কল্পতরু আমার প্রাণের ঠাকুর
শ্যামল সোম
ডুব ডুব রূপ সাগরে আমার মন
তলা তল পাতাল খুঁজলে পবি
পাবি রে প্রেম রত্ন ধন।
ওরে খোঁজ খোঁজ খোঁজ
খুঁজলে পাবি হৃদি মাঝে বৃন্দাবন
দীপ দীপ দীপ জ্ঞানের বাতি
জবাবে হৃদে অনুক্ষণ।
জীবনের যাত্রা পথে যিনি যুগ যুগান্তর ধরে বাউল প্রেমিকের বেশে এসে আজীবন কল্পতরু বৃক্ষের
মতন যে স্মরণাগত, শুদ্ধা ভক্তি, সম্পূর্ণ ভাবে আত্মনিবেদন করে যে যা চেয়েছেন কৃপা করেছেন তিনি।
শিশু গদাই মধ্যে ইষ্ট দর্শন লাভ হওয়ার পরে সেই কামার পুকুরে বয়স্ক চিনু শাঁখারী উঁই ঢিপির উপরে বসিয়ে
নিজের হাতে গাঁথা ফুলের মালা গদাই গলায় পরিয়ে ফুল বেলপাতা দিয়ে পুজো করে ছিলেন।
ধাত্রী মাতা ধনি কামারিনী উপনয়নের সময় তাঁর হাত হতে প্রথম ভিক্ষা নিয়ে ধাত্রী মায়ের মনোবাঞ্ছা
পূর্ণ করেন।
পরবর্তী কালে কালে বহু বছর ধরে বহু লোককে কৃপা করেছিলেন।
স্বামী জী লিখছেন আমার প্রভুর MY Master তাঁর আধ্যাত্মিক খুবই উচ্চ মার্গে অধিষ্ঠিত, যে তিনি
কৃপা করে A Glance একবার যদি ঐশ্বরিক দৃষ্টিতে তাকাতেন তৎক্ষণাৎ সেই ব্যক্তির চৈতন্য লাভ হতো।
মদ্যপ অভিনেতা কালি প্রাসাদ স্ত্রী শ্রী রামকৃষ্ণ কৃপায় বিশ্ব জননী শ্রী শ্রী সারদা মাতা ঠাকুরানী ঠাকুরের
পুজো ফুল বেলপাতা অর্পণ করেন কালি প্রসাদ এর স্ত্রী হাতে, তিনি চৈতন্য লাভ করেন।
ঠাকুরের ভৈরব, মদ্যপ নাট্য জ্যোতিষ্ক গিরিশ ঘোষ ঠাকুরের কৃপায় পরম ভক্ত হয়ে চৈতন্য লাভ করেন।
বহু শতশত মানুষের কৃপা লাভের অমৃত কথা এই সল্প পরিসরে সম্ভব নয়।
সুদূর সিন্ধু প্রভু দয়াল মিশ্র সিন্ধু প্রদেশের দুইটি ইংরাজী সংবাদ পত্র পত্রিকার সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন, কাব্য সেন পিতা সমগ্র পরিবার কৃপা পেয়েছিলেন।
কৃপা পেয়ে ধন্য ধন্য তাঁর সন্তান তুল্য নিকটস্থ পারর্ষদ পারিষদ তাঁর কৃপায় মহান আত্মা আজ পুজিত হচ্ছেন
বিভিন্ন আশ্রমে মঠে মন্দিরে। তিনি ছিলেন ভগবানের বাবা, এই বাবার কৃপা পেয়ে পুজিত হচ্ছেন পরম ভক্ত
দুর্গা চরণ নাগ মহাশয় নারায়ণগঞ্জ কাছেই বাংলাদেশে।
নব গোপাল, অঘোর মনি, নটিবিনোদিনী গোপালের মা, রাণী রাসমণি, মথুর মোহন, বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী ডাঃ সরকার
কে নয়?
বাংলাদেশের অশ্বিনী দত্ত নেতৃত্ব স্থানীয়, উত্তর ভারতের বিশিষ্ট পন্ডিত গৌর শাস্ত্রী
ঠাকুর প্রশ্ন করেন, " আচ্ছা গৌর, বৈষ্ণব চরণ যে একে, ( নিজেকে দেখিয়ে) অবতার বলে ?"
গৌর- শুনে চুপ করেই ভাবছেন - - ঠাকুর শিশুর মতন তাকিয়েই আছেন
গৌর শাস্ত্রী রেগে বলেন " ভুল বলেছেন "
ঠাকুর ভয় ভয় ইতস্তত বোধ করছেন।
গৌর--" ও ছোট করে বলেছেন ?
ঠাকুর- -" কি বলছো গো গৌর শাস্ত্রী ?
গৌর-- আমি জন সমক্ষে প্রমাণ করার দায়িত্ব নিজে নিতে পারি। আপনি হচ্ছেন যাঁহার অংশ থেকে অবতারের
আবির্ভাব হয়েছিল যুগ যুগ ধরে, আপনি অবতার দের অধিষ্ঠিত পরম ব্রহ্ম স্বরূপ।
ঠাকুর- - বাহবা তুমি তো ছাড়িয়ে গেলে গো, আমি তো বাপু কিছু বুঝি না। গান" আনন্দময়ী হয়ে আমায়
নিরানন্দ করো না।"
শ্রী রামকৃষ্ণ SWAMIJI WRITES, HE IS LOVE , LOVE PERSONIFIED,
ভালোবাসার জমাট মূর্তি মুরতি মুরারি মোহন, পরম ব্রহ্ম, জন্ম লগ্নে কল্পতরু হবে কৃপা করলেন
পরম ভক্ত শ্রী ক্ষুদিরাম কে সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, আনন্দ দান করতেন দিব্য জ্যোতি স্বরুপ দেবশিশু
দর্শনে বঞ্চিত করতেন গাঁয়ের লোক বিশেষত নারীদের নারী মাত্রই তাঁর কাছে জননী, বলরাম আবার কন্যাকে
নিজে পুজো করেছিলেন, স্ত্রী সারদাদেবী ফলাহারিনী কালি রুপে পুজো করেন।
শৈশবে শিবরাত্রির রাতে যাত্রা পালায় অভিনয়ে শিবের অনু ধ্যানী আত্মস্থ হবে স্বয়ং শিব রুপে দর্শন দিয়ে
কৃপা, কৃপা করেছিলেন সুদূর ঐ গান্ধার দেশের প্রভু দিল মিশ্র খৃষ্টান ভেতরে ত্যাগের প্রতীক গৈরিক বসন।
কৃপাসিন্ধু দীনবন্ধু আজও প্রতিদিনই সন্ধ্যা আরতি কালিন সময় সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনের বা শ্রমণে
অপার্থিব ঐশ্বরিক এক সিন্ধু লহরী আনন্দে লোকের মন ভাসিয়ে দেন।
উনিশো ছিয়াশি সালে পয়লা জানুয়ারী বিশেষ দিনে তাঁর প্রতিশ্রুত প্রেমের বার্তা হাটে হাড়ি ভেঙে জানিয়েদিলেন
তিনি পরম ব্রক্ষ্ম তিনি সত্য পরশ পাথর স্পর্শে ভক্তদের কৃপা করছিলেন তাঁদের মনে আনন্দে
ঐশ্বরিক চৈতন্য ক্ষণিকের জন্য হলেও প্রথমেই লাভ করলেন ঐ কাশীপুরের উদ্যান বাটিতে দো দোতলার ঘরে
সুপ্রসন্ন মন উদ্বেলিত হলেন হরিশ চন্দ মুস্তাফি চরণ স্পর্শে মুহুর্তেই চৈতন্য আনন্দে চিৎকার - " ওরে এ আনন্দ
আমার ধরে না........! হারায় চন্দ্র দাশ অক্ষয় সেন যিনি কৃপা পেয়ে অসাধারণ একটি গ্রন্থ রচনা করেন
" শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পুঁথি এ আশ্চর্য গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার পরে স্বামিজী সুদূর আমেরিকা থেকে উচছসিত প্রশংসা
করেছিলেন।
স্বামীজি চেয়েছিলেন নির্বিকল্প সমাধি --শ্রী রামকৃষ্ণ বলেছিলেন -- তুই বট বৃক্ষ তোর আশ্রয়ে বহু মানুষ উপকৃত হবে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্রাজিল থেকে শুরু করে নানা দেশের মানুষ কল্পতরু রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম সেন্টারে বেদান্ত
সোসাইটিতে কৃপা লাভের করে ধন্য হচ্ছেন ।
সেদিনই ছিল পয়লা জানুয়ারী 1886 সাল ছুটির দিন বহু গৃহস্থ ভক্তদের সমাবেশ, ঠাকুরের অসুস্থ জন্য
শোকার্ত দর্শন লাভের বঞ্চিত হচ্ছেন, আজ এসেছেন প্রভুর দর্শনে।
অন্তর্যামী রামকৃষ্ণ বুজতে পেরে রামলাল ও লাটু মহারাজকে বললেন," আজ শরীরটা বেশ ভাল লাগছে চল
নিচে ঐ বাগানে পুকুর পারে গাছের তলায় ওরা সব এসেছে ( ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ণ করতে ) দর্শন দিতে আসছেন
সবুজ বনেত দেওয়া টুপি, কোট, চাদর দিয়ে ছড়ি হাতে, পুরুষোত্তম পরম জ্যোতি স্বরুপ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ
হাস্য মুখে দিব্য কান্তি স্বয়ং ব্রক্ষ্ম তাঁর আধ্যাত্মিক রুপ দর্শনেই সমবেত কন্ঠে ধ্বনিত হলো " জয় জয় শ্রী রামকৃষ্ণ "
আকাশ বাতাসে প্রতিধ্বনি আজও যেন কানে বাজে আনন্দে সরোতে ভেসে যাই।
সবাই ব্যস্ত হয়ে চরণ স্পর্শ মুহুর্তেই চৈতন্য লাভের অপার আনন্দ আনন্দ ই পরম ব্রক্ষ্ম!
নবগোপাল ঘোষকে বললেন " একটু আমার নাম করো তা হলেই হবে -- আজ দক্ষিণ কলকাতার মহা নির্বাণ মঠ
সাক্ষ্য দেয় ।
উপেন নামে দু’জন কে কৃপা করলেন। বসুমতী প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার উপেনবাবু অর্থ প্রাচুর্য সেদিন কল্পতরু
রামকৃষ্ণ কাছ থেকেই প্রাপ্তি এই ঐতিহাসিক দিনে এক আশ্চর্য সুখ শান্তি ঐশ্বরিক আনন্দ প্রাপ্ত হবে চিৎকার কেউ কাঁদছেন কেউ হাসছেন শিশুর ধেই ধেই করে নাচছেন।
রাম দত্ত চিৎকার করে ডাকছেন --" ওরে তোরা কে কোথায় আছিস আয় আয় আমাদের ঠাকুর আজ কল্পতরু
হয়েছেন।
তিনি রান্না ঘরের পাচক সেবকদের হাত ধরে ঠাকুরের চরণে ফেললেন -- দক্ষিণেশ্বরের মেথর রসিক বৃনতে দাসী
যাঁর চৈতন্য লাভ হয়েছিল যিনি বলতে পেরেছিলেন শ্রীম মাস্টার মশাইকে --" ধর্ম শাস্ত্র সব ওঁনার মুখে মুখে "
কথামৃত পড়া প্রথমেই আমি চমকে উঠলাম কৈশোরে এ কি করে সম্ভব- - প্রথম দর্শনে সুখ দেব দেখছেন
যিনি পরীক্ষিত রাজাকে শোনাচ্ছেন যেন শ্রী চৈতন্য দেব ঐশ্বরিক প্রসঙ্গ করছেন।
" হাঁ গো গিরিশ তুমিই যে (এই প্রথম আমি বলেন আজ, বিশ্ব জননী কেও বলেছিলেন ঠাকুরের নিজের ছবি
দেখিয়ে এই ছবি একদিন ঘরে ঘরে পুজিত হবে এ কৃপা আমরা পেয়েছি আশীর্বাদ করেছেন চলেছেন---!)
আমার সম্পর্কে এত বলে বেড়াও তা তুমি বাপু কি দেখলে এই আমার মধ্যে ?
প্রশ্ন শুনে খ্যাতনামা অভিনেতা গিরিশ চন্দ বিহ্বল হঠাৎই চরণ স্পর্শ হু হু করে শিশুর মতন কাঁদতে কাঁদতে
বললেন, " হে প্রভু আমার কি সাধ্য যিনি পরম ব্রক্ষ্ম যাঁর কথা মহর্ষি বাল্মীকি বা স্বয়ং ব্যাসদেব লিখেও
--- আমি সামান্য নাট্যকার কি বলতে পারি চরণে লুটিয়ে পড়লেন সবাই বাকরুদ্ধ !
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের বাহ্যজ্ঞান শূণ্য হয়ে বলরাম বসুর বাড়িতে দর্শন দিয়েছিলেন অতীতে ---!
আজ ও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের সমাধিস্থ হইলেন- - সমবেত ভক্তদের আলোকিত বলায়ে জ্যোতিষ্ক স্বরূপ
তাঁকে দর্শন করে আনন্দিত।
কিছুক্ষণ পরেই আত্মস্থ হয়ে বললেন- - " শাশ্বত সত্য স্রষ্টার বাণী "
" আশীর্বাদ করি তোমাদের চৈতন্য হউক "
No comments:
Post a Comment