লায়লার কাছে শুনে লেখা
ইনিয় বিনিয়ে লেখার জন্য
লেখা শুধুই লেখা নয়।
লায়লা আমার বোন মেঘনা
শ্যামল সোম
আমার প্রিয় মেঘনা নদীর বহমান উজান স্রোতে
ভাটিয়ালি গান গেয়ে নৌকা বাইয়াহাল ধইরা গায়,
" আমায় ভাসাইলি রে, আমায় ডুবাইলি রে, আকুল
দোরিয়ায় কুল পাই নে, কন্যা তোর মন পাই নে- --"
দাদুর ভীষণ আদরের নাতনি লায়লা শৈশবে তার ছোট
হাতে ধরে রয়েছে গ্রামের মানুষের শ্রদ্ধা ভাজন বিত্তবান
ব্যক্তিত্ব বাহিরে কঠোর লায়লা তাঁরই নামকরণে আমোদে
আহ্লাদে নূপুর পড়া পায়ে টলমল টালমাটাল দৌড়ে এসে
ঝাঁপিয়ে পড়তো লাল পরী লায়লা,দাদুভাই ঝট করেওরে
কোলে তুলে আদরে আদরে অস্থির, টোল পড়া গালে
চুমা- - খিলখিল করে হাসতো, ঘোমটার আড়াল থেকে আম্মু
দাদির কাছে অনুযোগ করতেন, " আম্মু জান ডর লাগে
মেইয়ে মাইনষের জেবন পদ্মা পাতায় শিশির কখন কি
হবে এত আমোদ আহ্লাদ শেষে সাদি হলি শ্বশুর বাড়ি
গিয়া লায়লা এত প্রশ্রয় আহ্লাদিত জেবন কেউ পায় না।
সেই প্রলয়ের রাতে আষাঢ়ে ঘণ বর্ষায় দাদু দিদার মাঝে
বুকের কাছে পালঙ্কে শুইয়ে স্বপন দেখে মেয়ে দশ বছরের
লায়লা মজনুর অমর প্রেম কাহিনী সখী নিভৃতে শুনিয়েছে।
মজনুর যেন এসে ডাকছে,প্রবল ঝরে পাকা গাঁথুনি টিনের
হুড়মুড় কইরে ভাঙছে গাছের ডাল, মজবুত করে উঁচু উপারে
বিশাল বাড়ি মাত্র তিনটি প্রাণী সম্পদ শালী বিত্তবান মেঘনা
নদী আজ প্রবল রোশে ভয়ঙ্করী সাংঘাতিক প্রতিহিংসা
চরিতার্থ করার জন্য নারী যে কি প্রচন্ড বাঘিনী হিংস্র হয়।
মেঘনা নদীর কুল ভাঙছে গ্রাস করছে দুকুল এর জমীন
দাদির বুকে থরথর কাঁপছে লায়লা, মেঝেতে নামায পাটি
বিছায়ে মুনাজাত আয়ত সূরা -- আযান মহান আল্লাহ পাক
উনার স্মরণাগত হয়ে দাদি তসবির মালা জব করছেন।
বহু দূর থেকে ফজরের আযান ভেসে আসছে, সূর্যোদ্বয়ের
রাঙা আকাশে তাকিয়ে আছে লায়লা নারীর মতন শান্ত
স্নিগ্ধ মাধুর্যে অপরূপ সৌন্দর্য প্রকৃতি এই প্রকৃতির তান্ডব
ভয়ঙ্কর প্রলয়ের রূপ ধ্বংসাবশেষ দেখে দাদাভাইয়ের সাথে,
কাঁদতে কাঁদতে পিছন ফিরে ছুটছে যেন অশুভ শক্তি তেড়ে আসছে।
No comments:
Post a Comment