Monday, 16 January 2017

চারুলতা তোমার চোখ আমার সর্বনাশ

তোমার চোখে আমার সর্বনাশ ( গল্প  হলেও সত্য )

শ্যামল সোম  বাঁশিওয়ালা

নির্জন পথে অপরাহ্নে একা একাই
বাঁশিতে রবীন্দ্রনাথের গানের সুর
" আমার হৃয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে ছিলেন দেখতে আমি পাই নি"
আনমনে বাঁশি বাজানোর আনন্দে, গাইছি বাঁশির সুরে সুরে," আমারও পরাণ যাহা চাই, 
তুমি তাই তুমি তাই গো।"

সূর্যাস্তে গোধূলির রঙ রাঙিয়ে দিচ্ছে আকাশকে, বিশাল আকাশে নানা রঙের আলপোনার কারুকার্য।

হঠাৎই ডাক শুনলাম সুমিষ্ট স্বর " বাঁশিওয়ালা ওগো ও  বাঁশিওয়ালা"

ঘুরে তাকিয়ে দেখি বাড়ির বিশাল ফুলের বাগান  এক অপ্সরী স্বর্গের দেবী সদ্য যৌবনা এক সুন্দরী নারী
হাতছানি ডাকছে কেন?
আমি হতভম্ব কিছুটা বিব্রত বোধ করছি, ইতিউতি তাকিয়ে দেখছি অন্য কাউকে ডাকছে কিনা, ইশারা করে বলি আমাকে?
সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে আসে মেয়ে চোখে মুখে সারল্য স্নিগ্ধ মাধুর্যের হাসি, " তোমাকেই তো ডেকেছিলাম গো,
রোজ এ সময় এ ধরেই ডাক দিয়ে সে যায় - আজ সকাল থেকেই মন ভালো নেই !"

বিস্মিত নয়নে বিমোহিত মুগ্ধ হয়ে দেখছি, ঈশ্বরের কি অপরূপ সৃষ্টি, বিস্ময় অপলক চোখে চোখ পড়তেই
ভূমিকম্প স্পন্দন আলোড়িত দুজনার মন, গোধূলির রাঙা আলো এসে কুন্তল এলানো মুখে,সলজ্জ দৃষ্টি,
সেদিন ছিল চৈত্র মাস তোমার চোখে দেখে ছিলেম আমার সর্বনাশ!

এসো আমার সাথে - আমার হাত ধরে নিয়ে চলে সখী নিভৃত আপন আলয়ে।
বাগানে মাঝ খানে মোরাম বিছানা পথ গোল বারান্দায় বসে দুজন বৃদ্ধ বৃদ্ধা হাতে জনের মালা
মৃদু হেসে বলেন, দাদাভাই  কিছু মনে করবেন না, হঠাৎই ঘুরে বলেন চাঁদনি যাও ওনার জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা
করো,"
দাদুভাই বেশী দেরী করো না এ বৃদ্ধ বৃক্ষের সারাদিন খাওয়া জোটেনি দেখছো না চোখ মুখ শুকিয়ে গেছে "
ঝর্ণার মতন কলকল করে হেসে চলে যায় চাঁদনি।
বসুন হাত ধরে বসান এ বৃদ্ধ, নিচু  গলায় বলেন, " চাঁদনির বাবা মায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ আজ পনের বছর
দুজনে পুন বিবাহ করেছেন, চাঁদনির বাবা নিউ ইয়র্ক টাইমস কাজ করেন টাকা পাঠান মেয়েকে কাছে ডাকেন
কত উজ্জ্বল ভবিষ্যত আমেরিকা গেলে --!
চাঁদনি পাঁচ বছরের তখন ডিভোর্স ঘটে, আমাদের কাছে মানুষ ফোনে ছেলে সমীর চাঁদনির বাপকে
বললাম, ওর দায়দায়িত্ব  আমরা নিয়েছি  তুই হতভাগ্য ডলারের জন্য ডারলিং ডটারকে হারালি।
বৌমা এই কাছে পিঠে থাকেন তার নূতন স্বামী  নিয়ে, ন মাসে ছ মাসে প্রচুর দামী জিনিস পোষাক নিয়ে আসেন।"

" বাপ মায়ের স্নেহ ভালোবাসা মমতা স্পর্শ সুখ কি ঐ দামী মোবাইল ফোন দামী পোষাকে পূরণ হয়।
একবিংশ শতাব্দীর সভ্যতার  অভিশপ্ত জীবন স্বামী  স্ত্রী মধ্যে ঐ ইগো ইজম। এর জন্য  চাঁদনি একটু  অভিমান
জেদি এখন অদৃষ্ট কি লেখা আছে  কে জানে !"
এতক্ষণ পর্যন্ত চুপচাপ শুনছিলেন বৃদ্ধা, ধমকে উঠলেন এখন প্রফেসর গিরি ছাড়তে পারলে না।

চাঁদনি এসে বলে," এখন চলছে লেকচার, এসো আমার সাথে রিফ্রেশ হতে হবে তো !" হাত ধরে নিয়ে চলে।
ভাবি, তোমারে সঁপেছি প্রাণ প্রাণের  আশা ছেড়ে -- !
এ ও কি  প্রেম- - ?
আমার আনমনা মন
তোমার চীর তারুণ্য মন

No comments:

Post a Comment