জননী কি আজ যৌন দাসী ? ( এ নাটকটি মঞ্চস্থ করার চেষ্টাও করছি, একটি নারী ও একটা পুরুষ) গোধূলির লগ্নে নদীর
সৃজনে অভিনয়ে
শ্যামল সোম ও সুচেতনা মুখার্জি
পুরুষ ও নারী পরস্পরের দিকে তাকিয়েই রয়েছেন।
পুরুষ ---: " কেন চেয়ে আছ গো মা মুখ পানে।
এরা চাহে না তোমারে চাহে না যে, আপন মায়েরে নাহি জানে।
এরা তোমায় কিছু দেবে না, দেবে না -- মিথ্যা কহে শুধু কত কি ভানে। " রবীন্দ্র সংগীত
পুরুষ --: জননী কি আজ যৌনদাসী ---প্রশ্নটা শুনে আপনাদের অনেকেই মনে আঘাত পাবেন।
জানি ক্ষমা করবেন।
এই সে নারী -- যুগ যুগ যুগান্তর ধরে নারী ধর্ষিতা হয়ে আসছেন --
প্রস্তর যুগ থেকেই যখন যে কোন পুরুষের ছিল অধিকার
হয়তো আপন পুত্র সন্তান যে মাতৃদুগ্ধ পানে, প্রতিপালিত
মাতৃ স্নেহে, সেও যোয়ান বয়ষে মাতৃ যোনী কলঙ্কিত করে।
নারী---: না না না ও ওহ আহ আহ ( ক্রন্দন - বুকফাটা আর্তনাদ)
পুরুষ--: শম্ভু মিত্রের রাজা অয়াদিপাউস, অভিশপ্ত তাঁর - জীবনের অদৃষ্ট পরিণামে নিজের অজান্তে আপন জননীকে
শয্যা সঙ্গিনী করেছিলেন, সেই আত্মগ্লানি বোধে চুলের কাঁটা দিয়ে শিহরিত আর্তনাদে উবড়ে ফেলেন দুই চোখ।
নারী---: না না না, না কাছে এসো না, স্পর্শ করবে না খবরদার ! আহ আহ ছেড়ে দাও - ছেড়ে দাও ( আর্তনাদ কান্না)
নারী--: আহ আহ আআআমার দেহ শরীর আমার নয় শৈশবের বিভৎস স্মৃতি- - আহ আহ কষ্ট হচ্ছে
খুব কষট হচ্ছে ও কাকু ছেড়ে -- বাপি ছেড়ে দাও -- এই মৈনাক কি করছো ছেড়ে দাও , ভালোবাসো
আমাকে তাইই শরীরটা চাই, বন্ধু দীর্ঘদিনের ভালোবাসতাম ওর ই জন্মদিনের পার্টি তে -ওরা তিন জন শ ষন করলো, শরীরে যন্ত্রনা কিন্তু মন মনে কষ্ট হচ্ছিল
প্রেম ( হা হা হা হা অট্টহাস্য) প্রেম --ভালোবাসা -- পুরুষ মানুষের ভালোবাসা এ যেন মুরগী পোষা।
আমার এই এ শরীরটা দেখছেন --- দেখুন দেখুন না দেখুন এই নরম মাংসে হিংস্র পশুর দংশন।--
এই এই দেখুন এখন দাগ রয়েছে।
পুরুষ- -: বহুদিন আগে না এখন ও - খোলা আকাশে তলায় শৃঙ্খলিত উলঙ্গ নারী
তাকি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ছূঁয়ে দেখছিন ধনী ক্রেতা বাঁদি কেনার র অছিলায়।
এখন জোর যার মুল্লুক তার --নারী নদী মতন ভালোবাসার দরকার নেই, দৈহিক সুখের সন্ধানে অতর্কিতে বা
বাঘের মতন ঝাঁপিয়ে রাস্তায় মানুষের সামনেই নির্যাতন অত্যাচার ধর্ষন জন্য ধর্ষন মাথায় পাথর মেরে বিভৎস করো যেন চিনতে না পারে কেউ।
ঋত্বিক ঘটকের সুবর্ণরেখা চলচ্চিত্র দেখছেন আপন ছোট বোনের কাছে না জেনে, মেয়েমানুষের জন শেষে সীতা দেখে দাদাভাইয়ের আগমণ। চিরদিনের সীতা ঋত্বিক ঘটকের এই সীতা নাম রেখেই বুঝিয়েছেন,
সীতা বার বছর স্বামীর সাথে বসবাসে, রাবন সীতাকে অপহরণ করে লঙ্কা পলায়ণ। সীতার বার বার অগ্নি
পরীক্ষা-- শেষে গর্ভবতী অবস্থায় সীতাকে আবার বনবাসে।
নারী--: অবিশ্বাস্য হলেও সত্য পুরাণে আছে -- যুধিষ্ঠি পাশা খেলাতে দ্রোপতি সন্মতি ছাড়াই বাজি রেখে হেরে গেলেন।
প্রকাশ্য রাজনৈতিক সভায় দ্রোপতি চুলের মুঠি ধরে টেনে হিঁচড়ে বস্ত্র হরণ করছেন, নগ্ন করছেন।
বীর পুরুষের সমানে কেউ কোন প্রতিবাদ করছেন না, সবাই নিশ্চুপ ছিলেন।
দ্রোপতিকে পঞ্চ বীর্য ধারী স্বামীরা ভোগ করছেন।
আজও একবিংশ শতাব্দীতে আমার এই শরীর দেহ ক্ষত বিক্ষত লাশ হয়ে নীরবে সহ্য করতে হয়।
পুরুষ --: শোন আমিনা না আশা যা হোক- - তোমার রূপে মুগ্ধ হয়ে তোমার শ্বশুর রাতেই তাঁর অদম্য আগ্রহে
তোমার স্বামীর অবর্তমানে তোমাকে ভালোবেসেই ধর্ষন করেছেন।
গ্রামের এই সালিশী সভায় উপস্থিত সবার সন্মতি নিয়ে ফতোয়া দেয়া হলো -- আজ থেকে ঐ শশুড়ের
সাথেই স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক- -- আর যার সঙ্গে তোমার প্রথমে বিবাহ হয়েছিল সে এখন থেকেই তোমার পুত্রের
মতনই থাকবে, না না না মেয়েছেলে কোন কথা থাকতে পারে না।
No comments:
Post a Comment