জারজ আমি
শ্যামল সোম
আমার বাপে নাম নেইকো জানা
প্রেম চাঁদ বড়াল স্ট্রিটে আস্তানা
117 নম্বর বাড়ির ছোট্ট খুপরি ঘরে
রোজ রাতে রাস্তার গ্যাসের বাতির
নীচে গাড়িওয়ালা বারান্দার রকে
জোরে জোরে পড়ি ইতিহাস 1946
সালের কেন বলে ভাতৃঘাতি দাঙ্গা?
দেশভাগের দাঙ্গায় নোয়াখালী থেকে
সপরিবারে কিশোরী জননী ময়না দুই
দাদা, দাদুর অপঘাত মৃত্যু দন্ডিত শাপে।
এক বৌদি এক দিদি মা বাপের সাথে
কিশোরী মা ভয়ার্ত ভীত সন্ত্রস্ত উদ্বিগ্ন।
প্রাণের ভয়ে দাঙ্গাবাজদের দৌরাত্ম্য এ
পালাচ্ছিলেন জ্বলন্ত গ্রামের বাড়ি ছেড়ে।
পথেই তাঁর পিতা নিষ্ঠাবান ব্রক্ষ্মান্ড পিতা
পরনের লুঙ্গি খুলে দেখেই আড়াই প্যাচে
জবাই, একে একে দুই ভাইয়ের বাপের
রক্তে রঞ্জিত গঙ্গার তীরে, গাছ গাছালির
আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন কিশোরী মা, মুক
বধির নিষ্ঠুর এ হত্যা দেখেই জ্ঞান হারানোর
আগে শুনলেন দিদি বৌদি মায়ের আর্তনাদ,
অচৈতন্য কিশোরী মা শুয়ে জঙ্গলে গাছপালায়।
পদ্মা গঙ্গার জলে বহমান স্রোতে সময়ের সাথে
কিশোরী মা আমার কোলকাতার রাজপথে
জনৈক দালালের খপ্পরে খুবই অল্প দামে
সোনাগাছির ঐ শিব মন্দিরের পাশের গলিতে
117 নম্বর প্রেম চাঁদ বড়াল স্ট্রিটে ঠাঁই হলো।
প্রতি রাতেই ওই ঘরে নিত্য নতুন ধর্ষণে উদ্যম
উৎশৃঙখল অমানবিক যৌন নির্যাতন অত্যাচারে
রক্তাক্ত দেহে আঘাতে আঘাতে পাশবিক যৌন
সঙ্গমে আশ্চর্য এ ব্যাপার হিন্দু মুসলিম কোন
ভেদাভেদ নেই পৃথিবীর সব দেশে বেশ্যা রা পন্য।
1950 সালে পয়লা জানুয়ারী ষোল বছরের মা
প্রসব করলেন আমাকে, কৃষ্ণ কালো রঙ শ্যামল
নাম রাখলেন মা, কখন কেষ্ট বলে ডাকতেন মা।
আমার মায়ের " সকল দুখের প্রদীপ জ্বেলে করবো
আয়োজন মায়ের ব্যথার পুজা হয়নি গো সমাপন।
No comments:
Post a Comment