ভালোবাসার চেনা অচেনা মানুষ
শ্যামল সোম
দাদুর আশীর্বাদে রুপোর থালা বাটিতে মানিক ভট্টাচার্য মুখে ভাত হয়েছিল, নিষ্ঠাবান পরম বৈষ্ণব গুরু বংশে জন্ম ।
হুগলি আরাম বাগে বিশাল জমিদারি তিন মোহলা বিশাল বাড়ি এই বাড়ির সংলগ্ন একটি পুকুর বাগান এক ধার বাগানের ভেতরে
রাধা মানবের মন্দির । হাজারো মানুষের ভীড় লেগে যায় শ্রী কৃষ্ণ এর জন্ম অষ্টমী বিশাল অনুষ্ঠানে বহু শিষ্য শিষ্যা
সমাগম হয়। রাতে পালা গান নৌকা বিলাস, শ্রী রাধীকার মানভঞ্জন, গালা গাইতে এসেছেন নবদ্বীপ এর বিখ্যাত
স্নামধন্যা বৈষ্ণবী বিষ্ণুপ্রিয়া লাবণ্যময়ী যুবতী অসাধারণ সুমিষ্ট গলায় ফুলের গয়নায় স্বয়ং রাধারানি সেজে
পদাবলী কীতৃন পালা গান শ্রীমতীর মানভঞ্জন গান গাওয়া চলছে।
কিন্তু প্রেম ভালোবাসায় ভরিয়ে প্রাণ মন কেঁড়ে নিয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ রাধারানি অথচ একমাত্র এ বংশের শেষ একমাত্র
পুত্র সন্তান অসম্ভব ভালো পড়া শোনায় কোলককতার মেডিকেল কলেজ থেকে এম বি এস ও নিউরো সার্জারি
এম এস পাশ করেই আর জি কর হাসপাতালে কাজ করছে।
ফতেমা সঙ্গেই আলাপ হওয়ার পর থেকেই ফতেমা সহমর্মিতা সহানুভূতি শীলা অসাধারণ ভালোবাসায়--
দুজনে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পড়ার সময় ফাতেমা হক মিতালির প্রেমে পড়ে যায়।
মানিক ভট্টাচার্য খবর পেয়েছেন মহান প্রভু শ্রীকৃষ্ণ এই জন্মদিনে জন্ম অষ্টমী দিনেই পার্ক সার্কাস
এক বিশাল বাড়িতে ফতেমা অরফে মিতালি বিয়ে করতে আসছেন মানিক ভট্টাচার্য একমাত্র পুত্র দিলীপ ভট্টাচার্য,
নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব পরিবারের একজন বংশের নাতি স্বর্গে বাতি দেবেন কিন্তু নূতন পরিচয় নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব পরিবার
থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এখন লতিফ সিদ্দিকী দুলাহ বর সেজে এসেছে ইমাম সাহেব বিবাহ কবুল দিয়ে বিবাহ হলো খাতায় কবুলনামা লেখা হলো।
লতিফ এবার ফতেমাকে নিয়ে চলে যাবে তার দুই হাজার স্কোয়ার ফিটের Intiar Desingner দিয়ে সুনদর সাজানো Flat এ Slat Lake এ।
বছর কড়ি পড়ে মানিক ভট্টাচার্য যখন জীবনের শেষ অধ্যায় এসে বিধ্বস্ত লিভার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত মরণ শিয়রে দাঁড়িয়েছে।
হঠাৎ বৃন্দাবন থেকে এসেছেন নিজের একমাত্র পুত্র দিলীপ ভট্টাচার্য ধর্মান্তরিত হয়ে এখন লতিফ সিদ্দিকী ও
বৌমা ফতেমা ও এষা সিদ্দিকী শেষবারের মতন দেখতে মরণকালে মায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে রক্তের অমোক টানে এসেছেন বৃন্দাবন থেকে ।
জাতের উদ্ধৃত উর্ধে কি আত্মজ সন্তান ?
( দিলীপ ভট্টাচার্য থেকে ধর্মান্তরিত হওয়ার নাম ছিলো লতিফ সিদ্দিকী --- --
বৌমা ফতেমা নামাযপাটি বিছিয়ে সন্ধ্যা কালিনন নামায পাঠ করছিলেন । নামায পাঠ শেষ করে, হঠাৎ
মানিক ভট্টাচার্য ফতেমা তার শ্বশুর মশাইয়ের কাজে মহিলার সাথে কথা বলার আওয়াজ পেয়ে বাহিরের ঘরে এসে এত বছর পর
শ্বশুর মশাই সামনে দেখে বিহ্বল হয়ে যায়।
কে কে যাই ! ( আজ বিশ বছর পরে হঠাৎ শ্বশুর মশাই দেখে হতবাক ) আববু জান বাবা বাবা বাবা ( কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল ফেলে। )
বার বার দেখা করে ক্ষমা চাইতে যাওয়া সেই বিরল মূহুর্তে কথা মনে পড়ে যায়, উনি ফিরেয়ে দিয়ে ছিলেন ওঁনার পায়ের তলায় লুটিয়ে পড়েও )
মানিক ভট্টাচার্য ( ধর্ম নিষ্ঠ বিলক্ষণ বৈষ্ণব ব্রজ ধাম বৃন্দাবন থেকে বিশ বছর পর আজ দেখা করতে এসেছেন।
বহু বছর আগে একমাত্র মাতৃহারা পুত্র সন্তান দিলীপ ভট্টাচার্য যাকে খুব যত্ন করে
অল্প বয়সে বিপত্নীক হওয়ার পরও বিবাহ করেন নাই, মাতৃ স্নেহে মানুষ করেছেন মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি
পড়িছেন, পরে ঐ কলেজে ছাত্রী মুসলিম কন্যাকে বিয়ে করে দিলীপ ভট্টাচার্য থেকে লতিফ সিদ্দিকী
এর প্রেমে পড়ে বাবার অমতে বিয়ে দিলীপ ভট্টাচার্য সিনিয়র নিউরো সার্জন ভীষন ভালো ছাত্র এখন এই লতিফ সিদ্দিকী হয়ে ফতেমাকে, বিবাহ করার জন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক রাখেন নি )
ফতেমা মিতালি নিয়ে দিলীপ বহুবার গিয়েছিল, তিনি সব সময়ই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
" বাবা বাবা এত দিন পরে এলে, কতবার গেছি আপনার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছো দেখা করো নি,
আমি মুসলিম ধর্মান্তরিত হয়ে আপনার ছেলে আমাকে বিয়ে করার জন্য আপনি ভীষণ রেগে গেছিলেন !
মানিক ভট্টাচার্য -- " আমার এখন আর সময় নেই মা মাগো আমাকে ক্ষমা কর ! ধর্ম নিয়েই আজ আছি পরম বৈষ্ণব আমি শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলছেন সকল ধর্ম সমান, যত মত তত পথ।
গীতার কথা সকল ধর্ম এর ইস্ট পূজিত হই আমি মহান স্রষ্টা প্রভুর কাছে প্রার্থনা করি কল্যাণ হোক তোদের।
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্ম সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান মহাপ্রভু বিধর্মী হরিদাস পরম ভক্ত ছিলেন।
আজ আমি লিভার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে আছি মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল এর ডাঃ এস এম নাজমুল
হক বলে দিয়েছেন আর একমাস আয়ু, মা লিভার ক্যান্সার মারা যাবো। জীবনে চা মদ সিকরেট খেলাম না।
অথচ আমি লিভার ক্যান্সার মারা যাবো।
মিতালি --- না না এভাবে বলো না আমি আপনার জনয দোয়া করবো, আলাদা করে নামায পড়বে খোদা মেহেবান সব ঠিক হয়ে যাবে, বাবা ।
মানিক ভট্টাচার্য--- মিতালি ও এখন তুই তো ফতেমা ! আমি চলে যাবো বাহিরে বিকাশ গাড়িতে অপেক্ষা করছে আমাকে বৃন্দাবনে রাতের ট্রেনে নিয়ে যাবে !
ফতেমা মিতালি --- ওহ্ বিকাশ বুঝি দেখা করবে না, বিকাশ আমাদের দুজনের প্রিয় বন্ধু ছিলো, কিন্তু আমার
আর আপনার ছেলের বিবাহ মেনে নিতে পারে না।
মানিক ভট্টাচার্য--- না না তা কেন যা না তুই গিয়ে ডেকে নিয়ে আয় বিকাশ নিশ্চয়ই আসবে।
বিকাশ অত বড় বিশাল কোম্পানি I.B.M.চাকরি করতো, যাদবপুরের PASS OUT তার পর STATES
MASACHUST UNIVERSITY PROFESSOR সব ছেড়ে চলে এলো আমাদের
বৃন্দাবনে আশ্রমে মঠে জয়েন করলো বিকাশ জোর করে আমার মরা
আগে তোদের সাথে দেখা করাতে নিয়ে এলো।
তা হাঁরে আমার নাতনি ইশা সিদ্দিকি নাতনি কোথায় সে মা ?
বাবা আমি যাই বিকাশকে ডেকে আনি নাতনিকে পাঠিয়ে দিচ্ছি গান শোনেন ! মিতালি চলে যায় বাহিরে।
Back ground গান মহিলা কন্ঠে কৃষ্ণ ভজনের সাথে তালে তালে মানিক ভট্টাচার্য এর নাতনি অপরূপ সাজে
ইশা রাধা সেজে ঘাগড়া পড়ে গানে তালে তালে নাচছে।
নেপথ্যে পারভিন সুলতানা গলায় মীরার ভজন " অব গুনচিত ন ধরো চায়ে তো পার করো ! "
মানিক ভট্টাচার্য আপন হৃঢ় চেতন চৈতনবোধে ভালোবাসায় দু চোখ বহে যায় অশ্রু নদী