ভোর রাত্রিরে ঘুম ভেঙ্গে গেলো আশিকের জানলা দিয়ে ভোরের সূর্যোদ্বোয়ের আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত
হয়ে উঠছে মেঘলা আকাশ।
অজানা এক আনন্দে প্রাণ মন ভরে উঠছে আশিকের গলায় গুন গুন গান, " এই দিনে ঘরে থাকে না মন !"
" কাল রাতের বেলায় গান এলো মোর প্রাণে " আজি ঝর ঝর বাদল দিনে " আনন্দে গান গাইতে গাইতে
আকাশ কালো করে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে বাতাসে ঘূর্ণী ঝড় ঝাঁপিয়ে পড়ল। বন্ধ করলো জানলার
কাচের সার্সির বাহিরে তুমুল বেগে নামলো বৃষ্টি ।
বৃষ্টি স্নাত বাহির বাগানে করবী ফুলের গাছটি থরথর করে কাঁপছে।
চট্টগ্রামে কক্সবাজারে কাছেই আশিকের পৈতৃক সূত্রে নিজেদের বিশাল বাগান ঘেরা দোতলা বাড়ি
এক মাত্র বংশধর আশিক বিশাল সম্পত্তির মালিক, বাংলাদেশের নাম একটি সংবাদ পত্রের আঞ্চলিক
চট্টগ্রামের শাখা সম্পাদক অন লাইনে বিভিন্ পত্র পত্রিকায় সম্পাদক ও কবি, কাব্য সাহিত্য চর্চা ও
সাংবাদিকতা করে, আর্থিক অবস্থা ভীষন ভালো আনন্দেই আছে।
বিয়ে করেনি, ছাড়া হাত পা চল্লিশ বছরে যথেষ্ট মজবুত শরীর।
পূর্ব দিনাজপুরে এক সাহিত্য সভায় গত দু বছর আগে নিজের অনেকগুলো জনপ্রিয় কবিতা পাঠের
পরে মঞ্চ থেকে নিচে এসে বসার মঞ্চে উপস্থিত সভাপতি বিখ্যাত স্নামধন্য কবি আশিকের কাব্য মাধুর্যে শৈল্পিক ছন্দময় চিত্রকল্প বিন্যাসে ছন্দময়তায় মুগ্ধ হয়ে প্রশংসা করছেন।
সামুয়িক বিরতিতে একটি অত্যন্ত সুন্দরী যুবতী তন্বী তরুণী উচ্ছল বড় বড় চোখে মায়াবী দৃষ্টি
স্নিগ্ধতা জূঁই ফুলের ঘ্রাণ ভেসে এলো আকাশ রঙের সালোয়ার কামিজ মাথায় নীল ওড়নায় ঢাকা।
পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের স্বর্ণালি এসে সালাম করে জানালো আশিক রহমানের মানে তাঁর লেখে কাব্য গ্রন্থ আজকেই যেটি প্রকাশের শুভ মূহুর্তে কবি আশিক নিজে উপস্থিত ছিলেন, " ভালোবাসার আকাশ "
গ্রন্থটি স্বর্ণালি হক কিনে এনে এনেছে সাক্ষর শুধু নয় কিছু লিখে দিতে হবেই!
" তোমার কি ? পাশে বসো "
তার ভীষন প্রিয় কবির পাশে ইতস্তত করে শেষে সাবধানে বসেছিল হৃদয়ে স্পন্দন কম্পন বেড়েছিল।
" জী আমার নাম স্বর্ণালি হক ডাক নাম মুক্তা, বাংলাদেশের সরকারের অধীনে কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এখন কাজ করি, এম বি এ এবং সোশাল সায়েন্স মাস্টার করেছি স্যার ।"
আশিক কথা শুনতে শুনতে লিখে দিল,
" ভালবাসার আকাশে স্বর্ণালি সন্ধ্যায় মুক্ত মতন ঝরে পড়ছে বৃষ্টি " সাক্ষর করে মুক্তার হাতে তুলে দিতেই
চমকে উঠে দাঁড়ায় দুজনেই চোখে চোখ রেখে দেখে -- সেই সর্বনাশ ভালোবাসা প্রেম মুহূর্তটি স্মরণ করছিল বাড়ির বারান্দা বেতের চেয়ারে বসে দু বছরের কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে অঝোরে ঝরে যাচ্ছে বৃষ্টি।
তোমার সাথে ঐ দিন দিনাজপুরে মঞ্চে উঠে দাঁড়িয়ে তোমার কবিতা আবৃত্তি করেছিলাম,
যে দিন কৈশোর উত্তীর্ণ যৌবনে আমি তোমার কবিতা পড়তাম তখন তুমি ছিলে আমার থেকে অনেক দূরে।
পরে ঐ দিন তুমি মঞ্চ থেকে এলেই ছুটে গেলাম কবি তোমার লেখা,
" ভালবাসা আকাশ " " তোমার প্রতীক্ষায় অরণ্যে " ঝর্ণা নদী হয়ে বহে যায়"
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য তোমাকে ভীষন ভালোবেসে ফেলেছি গো চি দিনের জন্য তোমার কাছে থাকবো বলেই আসছি আমি তোমার দেওয়া নাম করবী ! দুদিন আগে WhatsApp পাঠানো এই কথা গুলো ভাবছিল জীবন
অন্য দিকে বসিবে এবার।
হঠাৎ অতর্কিতে দেখতে পায় নীল ছাতা নীল বসনা মুক্তা স্বর্ণালি বাগানের গেটের বাইরে
দাঁড়িয়ে অঝরে বৃষ্টি পড়ছে ভিজতে ভিজতে ছুটে যায় আশিক হাতের এয়ার ট্রলি ব্যাগ সব নামিয়ে
মুক্তা ছুটে এসে গভীর আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে বুকে রেখে মাথা কাঁদছে থরথর করে কাঁপছে শ্বাস প্রশ্বাসের দ্রুত গতিতে চলছে ।
প্রেম ভালোবাসায় সিক্ত করছে, অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি,
দুজনেই চারহাতে শক্ত করে জড়িয়ে রয়েছে পরস্পরে,
বৃষ্টি ভেজা বাতাসে কয়েকটা করবী ফুল ঝরে পড়লো।
No comments:
Post a Comment