Saturday, 10 November 2018

দেশ ভাগে হারিয়ে যাওয়া খুকুমা

দেশভাগে হারিয়ে যাওয়া খুকুমা

শ্যামল  সোম

আমার সাধের বাড়ী নাই,
কীর্তন খোলা নদীর ধারে
ছিল আমার পৈত্রিক বাড়ীর
ভিতর পানে পুকুর পুকুরের
জলে হাঁস,লাল শালুক ফুল,
পদ্ম পাতায় শিশির বিনিদ্র রাতে
টুপটাপ বাড়ীর সামনে বাগান
নারকেল গাছের ঘেরা, ফুলের
পরে প্রজাপতি সব রঙ বেরঙের
রাঙা গোলাপ ফুলে ভ্রমরের
চুম্বনে মধুপান মৌমাছির গুঞ্জন।
ময়না দোয়েল পাখীর সে গান
টিয়া, শত চড়ুই পাখীর ঐ কলতান।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতিফলনে
বহুযুগ পরেও আলোড়িত আমার
এই  হৃদয়ে আনন্দে অশ্রু ঝরে।
হঠাৎই সত্তর বছর আগের এক
দামকা ঝরে এলো মেলো প্রাণ,
যম দূত কালো মেঘের হানাদার
লন্ড ভন্ড, লুঠ হয়ে গেল কন্যা,
ভগ্নী জননী ভয়াবহ  আর্তনাদ।
কীর্তন খোলা নদীর বন্যায় গেল
ধ্বসে সাজানো সংসার ছারখার।
এ নদীর আগ্রাসন সর্বস্ব লুঠ পাঠ
বাংলা নদীর  ভাঙনের সে কলঙ্কিত
ইতিহাসের সাক্ষী ঐ যে বটবৃক্ষের-,
নীচে স্থান পাই যদি মরনের সাথেই
বসবাসের বাসনায় ও মেয়ে তুই বল,
বৃষ্টিস্নাত গোধূলির রঙে রাঙানো ঐ
আকাশের তলায় কি আমার ঠাঁই হবে
না ? মরণের আগে শরণার্থী শিবিরে,
পরবাসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ বাসনা নেই,
আমার বাড়ী নেই, বাংলাদেশ ঠাঁই পাই কৈ?

No comments:

Post a Comment