে আসে।
Show quoted text
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment