শ্যামল সোমের
কবিতার
সাথে
সহবাস
1)
শ্মশানে রয়েছি জলন্ত চিতায়
ওঠার অপেক্ষা এখন কবিতা
গলা জড়িয়ে আমার কাঁদছে।
নূতন গ্রন্থ প্রকাশের শুভ ক্ষণে
আমি নেই তবুও কবিতার প্রেমে
কাব্যের ড্রোনের বিস্ফোরণে
প্রচন্ড আলোড়ণে চূর্ণ বিচূর্ণ
নব্য সভ্যতার ভয়াবহ ইতিকথা
তিরস্কার, ধিক্কার প্রাণনাশের
আশঙ্কিত মনে স্ফূর্তি আনতে
গাহিছেন, " আমি সকল নিয়ে বসে
সর্বনাশের আশা,
আমি তার পথ চেয়ে আছি
যে জন আমায় ভাসায় !
নারী কবিতা নদী ফুল
এরই নাম ব্যাকুলত জীবন
দুকুল ভাসিয়ে হে নারী তুমিই
আমার কীর্তন খোলা নদী
তোমার অপরূপ সৌন্দর্যে
মুগ্ধ হয়ে অপলক দৃষ্টি মেলে
অনন্তকাল চেয়ে থাকা সত্ত্বেও
কেন এই জরাজীর্ণ দেহে জল
স্পর্শে শিহরণ বহমান তোমার
উজান স্রোতে অবগাহনে উষ্ণ
মিলনের কাব্যের নির্যাস শুভ্র
গোলাপের গন্ধে, দেহের ঘ্রাণে
কবিতা তোমার সাথেই সহবাসে
একাকীত্ব মাঝেই বিনিদ্র নির্জন
তারা ভরা রাতে আজও প্রতীক্ষিত
প্রেমিক তোমার বাঁশিওয়ালার সুর
ভেসে আসে ভালোবাসায় স্নাত হই।
2) তুমি জীবন্ত কবিতা
( স্বপ্না-তোমার জন্যই আমার এ লেখা।
তোমার একান্ত প্রিয় ) - শ্যামল সোম
আমি অপেক্ষায় থাকি
আমার মনের যত জমা
কথা হৃদয়ের গোপন ব্যথা
কাকে বলি ?
কে শোনে?
আপন সুখ দুখের সাথে
মিলে মিশে আপনাতে
আনমনে আপনি আছি।
তবু মাঝে মাঝে কেন
মনে হয় এক জন
অনন্ত বন্ধু মনের মতো
পাশে থাকলে বেশ হতো
মনের কথা মনে কোনে
না রেখে সে বন্ধুকে
খুলে বলা যেতো
মনের চাপ কমতো ।
বলবার জন্যে হন্যে
তন্ন তন্ন করে খুঁজে
ফিরি শেষে কাউকে
না পেয়ে একা তন্দ্রাহারা।
তন্ময় হয়ে নিজের লেখা
নিজেই পড়ি, শব্দ
গুলো উলটে পালটে
মনের ইচ্ছে সাজাই।
আমার কবিতা!
তুমি মাঝ মাঝে রাতে
চুপিচুপি এসে, দাঁড়াও
আমার শিয়রে অভিসারে।
যূঁই ফুলের মালা জড়িয়ে
খোঁপায়, পায়ে জলনূপুরের
সুর তুলে, তোমার ঐ সুর্মা
আঁকা চোখ ছল ছল দৃষ্টিতে,
তাকিয়ে থাকা এইটুকুই প্রেম
একাকীত্ব যাতনা প্রশমিত
স্বপ্না তুই কবিতা পাশে ঘনিষ্ঠ
বন্ধু মতো এসে বসা
কবিতা নরম হাতের ছোঁয়া
কবিতা তোমার কাঁধে রেখে
মাথা কাঁদা, কখন তোমার
হেসে ওঠায় আমার মুখে হাসি
কবিতা তুমি তো জানো
কতটা তোমাকে ভালোবাসি
শব্দের অলংকরণে
চিত্রকল্পে ছন্দে ছন্দে
স্বপ্না তোর আনন্দে ভাসি।
3)নির্জনে আমরা দুজনে
শ্যামল সোম
ঝম ঝমিয়ে পড়ছে বৃষ্ঠি
ঘনিয়ে এলো ঘন আঁধার আধ
অন্ধকারে কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে
একা আমি, স্মৃতির
অতলে সন্তরণে আছি,
যন্ত্রযানের অপেক্ষায় আছি।
বহে যায় সময়--দমকা হাওয়ায়
দোদুল্যমান ডাল,
ভাবনায়পাতা ঝরে পড়ছে,
কড়-কড়িয়ে ডাকল মেঘ,
আকাশে বিদ্যুত উঠল জ্বলে,
এই সায়েন্নে অপরূপা
এক আলোকপর্ণা-ভেসে
আসে অভিসারে,
জ্বলে তার চোখ, তীক্ষ্ণ দৃষ্টির তার।
সিক্তা শরীর বেয়ে ঝরে বৃষ্টি,
স্মীত হেসে চির
পরিচিতা প্রিয়াআমার
সুদর্শণা হেসে হেসে
কাছে আসে কাঁধে রাখে
পেলব হাত,
জড়িয়ে নেয় বুকে, কানের কাছে আনে
মুখ বলে মৃদু স্বরে,
" সোম-এই দুর্যোগের রাতে,
ভাগ্যের উচ্ছাসে
ঘণবরিষণে দেখা হল,
আবার তোমার সাথে।
"আমার ছায়া কাঁপে তার চোখের তারায়,
" তুমি ভালো নেই সোম?-
কেন তোমার ভালো থাকার সব
উপকরণ ভরা আছে
তোমার সংসারের আয়োজনে ?""
বিষন্ন মন তবু ফেরে শীতল অবসাদে,
" পর্ণা আমি ভালো নেই ! "
"" সোম ! দুঃখ তোমার বিলাস
বিলাপ তোমার সংগীত !
এই মুহূর্তটাই চির সত্য !
আর কাছে এসো সোম !
আমার খুব কাছে, কাঁধে রাখ হাত,
চুম্বনে মিটাও পিপাসিত ওষ্ঠ
- ঠোঁট আমার!"
" বহে যায় নদী যৌবনের ঝরের মাতন,
তপ্ত ঘন শিহরণ, অনন্ত আগ্রাসী চুম্বন
শরীরের সমুদ্রের ঢেউয়ের আলোড়ন,
জলে হারায় পথের নিশানা -নির্জন দ্বীপে
এখন নির্জনে আমরা দুজন।
4) এপারে ওপারে শুধুই দীর্ঘশ্বাস
বাঁশিওয়ালা
এ পারে যে বাংলাদেশে
ও পারে সে বাংলা
মাঝখানে নাক উচিয়ে
পাহারা দেয় কাঁটাতারের বেড়া।
বেড়ার ওপারে তুমি কাঁদলে
আমার পায় কান্না বিশ্বাস করো,
এতটুক মিথ্যা বলছি না, বুকে হাত
দিয়ে দেখো থড় পড় করছে বুক।
ভালোবাসার এত যে কষ্ট কে
আগে জানতো ?
অবশ্য তোকে মৌ ভালো না বেসে
আমি কিভাবে বুঝতাম এ অপার
আনন্দ, মৌ তোকে ভালোবেসে
আমি ধন্য, নাই তোকে পেলাম
কাছে, এ প্রেম তো শাশ্বত সুন্দর।
পাগলী তুই মন চুরি করে ঢাকায়
বসে আমায় এত ভালোবাসিস
সে ভালোবাসার ঋণে ঋণী আমি।
এত পারে কোলকাতায় তোরই
আসার অপেক্ষায় আছি, তুই যখন
ও পার থেকে ঘুরে বেড়াবো জন্য
আমার কাছে দুদিনের জন্য আসবি
আমি কোলকাতার শহরে বিখ্যাত
দোকানে গিয়ে কিনে তোর পছন্দের
মনের মতো সাজ সাজিয়ে তোকে
দেখবো, গঙ্গায় নৌকো করে বেড়াবো।
শান্তি নিকেতনে গিয়ে দেখবি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঢালি সাজিয়ে
তোর জন্য অপেক্ষায়!
দার্জিলিঙে টাইগার হিল থেকে
কাঞ্চনজঙ্গা পর্বতের সূর্যোদ্বয়ের রাঙা
আলোয় তোকে আমার জীবন্তকে
দু চোখ ভরে তাকিয়ে দেখবো।
অবশেষে বিদায় মূহুর্তে তুই যখন
সব নিয়ে নিজেকে কাঁদিয়ে মৌ তুই
ফিরে যাবি ওপারে বাংলাদেশে
আমি সজল নয়নে
তোর ওপারের ফিরে যাওয়ার
দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে দুচোখ
আমার ঝাপসা আসছে।
5) সূর্যোদ্বয়ের ভোরে
কবিতার সাথে সঙ্গম
অলকানন্দা মন্দাকিনীর
সঙ্গম স্থলে কর্ণপ্রয়াগে
প্রাতে তোমাকে মানস নেত্রে
স্বপ্নে স্বর্ণ স্তনে শব্দের
চুম্বনে চুম্বনে রক্তাক্ত ঠোঁট,
রক্ত ঝরছে কাব্য পাঠে
শিশির ভেজা উষ্ণ শয্যায়।
কবিতার সাথে আশৈশব প্রেম,
" জল পড়ে, পাতা নড়ে " !
ছন্দে অছন্দের বাহুল্য হীন
আমি বেকুবের মতন কবিতা
তোমাকে গভীর আলিঙ্গনে
জড়িয়ে ধরে আদরে
আদরে, কাব্যিক এ মন
তোলে তুফান কবিতার
উত্তপ্ত দেহে করে লেহণ।
পৌরুষ উড্ডীন অহংকারে
প্রোথিত বৃক্ষের চারা শুকায়।
অতৃপ্ত কবিতার চাপা কান্না
প্রতিধ্বনি শুনি নপুংসক হৃদয়ে।
শব্দের লহরী স্রোতে বহমান
যৌনবতীদের আমন্ত্রণে বিনম্র
প্রত্যাখান এ ক্রুদ্ধ নারীদের
উন্মুক্ত বসনে নগ্ন যৌন
আক্রমনে সমবেত প্রয়োগে
কবিতার ধর্ষনে বিহ্বল
নিষ্ফল লিখন প্রয়াস।
অরণ্যে পদ্ম যোনিতে
বিশৃঙ্খল বাক্যের
বিন্যাসে অক্ষরের বীর্য
পাতে অলকানন্দা স্রোতে
ভাসে স্ফূর্তির অস্ফুট কাব্যের ভ্রূণ।
6) বিরুদ্ধাচরণে মৃত্যু দন্ডিত
এখন আমরা পরস্পরের
খুবই কাছাকাছি আছি,হেতু
পরস্পরকে ভালোবেসেছি।
আমি হিন্দুদের সনাতন ধর্মে
তুমি মরিয়ম চৌধুরীর বিধর্মী।
সমাজ জাত ধর্মের দেশের সীমান্ত
পেরিয়ে সব গন্ডি ছাড়িয়ে প্রান্তিক
বিবাহিত জীবন যাপন শারীরিক
সম্পর্ক নাই বা হলো তখন, শয্যায়
সরীসৃপ মত ধাবমান সর্পিল উষ্ণ
আলিঙ্গন পরস্পরের তৃষ্ণার্ত সে
নিবারণ,দীর্ঘ স্থায়ী অন্তহীন চুম্বন।
এত মতানৈক্য মতান্তর মতভেদ
প্রতিবাদ প্রতিরোধ অগ্রাহ্য করে
আজ এত বছর পরে সুইডেনে
পরস্পরের পরিপূরক পরিপূর্ণ
স্বাধীন দেশের নাগরিক অধিকারে
পরস্পর পরস্পরকে ভালোবেসে
শেষে একত্র বসবাস, বিবাহের নেই
বন্ধন, বিখ্যাত দার্শনিক রাসেল সাহেব
এমন খ্যাতিমান পৃথিবীতে কম আছেন,
সে লেখক লিখেছিলেন, "বিবাহ আইনত
বেশ্যা বৃত্তি", এ সত্য, সাংঘাতিক কষ্টের
অভিজ্ঞতা,প্রেম হীন শারিরীক এ অশ্রুপাত
একই শয্যায় হৃদয়ের রক্তপাত, রক্ত ক্ষরণ নয়?
7) আমার কীর্তন খোলা নদী
শ্যামল সোম বাঁশিওয়ালা
আজও জরাগ্রস্ত দেহে,
জরাজীর্ণ মনে জাগে সাধ
আর একবারও ফেরা যায়
ঐ নদীর কীর্তন খোলায়,
আশা তোমাকে ভালোবেসেই
চলে যাওয়ার আগে একবার
এই শেষবারের মতন ফেরাও।
নারী তুমি আমার নদী অবগাহনে
নদী তুমি আশা ফেরাও মোরে
কীর্তন খোলা নদীর ভোরের,
আকাশে ভেসে মেঘ হয়ে ফিরিবার
আকাঙ্খা ঐ আকাশে নিমন্ত্রণ।
মগ্ন মন তোমাকেই পাশে নিয়ে
কীর্তন খোলা নদীর বহমান উজান
স্রোতে ও আকাশে রামধনু মাঝে
আমার ফেলে আসা প্রেমের সাঁঝে
আশা আর একবার ফেরাও হে
কাব্যের দেবী আশা ঐ জমিনে দিও
আমার হৃদয়ের প্রেমের সমাধি।
8) শেষ লগ্নে
শ্যামল সোম বাঁশিওয়ালা
আজ জরাজীর্ণ আমি
সৌভাগ্যবান প্রাচীন বৃক্ষ।
এক জরাগ্রস্ত বৃদ্ধের
জীবনের এই শেষ লগ্নে
পৌঁছে মৃত্যুর পদধ্বনি,
শোনার মাঝে শুনি নূপুরের
ছন্দ ছন্দে তালে পা ফেলে
স্বপ্নে তোমার আবির্ভাব।
কবি আশালতা তোমার ধন্য
কাব্য চর্চার সমার্থক প্রয়াস,
নান্দনিক কাব্যিক পূর্ণতা মায়া
আচ্ছন্ন মায়াবী চোখের কাব্য।
মনময় রূপ লাবণ্যময়ী আশা
নামে এক অনন্যা কবির সাথে
আলাপনে ও তাঁর লিখনে ফেরে
মন, শব্দের ঘ্রাণে বকুলফুলের
গন্ধে ভরে গেল মন সম্ভ্রান্ত কবি।
পরিবারের সন্মানিত সনামধন্যা
কবি এতটুকুন অহংকার নেই
মহান প্রভুর চরণে সমর্পিত প্রাণ
মননে তার পরিচয়, ছন্দের বিমূর্ত
বাক্যের বিন্যাস যেন পদ্মপাতায়
শিশির হীরক মাল্য দোলে প্রাতে।
হে স্বপ্নের কবি তোমার কাব্য পাঠের
সুতীব্র শিহরণ বহমান তোমার কাব্য
স্রোতে গবগাহনে আনন্দে ভাসে মন।
9) কল্লোলিনী কোলকাতা প্রেমে
বৃদ্ধ প্রেমিক শ্যামল সোম।
তুমি মেঘ বালিকা কখন মন চাইলেই
চলে এসো খুব কাছাকাছি, আসতে
চোখে- রেখে চোখ অপলক দৃষ্টি।
সুর্মা চোখে আলোয় ভালো যদি লাগে,
কল্লোলিনী লাগা থেকে শরীরে তোমার
ভালোবেসে রক্তে শিহরণ যদি জাগে।
হৃদয়ের গহীন অরণ্যের বিথী কাননে
বহমান নদীর ধারে কখন দেখা হলে
তুমি তিলোত্তমা বাড়িতে দিও স্নিগ্ধ হাত
সে তোমার সুগন্ধ হাতে থাকে যেন স্পর্শে
সুপ্রসন্ন ভালোবেসে তুমি সপ্রতিভ এসে।
সুপ্ত গভীর সে প্রেমের কোলকাতা ভালো
বাসার খোঁজে ঘুরেছি শ্যামবাজার থেকে
হালতু হেঁটে হেঁটে ছিঁড়ে গেল চটি, হতাশা।
বাসার অভাবে পথের ভিখারী ব্যর্থ প্রেমিক
আমার প্রিয়া আদরের তুমি কোলকাতা।
চির স্মরণীয় লায়লা মজনুর অমর প্রেম
না না রোমিও জুলিয়েট বা শেষের কবিতার
লাবণ্য কিংবা বনলতা সেন, সুচিত্রা সেন মত
আমার হৃদয়ে আকাশে চাঁদের ছবি হয়ে ঝুলছো।
ওগো আমি যে তোমার সেই চিরসাথী, জানি
কল্লোলিনী কোলকাতা তিলোত্তমা একদিন হবে।
কোলকাতা স্নিগ্ধ ভালোবাসা বাঙাল কাঙাল আমি।
ভালোবাসার জন্য হাজার বছর ধরে হাঁটছি হাঁটছি
তিলোত্তমা কোলকাতা " বাড়িতে দাও তোমার হাত "
হৃদয়ে এ হাত ছুঁয়ে থাক রবীন্দ্র সদনের রেলিং
ভিক্টোরিয়া মাঠে সবুজ ঘাসে পাশাপাশি বসিবার বহু দিনের সাধ।
10) শুধুই তোমার জন্যে--
শ্যামল সোম
পাগলী একবার তুই
বল," সোম ভালোবাসি
তোমাকে "
দু হাত বাড়িয়ে বল আমাকে।
আমিও ভালোবাসি
পাগলী তোকে
পৃথিবীর দেশ
দেশান্তরে থেকেই তুই
আমার কাছে এসে
জাত ধর্ম,ভুলে
আয়রে পরস্পরকে
খুব ভালোবাসি।
বিশাল বয়সের
ব্যবধান পাহাড়ের
প্রাচীর দুই হাতে
পাহাড় ঠেলে সড়িয়ে
বঙ্গপোসাগরে নীল
সমুদ্রে ঢেউয়ে ভাসি,
হিমালয়ে পাহাড় পর্বত,
ডিঙিয়ে পার হয়ে
যাই শেকড়ের সন্ধানে
গঙ্গা পদ্মা সাঁতরে
আমার জন্মভূমি
ময়মনসিংহকে প্রণাম
জানাই আমার
আন্তরিক অভিনন্দন প্রেম।
পাগলী স্বপ্নের
রাজকন্যা তোর প্রেমে ব্যর্থ
হওয়ার পর ও শতসহস্র
অত্যাচার সহ্য করে
আবার স্বপ্নে আমি
সাত সাতটি মহা সমুদ্র,
আর তেরোটি মহানদী
এক দমে পেরিয়ে
ফিরে আসি এক ডালি
নানা ফুলের স্তবক
হাতে নিয়ে কাছে এসে
পাগলী তোকে বুকে
জড়িয়ে নিয়ে ভেসে যাবো
একেবারে গুপ্ত গুহায়
গহীন অরণ্যে হিমালয়ে।
11) আমার আদরের কলি
( সদ্য প্রেমে পড়লাম আজ নিশি ভোরে,
তাকেই উৎসর্গিত করবীর ফুলের কলি
যে জন আজ রয়েছে এই বৃদ্ধের হৃদয়ে জুড়ে )
পুরুষের কামনা শ্মশানে চিতায় উঠে
আগুনে পুড়লেও যায় না, কিম্ভূত ভুত
হয়ে তাই তোকে ধরতে ফিরি অতৃপ্ত
বাসনায় এ ভুতের বিদেহী মন, তপ্ত
দেহের দহণে আলিঙ্গনে অশরীরী
এই দেহ তোকে দুহাতে জড়িয়ে শক্ত
ধরে যেই চুম্বনে ঠোঁট এগিয়ে যেতেই
বায়ুবিয় আশরীরের নাগালে বাহিরে
ময়না পাখির দোল খেয়ে পালালি।
আমার আদরের পাগলি তোর জন্যই
( মাফ করবেন) মরার পর ও আমার
একটুও সুখ নেই বিমূর্ত মনে, তোকে
আমি সত্যিই ভালোবাসি,লোকের কাঁধে
চোড়ে শ্মশাণ যাত্রার সময় বারবার
পিছু ফিরে তাকিয়েই ছিলাম তোকে
শেষ বারের মত দেখার আশায়, মুহূর্ত
জন্য পাগলি তোর চাঁপা ফুলের মত মুখ।
মৃত্যুর ওপার থেকে এ ভুত প্রেমিকের
তোর সাজানো সংসার আগমনে অনিষ্ট
করবো না রে পাগলি মরার পর ভালোবাসি।
12) অশ্লীলতা দায়ে
শ্যামল সোম
মধ্য তারা তাঁরা দিচ্ছে পাহারা
শীতার্ত রাতে এই কম্বলে সাহারা
মরুভূমির শয্যায় অতৃপ্ত সহবাসে
তৃষ্ণার্ত চাকত মন কেন খোঁজে
ভালোবাসার মানুষের ঐ স্পর্শে
শিহরণ বহমান উজান নদীর স্রোতে?
প্রেম হীন দেহের আকাশে জ্যোৎস্নায়
চিক চিক করে নদী আলোকিত রাতে।
ঘুম নেই আমার তোমার শয়নে শুয়ে
শুধুই যে যার স্বপ্নের মায়াবী জাল বোনা।
কেন খুঁজে ফেরে মন সে এক মনের
কাছাকাছি আসার মনের মানুষের খোঁজে?
সহবাস শোকাচ্ছন্ন দেহে কি তৃপ্তি পাই
সম্ভোগে এত জঞ্জাল সাফাই অভিযান নয়
ভালোবেসে দাম্পত্য জীবনে সাজানো
সংসারে পরস্পরের প্রতি অনুরাগের
পরস্পরের হৃদয়ের স্পন্দনে আলোড়িত
মন উষ্ণ প্রেমের স্পর্শে কত আয়োজন
নিষ্ফল প্রয়াসে কেন ব্যর্থ হলো রঞ্জন?"
" নন্দিনী আমার আদরের নীলাঞ্জনা
বিভোর তোমার প্রেমের ব্যর্থতার শেষে
যখন পাগলের মত ভালোবেসেই কাছে
যেতে চাই, রক্তিম সূর্যোদ্বয়ের ভোরে
তখন দেখি আমারই কোন ভুলে তুমি
ফিরে যাচ্ছো তোমার ভালোবাসার
ঐ যুবকের ঐ প্রখ্যাত কোন কবির সাথে
ঘণ কুয়াশায় আলো আঁধারাচ্ছন্ন একাকীত্ব
মাঝেই আমি এক দূর নক্ষত্র, দেখি তোমাদের।
13) নন্দিনী তোমার কাছেই আছি
শ্যামল সোম
বহে গেছে সময়
তবু আজও মনে হয়
তুমি আমার হৃদয় জুড়ে আছো।
ঝরে ভেঙে ঘর,
রাতে পাশে শুয়ে আছে
সে তোমার বর,
পরের ঘরের ঘরনী তুমি।
কখন কি মেঘলা দুপুরে
অনন্ত অবসরে একা
নির্জন বারান্দায় দাঁড়িয়ে,
বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে
দেয় তোমার শরীর,
বৃষ্টির স্পর্শে জাগে মনে--
স্মৃতির শিহরণ ?
জানি নন্দিনী এ গহন
হৃদয়ের ব্যথা একান্ত আপন,
মুক্ত ঝরে ঝরে পড়ে নয়নে নয়নে।
আজও বাজে প্রাণে,
তোমার মায়াবী কন্ঠে
" কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে! "
চোখের আলোকে গাঢ়
অন্ধকারে পাশে আছো
তুমি, ভালোবেসে
সেদিনের মতো আছি খুবই
পরস্পরের কাছাকাছি।
প্রেম অবিনশ্বর, চিরদিন
রয়ে যায় ভালোবাসা,
ভালোবাসায় বেঁচে আছি।
14) কষ্ট মনের ব্যর্থ কথা ( যৌথ লিখন )
তোমাদের বাঁশিওয়ালা শ্যামল সোম
এ বাঁশি আজ আর মনে বাজে না সুমধুর
আমি চলে যাই এই পৃথিবী ছেড়ে বহুদূর।
নিঃসঙ্গি নদী বহমান স্রোতে মনের কোনে
জমা ব্যথা অনুভবে কষ্টে মৃত্যুর প্রতীক্ষায়।
আজ আমার শেষ প্রণতী গ্রহণ করো পৃথিবী
বিদায়ের আসন্ন মূহুর্তে, হিংসাত্মক, কতিপয়
লোকেরা উন্মত্ত, নিষ্ঠুর উন্মূখ ধর্ষণে উদ্যম
উৎশৃঙখল অমানবিক আচরণে উন্মাদ।
আমার নিরবে অশ্রুপাত, তোমাদের জন্য
কাঁদছে মন এত ভালোবাসা সহানুভূতি, কৃপা
জনক, জননী তোমাদের কাছে ফিরবো এ
আমার নিশ্চিত অঙ্গীকার, ভালো থেকো সবাই।
জনৈকা আমার পরম প্রিয় কবির শৈল্পিক এ পাথেয়
হবে আমার পারাপারে পরম প্রাপ্তি তাঁর কল্যাণ হোক।
আপনি নিজেকে ৭৪ বছরের বৃদ্ধ মনে করবেন না প্লিজ।
যৌবন লুকিয়ে থাকে বয়সে নয়,....
প্রকৃত যৌবন, প্রকৃত তারুণ্য থাকে মনে।
আপনি বয়সে প্রবীণ হলেও....
মন আপনার চীর তারুণ্য ভরা..
এক উড়ন্ত বলাকার পাখা মেলে দেয়া
কোন এক দূর তেপান্তর পারি দেবার মতো মনোবল রয়েছে আপনার।
----------------------------------------------------------------------------------------------------
তুমি হে দেবী
পদ্মা পারের কন্যা দিলেম শাপলা ফুল,
ভেঙে মোর গানের তরী ভাসিয়ে নিন জলে
( মন্তব্যে ) বাঁশিওয়ালার প্রাণ জানাগানীয়া সুর
সুরে সুরে সুর মেলাতে আমার বেলা যে যায়।
মনের বলতে য় বাদে, সখী মরি-যে-- লাজে
তব নুপুর ধ্বনি হৃদয়ের গহীন অরণ্যে সাঁঝে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------
পদ্মাবতী----
ও গো বাঁশি ওয়ালা,
বাজাও তোমার বাঁশি.....
শুনি আমার নতুন নাম......!!!!
সত্যিই আমি ধন্য,আমি ধন্য....
যদিও আমি অতি সামান্য,অতি নগন্য.......!!!
------------------------------------------------------------------------------------
15) কবির প্রেমের কাব্যিক ভাবে
তোমার চুম্বনে
অনল আগুনে
পোড়ে মন,
প্রতীক্ষিত
এ প্রেমিকের
হৃদয়ের গোপন
প্রেমের চুম্বনে
জন্য কত যুগ
যুগান্তর ধরে
প্রেমিকের তরে
প্রেমিকা কেন
কাঁদে সারাক্ষণ?
No comments:
Post a Comment