রেখার কাব্যে মুগ্ধ
স্বপ্নের বাঁশিওয়ালা শ্যামল সোম
শীতার্ত রাতে নিরাশ্রয় পথে পথে ঘুরতে পথ যাত্রা
হঠাৎই সূর্যোদ্বয়ের ভোরে তোমার কাব্য পাঠের সুতীব্র
বাসনায় - একটি কথা জিজ্ঞেস করি এত ভালো কি
করে লেখো গো মায়াময়ী?
তোমার মায়াবী চোখের দিকে কে বেশী আকর্ষণ করে
তোমার কাব্য না কাব্যের স্বপ্নের দেবী তুমিই আমার
প্রথম প্রেম সলজ্জ চোখে চোখ আমার জীবন্ত কবিতা।
রেখা আমি কোলকাতা থেকে পঞ্চাশ বছর পরে ফিরছি
পৌঁছে তোমার সাথে একবার জীবনের শেষ লগ্নে মন
ক্ষণিকের জন্য হলেও তোমাকেই প্রথমেই চাই দেখতে
রেখা আমার যৌবনের প্রথম প্রেম সেই তো তুমি জানোই।
আমাদের প্রেমের আবদারে তোমাকে আসতে হবে, হবেই
পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধ প্রেমিকের হৃদয়ে ভালোবাসার জোর,
এই ফাল্গুনের পূর্ণিমায় আকাশে জ্যোৎস্নায় চিক চিক করে
কীর্তন খোলা নদী, নদীর ধারে বসে অপেক্ষায় থাকবো আমি।
দ্বিতীয় পর্বে
দূরভাষে কথা বলার পরে কীর্তন খোলা নদীর ধারে বসে শুনছি
নদীর ছলাৎ ছলাৎ বহমান স্রোতের শব্দ, প্রতীক্ষিত মন গুনছি
ক্ষণিকের ক্ষণ যখন পঞ্চাশ বছর পরে রেখাকে কেমন দেখবো
ভালোবাসা আজও কি আছে দিনের বেলা ঐ শুকতারার হৃদয়ে
নয়নে বিমোহিত মন প্রথম প্রেম সলজ্জ চোখে রেখে চোখ বলতে--
হঠাৎই কখন নৈঃশব্দে কখন পাশে এসে মৃদু হেসে বললো রেখা
" কেমন আছো সোম " ?
তন্ময় হয়ে পলকহীন বাহ্যজ্ঞান শূন্য বিস্ময়ে হতবাক, অবিশ্বাস্য
হলেও সত্যিই -- " তুমিই সেই রেখা ?
ঘাসের ওপর পাশে বসে, " কেন চিনতে পারছো না সোম ?"
" পঞ্চাশ বছর আগের যুবতী রেখা ফেরে - চমকে উঠলাম দেখে
সম্ভব হলো কি করে "
" সোম ছানি পড়েছে তোমার চোখে, কত বদলে গেছি আমি "
" রেখা তুমিই আমার প্রথম প্রেম একটুও বদলাও নি তুমি "
" পাগল পাগলামী আজও ঠিক তেমনই আছে, শরীর ভেঙেছো
বাউণ্ডুলে জীবন যাপন, নিজের উপর শারীরিক অত্যাচারে,
নিশ্চয়ই নেশা ভাঙ বিনিদ্র নির্জন রাতে তোমার ঐ লেখালিখি খেলা-- !"
" রেখা আমার লেখা পড়ো আজও "
না না না পড়ি না গো -- একে তাকে দিয়ে তোমার কাব্য গ্রন্থ গুলো
-- চল পাগলি আজ রাতেই পালাই
-- কবিতার সাথে সহবাস
-- বটবৃক্ষের প্রেম
-- শ্যামল সোমের কাব্য সমগ্র
রাতে শয্যায় বইগুলো জড়িয়ে সারারাত কাঁদি -- হুহু করে কাঁদি--"
দুজনেই আমরা কাঁদছি শাশ্বত অমলিন প্রেমে, জীবনের শেষ লগ্নে।
ক্ষণিকের বিশ্রাম পরে, নিজেকে সামলে নিয়ে, ছলছল চোখে বলে,
" কেন কেন অবতার কাঁদাও কবি, কাঁদতে কাঁদতে আমি ক্লান্ত কবি "
" কাঁদলে তোমাকে ভীষন সুন্দর দেখায় রেখা -- "
সোম তুমি নিষ্ঠুর নিষ্ঠুর নিষ্ঠুর তুমি, নিজেকে ঠকিয়েছো, আমার থেকে দূরে সড়ে গিয়ে আমার চেয়েও বেশি কষ্ট পেয়েছো-- !"
"
কষ্ট ব্যথা, যাতনায় রেখা অনুভবে তোমাকে পাই গভীর ভাবে-"
সোম নিজেকে যন্ত্রনা কষ্ট দিয়ে যারা আনন্দ পায় তাদের কি বলে জানো ?"
" দুঃখ বিলাসী,"
" উন্মূখ ছিল সেদিন তোমার আমার দেহ মন সব সমর্পিত অথচ তুমি আমাকে জীবন্মৃত লাশ
করে রেখে গেলে ও হে পলাতক প্রেমিক পুরুষ- -
দগ্ধ ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণে শিশিরের শব্দের স্পন্দনে আলোড়িত দুজনার মন, পূর্ণ
প্রাণে চাওয়ার ছিলো, শূণ্য হাতেই ফিরিয়ে ছিলে কেন তুমি? "
নিশ্চুপ কেন সোম। ?
No comments:
Post a Comment