Saturday, 24 February 2018

আদরিনী

আদরিনী

শ্যামল সোম

মেয়ে ঠিক যেন মোমের পুতুল
ঘন কালো কোঁকড়ানো চুল
ফোলা ফোলা তুলতুলে গাল
আদরে আদরে গাল হতো লাল।
মা মরা মেয়ে, বাপ মোদোমাতাল
দিদা মামার সংসারে অনাদরে
আধ পেটা খাওয়া তবু প্রকৃতির
আপন খেয়ালে বাড় বেড়েছে।
গায়ে গতের কখন আলুর চপ
কখন চকলেট লজেন্স লোভে
চুপিচুপি আদরের ছলে বলে।
কোলে তুলে নেয় আদরে কোলে
বসেই কত আদর মাঝেমধ্যে সে
শৈশবে এ আঁচড় লাগতে ব্যথা
কঁকিয়ে উঠে আদরে আদরে।
কৈশোরে পা রেখেছে সবে শুরু
হলো আদরের ঠেলা ঠেলি, গুরু
গম্ভীর আওয়াজ ডাক ছিল মেঘ,
তুমুল ঝর বাদলে  অঝোরে ঝরছে
বৃষ্টি স্নাত সে রাতে ঝোপে আড়ালে
রক্তে অক্ষরে অক্ষরে লেখা হচ্ছে
আবহমান কাল থেকে নারীর প্রতি
অবমাননার অত্যাচারের বাকি আছে
আরো শতসহস্র বছরের ইতিহাস।
যৌন নির্যাতনের সহিংসতা গ্লানিময়
পশুর অধম চিরকালের বিকৃত মনস্ক
শয়তানের আনন্দ উল্লাস গণধর্ষণের
জনৈকা কিশোরের মৃত্যু খবরের কাগজে
পাতায় শিরোনামে, ধিক্কার জানায় সবাই
টিভির চ্যানেলে চ্যানেলে প্রচারিত হয়।
মোমের পুতুলের জন্য পথে পথে হাঁটে
হাতে নিয়ে জ্বলন্ত মোমবাতির মিছিল।

হে নারী জ্বলে ওঠো

হে নারী জ্বলে ওঠো

শ্যামল সোম

তোমার লেখাই আমার অনুপ্রেরণা
কবিতায় আশ্রয় নিয়েছি নগণ্য
একটা প্রয়াস।
বোন এবার তুমি আপন লিখনে
জ্বালিয়ে আলো সে আলোয়
উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক নারীর জীবন।
সকল নারীর প্রতি সহিংসতা বিরুদ্ধ
প্রতিরোধে লিখন হোক তলোয়ার,
কলম তোমার হোক সেই হাতিয়ার।
এ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করো,
বিদ্রোহ সামাজিক বিপ্লব ঘটাতে---
আগুন ঝরাও কবি সোচ্চার হতে
হবে নারীদের মধ্যে সাহস দাও।
প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে কাণ্ডারী।
নারী তোমার লেখার ক্ষমতা রয়েছে
নিশ্চয়ই পারবে বন্ধু রইলো আমন্ত্রণ
সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধাচরণ।
হে নারী আগুনের অক্ষরে অক্ষরে
প্রতিদিন রক্তাক্ত ঐ ক্ষরণে হৃদয়ে
বার্তায় প্রতিবাদ করতে হবে লেখো
মুহুর্তে  স্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠুক লিখনে।
সমাজে একটি স্ফুলিঙ্গ থেকে জ্বলে
উঠবে দাবানল ছাই হবেই আবর্জনা ।
কলমের আঘাতে আঘাতে হবে বিবর্তন
ক্ষত বিক্ষত করো অন্যায় যত নিপীড়ন
অবিচার নির্যাতন অত্যাচার শোষনে
প্রতিরোধ গড়ে উঠুক নারীর সমবেত
অথবা সবাইর একান্ত ব্যক্তিগত প্রয়াসে।

কাল সারারাতে স্বপ্নে দেখেছি তোকে

কাল সারারাতে স্বপ্নে দেখেছি তোকে

তোর বাঁশিওয়ালা  শ্যামল সোম

গত কাল রাতে চন্দন বনে
আগুন লেগেছে আগুনে
পাগলি এ ভাবে কেউ কি
রক্তাক্ত করে চুম্বনে ?
চন্দন বনে আগুনে পুড়ছি
রাতে আমরা দুজনে,
দুটি নগ্ন দেহের দেহজ
প্রেমের তুমুল সে সহবাসে
পাগলি তোর পীনাভ স্বর্ণস্তনে
দংশনে  নাভিশ্বাস  অনুরোরণ।
নাভিমূলে ঘণ শিহরণে ফুটে
উঠছে শ্বেত গন্ধরাজ
গভীরতর রাতে তোর
শারীরিক ষোল কলায় শৈলী।
পাগলি তুই রাতে স্বপ্নে এলি,
মৎস্য কন্যা তুই দুহাতে জড়িয়ে
নীল নদে আমাকে বুকে নিয়ে
চিৎ সাঁতারে ভাসিয়ে ভেসে
সাগর থেকে টেনে তুললি
অচেনা এক কোন দারু দ্বীপে,
সৈকতে সূর্যোদ্বয়ের ভোরে
অচৈতন্য  আচ্ছন্ন ভাবে
পড়ে আছি, পাগলী তোর চাপে
পেটে সমুদ্রের নোনা পানি
গল গলিয় বেড়োয়, শেষে রাঙা
ঠোঁটে ঠোঁট  শ্বাস টানাটানি।
তোর সজরে ধাক্কায় দিলি
বসিয়ে আমায় ঘর্মাক্ত দেহে
তোর রূপ ঝরে চুঁইয়ে যৌনবতী
শিশিরের মতন কামে।
চারিদিক তাকিয়ে দেখি
চারিদিকে সুনীল সাগরের মাঝে
নির্জন দ্বীপ সারিসারি নারকেলের
গাছে আলো উঁকি মারে।
" পাগলি এই নিরালা নির্জন দ্বীপে
আনলি কেন প্রেমের টানে ?"
" প্রেমের টান নেইকো আর,
এনেছি বুড়ো তোমাকে খাবো বলে !"
উন্মত্ত হিংস্র বাঘিনী অট্টহাস্য সাথে
ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচন্ড ঢেউয়ে  বুকে।

মেয়ে মানুষের লাশ

মেয়ে মানুষের লাশ       

শ্যামল  সোম

মরা চাঁদ গেছে বুঝি
ঐ বেনো জলে ভেসে
আধো অন্ধকারে
নয়নজুলির খালে ভাসে।
মেয়ে মাইনষের লাশ
চিত হয়ে শুয়ে আছে।
পরনে ময়ুর কন্ঠি রঙের
সিল্কের শাড়ি রক্ত
রাগ রঙে ব্লাউজ,
চুলের জড়ানো যূঁই ফুলের
মালা সবই বেসামাল
এতই  এলোমেলো চুল।
ভেঙেছে খোঁপা অর্ধ নগ্ন
যৌনবতীর দংশিত
মোথিত শরীর ক্ষুধার্ত
লোলুপ হায়নার দলিত
ধর্ষণে ধর্ষণে বিহ্বল
প্রেমিকা শেষে তোড়ায় বাঁধা
ঘোড়ার ডিম হাতে পেয়ে
নিষ্ফল প্রয়াসে কান্নায়
আর্তনাদে জবাই করা
পশুর মত গোঁ গোঁ গর্জন।
যুবতীর আর্তনাদ ক্রন্দন
শুনেও শোনেনি অনেকে
বাতি নিভিয়ে দিয়ে,বিস্মৃত
শোকে দেখেও দেখেনি
তাকে, বটবৃক্ষের শাখায়
এক জোড়া দোয়েল পাখি
বিব্রত বিরক্ত ক্রোধে ঘন
ঘন ডানা ঝাপটায় নাকি?
সূর্যোদ্বয়ের আলো এসে
পড়ে পাথরের  আঘাতে
থেঁতলানো ভালোবাসার
প্রত্যাশী আকাঙ্খিতা নারী,
সুন্দরীর মুখে সে মুখে
গেয়েছিল জীবন মুখি কত গান
সেই মেয়ে মাইনষের লাশ
দেখতে জমায়েতের প্রশ্নবাণ।

তুমি আমার জীবন্ত কবিতা

তুমি জীবন্ত কবিতা -তোমার জন্যই আমার এ  লেখা।

প্রিয় কবিতা জন্য প্রতিক্ষা

শ্যামল  সোম

আমি অপেক্ষায় থাকি
আমার  মনের যত জমা কথা
হৃদয়ের গোপন ব্যথা
কাকে বলি ?
কে শোনে?
আপন সুখ দুখের সাথে
মিলে মিশে আপনি আছি।
তবু মাঝে মাঝে মনে হয়
এক জন অনন্ত বন্ধু
মনের মতো
পাশে থাকলে বেশ হতো
মনের কথা মনে
চেপে না রেখে
বন্ধুকে খুলে বললে
মনের ওপর চাপ কমে যেত।
বলবার জন্যে তন্ন তন্ন করে
খুঁজে ফিরি শেষে কাউকে না
পেয়ে একা একা তন্দ্রাহারা।
তন্ময় হয়ে নিজের লেখা
নিজেই পড়ি,
শব্দগুলো উলটে পালটে
মনের ইচ্ছে সাজাই।
আমার কবিতা তুমি মাঝ রাতে
চুপিচুপি এসে, আমার শিয়রে
অভিসারে সেজে খোপায়
যূঁই ফুলের মালা জড়িয়ে
পায়ে নূপুরের সুর তুলে,
তোমার  ঐ সুর্মা আঁকা চোখ
ছল ছল দৃষ্টিতে, তাকিয়ে থাকা
একাকীত্ব দূর করতে
পাশে ঘনিষ্ঠ বন্ধু মতো
পাশে এসে বসা
নরম হাতের ছোঁয়া
কবিতা তোমার কাঁদে কাঁদা
কখন তোমার  হেসে ওঠায়
আমার মুখে হাসি
কবিতা তুমি তো জানো
কতটা তোমাকে ভালোবাসি
শব্দের  অলংকরণ চিত্রকল্প 
ছন্দে ছন্দে  আনন্দে ভাসি।

Monday, 19 February 2018

ফেসবুকের কবির আত্মকথন প্রবন্ধ

এ আজ ফেসবুকের কবি
কবির আত্মকথন এ প্রবন্ধে

শ্যামল সোম

কবিতা ঠিক মত ছন্দ শব্দ চয়ন
বাক্য বিন্যাসে ছন্দময় চিত্রকল্প
নবায়ন শৈল্পিক লিখন শৈলী
নান্দনিক চিত্র প্রদর্শন করে
সমৃদ্ধ সাহিত্য, কাব্য চর্চা অভাবে
এ জীবনে আর কবিতা লেখা
হলো না, শেষ লগ্নে ক্ষোভ রয়ে
গেলো, তবু লেখা প্রয়াস চেষ্টা
করি, যাঁরা পড়েন তাঁদের প্রতি
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি
কবিতার সাথে আছি
ষাট বছর আগে থেকেই
তবু কবিতা স্বপ্ন নন্দিনী
আজও দিলো না তো ধরা
আজ তাঁর কথাই মনে পড়ে
প্রতিভা বসু স্মরণে তাঁর
প্রতিভা পূর্বে  রানু সোম ছিলেন,
বাংলাদেশে থেকে
কবি বুদ্ধদেব বসু
বিবাহের পর কোলকাতায়
গাছতলায় " কবিতা ভবন "
নামে বাড়িতে থাকতেন,
বুদ্ধদেব বসু কোলকাতায়
যাদপপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে
প্রফেসার ছিলেন,
পরে তুলনামূলক
সাহিত্য বিভাগের
প্রধান ছিলেন,
কবি তৎকালে
" কবিতা " নামে পত্রিকা
প্রকাশ করতেন, বহুবছর।
সাহিত্য অনুরাগী দম্পতির
সান্নিধ্যে কবি সুশীল রায়ের
সাথে আমার লেখা কবিতা
নিয়ে কুড়ি বছর বয়সে আমি
1965 সালে আমার কাছে
যাওয়ার ভাগ্য হয়েছিল।
প্রতিভা বসু দুর্দান্ত লিখতেন
ওঁনার মূল্যবান
গ্রন্থ " স্মৃতি সতত সুখের নয় "
প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মনে
পড়ে গেল উনি বলতেন,
" কাব্য চর্চা করে চলবে "
কিন্তু ঐ আমার ভীষণ প্রিয়
কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন,
কেউ কেউ কবি হন,
আর হেলাফেলায় যাপনে,
" সময় গেলে সাধন
হবে না, সময়ের সাধন কেন
করলে না "
তোমাদের সকলের হৃদয়ে
গহীনে চোরা কাব্য  স্রোত
বহে যাচ্ছে কংসাবতী বা
কীর্তনখোলা নদীর মতন
বহে যাচ্ছে ঐ প্রস্ফুটিত
কাব্য পুষ্প ফুটে ওঠার
অপেক্ষায় রয়েছি আমি।

ঘুমায়ে পড়ছে মজা নদী

ঘুমায়ে পড়েছে মজা নদী

শ্যামল সোম

আজ কত কাল বিনিদ্রায় কেটেছে শত রাত
কীতৃন খোলা নদীর রূপে প্রেমে অকস্মাাৎ
শৈশবে ফেরারীর সহসা হয়েছিল সাক্ষ্যাৎ।
আজ বাংলাদেশের ভ্রমণে এসে দেখা হয়ে যায়
আব্দুল কাদের মাজির সাথে একমুখ হেসে,
" সালাম কর্তা কোলকাতায় আছেন কেমন ?"
ভালো নেই ভাই, বাতাসে মিশে আছে দূষণ !"
শিকারের টানে বারবার ফেরা ভালবাসার ঘ্রাণ
আশ্বিন মাসে পাকা সোনার ফসলে কি পোকার
কেটে গেছে নবান্ন উৎসবে পরিযায়ী পাখি বাদুড়
সরীসৃপ নিঝুম খোলস খোসছে, চোখে চশমার
আড়ালে দেখি প্রবীন অশ্বত্থ গাছে কোঠরে পেঁচা
কেন এ চোখে চায় অন্ধের মতন কবিও  কি সেই
হাঁতড়ান শালুকফুল ফোটার ডাহড়ে উড়ছে ফড়িং।
আবদার করি," আবদুল ভাই আড়িয়াদহের মাঝ
থেকে আড়িয়াল খাঁ নদী পথে শেষবার দেখবো
ভাই রূপশ্রী রূপসী বাংলাকে নানা নদীর বুকে
ভেসে ভেসে রুপালি রাতে প্লাবিত জযোৎসনায়।
ঘটে যায় বজ্রপাত বিদূৎপর্ণার ঝলসিত রূপে
হৃদয়ের গহীন গহ্বরে উঠে কম্পন শুনি একি
কালের অবক্ষয়ের কি মজে আসছে কবির
বিরহের বেদনায় নদীও শুকায়ে যায় মরা চাঁদ
গেছে বুঝি বেনো জলে ভেসে  অবশেষে ফাঁদ
পেতেছে মত্যু এ মামুলি জীবনের এই অবসান।

একুশে মনের কথা জানে মন

আগামী একুশে ফেব্রুয়ারি
শহীদ স্মরণে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা,
সবাইকে অভিন্দন শুভেচ্ছা জানাই।

মনের কথা জানে মন

শ্যামল সোম

মুখের ভাষা
রক্তে স্রোতে
আহা মরি
বাংলাভাষা।
তোমার ভাষা
আমার ভাষা
বাংলা ভাষা
মাতৃভাষা এই
মুখের ভাষা।
সুখ দুঃখের
ভাষায় কথা
বিনিময়ে এ
ভাষায় প্রনয়।
ভাষ্য মতে
একটি শব্দে
আমার একই
বাঙালি সেটাই
আসল কথায়
ফিরে আসি
মানসিক মিল
অন্ত মিল নীল
আকাশে তলে
আমরা আছি।
ভাষা দিবসে
শহীদ স্মরণে
শ্রদ্ধা মমনে
সহমর্মিতায়
সুখে দুখে
পাশে থাকা
ভালোবেসে
ভাষার বন্ধনে
আবদ্ধ হৃদয়।
এপারে শুনি
প্রতিধ্বনি গান
প্রাণ আনচান,
শতসহস্র প্রাণ
আত্মবলিদান,
ব্যথা বেদনা
অনুভবে মন
অনুরোরন হয়।
শঙ্খ চিল মন
ধায় মমনে প্রায়
গাঁথা হয়ে রয়ে
যায় হৃদয়ে এ
আয়নায় চোখ
পড়তেই তুমি
একি স্বপ্ন দেখি?
সবাই আমার
আত্মার আত্মীয়
ভালবাসায় ভরিয়ে
দিলেম সবার হৃদয়ে
একুশের চেতনা
জাগ্রত সনাতনী
বাঙালীর ঐক্যে।

Saturday, 17 February 2018

আত্মমগ্ন কবি আমার জীবনানন্দ

আত্মমগ্ন কবি আমার জীবনানন্দ   

শ্যামল সোম এর সংকলন

( সংকলিত করেছি আমার ভীষণ প্রিয় প্রাণ স্বরূপ ফেলে আসা বাংলাদেশের
বিশিষ্ট জীবনানন্দ প্রেমী ও বাংলা ভাষার ভালবাসায় নিবেদিত প্রাণের মানুষ কবির অনবদ্য অলংকরণে মুগ্ধ হয়ে
আমার একান্ত প্রিয় প্রাণের সেই মানুষদের আন্তরিক হৃদয়ে কৃতজ্ঞতা, কুর্নিশ জানাই সসম্মানে তাঁদের সবাইকে )

উনিশশো বাহাত্তর সালে যৌবনে প্রায় ছুটে যাই
উনিশশো বাহান্ন সালের ভাষা আন্দোলনে রক্তাক্ত
ইতিহাস বহু শহীদদের আত্ম বলিদানে লক্ষ লক্ষ
নারী পুরুষের রক্তক্ষরণ জীবনের বিনিময়ে প্রাপ্তি
আজকে উন্নয়নে পথে বাংলাদেশ শিখরে পৌচছে
মানুষের কল্যাণে অনেক দূর এগিয়ে যাক এই মোর
শুভকামনা রইলো সকল বাংলাদেশেরমানুষের জন্য।
আগত ভাষা শহীদ মিনারে ভাষা দিবসে বাংলাদেশের
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি, আনন্দে র স্মৃতি
রোমন্থন আজও জরাগ্রস্ত জরাজীর্ণ বৃদ্ধ বয়সে এসে
জাগে শিহরণ মমনে অনুরোরন ধ্বনিত গুঞ্জন শুনি
আপন মনের গহীন গহ্বরে কীতৃন খোলা নদী বহে
যায় আমার হৃদয়ে সুখের ব্যথায় অনুভবে স্মৃতি
মনে পড়ে যায় আনন্দ স্রোতে ভেসে যাই ভালবাসায়।
তখন সদ্য মুক্তি যুদ্ধের অবসানে শিকড়ের সন্ধানে
মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে স্বপ্নের দেশ স্বাধীন বাংলাদেশের
সোঁদা মাটির গন্ধ, পেয়েছিলাম প্রতীম কবি কাব্যময়তায়---!

“তবু তোমাকে ভালোবেসে
মুহূর্তের মধ্যে ফিরে এসে
বুঝেছি অকূলে জেগে রয়
ঘড়ির সময়ে আর মহাকালে যেখানেই রাখি এ হৃদয় ।” 

জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা



“শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে
বলিলাম: ‘একদিন এমন সময়
আবার আসিয়ো তুমি, আসিবার ইচ্ছা যদি হয়!–
পঁচিশ বছর পরে!”


“হেঁয়ালি রেখো না কিছু মনে;
হৃদয় রয়েছে ব'লে চাতকের মতন আবেগ
হৃদয়ের সত্য উজ্জ্বল কথা নয়,-
যদিও জেগেছে তাতে জলভারানত কোনো মেঘ;
হে প্রেমিক, আত্মরতিমদির কি তুমি?
মেঘ;মেঘ, হৃদয়ঃ হৃদয়, আর মরুভূমি শুধু মরুভূমি..” 


“যে জীবন ফড়িংয়ের দোয়েলের - মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা” 
― 
জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা

“কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
মরিবার হল তার সাধ ।” 

জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা


“সারাটি রাত্রি তারাটির সাথে তারাটিরই হয় কথা,
আমাদের মুখ সারাটি রাত্রি মাটির বুকের 'পরে!” 

জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা


“ঘনিষ্ঠ আকাশ যেন - যেন কোন বির্কীন জীবন
অধিকার ক’রে আছে ইহাদের মন;
চাঁদ ডুবে গেলে পর প্রধান আঁধারে তুমি অশ্বথের কাছে
একগাছা দড়ি হাতে গিয়েছিলে তবু একা - একা,
যে জীবন ফড়িঙের,দোয়েলের-মানুষের সাথে তার হয়নাকো দেখা
এই জেনে।” 

“বোধ

আলো — অন্ধকারে যাই — মাথার ভিতরে
স্বপ্ন নয়, কোন এক বোধ কাজ করে!
স্বপ্ন নয় — শান্তি নয় — ভালোবাসা নয়,
হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়!
আমি তারে পারি না এড়াতে
সে আমার হাত রাখে হাতে;

সব কাছ তুচ্ছ হয়, পন্ড মনে হয়,
সব চিন্তা — প্রার্থনার সকল সময়
শূন্য মনে হয়,
শূন্য মনে হয়!
সহজ লোকের মতো কে চলিতে পারে!
কে থামিতে পারে এই আলোয় আঁধারে
সহজ লোকের মতো! তাদের মতন ভাষা কথা
কে বলিতে পারে আর! — কোন নিশ্চয়তা
কে জানিতে পারে আর? — শরীরের স্বাদ
কে বুঝিতে চায় আর? — প্রাণের আহ্লাদ
সকল লোকের মতো কে পাবে আবার!
সকল লোকের মতো বীজ বুনে আর
স্বাদ কই! — ফসলের আকাঙক্ষায় থেকে,
শরীরে মাটির গন্ধ মেখে,
শরীরে জলের গন্ধ মেখে,
উৎসাহে আলোর দিকে চেয়ে
চাষার মতণ প্রাণ পেয়ে
কে আর রহিবে জেগে পৃথিবীর পরে?
স্বপ্ন নয়, শান্তি নয়,কোন এক বোধ কাজ করে
মাথার ভিতরে!” 

জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা

“ভগবান, ভগবান, তুমি যুগ যুগ থেকে ধ'রেছ শুঁড়ির পেশা” 

ঝরা পালক

“কতো দেহ এলো,- গেল,- হাত ছুঁয়ে-ছুঁয়ে
দিয়াছি ফিরায়ে সব,- সমুদ্রের জলে দেহ ধুয়ে
নক্ষত্রের তলে
বসে আছি,- সমুদ্রের জলে
দেহ ধুয়ে নিয়া
তুমি কি আসিবে কাছে”

 ধূসর পান্ডুলিপি



“কি কথা তাহার সাথে? তার সাথে!” 

জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা

“আমি সব দেবতারে ছেড়ে 
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে - 
সে কেন জলের মত ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়?”

“তোমার শরীর ,-
তাই নিয়ে এসেছিলে একবার;- তারপর,- মানুষের ভিড় 
রাত্রি আর দিন
তোমারে নিয়েছে ডেকে কোন দিকে জানিনি তা,- হয়েছে মলিন
চক্ষু এই;- ছিঁড়ে গেছি- ফেড়ে গেছি ,- পৃথিবীর পথ হেঁটে হেঁটে 
কত দিন রাত্রি গেছে কেটে !” 

 ধূসর পান্ডুলিপি




“নক্ষত্রেরা চুরি করে নিয়ে গেছে, ফিরিয়ে দেবে না তাকে আর।

- জর্নাল : ১৩৪৬” 




“চোখে তার 
যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার !
স্তন তার
করুণ শঙ্খের মতো- দুধে আর্দ্র- কবেকার শঙ্খিনীমালার!
এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।
---শঙ্খমালা” 

 বনলতা সেন




“আমাকে সে নিয়েছিলো ডেকে;
বলেছিলো: ‘এ নদীর জল
তোমার চোখের মত ম্লান বেতফল:
সব ক্লান্তি রক্তের থেকে
স্নিগ্ধ রাখছে পটভূমি;
এই নদী তুমি।

‘এর নাম ধানসিঁড়ি বুঝি?’
মাছরাঙাদের বললাম;
গভীর মেয়েটি এসে দিয়েছিলো নাম।
আজো আমি মেয়েটিকে খুঁজি;
জলের অপার সিঁড়ি বেয়ে
কোথায় যে চলে গেছে মেয়ে।” 

“আমরা যাই নি মরে আজও--তবু কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়:
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জোছনার প্রান্তরে,
প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন--এখনও ঘাসের লোভে চরে
পৃথিবীর কিমাবার ডাইনামোর 'পরে।” 

 সাতটি তারার তিমির

“অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই—প্রীতি নেই—করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব'লে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।

A strange darkness has come upon the world today.
They who are most blind now see,
Those whose hearts lack love, lack warmth, lack pity's stirrings,
Without their fine advice, the world today dare not make a move.
They who yet possess an abiding faith in man,
To whom still now high truths or age-old customs,
Or industry or austere effort all seem natural,
Their hearts are victuals for the vulture and the jackal.

Translated by: Clinton B. Seely” 
― Jibanananda Das, বনলতা সেন




“আমার হৃদয় পৃথিবী ছিঁড়ে উড়ে গেলো,
নীল হাওয়ার সমুদ্রে স্ফীত মাতাল বেলুনের মতো গেল উড়ে,
একটা দূর নক্ষত্রের মাস্তুলকে তারায়-তারায় উড়িয়ে দিয়ে চলল
একটা দুরন্ত শকুনের মতো।”

বনলতা সেন

“তোমার পাখনায় আমার পালক, আমার পাখনায় তোমার রক্তের স্পন্দন” 


“যে-পৃথিবী জেগে আছে, তার ঘাস—আকাশ তোমার।
জীবনের স্বাদ ল’য়ে জেগে আছো, তবুও মৃত্যুর ব্যথা দিতে পারো তুমি;” 

 ধূসর পান্ডুলিপি

“চারিদিকে এখন সকাল—
রোদের নরম রং শিশুর গালের মতো লাল;
মাঠের ঘাসের প'রে শৈশবের ঘ্রাণ—
পাড়াগাঁর পথে ক্ষান্ত উৎসবের এসেছে আহ্বান ।

চারিদিকে নুয়ে প’ড়ে ফলেছে ফসল,
তাদের স্তনের থেকে ফোঁটা-ফোঁটা পড়িতেছে শিশিরের জল;
প্রচুর শস্যের গন্ধ থেকে-থেকে আসিতেছে ভেসে
পেঁচা আর ইঁদুরের ঘ্রাণে ভরা আমাদের ভাঁড়ারের দেশে!

:অবসরের গান” 

 ধূসর পান্ডুলিপি

“আমরা এ-পৃথিবীর বহুদিনকার
কথা কাজ ব্যথা ভুল সংকল্প চিন্তার
মর্যাদায় গড় কাহিনীর মূল্য নিংড়ে এখন
সঞ্চয় করেছি বাক্য শব্দ ভাষা অনুপম বাচনের রীতি ।
মানুষের ভাষা তবু অনুভূতিদেশ থেকে আলো
না পেলে নিছক ক্রিয়া; বিশেষণ; এলোমেলো নিরাশ্রয় শব্দের কঙ্কাল;

জ্ঞানের নিকট থেকে ঢের দূরে থাকে ।
অনেক বিদ্যার দান উত্তরাধিকারে পেয়ে তবু
আমাদের এই শতকের
বিজ্ঞান তো সংকলিত জিনিসের ভিড় শুধু— বেড়ে যায় শুধু;
তবুও কোথাও তার প্রাণ নেই ব’লে অর্থময়
জ্ঞান নেই আজ এই পৃথিবীতে; জ্ঞানের বিহনে প্রেম নেই ।

এ-যুগে কোথাও কোনো আলো— কোনো কান্তিময় আলো
চোখের সুমুখে নেই যাত্রিকের; নেই তো নিঃসৃত অন্ধকার
রাত্রির মায়ের মতো: মানুষের বিহ্বল দেহের
সব দোষ প্রক্ষালিত ক’রে দেয়— মানুষের বিহ্বল আত্মাকে
লোকসমাগমহীন একান্তের অন্ধকারে অন্তঃশীল ক’রে
তাকে আর সুধায় না— অতীতের সুধানো প্রশ্নের
উত্তর চায় না আর— শুধু শব্দহীন মৃত্যুহীন
অন্ধকারে ঘিরে রাখে, সব অপরাধ ক্লান্তি ভয় ভুল পাপ
বীতকাম হয় যাতে— এ-জীবন ধীরে-ধীরে বীতশোক হয়” 

 সাতটি তারার তিমির

“একবার যখন দেহ থেকে বা'র হয়ে যাব 
আবার কি ফিরে আসবো না আমি পৃথিবীতে? 
আবার যেন ফিরে আসি
কোনো এক শীতের রাতে
একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে
কোন এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে।” 

বনলতা সেন

“হেমন্তের ঝড়ে আমি ঝরিব যখন
পথের পাতার মতো তুমিও তখন
আমার বুকের ’পরে শুয়ে রবে? অনেক ঘুমের ঘোরে ভরিবে কি মন
সেদিন তোমার।
তোমার আকাশ—আলো—জীবনের ধার
ক্ষ’য়ে যাবে সেদিন সকল?
আমার বুকের ’পরে সেই রাতে জমেছে যে শিশিরের জল
তুমিও কি চেয়েছিলে শুধু তাই, শুধু তার স্বাদ
তোমারে কি শান্তি দেবে।
আমি চ’লে যাবো—তবু জীবন অগাধ” 

ধূসর পান্ডুলিপি

“জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার-
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!

- কুড়ি বছর পরে” 

বনলতা সেন

“তুমি একা! তোমারে কে ভালোবাসে! — তোমারে কি কেউ
বুকে করে রাখে!
জলের আবেগে তুমি চলে যাও —
জলের উচ্ছ্বাসে পিছে ধু ধু জল তোমারে যে ডাকে!

সহজ

“আগুন বাতাস জল: আদিম দেবতারা তাদের সর্পিল পারিহাসে
তোমাকে দিল রূপ-
কী ভয়াবহ নির্জণ রূপ তোমাকে দিল তারা ;
তোমার সংস্পর্শের মানুষের রক্তে দিল মাছির মতো কামনা।

আগুন বাতাস জল: আদিম দেবাতারা তাদের বঙ্কিম পরিহাসে
আমাকে দিল লিপি রচনা করবার আবেগ:
যেন আমিও আগুন বাতাস জল,
যেন তোমাকেও সৃষ্টি করছি।” 

মহাপৃথিবী

“তুমি কি গ্রীস পোল্যাণ্ড চেক প্যারিস মিউনিক
টোকিও রোম ন্যুইয়র্ক ক্রেমলিন আটলান্টিক
লণ্ডন চীন দিল্লী মিশর করাচী প্যালেস্টাইন?
একটি মৃত্যু, এক ভূমিকা, একটি শুধু আইন।’
বলছে মেশিন। মেশিনপ্রতিম অধিনায়ক বলে:
‘সকল ভূগোল নিতে হবে নতুন ক’রে গ’ড়ে
আমার হাতে গড়া ইতিহাসের ভেতরে,
নতুন সময় সীমাবলয় সবই তো আজ আমি;
ওদের ছোঁয়া বাঁচিয়ে আমার সত্ত্বাধিকারকামী;
আমি সংঘ জাতি রীতি রক্ত হলুদ নীল;
সবুজ শাদা মেরুন অশ্লীল
নিয়মগুলো বাতিল করি; কালো কোর্তা দিয়ে
ওদের ধূসর পাটকিলে বফ্ কোর্তা তাড়িয়ে
আমার অনুচরের বৃন্দ অন্ধকারের বার
আলোক ক’রে কী অবিনাশ দ্বৈপ-পরিবার।

:অনন্দা” 

“আবার আকাশের অন্ধকার ঘন হয়ে উঠেছে :
আলোর রহস্যময়ী সহোদরার মতো এই অন্ধকার।
যে আমাকে চিরদিন ভালোবেসেছে
অথচ যার মুখ আমি কোনদিন দেখিনি,
সেই নারীর মতো
ফাল্গুন আকাশে অন্ধকার নিবিড় হয়েছে উঠছে।

মনে হয় কোনো বিলুপ্ত নগরীর কথা
সেই নগরীর এক ধূসর প্রাসাদের রূপ জাগে হৃদয়ে।
ভারতসমুদ্রের তীরে
কিংবা ভূমধ্যসাগরের কিনারে
অথবা টায়ার সিন্ধুর পারে
আজ নেই, কোন এক নগরী ছিল একদিন,
কোন এক প্রাসাদ ছিল;
মূল্যবান আসবাবে ভরা এক প্রাসাদ;
পারস্য গালিচা, কাশ্মিরি শাল, বেরিন তরঙ্গের নিটোল মুক্তা প্রবাল,
আমার বিলুপ্ত হৃদয়, আমার মৃত চোখ, আমার বিলীন স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা;
আর তুমি নারী -
এই সব ছিল সেই জগতে একদিন।
অনেক কমলা রঙের রোদ ছিল,
অনেক কাকাতুয়া পায়রা ছিল,
মেহগনির ছায়াঘন পল্লব ছিল অনেক;
অনেক কমলা রঙের রোদ ছিল;
অনেক কমলা রঙের রোদ;
আর তুমি ছিলে;
তোমার মুখের রূপ কত শত শতাব্দী আমি দেখি না,
খুঁজি না” 

জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা

বনলতা সেন

ধূসর পান্ডুলিপি

ঝরা পালক

জীবনানন্দ দাশ

জীবনানন্দ দাশ (১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯, বরিশাল - ২২ অক্টোবর, ১৯৫৪, বঙ্গাব্দ: ৬ ফাল্গুন, ১৩০৫ - ৫ কার্তিক, ১৩৬১) বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাংলা কবি। তাঁকে বাংলাভাষার "শুদ্ধতম কবি" বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অগ্রগণ্য। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ধাপে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে যখন তাঁর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তম কবিতে পরিণত হয়েছেন। তিনি প্রধানত কবি হলেও বেশ কিছু প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা ও প্রকাশ করেছেন। তবে ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে অকাল মৃত্যুর আগে তিনি নিভৃতে ১৪টি উপন্যাস এবং ১০৮টি ছোটগল্প রচনা গ্রন্থ করেছেন যার একটিও তিনি জীবদ্দশায় প্রকাশ করেননি। তাঁর জীবন কেটেছে চরম দারিদ্রের মধ্যে। বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধকাল অনপনেয়ভাবে বাংলা কবিতায় তাঁর প্রভাব মুদ্রিত হয়েছে। রবীন্দ্র-পরবর্তীকালে বাংলা ভাষার প্রধান কবি হিসাবে তিনি সর্বসাধারণ্যে স্বীকৃত।

জীবনানন্দ দাশের  কাব্যে মণি মুক্ত খোঁজে

আমরা বুঝেছি যারা বহু দিন মাস ঋতু শেষ হলে পর পৃথিবীর সেই কন্যা কাছে এসে অন্ধকারে নদীদের কথা কয়...

প্রেরণা ভালোবাসি ভালোবাসা প্রেম প্রকৃতি প্রেমিক দেশবাসী প্রেমিকা ভালোবাসা দিবস প্রেমপত্র অনুরাগ দেশ ভাষাপ্রত্যাশা প্রকৃতিপ্রেম সন্ধ্যা দেশপ্রেম

আমরা দেখেছি যারা বুনো হাঁস শিকারীর গুলির আঘাত এড়ায়ে উড়িয়া যায় দিগন্তের নম্‌্র নীল জোছনার ভিতরে,...

প্রেরণা ভালোবাসি ভালোবাসা প্রেম প্রকৃতি প্রেমিক প্রেমিকা ভালোবাসা দিবস প্রেমপত্র দেশ ভাষা প্রত্যাশা প্রকৃতিপ্রেমদেশপ্রেম

সুরঞ্জনা, তোমার হৃদয় আজ ঘাস : বাতাসের ওপারে বাতাস - আকাশের ওপারে আকাশ।

মেয়ে তুমি প্রেম অনুভুতি বাতাস প্রেতাত্মা ভালোবাসা প্রেমপত্র ভালোবাসা দিবস প্রেমিকা অনুভূতি প্রেমিক অনুভবআকাঙ্ক্ষা ভালোবাসি আকাশ প্রেরণা

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর

মোহ দেশপ্রেম দেশ

দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হয়েছে হলুদ হিজলের জানালায় আলো আর বুলবুলি করিয়াছে খেলা, ইঁদ...

প্রেরণা ভালোবাসি ভালোবাসা প্রেম প্রকৃতি প্রেমিক প্রেমিকা ভালোবাসা দিবস প্রেমপত্র অনুরাগ দেশ প্রকৃতিপ্রেমপ্রত্যাশা সন্ধ্যা দেশপ্রেম

জানো কি অনেক যুগ চলে গেছে? মরে গেছে অনেক নৃপতি? অনেক সোনার ধান ঝরে গেছে জানো না কি?

অতীত

আমরা বেসেছি যারা অন্ধকারে দীর্ঘ শীতরাত্রিটিরে ভালো, খড়ের চালের পরে শুনিয়াছি মুগ্ধ রাতে ডানার সঞ...

প্রেরণা ভালোবাসি ভালোবাসা প্রেম প্রকৃতি প্রেমিক প্রাপ্তি প্রেমিকা ভালোবাসা দিবস প্রেমপত্র অনুরাগ দেশ ভাষাপ্রত্যাশা প্রকৃতিপ্রেম দেশপ্রেম

চোখে তার যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার! স্তন তার করুণ শঙ্খের মতো–দুধে আর্দ্র-কবেকার শঙ্খিনীমালার!

যৌনতা প্রেম

পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে; পৃথিবীর সব রূপ লেগে আছে ঘাসে; পৃথিবীর সব প্রেম আমাদের দু'জ...

রূপসী বাংলা প্রকৃতিপ্রেম দেশ প্রকৃতি

অধ্যাপক, দাঁত নেই—চোখে তার অক্ষম পিঁচুটি; বেতন হাজার টাকা মাসে—আর হাজার দেড়েক পাওয়া যায় মৃত ...

দর্শন জাতি অনুভুতি অনুভব উপদেশ জীবন অনুভূতি জন্ম

চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের’পর হাল ভেঙে ...

ভালোবাসা প্রেম

তুমি তা জানো না কিছু, না জানিলে- আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য ক’রে! যখন ঝরিয়া যাব হেমন্তের ঝ...

ভালোবাসা প্রেম

যদি থাকে বন্ধুর মন গাং পাড় হইতে কতক্ষন

বন্ধু বন্ধুত্ব

মিনারের মতো মেঘ সোনালি চিলেরে তার জানালায় ডাকে, বেতের লতার নিচে চড়য়ের ডিম যেন শক্ত হয়ে আছে, ন...

প্রেরণা ভালোবাসি ভালোবাসা প্রেম প্রকৃতি প্রেমিক প্রত্যাশা দেশবাসী প্রেমিকা ভালোবাসা দিবস প্রেমপত্র দেশ ভাষাপ্রকৃতিপ্রেম প্রভেদ সন্ধ্যা দেশপ্রেম

আমরা দেখেছি যারা নিবিড় বটের নিচে লাল লাল ফল পড়ে আছে; নির্জন মাঠের ভিড় মুখ দেখে নদীর ভিতরে; যত...

প্রেরণা ভালোবাসি ভালোবাসা প্রেম প্রকৃতি প্রেমিক প্রত্যাশা দেশবাসী প্রেমিকা ভালোবাসা দিবস প্রেমপত্র দেশ ভাষাপ্রকৃতিপ্রেম প্রভেদ সন্ধ্যা দেশপ্রেম

কী কথা তাহার সাথে? - তার সাথে! আকাশের আড়ালে আকাশে মৃত্তিকার মতো তুমি আজ : তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে।

মেয়ে তুমি প্রেম অনুভুতি ভালোবাসা প্রেমপত্র ভালোবাসা দিবস প্রেমিকা অনুভূতি প্রেমিক অনুভব আকাঙ্ক্ষাভালোবাসি আকাশ প্রেরণা

সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর, তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‌‌‘এ...

ভালোবাসা প্রেম

সুরঞ্জনা, ওইখানে যেয়ো নাকো তুমি, বোলো নাকো কথা ওই যুবকের সাথে; ফিরে এসো সুরঞ্জনা : নক্ষত্রের র...

মেয়ে তুমি প্রেম যুবক নক্ষত্র অনুভুতি প্রেমপত্র ভালোবাসা দিবস প্রেমিকা ভালোবাসি প্রেমিক অনুভূতি অনুভবভালোবাসা রূপবতী রাত প্রেরণা

পেঁচার ধূসর পাখা উড়ে যায় নক্ষত্রের পানে — জলা মাঠ ছেড়ে দিয়ে চাঁদের আহ্বানে বুনো হাঁস পাখা মেলে ...

রূপসী বাংলা প্রকৃতিপ্রেম

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না; আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে, পৌঁছে...

জীবন দর্শন আশা অপেক্ষা উপদেশ

আমরা মৃত্যুর আগে কী বুঝিতে চাই আর? জানি না কি আহা, সব রাঙা কামনার শিয়রে যে দেয়ালের মতো এসে জাগে...

প্রেরণা ভালোবাসি ভালোবাসা প্রেম প্রকৃতি প্রেমিক দেশবাসী প্রেমিকা ভালোবাসা দিবস প্রেমপত্র অনুরাগ দেশ ভাষাপ্রত্যাশা প্রকৃতিপ্রেম সন্ধ্যা দেশপ্রেম

মনে পড়ে কবেকার পাড়াগাঁর অরুণিমা স্যানালের মুখ; উড়ুক উড়ুক তারা পউষের জ্যোৎস্নায় নীরবে উড়ুক কল্পন...

রূপসী বাংলা প্রকৃতিপ্রেম প্রেম দেশ

আরম্ভ হয় না কিছু — সমস্তের তবু শেষ হয় — কীট যে ব্যর্থতা জানে পৃথিবীর ধুলো মাটি ঘাসে তারও বড় ব্য...

ব্যর্থতা

কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঠাঁলছায়ায়; হয়তো বা হাঁস হব কিশোরীর ঘুঙুর রহিবে লাল পায়, ...

তুমি অনুভব অনুভুতি প্রেমপত্র ভালোবাসা দিবস প্রেমিকা অনুভূতি প্রেমিক প্রেম ভালোবাসা ভালোবাসি প্রেরণা

পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে; পৃথিবীর সব রূপ লেগে আছে ঘাসে; পৃথিবীর সব প্রেম আমাদের দু-জ...

ভালোবাসা প্রেম

ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলাল,- ডালিম ফুলের মতো ঠোঁট যার রাঙা, আপেলের মতো লাল যার গাল, চুল যার...

ভালোবাসা প্রেম

আমাকে খোঁজো না তুমি বহুদিন-কতদিন আমিও তোমাকে খুঁজি নাকো;- এক নক্ষত্রের নিচে তবু – একই আলো পৃথিবী...

জীবন