আমার আদরের খুকু
বৃদ্ধ বাঁশিওয়ালা
আয় আয় খুকু আয় আমার কাছে
ফিরে আয় তুই মা মোর দগ্ধ হৃদয়ে
গোপন সোপান বেয়ে মণিকোঠায়।
পৌষমেলায় রবীন্দ্রনাথের স্বপ্ন বিশ্ব
ভারতীর শান্তিনিকেতনের শেষে লগ্নে।
আমার খুকুকে নিয়ে কুষ্টিয়ায় লালন
সাঁইজীর মেলায় খুকু আমার পাশেবসে
শুনেছিলো গান তন্ময়ে আচ্ছন্ন হয়ে।
একতারাতে দিয়ে তান, নেচে গাইছেন,
" লোক কহে লালন কি জাত সংসারে"
খুকু চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে
জল, টল টল চোখে তাকিয়েছিলাম,
খুকু বাউলের গান শুনখুব ভালোবাসত।
আমার আদরের খুকুর গান ছিলো তার
প্রাণ, গুন গুন করে সারাদিনই সে গাইতো,
"আমার প্রাণের মাঝে মাঝে সুধা আছে
চাও কি, আহা বুজি তার খবর পেলে না,"
কখন ছুটে গলা জড়িয়ে বলতো," বাপি
ও বাপি, আত্মজার শরীরের ঘ্রাণ মৃত মোর
জননীর দেহের সুবাসে আকুল হতো মন
ব্যাকুল স্নেহ চুম্বনে রাঙা হই উঠতো মুখ
সলজ্জ চোখে গেয়ে উঠতো, " কোথাও
হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, মনে মনে
তেপান্তর মাঠ পেরিয়ে- --------------------
ক্রমশ চলবে আমার আদরের খুকুর কথামালা।
দোহাই পাশে থাকবেন আপনারা
অফুরন্ত এই ভালোবাসায়
ভরিয়ে দিলেম সবার হৃদয়।
স্বাগতম সুপ্রভাতে কল্যান হোক আপনাদের।
তুমি সুখ নিদ্রায়
শ্যামল সোম বাঁশিওয়ালা
ঝর বাদলের আজ রাতে
তুমি সুখ শয্যায় সাথে ঐ
নিদ্রায় প্রশান্ত মুখে মৃদু
হাস্য, অঙ্গে সর্বাঙ্গে স্নিগ্ধ
সৌন্দর্যে লাবণ্যে নিদ্রারত
মায়া জ্যোৎস্নায় আলোকিত
রূপে, বিমুগ্ধ চোখ নিঃশঙ্ক
দেখি নারীর অপরূপ সে রূপ
হতভাগ্য সে পুরুষ দেখেনি
কখনও নারীর শয়নের রূপ।
আমি মহাকাল নীলক্ন্ঠ স্বরূপ
নিষ্পাপ আমি শুধুই পাহারায়।
এ বিকলাঙ্গ সময়ে ভীত সন্ত্রস্ত
নারী আশঙ্কিত, বিনিদ্ররাতে নিদ
নাহি আঁখি পাতে, দরজায় ঘাতে।
চারিদিকে নারী খাদক, ধর্ষক থাকে
ওৎপেতে হায়নাদের হাত হতে রক্ষা
পেতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় ডাকে।
আমার কালো মেয়ের
রূপে মুগ্ধ নানা গ্রুপে
অসংখ্য মানুষের কাছে
আমার আদরের খুকু
তাকিয়ে আছে অবাক
চোখে, আমার খুকু জন্য
অনুরোধ করি, দোয়া করেন,
মহাণ স্রষ্টা কাছে বিনীত প্রার্থনা
হে প্রভু আমার খুকু যেন থাকে সুখে।
পাগলি মা আমার
তোমার খোকা শ্যামল সোম
আমার অভিমানী মন মা মাগো
খোকা তোমার আদর পেলো না,
ভালোবাসার কাঙাল ঘোরে পথে
পথে এই বিশ্ব জুরে জননী চরণে
প্রণাম করে জানাই মনের বেদনা
এ জরাগ্রস্ত জরাজীর্ণ বৃদ্ধ সন্তান
চলে যাওয়ার আসছে শেষ সময়।
স্নেহময়ী জননীর বৃক্ষের ছাড়াই
তোমার ভালোবাসা তুলনা নেই।
যখন পাগলের মতো ভালোবেসে
বিনিদ্র নির্জন রাতে মা মা মা কাঁদি
আঁচল দিয়ে অশ্রু মোছাতে এলেনা।
কষ্ট আমার তুমি ছাড়া কে বুজবে মা?
মা মাগো তুমিই আমার একান্ত আপন
সবাই এ বুড়ো কে এড়িয়ে গেছে আজ
ভীষণ একা লাগে মা, যখন মাকে চাই
মা তখন কি কাজে ব্যস্ত ছিলেন ডাক
শুনে ফিরেও তাকালে না, চরণ ছূঁতে
গেলে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে, পা জড়িয়ে
ধরি বলে মাগো আবোল তাবোল কি
তোমরা বল কেউ কখন শুনেছো?
জননী এক কি বাসনা পুত্রের চরণদুটি
সরিয়ে না নেওয়ার বায়না।
খুকু মায়ের শৈশব তোমার এখন গেল
না, আশ্চর্য ভালো লাগার ব্যাপার লজ্জা
পেলাম মা তোমার চরণ তলে তোমার
খোকার শেষ ঠাঁই মা ওগো আমার মা
এত নিঠুর হয়ো না।
No comments:
Post a Comment